রসায়নবিদ শব্দটি বিশেষ্য, এর দ্বারা ব্যক্তি বিশেষকে বোঝায় যিনি রসায়ন সম্পর্কে অভিজ্ঞ। বিজ্ঞানের ভাষায় রসায়নবিদ বলতে সেই বিজ্ঞানীকেই বোঝায় যিনি রসায়ন সম্পর্কে ভালো পড়াশোনা এবং প্রশিক্ষণ লাভ করেছেন। এক্ষেত্রে একটি বিষয় লক্ষ্য করতে হবে যে যারা রাসায়নিক উপদান নিয়ে নাড়াচড়া করেন অথবা ব্যবসা করেন তারা কিন্তু রসায়নবিদ নয়। রসায়নবিদ হতে হলে রসায়নে দক্ষ হতে হবে এবং সেই সাথে রসায়নের উপর পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকতে হবে।
রসায়ন ও রসায়নবিদের ইতিহাস পরস্পর সংযুক্ত। রসায়নের শিকড় খুঁজতে হলে দহনের ইতিহাস খুঁজতে হবে। আগুন আবিষ্কারের পর থেকেই মূলত রসায়নের সূচনা হয়েছে। আগুন হচ্ছে সেই মহাজাগতিক শক্তি যা এক বস্তুকে অন্য বস্তুতে রুপান্তরের ক্ষমতা রাখে। আগুন ছিলো মানবসভ্যতার প্রথম দিকের মহা আগ্রহের বস্তু। আগুনের হাত ধরে মানুষ আবিষ্কার করে লোহা। শুরু হয় লৌহ যুগের। পরে আবিষ্কার করে কাচ। এর পরে আবিষ্কৃত হয় সোনা। সোনা সব থেকে মূল্যবান ধাতুর মর্যাদা লাভ করে। অনেক ব্যক্তি ধাতুকে সোনায় পরিনত করার পদ্ধতি আবিষ্কারের প্রচেষ্টা চালায়। কেউ পরশপাথরের সন্ধান চালায়। কেউ করে গবেষণা। এর ফলে বিজ্ঞানের একটা শাখার উদ্ভব ঘটে। প্রথম দিকে যাকে বলা হতো আলকেমি। রসায়নবিদের ইংরেজি কেমিস্ট শব্দটি এসেছে লাতিন বিশেষ্য ‘“কেমিস্তা”’ থেকে যা ‘“আলকেমিস্তা”’র সংক্ষিপ্ত রূপ। আর আলকেমিস্টের সূচনা ঘটে ইসলামী বিজ্ঞানীদের হাতে। আলকেমিস্টগণ অনেক রাসায়নিক পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। যার হাত ধরে আধুনিক রসায়ন পূর্ণতা পেয়েছে। ১৭৮৩ সালে এন্টোনি ল্যাভয়শিয়ে ভরের নিত্যতা সূত্র আবিষ্কার করেন। তার হাত ধরেই আধুনিক রসায়নের পথচলা শুরু হয়। আবিষ্কৃত হয় ১০৯ টি মৌলিক পদার্থ। আবিষ্কৃত মৌলগুলোকে পর্যায় সারণীতে সজ্জিতকরেন দিমিত্রি মেন্ডেলিফ।
রসায়নের উপর ভালো চাকরি পেতে হলে কমপক্ষে রসায়নের উপর স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করতে হবে। কিন্তু গবেষণার মত চাকরি পেতে হলে পিএইচডি’র মত ডিগ্রির প্রয়োজন হয়। স্নাতকোত্তর এবং তার পরের ধাপগুলোতে শিক্ষার্থীরা রসায়নের একটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে পড়াশোনা করেন। রসায়নের ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ফলিত রসায়ন। তত্বীয় রসায়ন, জৈব রসায়ন, অজৈব রসায়ন, প্রাণ রসায়ন, পারমাণবিক রসায়ন, কোয়ান্টাম রসায়ন, পরিবেশ রসায়ন, ব্যবহারিক রসায়ন এবং ভৌত রসায়ন। রাসায়নিক কারখানাতে যেসকল রাসায়নিক ডিগ্রি ছাড়া কাজ করেন তাদেরকে রাসায়নিক টেকনিশিয়ান বলা হয়।
রসায়নবিদদের চাকরির ক্ষেত্র মূলত তিনটি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিল্প কারখানা বিশেষ করে রাসায়নিক এবং ঔষধ কারখানা এবং সরকারী গবেষণাগারগুলোতে। রসায়নকে অনেক গুলো উপশাখায় বিভক্ত করা হয়েছে। প্রতিটি শাখাই গুরুত্বপূর্ণ। যেমন তত্বীয় রসায়ন, ফলিত রসায়ন, প্রাণ রসায়ন, জৈব রসায়ন, অজৈব রসায়ন, ভৌত রসায়ন ইত্যাদি।
রসায়নবিদদের অনেকগুলো সংগঠন আছে। যেমন যুক্তরাজ্যের রয়্যাল সোসাইটি অফ কেমিস্ট্রি (রসায়নের রাজকীয় সমিতি), যুক্তরাষ্ট্রের আমেরিকান রসায়ন সমিতি ইত্যাদি।
রসায়নবিদদের সর্বোচ্চ সম্মাননা হচ্ছে রসায়নে নোবেল পুরস্কার যা আলফ্রেড নোবেল এর মৃত্যুর আগে করা উইল অনুসারে সুইডিশ রাজকীয় বিজ্ঞান একাডেমীর মাধ্যমে ১৯০১ সাল থেকে দেয়া হয়।
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article রসায়নবিদ, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.