রবার্ট গ্যাব্রিয়েল মুগাবে (শোনা উচ্চারণ: , ইংরেজি: /muːˈɡɑːbiː/ moo-GAH-bee; (২১ ফেব্রুয়ারি ১৯২৪–৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯) জিম্বাবুয়ের রাষ্ট্রপতি হিসেবে ক্ষমতাসীন ছিলেন। শ্বেতাঙ্গ শাসনের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম নেতার মর্যাদা পেয়েছিলেন তিনি। ১৯৮০ সালে তিনি নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় আরোহণ করেন। ১৯৮০ - ১৯৮৭ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী ও ১৯৮৭ সাল থেকে রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী হিসেবে ২০১৭ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৭ সালের ২১ নভেম্বর তারিখে রবার্ট মুগাবে ৩৭ বছর শাসনের পরে জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট এর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন।
রবার্ট মুগাবে | |
---|---|
জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট | |
কাজের মেয়াদ ৩১ ডিসেম্বর, ১৯৮৭ – ২১ নভেম্বর, ২০১৭ | |
প্রধানমন্ত্রী | মর্গ্যান জানগিরাই |
উপরাষ্ট্রপতি | সিমন মুজেন্ডা জয়েস মুজুরু |
পূর্বসূরী | ক্যানান বানানা |
জিম্বাবুয়ের প্রধানমন্ত্রী | |
কাজের মেয়াদ ১৮ এপ্রিল, ১৯৮০ – ৩১ ডিসেম্বর, ১৯৮৭ | |
রাষ্ট্রপতি | ক্যানান বানানা |
পূর্বসূরী | এবেল মুজোরিউয়া(জিম্বাবুয়ে রোডেশিয়া) |
উত্তরসূরী | মর্গ্যান জানগিরাই |
জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলনের মহাসচিব | |
কাজের মেয়াদ ৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৮৬ – ৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৮৯ | |
পূর্বসূরী | জৈল সিং |
উত্তরসূরী | জানেজ দ্রোভসেক |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | কুতামা, দক্ষিণ রোডেশিয়া (জিম্বাবুয়ে) | ২১ ফেব্রুয়ারি ১৯২৪
মৃত্যু | ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ সিঙ্গাপুর | (বয়স ৯৫)
রাজনৈতিক দল | ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি(১৯৬০-১৯৬১) জিম্বাবুয়ে আফ্রিকান পিপিল'স ইউনিয়ন(১৯৬১-১৯৬৩) জিম্বাবুয়ে আফ্রিকান ন্যাশনাল ইউনিয়ন(১৯৬৩-১৯৮৭) জিম্বাবুয়ে আফ্রিকান ন্যাশনাল ইউনিয়ন-প্যাট্রিওটিক ফ্রন্ট(১৯৮৭-বর্তমান) |
দাম্পত্য সঙ্গী | সলি হেফ্রন (১৯৬১-১৯৯২) গ্রেস মারুফু (১৯৯৬-বর্তমান) |
সন্তান | মাইকেল হ্যামোদজেনিকা বোনা রবার্ট পিটার বেলারমাইন চাটুঙ্গা |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | ইউনিভার্সিটি অব ফোর্ট হেয়ার ইউনিভার্সিটি অব সাউথ আফ্রিকা ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন |
স্বাক্ষর |
১৯৬০-এর দশকে মুগাবে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। জিম্বাবুয়ে আফ্রিকান ন্যাশনাল ইউনিয়ন (জানু)-এর মহাসচিব ছিলেন তিনি এবং তার দল সংখ্যালঘিষ্ঠ শ্বেতাঙ্গ শাসক ইয়ান স্মিথের বিরুদ্ধে লড়াই করেন। ফলশ্রুতিতে ১৯৬৪ থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত দশ বছরের অধিক সময় তাকে রোডেশিয়ার কারাগারে রাজনৈতিক বন্দী হিসেবে অবস্থান করতে হয়। এডগার তেকেরের সাথে ১৯৭৫ সালে মুক্তি পেয়ে রোডেশিয়া ত্যাগ করেন। মোজাম্বিকে অবস্থান করে জিম্বাবুয়ের স্বাধীনতা সংগ্রাম বা রোডেশিয়ান বুশ ওয়ারে অংশগ্রহণ করেন।
১৯৭৯ সালে সমাপ্ত ঐ যুদ্ধে মুগাবে অনেক আফ্রিকাবাসীর মন জয় করে বীরের মর্যাদায় অভিষিক্ত হন রবার্ট মুগাবে। ১৯৮০ সালে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে কৃষ্ণাঙ্গ আফ্রিকানরা ব্যাপক সংখ্যায় অংশগ্রহণ করে ও সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। এতে মুগাবে জিম্বাবুয়ের ইতিহাসে ১ম প্রধানমন্ত্রীত্বে অভিষিক্ত হন। দেশ পুণর্গঠনে পূর্বে যুদ্ধরত দলসহ শ্বেতাঙ্গ রোডেশিয়ান এবং বিবদমান প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে ঐকমত্যে পৌঁছান।
দক্ষিণ রোডেশিয়ার উত্তর-পশ্চিমে হারারের জিম্বা জেলার কুতামা জেসুইত মিশনের কাছে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। মালাউই পিতা গ্যাব্রিয়েল মাতিবিলি এবং শোনা অধিবাসী মাতা বোনা উভয়েই রোমান ক্যাথলিক ছিলেন। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে তিনি ৩য় ছিলেন। বড় দুই ভাই - মাইকেল এবং দোনাতো উভয়েই তার শৈশবকালীন সময়ে মৃত্যুবরণ করেন। তার বাবা গ্যাব্রিয়েল মাতিবিলি একজন কাঠমিস্ত্রী ছিলেন। ১৯৩৪ সালে মাইকেলের মৃত্যুর পর মুগাবে পরিবার কাজের সন্ধানে বুলাওয়ে চলে যান।
মুগাবে ম্যারিস্ট ব্রাদার্স এবং জেসুইট বিদ্যালয়সহ মর্যাদাপূর্ণ কুতামা কলেজে পড়াশোনা করেন। সেখানে তিনি আইরিশ পাদ্রী ফাদার জেরোম ও'হিয়ার ছত্রচ্ছায়ায় নিজেকে গড়েন। তরুণ বয়সে মুগাবে সামাজিক কিংবা শারীরিক কোনভাবেই জনপ্রিয় ছিলেন না। অধিকাংশ সময়ই তিনি ধর্মযাজক অথবা তার মায়ের সাথে পড়াশোনা করে সময় কাটাতেন। অন্যান্যদের সাথে খেলতে পছন্দ করতেন না বরং নিজেই নিজের সাথে মজা উপভোগ করতেন। তার ভাই দোনাতো বলেছিলেন যে একমাত্র বন্ধু হিসেবে ছিল বই।
শিক্ষক হিসেবে যোগ্যতা অর্জন করলেও তিনি পড়াশোনার উদ্দেশ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার ফোর্ট হেয়ারে চলে যান। সেখানে ১৯৫১ সালে ইউনিভার্সিটি অব ফোর্ট হেয়ার থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। সাক্ষাৎ করেন বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব - জুলিয়াস নায়ারে, হার্বাট চিতেপো, রবার্ট সবুকি এবং কেনেথ কাউন্ডা প্রমূখদের সাথে। এরপর সলিসবেরি (১৯৫৩), গুইলো (১৯৫৪) এবং তাঞ্জানিয়ায় (১৯৫৫-১৯৫৭) পড়াশোনা করেন।
ধারাবাহিকভাবে দূরশিক্ষণ প্রকল্পে ইউনিভার্সিটি অব সাউথ আফ্রিকা থেকে - প্রশাসন ও শিক্ষায় স্নাতক এবং ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন এক্সটার্নাল প্রোগ্রাম থেকে বিজ্ঞান, আইন বিষয়ে স্নাতক এবং বিজ্ঞান ও আইন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন।
কারাগারের অভ্যন্তরে থেকে তিনি দু'টি আইন ডিগ্রী অর্জন করেছিলেন। এছাড়াও, জিম্বাবুয়ের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন।
জিম্বাবুয়ে ১৯৮০ সালে স্বাধীন হবার পর থেকেই রবার্ট মুগাবে ক্ষমতায় ছিলেন। ৩৭ বছর শাসনের পরে তিনি পদত্যাগ করেছেন। দেশটির পার্লামেন্টের স্পিকার জ্যাকব মুডেন্ডার কাছে ২১ নভেম্বর ২০১৭, ৯৩ বছর বয়সী রবার্ট মুগাবে পদত্যাগ পত্র জমা দেন।
রবার্ট মুগাবে ২০১৯ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরে মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর পরদিন জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া এক ভাষণে তাকে 'জাতীয় বীর' হিসেবে ঘোষণা করেন দেশটির ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট এমারসন নানগাওয়া। জিম্বাবুয়ের জনক ও স্বাধীনতা পরবর্তী প্রথম প্রেসিডেন্ট মুগাবের মৃতদেহ ১১ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ দেশটির জাতীয় স্টেডিয়ামে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তার শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয়। ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ হারারের 'হিরু একরে' তাকে সমাহিত করা হয়। মৃত্যু পরবর্তী তাকে নিয়ে জনগণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। কেউ কেউ তাকে 'সত্যিকার আফ্রিকান' ও 'বিপ্লবের প্রতীক' বলে অভিহিত করেন। কেউ আবার তাকে দানব কিংবা দূর্ভোগের কারণ হিসেবেও দেখেন। সংবাদমাধ্যম তাকে 'চিন্তাশীলের গেরিলা' নামেও অভিহিত করেছেন।
পার্টির রাজনৈতিক কার্যালয় | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী হার্বার্ট চিতেপো | জিম্বাবুয়ে আফ্রিকান ন্যাশনাল ইউনিয়নের নেতা ১৯৭৫-১৯৮৭ | জিম্বাবুয়ে আফ্রিকান ন্যাশনাল ইউনিয়ন - প্যাট্রিওটিক ফ্রন্টে রূপান্তর |
নতুন রাজনৈতিক দল জিম্বাবুয়ে আফ্রিকান ন্যাশনাল ইউনিয়ন - প্যাট্রিওটিক ফ্রন্টে রূপান্তর হয়েছে | জিম্বাবুয়ে আফ্রিকান ন্যাশনাল ইউনিয়ন - প্যাট্রিওটিক ফ্রন্টের নেতা ১৯৮৭-বর্তমান | নির্ধারিত হয়নি |
রাজনৈতিক দপ্তর | ||
পূর্বসূরী এবেল মুজোরেউয়া জিম্বাবুয়ের রোডেশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে | জিম্বাবুয়ের প্রধানমন্ত্রী ১৯৮০-১৯৮৭ | উত্তরসূরী মর্গ্যান সানগিরাই |
পূর্বসূরী ক্যানান বানানা | জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট ১৯৮৭-বর্তমান | নির্ধারিত হয়নি |
কূটনৈতিক পদবী | ||
পূর্বসূরী জৈল সিং | জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলনের মহাসচিব ১৯৮৬-১৯৮৯ | উত্তরসূরী জানেজ দ্রোনোভসেক |
পূর্বসূরী পল বিয়া | আফ্রিকান ইউনিয়নের সভাপতি ১৯৯৭-১৯৯৮ | উত্তরসূরী ব্লেইজ কমপাউরে |
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article রবার্ট মুগাবে, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.