মানবতাবিরোধী অপরাধ

টেমপ্লেট:অপরাধবিজ্ঞান ও শাস্তিবিজ্ঞান মানবতাবিরোধী অপরাধ বলতে এমন কিছু বিশেষ কর্মকাণ্ডকে বোঝায়, যেগুলি উদ্দেশ্যমূলকভাবে ব্যাপক ও প্রণালীবদ্ধ নীতির অংশ হিসেবে যুদ্ধ কিংবা শান্তির সময়ে বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা হয়। এগুলির সাথে যুদ্ধাপরাধের পার্থক্য এই যে এগুলি কোনও একক বিচ্ছিন্ন সৈনিকের করা কর্মকাণ্ড নয়, বরং কোনও রাষ্ট্র বা সংস্থার নীতি বাস্তবায়নে ঘটানো হয়। নুরেমবের্গের বিচারগুলিতে প্রথমবারের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধগুলির বিচার হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ইহুদী গণনিধনের পরে ১৯৪৮ সালে প্রকাশিত মানবাধিকারের বিশ্বজনীন ঘোষণাপত্রে মানবাধিকারের একটি বৈশ্বিক আদর্শমান প্রতিষ্ঠা করা হয়, যা বর্তমানে আন্তর্জাতিক আইনে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত। যেসব রাজনৈতিক দল বা রাষ্ট্র ঐ ঘোষণায় উল্লিখিত মানবাধিকারের স্বীকৃত আদর্শগুলি লঙ্ঘন করে বা লঙ্ঘন করতে প্ররোচিত করে, তাদের আচরণকে মানবতাবিরোধী অপরাধসমূহের সাথে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক অসুস্থতার অভিব্যক্তি হিসেবে গণ্য করা হয়।

মানবতাবিরোধী অপরাধ
আর্মেনীয় গণহত্যা ছিল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথমবারের মতো বর্ণিত একটি "মানবতাবিরোধী অপরাধ"

বহুসংখ্যক আন্তর্জাতিক আদালতে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে শাস্তি প্রদান করা হয়েছে, যেমন প্রাক্তন যুগোস্লাভিয়ার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল, রুয়ান্ডার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত, ইত্যাদি। এছাড়া অনেক জাতীয় আদালতেও এরূপ শাস্তির প্রয়োগ হয়েছে। রীতিবদ্ধ আন্তর্জাতিক আইনের বিবর্তনের মাধ্যম মানবতাবিরোধী অপরাধ বিষয়ক আইনটির বিকাশ ঘটেছে। যদিও মানবতাবিরোধী অপরাধগুলি কোনও আন্তর্জাতিক চুক্তিতে সূত্রায়িত করা হয়নি, তা সত্ত্বেও বর্তমানে এরূপ একটি চুক্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে; মানবতাবিরোধী অপরাধ বিষয়ক উদ্যোগ নামক একটি সংগঠন এই প্রচেষ্টায় নেতৃত্ব দিচ্ছে।

যুদ্ধাপরাধগুলি কেবলমাত্র যুদ্ধকালীন সময়ে সম্পন্ন হলেও মানবতাবিরোধী অপরাধগুলি শান্তি কিংবা যুদ্ধ উভয় সময়ে ঘটতে পারে। এগুলি কোনও বিচ্ছিন্ন বা হঠাৎ কোনও ঘটনা নয়, বরং কোনও সরকারের নীতির অংশবিশেষ হয়ে থাকে (যদিও অপরাধীরা নিজেদেরকে নীতির সাথে সংশ্লিষ্ট না-ও দাবি করতে পারে) কিংবা কোনও সরকার বা কার্যকরী কর্তৃপক্ষের দ্বারা সহ্যকৃত বা সমর্থিত ও ব্যাপকভাবে প্রচলিত নিষ্ঠুরতা হয়ে থাকে। যুদ্ধাপরাধ, হত্যা, অমানবিকীকরণ, গণনিধন, গণহত্যা, জাতিগত নির্মূলকরণ, দেশ থেকে বহিস্কার, অনৈতিক মানব পরীক্ষা, বিচার-বহির্ভূত শাস্তিপ্রদান (যেমন বিচার ছাড়াই মৃত্যুদণ্ড), গণবিধ্বংসী মারণাস্ত্রের ব্যবহার, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সন্ত্রাসবাদ, ঘাতক দল, অপহরণ, গুম, শিশু সৈনিকের ব্যবহার, অন্যায্য অন্তরীণকরণ, ক্রীতদাসে পরিণতকরণ, নির্যাতন, ধর্ষণ, রাজনৈতিক নিপীড়ন, জাতিবিদ্বেষমূলক বৈষম্য, ধর্মীয় নিপীড়ন ও অন্যান্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো কর্মকাণ্ডগুলি যদি ব্যাপক বা প্রণালীবদ্ধ চর্চা বা রেওয়াজে পরিণত হয়, তাহলে সেগুলি মানবতাবিরোধী অপরাধের আওতায় পড়তে পারে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

তথ্যসূত্র

Tags:

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

বাংলাদেশ ছাত্রলীগঢাকাআয়িশাফিফা বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংপারদবহুমূত্ররোগপৃথিবীর ইতিহাসমরক্কো জাতীয় ফুটবল দলফেরদৌস আহমেদপাখিকুলম্বের সূত্রবাংলাদেশের ইউনিয়নকনডমকন্যাশিশু হত্যাসমকামী মহিলামোবাইল ফোনবীর্যভূমিকম্পভূমি পরিমাপঅ্যালবামপরিমাপ যন্ত্রের তালিকালিটন দাসহার্নিয়াসূর্যদীপু মনিপ্লাস্টিক দূষণবাংলাদেশের মেডিকেল কলেজসমূহের তালিকাদুরুদখোজাকরণ উদ্বিগ্নতাব্রাজিলজেলা প্রশাসকবাংলার প্ৰাচীন জনপদসমূহওবায়দুল কাদেরটেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রামসজিদে নববীতাজবিদখাদ্যবাংলাদেশে পালিত দিবসসমূহবাংলার নবজাগরণস্নায়ুকোষপ্রধান পাতাপ্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কাজী নজরুল ইসলামঢাকা জেলাএস এম শফিউদ্দিন আহমেদপর্নোগ্রাফিজলাতংকবিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সহৃৎপিণ্ডকালিদাসবাংলাদেশের উপজেলারামসার কনভেনশনময়মনসিংহবাংলাদেশের ব্যাংকসমূহের তালিকাআফগানিস্তানঅভিমান (চলচ্চিত্র)বুর্জ খলিফামূত্রনালীর সংক্রমণরফিকুন নবীইসলামের ইতিহাসসত্যজিৎ রায়জিমেইলগুগলবিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়শাহরুখ খানমনোবিজ্ঞানফিফা বিশ্বকাপবাংলাদেশের ইতিহাসচতুর্থ শিল্প বিপ্লবসূরা নাসবাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষকযাকাতপশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত ব্যবস্থাবাংলাদেশের জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২গোলাপ০ (সংখ্যা)সাইপ্রাস🡆 More