ধারক (ইংরেজি: Capacitor) একটি বৈদ্যুতিক যন্ত্র, যা বর্তনীতে বৈদ্যুতিক শক্তি ও বৈদ্যুতিক আধানের হিসেবে কাজ করে। ক্ষেত্রবিশেষে এটা উচ্চ ও নিম্ন তরঙ্গের জন্য ছাঁকনি (filter) হিসেবেও কাজ করে। পূর্বে একে শীতক (ইংরেজি: Condenser) বলে অভিহিত করা হত। কারণ প্রথমে বিজ্ঞানীগণ ভেবেছিলেন, ধারকে তড়িৎ একেবারে জমাট বেঁধে যায়। কিন্তু পরে জানা যায় যে এখানে তড়িৎ জমে যায় না; শুধু আধান ও শক্তি সঞ্চিত হয় এবং প্রয়োজনানুযায়ী ব্যবহার করা যায়।
ধারকের সঞ্চিতশক্তির রাশিমালা
u= 1/2 ×€0 E²
দুইটি পরিবাহী পাতের মাঝে একটি পরাবৈদ্যুতিক অপরিবাহী পদার্থ নিয়ে এটি গঠিত। ডাই-ইলেকট্রিক এমন একটি পদার্থ যা বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের প্রভাবে পোলারায়িত হতে পারে। এ পদার্থ হতে পারে কাঁচ, সিরামিক, প্লাস্টিক বা শুধুই বাতাস।
ধারকত্ব হল কোন নির্দিষ্ট বিভব পার্থক্যে সঞ্চিত তড়িৎ আধানের পরিমাপ। তড়িৎ আধান সঞ্চয়ের জন্য দুই পাত বিশিষ্ট ধারক সর্বাধিক প্রচলিত। যদি ধারকের পাতদ্বয়ে আধানের পরিমাণ যথাক্রমে +Q ও -Q এবং পাতদ্বয়ের বিভব পার্থক্য V হয়, তবে ধারকত্ব
ধারকত্বের এসআই একক হল ফ্যারাড। ১ ফ্যারাড = ১ কুলম্ব প্রতি ভোল্ট।
ধারক চার্জ করতে কৃতকাজ ধারকে সঞ্চিত শক্তির সমান। ধারক চার্জ করার অর্থ হল ধারকের দুই পাতের মধ্যে বিভব পার্থক্য সৃষ্টি করা। ধরা যাক C ধারকত্ববিশিষ্ট কোন ধারকের দুই পাতে যথাক্রমে +q ও -q আধান সঞ্চিত আছে। V = q/C বিভব পার্থক্যে অতিক্ষুদ্র আধান ধারকের এক পাত হতে অপর পাতে নিতে কৃতকাজ :
যেখানে,
উপরিউক্ত সমীকরণটি যোগজীকরণের মাধ্যমে ধারকে সঞ্চিত শক্তি নির্ণয় করা যায়। প্রাথমিক অবস্থায় ধারকের পাতদ্বয় আধানহীন (q=০)। এক পাত হতে আরেক পাতে আধান নিয়ে পাতদ্বয়কে যথাক্রমে +Q and -Q আধানে আধায়িত করতে কৃতকাজ W:
প্রত্যেক বস্তুরই আধান ধারণের একটি নির্দিষ্ট সামর্থ্য আছে । আধান ধারণ করার সামর্থ্য বা ক্ষমতাকে ধারকত্ব (Capacitance) বলে। কোনো পরিবাহীতে আধানের পরিমাণ বৃদ্ধি করলে বিভব বৃদ্ধি পায়। আধান এবং বিভব পরস্পরের সমানুপাতিক।
কোনো ধারকের বিভব এক একক বৃদ্ধি করতে যে পরিমাণ আধানের প্রয়োজন হয়, তাকে উক্ত ধারকের ধারকত্ব (ইংরেজি: Capacitance) বলে। একে C দ্বারা প্রকাশ করা হয়। ধারকত্ব ধারকের আকার, মাধ্যমের প্রকৃতি এবং অন্য বস্তুর সান্নিধ্যের উপর নির্ভর করে।
ধারকত্বের স্থির বিদ্যুৎ একক ছোট এবং বিদ্যুৎ চুম্বকীয় একক বড় হওয়ায় ব্যবহারিক কাজের সুবিধার জন্য বিখ্যাত বিজ্ঞানী মাইকেল ফ্যারাডে ধারকত্বের আরও একটি একক প্রচলন করেন। ফ্যারাডের নাম অনুসারে ধারকত্বের এ এসআই এককের নাম হয় ফ্যারাড (Farad) ।
কোনো ধারকের বিভব এক একক বৃদ্ধি করতে যদি এক কুলম্ব আধানের প্রয়োজন হয়, তবে এর ধারকত্বকে এক ফ্যারাড বলে। একে সংক্ষেপে F দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
ব্যবহারিক ক্ষেত্রে ফ্যারাড খুব বড় হয় বলে এর ১০ লক্ষ ভাগের এক ভাগকে ধারকত্বের আর একটি নতুন একক ধরা হয়। এর নাম মাইক্রো-ফ্যারাড । একে সংক্ষেপে μF দ্বারা প্রকাশ করা হয় ।
এছাড়াও ন্যানো-ফ্যারাড (nF) এবং পিকো-ফ্যারাড (pF) নামে আরও ব্যবহারিক একক আছে । পিকো-ফ্যারাড (pF) কে মাইক্রো-মাইক্রো-ফ্যারাড (μμF) ও বলা হয় ।
সাধারণত পিকো-ফ্যারাডের ধারকের মান সংখ্যায় প্রকাশ করা হয়। এক্ষেত্রে উক্ত ধারকে শুধু সংখ্যায় মান লেখা থাকে।
যেমন : 8, 64, 103, 104, 205 ইত্যাদি।
এক্ষেত্রে,
μF
μF
μF
μF
μF
μF
pF
pF
pF
μF
μF
μF
pF
pF
pF
μF
μF
μF
pF
pF
pF
μF
μF
μF
সমতুল্য ধারকের ক্যাপাসিট্যান্স বাড়ানো বা কমানোর জন্য ধারক এর গ্রুপিং করা হয়। ধারক গ্রুপিং এর ধরনের উপর ক্যাপাসিট্যান্স নির্ভর করে।
প্রয়োজন অনুসারে মোট ক্যাপাসিট্যান্স এর মান বাড়ানো বা কমানোর জন্য দুইটি পদ্ধতিতে ধারকের গ্রুপিং করা হয়।
যখন কতকগুলো ধারককে এমনভাবে সংযোগ করা হয় যে, ১ম টির ২য় প্রান্ত, ২য় টির ১ম প্রান্তের সাথে, পর পর এভাবে যুক্ত থাকে এবং ১ম ধারকের ১ম প্রান্ত ও শেষ ধারকের ২য় প্রান্ত সাপ্লাইয়ের সাথে যুক্ত থাকে, তখন সে সংযোগকে সিরিজ গ্রুপিং বলা হয়। সার্কিটের প্রয়োজনে উচ্চ বিভব পার্থক্য সৃষ্টির জন্য ধারকের সিরিজ গ্রুপিং বা শ্রেণি সংযোগ করা হয়। সিরিজে সংযুক্ত প্রতিটি ধারকের আড়াআড়ি ভোল্টেজ আলাদা এবং চার্জ একই থাকে, যা ক্যাপাসিট্যান্স এর উপর নির্ভর করে।
যদি, আড়াআড়ি ভোল্টেজ= এবং
চার্জ= ধরা হয়।
তাহলে,
সেই অনুসারে,
এবং
তাহলে,
বা, ]
বা,
বা,
যখন, সিরিজ সংযোগের সমতুল্য ক্যাপাসিট্যান্স। এভাবে, সংখ্যক ধারকের জন্য সিরিজ সমতুল্য ক্যাপাসিট্যান্স,
ধারকের সিরিজ গ্রুপিং বা শ্রেণি সমবায়ের ক্ষেত্রে,
যখন একাধিক ধারককে এমনভাবে সংযোগ বা গ্রুপিং করা হয়, যাতে প্রত্যেক ধারকের ১ম প্রান্ত সমূহ একত্রে এবং ২য় প্রান্ত সমূহ একত্রে যুক্ত থাকে, তখন সে সংযোগ বা গ্রুপিংকে ধারকের প্যারালাল সংযোগ বা গ্রুপিং বলা হয়। সার্কিটের প্রয়োজনে চার্জ ধারণক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ধারকের প্যারালাল বা সমান্তরাল সংযোগ বা গ্রুপিং করা হয়। প্যারালালে সংযুক্ত প্রতিটি ধারকের আড়াআড়ি ভোল্টেজ একই এবং চার্জ ভিন্ন ভিন্ন থাকে, যা ক্যাপাসিট্যান্সের উপর নির্ভর করে।
যদি, এর চার্জ হয়,
এবং এর চার্জ হয়।
তাহলে,
বা,
বা,
বা,
প্যারালালে সংযুক্ত ধারক সমূহের প্যারালাল সমতুল্য ক্যাপাসিট্যান্স। এভাবে, সংখ্যক ধারকের জন্য প্যারালাল সমতুল্য ক্যাপাসিট্যান্স,
প্যারালাল সংযোগ বা গ্রুপিংয়ের ক্ষেত্রে,
ছোট কাজের জন্য ট্রান্সফর্মারের বিকল্প হিসাবে ধারক দিয়ে তৈরি পাওয়ার সাপ্লাই ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রে সাধারণত 105J 250V এর ধারক এবং ৪৭০ কিলো-ওহম এর রেজিস্টর ব্যবহৃত হয়। ধারক টি এসি সাপ্লাইয়ের সাথে সিরিজে সংযোগ থাকে এবং ধারকের সাথে রেজিস্টরটিও সিরিজে সংযোগ করা হয়। রেক্টিফায়ার এবং ফিল্টার এর মাধ্যমে এসি পাওয়ার কে বিশুদ্ধ ডিসি পাওয়ারে রূপান্তর করে আউটপুট গ্রহণ করা হয়। আউটপুট ভোল্টেজের উপর নির্ভর করে ধারকের ক্যাপাসিট্যান্স এবং রেজিস্টরের মান নির্ধারণ করা হয়।
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article ধারক, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.