চৌ এন-লাই (পিনইন: Zhōu Ēnlái; ইংরেজি: Zhou Enlai; ৫ মার্চ ১৮৯৮ - ৮ জানুয়ারি ১৯৭৬) ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। তিনি অক্টোবর, ১৯৪৯ থেকে জানুয়ারি, ১৯৭৬ পর্যন্ত দেশমাতৃকার সেবা করে যান। অবিসংবাদিত নেতা মাও সে তুংয়ের অধীনে তিনি কাজ করেন ও চীনের কমিউনিস্ট পার্টির ক্ষমতায় আরোহণে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। এছাড়াও, বৈদেশিক নীতি পুণর্গঠনসহ চীনা অর্থনৈতিক উত্তরণে সবিশেষ অবদান রাখেন।
চৌ এন-লাই 周恩来 | |
---|---|
গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের প্রধানমন্ত্রী | |
কাজের মেয়াদ ১ অক্টোবর, ১৯৪৯ - ৮ জানুয়ারি, ১৯৭৬ | |
রাষ্ট্রপতি | মাও সে তুং লিউ শাউকি |
ডেপুটি | ডং বাইও চেন উন লিন বিয়াও দেং জিয়াওপিং |
নেতা | মাও সে তুং (সিপিসি চেয়ারম্যান) |
উত্তরসূরী | হুয়া গুফেং |
চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সহ-সভাপতি | |
কাজের মেয়াদ ২৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৫৬ – ১ আগস্ট, ১৯৬৬ | |
কাজের মেয়াদ ৩০ আগস্ট, ১৯৭৩ – ৮ জানুয়ারি, ১৯৭৬ | |
সভাপতি | মাও সে তুং |
2nd Chairman of the National Committee Of the CPPCC | |
কাজের মেয়াদ ডিসেম্বর, ১৯৫৪ - ৮ জানুয়ারি, ১৯৭৬ | |
সম্মানীত সভাপতি | মাও সে তুং |
পূর্বসূরী | মাও সে তুং |
উত্তরসূরী | শূন্য (১৯৭৬-১৯৭৮) দেং জিয়াওপিং |
সদস্য ন্যাশনাল পিপিল'স কংগ্রেস | |
কাজের মেয়াদ ১৫ সেপ্টেম্বর, ১৯৫৪ – ৮ জানুয়ারি, ১৯৭৬ | |
সংসদীয় এলাকা | বেইজিং At-large |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | হুয়াইয়ান, চিয়াংসু, কিউইং রাজত্বকাল | ৫ মার্চ ১৮৯৮
মৃত্যু | ৮ জানুয়ারি ১৯৭৬ বেইজিং, গণপ্রজাতন্ত্রী চীন | (বয়স ৭৭)
জাতীয়তা | চীনা |
রাজনৈতিক দল | চীনের কমিউনিস্ট পার্টি |
দাম্পত্য সঙ্গী | দেং ইংচাও |
স্বাক্ষর | |
সামরিক পরিষেবা | |
যুদ্ধ | Eastern Expeditions Nanchang Uprising Encirclement Campaigns ২য় চীন-জাপান যুদ্ধ চীনের গৃহযুদ্ধ |
Zhou Enlai | |||||||||
সরলীকৃত চীনা | 周恩来 | ||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
ঐতিহ্যবাহী চীনা | 周恩來 | ||||||||
|
চিয়াংসু প্রদেশের হুয়াইয়ান এলাকায় চৌ পরিবারের প্রথম সন্তানরূপে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। চৌ পরিবারটি প্রকৃতপক্ষে চচিয়াং প্রদেশের শাওজিং এলাকা থেকে এসেছিল। কিউইং রাজত্বকালে চৌ পরিবারের ন্যায় কিছু স্বনামধন্য পরিবারের জন্যে শাওজিং এলাকাটি বিখ্যাত ছিল। পরিবারের সদস্যরা বংশপরম্পরায় সরকারের কেরাণী হিসেবে কাজ করতো।
চৌ ইনেং এবং চিয়াংসু এলাকার কর্মকর্তার কন্যা ওয়ান দম্পতির সন্তান ছিলেন চৌ এন-লাই। চৌ ইনেং তার সততা, কর্তব্যনিষ্ঠা, ভদ্রতা, বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কর্মজীবনে প্রবেশ করলেও দূর্বলচিত্তের অধিকারী হিসেবে বিবেচিত হয়েছিলেন। ব্যক্তিগত জীবনেও তিনি সফলতা লাভ করেননি। চীনের বেইজিং, শানতুং, আনহুই, শেনইয়াং, ইনার মঙ্গোলিয়া এবং সিচুয়ান প্রভৃতি এলাকায় বহুবিধ পেশায় কাজ করেছেন। চৌ এন-লাই পরবর্তীকালে উল্লেখ করেছেন যে, তার বাবা সবসময় বাড়ী থেকে দূরে থাকতেন এবং পরিবারকে সহায়তা করতে পারছিলেন না।
জন্মের কিছুকাল পরেই বাবার ছোট ভাই যক্ষারোগে পীড়িত ঝো ইগেন তার দেখাশোনার ভার নেন। এ দত্তক প্রক্রিয়া ছিল মূলতঃ উত্তরাধিকারী রক্ষার স্বার্থে। অল্প কিছুদিন পর ঝো ইগেন মারা গেলে তার বিধবা স্ত্রী চেনের কাছে বড় হতে থাকেন চৌ এন-লাই। মাদাম চেন বৃত্তিপ্রাপ্ত পরিবারের সন্তান ছিলেন এবং সনাতনী ধারায় সাহিত্যে শিক্ষালাভ করেছিলেন। চৌ এন-লাইয়ের ভাষ্য মোতাবেক, তিনি দত্তক মায়ের খুবই কাছাকাছি ছিলেন। ফলে তার কাছ থেকে চৈনিক সাহিত্য ও অপেরা সম্পর্ক আগ্রহান্বিত হন। চেন, চৌকে শৈশবকাল থেকেই পড়তে ও লেখতে সাহায্য করেন। ছয় বছর বয়সেই জনপ্রিয় উপন্যাস জিইউজি পড়তে সক্ষমতা দেখান চৌ এন-লাই। আট বছর বয়সে তিনি ওয়াটার মার্জিন, রোমান্স অব দ্য থ্রী কিংডোমস, ড্রিম অব দ্য রেড মেনসনসহ অন্যান্য চীনা প্রাচীন উপন্যাস পড়ে ফেলেন।
দক্ষ ও ঝানু কূটনীতিবিদ হিসেবে চৌ এন-লাই ১৯৪৯ থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কোরীয় যুদ্ধের পর তিনি পশ্চিমা দেশসমূহের সাথে পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা চালান। ১৯৫৪ সালে জেনেভা কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করেন এবং রিচার্ড নিক্সনকে ১৯৭২ সালে চীনে সফরে নিয়ে আসতে সমর্থ হন। যুগোপযোগী নীতি-নির্ধারণী পন্থা তৈরী করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, তাইওয়ান, ভারত এবং ভিয়েতনামের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এছাড়াও ১৯৬০ সালের পর সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথেও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে সমর্থ হন। বৈদেশিক নীতিতে তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্তের অধিকারী ব্যক্তিত্ব। মাও সে তুং এবং চৌ এন-লাই দুই ধরনের ব্যক্তিত্বের অধিকারী হলেও উভয়েই কার্যকরী কর্মপন্থার সন্নিবেশ ঘটিয়েছিলেন। ফলশ্রুতিতে আমেরিকান কূটনীতিবিদ হেনরি কিসিঞ্জার উভয়ের সাথে পৃথক বৈঠক করতে বাধ্য হয়েছিলেন।
১৯৫৩ সালে সোভিয়েত নেতা জোসেফ স্টালিনের মৃত্যুর পর চৌ এন-লাই মস্কো ভ্রমণ করেন ও শবযাত্রায় যোগ দেন। এরপূর্বে তিনি মস্কো সফরে যাননি। খুব সম্ভবতঃ বেইজিংয়ে কোন শীর্ষ পর্যায়ের নেতাসহ ১৯৪৮ সালে স্ট্যালিনের সাথে মাও সে তুংয়ের বৈঠকের প্রস্তাবনাটি নাকচ হওয়াই এর প্রধান কারণ। তাকে সোভিয়েত ইউনিয়নের নতুন নেতৃত্ব হিসেবে নিকিতা ক্রুশ্চেভ, গিওর্গি মেলেনকভ এবং লাভরেন্তি বেরিয়া'র ন্যায় শীর্ষপর্যায়ের নেতৃবর্গ স্বাগতঃ জানান। এ তিন নেতার সঙ্গে সরাসরি স্ট্যালিনের কফিন বহন করেছিলেন তিনি। তার এ সফর অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয় ও ১৯৫৪ সালে ক্রুশ্চেভ গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের ৫ম বার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে চীন ভ্রমণ করেছিলেন।
১৯৭০-এর দশকের শুরুতে চীন-আমেরিকার মধ্যেকার সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটতে শুরু করে। মাওয়ের কর্মীরা উদীয়মান অর্থনৈতিক খাত হিসেবে পেট্রোলিয়াম শিল্পে কর্মরত ছিল। তার পরামর্শে পার্টির নেতৃত্বে পেট্রোলিয়াম শিল্প বিকাশে বড় ধরনের আমেরিকান প্রযুক্তি ও কারিগরী বিদ্যায় অভিজ্ঞদের অংশগ্রহণ অনিবার্য্যতার কথা তুলে ধরা হয়। এ প্রেক্ষাপটে চীন আমেরিকার পিং-পং দলকে চীন সফরের আমন্ত্রণ জানায় যা পিং-পং কূটনীতি হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article চৌ এন-লাই, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.