আতা: উদ্ভিদের গণ

আতা হল অ্যানোনেসি (Annonaceae) পরিবারভুক্ত এক ধরনের যৌগিক ফল। এটি শরিফা এবং নোনা নামেও পরিচিত। এই ফলের ভিতরে থাকে ছোট ছোট কোষ। প্রতিটি কোষের ভেতরে থাকে একটি করে বীজ, বীজকে ঘিরে থাকা নরম ও রসালো অংশই খেতে হয়। পাকা ফলের বীজ কালো এবং কাঁচা ফলের বীজ সাদা। বীজ বিষাক্ত। এটি গুচ্ছিত ফল অর্থাৎ একটি মাত্র পুষ্পের মুক্ত গর্ভাশয়গুলো হতে একগুচ্ছ ফল উৎপন্ন হয়।

আতা
Annona squamosa
আতা: প্রজাতিসমূহ, আতা গাছ, উপকারিতা
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: উদ্ভিদ
বিভাগ: সপুষ্পক উদ্ভিদ
শ্রেণী: Magnoliids
বর্গ: Magnoliales
পরিবার: Annonaceae
গণ: Annona
প্রজাতি: A. squamosa
দ্বিপদী নাম
Annona squamosa
L.

এর বেশ কয়েকটি প্রজাতি ও প্রকরণ আছে। সবগুলোকেই ইংরেজিতে ‘কাস্টার্ড অ্যাপল’, ‘সুগার অ্যাপল’, ‘সুগার পাইন এপল’ বা ‘সুইটসপ’ (Custard-apple, Sugar-apple, sugar-pineapple or sweetsop) বলা হয়। সবগুলোকেই বাংলায় ‘আতা’, ‘শরিফা’, ‘নোনা’—এই তিনটি নামে ডাকা হয়। অঞ্চলভেদে নামের কিছু পার্থক্য আছে।

প্রজাতিসমূহ

বর্তমানে সাতটি এনোনা (Annona) গণভুক্ত ‘প্রজাতি’ এবং একটি ‘শঙ্কর জাত’ পৃথিবীজুড়ে বাড়ির আশেপাশে বা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ করা হয়। সবগুলোই সুস্বাদু ফল।

আতা: প্রজাতিসমূহ, আতা গাছ, উপকারিতা 
গাছে আতা ফল

জনপ্রিয় প্রজাতিগুলো হচ্ছে—

  • Annona squamosa —এটিই বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি জন্মে। স্বাদেও এটিই সেরা। সুমিষ্ট এই ফলটি আতা নামে বেশিরভাগ স্থানে পরিচিত। তবে কোথাও একে মেওয়া এবং কোথাও একে শরিফা বলা হয়। হিন্দিতেও একে শরিফা (शरीफा) বলা হয়। সংস্কৃত ভাষায় এর নাম সীতাফলম। এর চামড়ায় গুটি গুটি চোখ আছে।
  • Annona reticulata —এর চামড়া মসৃণ, লালচে রঙ, স্বাদে কিছুটা নোনতা। নোনাফল নামে বেশি পরিচিত; তবে কোথাও কোথাও এটিকেই আতা বলা হয়। সংস্কৃত ভাষায় একে রামফলম বলা হয়।
  • Annona senegalensis —ইংরেজিতে একে ‘আফ্রিকান কাস্টার্ড অ্যাপল’ বলা হয়। এরও চামড়া মসৃণ, হলদেটে রঙ। এটিও নোনাফল নামে বেশি পরিচিত। আফ্রিকান নোনা নামেও ডাকা হয়।
  • Annona muricata —ইংরেজিতে একে ‘সাওয়ার-সপ’ (soursop বা graviola) বলা হয়। এরও চামড়া প্রায় মসৃণ, সবুজ রঙ। এটি ‘শূল-রাম ফল’ বা ‘লক্ষ্মণ ফল’ নামেও পরিচিত। মধ্য আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল ও আফ্রিকায় এটি জন্মে।
  • Annona cherimola —এটি বাংলাদেশে কমই জন্মে। এর চামড়াও অনেকটা মসৃণ। হিন্দিতে একে হনুমান ফল বলা হয়।

এছাড়া ‘থাই লেসার্ড’ এবং ‘কাম্পং মভ’ (Thai-Lessard, Kampong-Mauve) নামে এর দুটি প্রকরণ (variety) দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় পাওয়া যায়।

আতা গাছ

আতার আদিবাস ভারত। বাংলাদেশভারতে এটি বসতবাড়ীর আঙিনায় এবং বনে-জঙ্গলে জন্মে থাকে। তবে থাইল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ামার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এর বাণিজ্যিক চাষাবাদ হয়ে থাকে। আতা গাছ বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ। গাছের আকার খুব বড় নয় ; উচ্চতায় ৩ থেকে ৫ মিটার। শীতকালে এর পাতা ঝরে যায় এবং বসন্তকালে নতুন পাতা গজায়, ফুল ধরে। পাতার আকৃতি বল্লমের মতো, অগ্রভাগ সরু। এর ফুল দেখতে কাঁঠালি চাঁপার মতো যার রঙ হালকা সবুজ থেকে সবুজাভ হলুদ হয়ে থাকে। কাঁচা ফল খাওয়া যায় না। বেলে দো-আঁশ মাটিতে আতা গাছ ভাল জন্মে । বীজ থেকে এর চারা করা হয়। এপ্রিল থেকে জুন মাসের মধ্যে ফুল ধরে এবং ৪/৫ মাসের মধ্যে আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে ফল পেকে যায়। আতাফল হৃৎপিণ্ড আকৃতির হয়ে থাকে। এতে প্রচুর পরিমাণে আমিষ ও শর্করা জাতীয় খাদ্যোপদান রয়েছে। পাকা আতার শাঁস মিষ্টি হয়ে থাকে। খাওয়ার সময় জিভে চিনির মতো মিহি দানা দানা লাগে। এর কিছু ভেষজ গুণ রয়েছে। যেমন পাকা আতার শাঁস বলকারক, বাত-পিত্তনাশক ও বমনরোধক।

পাকা ফল সুমিষ্ট হওয়ার কারণে অনেক সময়ই পোকার সংক্রমণ হয়, সাদা রঙের পোকা দ্বারা আক্রান্ত হয় ফল।

উপকারিতা

এর খাদ্যআঁশ হজমশক্তি বৃদ্ধি করে।

ঔষধি গুণ

অপুষ্টিজনিত সমস্যায় আতাফলের রস বেশ উপকারী।

ছবি গ্যালারি

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Tags:

আতা প্রজাতিসমূহআতা গাছআতা উপকারিতাআতা ঔষধি গুণআতা ছবি গ্যালারিআতা তথ্যসূত্রআতা বহিঃসংযোগআতা

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

বাংলা ভাষা আন্দোলনসাদিকা পারভিন পপিওজোন স্তরবাংলা ভাষাঅভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়আবহাওয়ামহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্রপায়ুসঙ্গমভৌগোলিক নির্দেশকমানব শিশ্নের আকারকবিতাঘনীভবনতৃণমূল কংগ্রেসশচীন তেন্ডুলকরবাংলাদেশী টাকাদুবাইবাংলাদেশের প্রধান বিচারপতিবিটিএসক্রোমোজোমভারতব্রহ্মপুত্র নদমানিক বন্দ্যোপাধ্যায়রাজবাড়ী জেলাফেরেশতারক্তইরানতাইওয়ানশিল্প বিপ্লববঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলগঙ্গা নদীনারায়ণগঞ্জ জেলাবাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়উমাইয়া খিলাফতপাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন, ১৯৭০পদ (ব্যাকরণ)দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনশনি (দেবতা)আল্লাহঅশ্বত্থপ্রাচীন ভারতপদ্মশ্রীআদমপশ্চিমবঙ্গের জেলাহিসাববিজ্ঞানছয় দফা আন্দোলনগীতাঞ্জলিবাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকাইন্টার মিলানজাতিচতুর্থ শিল্প বিপ্লবশ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়বিজ্ঞাপনযুক্তফ্রন্টউদ্ভিদসংস্কৃত ভাষাযৌন প্রবেশক্রিয়াচিয়া বীজভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনজ্ঞানসজনেমনোবিজ্ঞানকুরআনের সূরাসমূহের তালিকাকল্কিফিলিস্তিনকালোজিরাবৃষ্টিমৌসুমি বায়ুশরীয়তপুর জেলাব্যাংকলালবাগের কেল্লাসেলজুক সাম্রাজ্যনামবিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিমবাংলাদেশের অর্থনীতি১৮৫৭ সিপাহি বিদ্রোহজসীম উদ্‌দীনপর্বত🡆 More