১৪৪ ধারা

১৪৪ ধারা হল বাংলাদেশের ফৌজদারী কার্যবিধি, ১৮৯৮-এর একটি ধারা। ভারতীয় ফৌজদারী কার্যবিধির ১৪৪ ধারার সাথে এক ও অভিন্ন। এই আইনের ক্ষমতাবলে কোনো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কোন এলাকায় একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সভা-সমাবেশ করা, আগ্নেয়াস্ত্র বহনসহ যেকোন কাজ নিষিদ্ধ করতে পারেন। জরুরি অবস্থা বা সম্ভাব্য বিপজ্জনক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য এই আইনের প্রয়োগ করা হয়। ১৯৭৬ সালে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ গঠনের পর শুধু মহানগরী এলাকার জন্য এই বিধান রহিত করে নতুন বিধান চালু করা হয়েছে।

ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা

কোন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা সরকার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে সন্তোষজনক কারণ বিদ্যমান থাকলে তিনি লিখিত আদেশ দ্বারা কোন ব্যক্তি বা জনসাধারণকে যেকোন কাজ করা থেকে বিরত থাকতে অথবা তাদের দখলে থাকা সম্পত্তিতে কোন নির্দেশিত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আদেশ দিতে পারেন। এই আদেশের উদ্দেশ্য হতে হবে কোন ব্যক্তির বা জনগণের জীবন, স্বাস্থ্য বা নিরাপত্তার ক্ষতি হওয়ার ঝুঁকি দূর করা অথবা জনশৃঙ্খলা বা জনশান্তি রক্ষা করা। নোটিস প্রদানের মতো সময় বা পরিস্থিতি না থাকলে এই আদেশ একতরফা হতে পারে। ১৪৪ ধারা প্রয়োগ করা হলে কোন সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ঐ আদেশ বাতিল বা পরিবর্তন করার আবেদন করতে পারেন। সেক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেট এরূপ ব্যক্তিকে ব্যক্তিগত শুনানীর সুযোগ দিয়ে আদেশটি পরিবর্তন বা বাতিল করতে পারেন অথবা আবেদন নামঞ্জুর করতে পারেন। ১৪৪ ধারার আদেশ দুই মাসের বেশি সময় ধরে বলবত রাখতে হলে সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন জারী করতে হবে।

মহানগরী এলাকায় প্রয়োগ

১৯৭৬ সালে ঢাকা মহানগর পুলিশ গঠনের পর মহানগর এলাকায় ১৪৪ ধারা প্রয়োগের ক্ষমতা ম্যাজিস্ট্রেটের বদলে পুলিশ কমিশনারের কাছে দেয়া হয়। তাই মহানগর এলাকায় ১৪৪ ধারা প্রযোজ্য নয়। এক্ষেত্রে ঢাকা মহানগর পুলিশ অধ্যাদেশের ২৮ ধারা প্রদত্ত ক্ষমতাবলে পুলিশ কমিশনার অস্ত্র বহন ও স্লোগান প্রদান ইত্যাদি নিষিদ্ধ করে আদেশ দিতে পারেন।

অপব্যবহার

১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ শাসকদের দ্বারা চালুকৃত ১৪৪ ধারার বিধান বিভিন্ন সময়ে বিরোধী মত দমনে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবীতে ছাত্রদের আন্দোলন দমন করতে ১৪৪ ধারা জারী করা হয় এবং এই ধারা ভঙ্গ করায় পুলিশ গুলি করে সালাম, বরকত, রফিক-সহ আরো অনেককে হত্যা করে। ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান দমনে ১৪৪ ধারা প্রয়োগ করা হয় এবং এই ধারা ভঙ্গের কারণে শহীদ মোহাম্মদ শামসুজ্জোহা, শহীদ আসাদ-সহ অনেক প্রতিবাদী মানুষ নিহত হন। স্বাধীন বাংলাদেশেও বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের দমনে ১৪৪ ধারার অপব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। মানবাধিকার সংস্থা অধিকার এর প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০১৩ সালে বাংলাদেশে ৫৪ বার ১৪৪ ধারা জারী করা হয়েছে যার অধিকাংশই বিরোধী দলসমূহের সমাবেশকে নিষিদ্ধ করেছে।

তথ্যসূত্র

Tags:

১৪৪ ধারা ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা১৪৪ ধারা অপব্যবহার১৪৪ ধারা তথ্যসূত্র১৪৪ ধারাবাংলাদেশবাংলাদেশের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটভারতীয়

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

হোলিকা দহনইন্দোনেশিয়াবৌদ্ধধর্মঅর্থ (টাকা)শাকিব খান অভিনীত চলচ্চিত্রের তালিকাব্রিক্‌সকম্পিউটার কিবোর্ডযাকাতের নিসাবওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েববাংলাদেশের সংবিধানের সংশোধনীসমূহবাংলাদেশের জেলাসেজদার আয়াতআওরঙ্গজেবগুগল ম্যাপসঅস্ট্রেলিয়া (মহাদেশ)ভরিবাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়দোলযাত্রানিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রসৌরজগৎদৌলতদিয়া যৌনপল্লিপানিঋতুহরমোনরাজশাহীযুক্তরাজ্যবাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীদের তালিকাআসিফ নজরুলরঙের তালিকাতিতুমীরবাংলাদেশ আওয়ামী লীগবাংলাদেশের জনমিতিপাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারইতিহাসদেশ অনুযায়ী ইসলামচ্যাটজিপিটিফিলিস্তিনের ইতিহাসঢাকাবেদমালয়েশিয়াশাকিব খানস্পেন জাতীয় ফুটবল দলফিফা বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংজেলা প্রশাসকশশাঙ্কপায়ুসঙ্গমপীযূষ চাওলাআইজাক নিউটনমিশনারি আসনবাংলাদেশ আনসারস্ক্যাবিসশাহরুখ খানমহেন্দ্র সিং ধোনিসিলেট সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ডসমূহএইচআইভিবাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকাভারত বিভাজনগাঁজা (মাদক)উসমানীয় সাম্রাজ্যবাংলাদেশের প্রশাসনিক অঞ্চলবাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলসূর্যগ্রহণমুহাম্মাদের সন্তানগণ২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপদৈনিক প্রথম আলোলোকসভাপেশাভূমি পরিমাপমানব শিশ্নের আকারতৃণমূল কংগ্রেসবঙ্গবন্ধু-১বাংলাদেশী টাকাবাংলা সংখ্যা পদ্ধতিরুকইয়াহ শারইয়াহটিম ডেভিডডুগংসার্বিয়া🡆 More