সিটি হান্টার

সিটি হান্টার (জাপানি: シティーハンター, হেপবার্ন: Shitī Hantā) হলো সুকাসা হোজো কর্তৃক লিখিত ও চিত্রিত একটি জাপানি মাঙ্গা ধারাবাহিক। এটি ১৯৮৫ থেকে ১৯৯১ পর্যন্ত জাপানের সাপ্তাহিক শৌনেন জাম্প ম্যাগাজিনে ধারাবাহিকভাবে এটি প্রকাশিত হয়। প্রকাশক প্রতিষ্ঠান শুয়েশা এগুলো ৩৫টি ট্যাঙ্কোবন খণ্ডেও প্রকাশ করে। ১৯৮৭ সালে সানরাইজ স্টুডিও এই মাঙ্গা অনুসারে টেলিভিশনে একটি অ্যানিমে ধারাবাহিক প্রকাশ করে। অ্যানিমে ধারাবাহিকটি এশিয়া এবং ইউরোপের বেশকিছু দেশে জনপ্রিয় হয়েছিল।

সিটি হান্টার
সিটি হান্টার
শুয়েশা কর্তৃক জাপানে প্রথম প্রকাশিত ট্যাঙ্কোবন খণ্ডের প্রচ্ছদ, যেখানে রিও সায়েবা এবং কাওরি মাকিমুরা রয়েছে
シティーハンター
(Shitī Hantā)
ধরনঅ্যাকশন, গোয়েন্দা, হাস্যরসাত্মক
মাঙ্গা
লেখকসুকাসা হোজো
প্রকাশকশুয়েশা
ইংরেজি প্রকাশক
গুটসুন! এন্টারটেইনমেন্ট (অসম্পূর্ণ, বিলুপ্ত)
মুদ্রণজাম্প কমিক্স
ম্যাগাজিনসাপ্তাহিক শৌনেন জাম্প
ইংরেজি ম্যাগাজিন
রায়জিন কমিক্স
জনতাত্ত্বিকশৌনেন
আসল চলিত২৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৫১৯ নভেম্বর ১৯৯১
খণ্ড৩৫ (খণ্ডের তালিকা)
অ্যানিমে টেলিভিশন ধারাবাহিক
পরিচালককেনজি কোডামা
স্টুডিওসানরাইজ
লাইসেন্সকারী
ডিস্কোটেক মিডিয়া
মূল নেটওয়ার্কইয়োমিউরি টিভি
ইংরেজি নেটওয়ার্ক
আনিমে নেটওয়ার্ক
অ্যানিমেক্স
কেটিইএইচ
আসল চালিত ৬ এপ্রিল ১৯৮৭ ২৮ মার্চ ১৯৮৮
পর্ব৫১ (পর্বের তালিকা)
অ্যানিমে টেলিভিশন ধারাবাহিক
সিটি হান্টার ২
পরিচালককেনজি কোডামা
স্টুডিওসানরাইজ
লাইসেন্সকারী
ডিস্কোটেক মিডিয়া
মূল নেটওয়ার্কইয়োমিউরি টিভি
ইংরেজি নেটওয়ার্ক
অ্যানিম্যাক্স
আসল চালিত ২ এপ্রিল ১৯৮৮ ১৪ জুলাই ১৯৮৯
পর্ব৬৩ (পর্বের তালিকা)
অ্যানিমে চলচ্চিত্র
.৩৫৭ ম্যাগনাম
পরিচালককেনজি কোডামা
স্টুডিওসানরাইজ
লাইসেন্সকারী
ডিস্কোটেক মিডিয়া
মুক্তি১৭ জুন ১৯৮৯
চলন সময়৮৭ মিনিট
অ্যানিমে টেলিভিশন ধারাবাহিক
সিটি হান্টার ৩
পরিচালককেনজি কোডামা
স্টুডিওসানরাইজ
লাইসেন্সকারী
ডিস্কোটেক মিডিয়া
মূল নেটওয়ার্কইয়োমিউরি টিভি
ইংরেজি নেটওয়ার্ক
অ্যানিম্যাক্স
আসল চালিত ১৫ অক্টোবর ১৯৮৯ ২১ জানুয়ারি ১৯৯০
পর্ব১৩ (পর্বের তালিকা)
অ্যানিমে চলচ্চিত্র
বে সিটি ওয়্যার্স
পরিচালককেনজি কোডামা
স্টুডিওসানরাইজ
লাইসেন্সকারী
ডিস্কোটেক মিডিয়া
মুক্তি২৫ আগস্ট ১৯৯০
চলন সময়৪৫ মিনিট
অ্যানিমে চলচ্চিত্র
মিলিয়ন ডলার কন্সপাইরেসি
পরিচালককেনজি কোডামা
স্টুডিওসানরাইজ
লাইসেন্সকারী
ডিস্কোটেক মিডিয়া
মুক্তি২৫ আগস্ট ১৯৯০
চলন সময়৪৩ মিনিট
অ্যানিমে টেলিভিশন ধারাবাহিক
সিটি হান্টার '৯১
পরিচালককিয়োশি এগামি
স্টুডিওসানরাইজ
লাইসেন্সকারী
ডিস্কোটেক মিডিয়া
মূল নেটওয়ার্কনিপ্পন টিভি
ইংরেজি নেটওয়ার্ক
অ্যানিম্যাক্স
আসল চালিত ২৮ এপ্রিল ১৯৯১ ১০ অক্টোবর ১৯৯১
পর্ব১৩ (পর্বের তালিকা)
অ্যানিমে টেলিভিশন চলচ্চিত্র
দ্য সিক্রেট সার্ভিস
পরিচালককেনজি কোডামা
স্টুডিওসানরাইজ
লাইসেন্সকারী
ডিস্কোটেক মিডিয়া
মূল নেটওয়ার্কনিপ্পন টিভি
ইংরেজি নেটওয়ার্ক
আনিমে নেটওয়ার্ক
মুক্তি৫ জানুয়ারি ১৯৯৬
চলন সময়৯০ মিনিট
অ্যানিমে টেলিভিশন চলচ্চিত্র
গুডবাই মাই সুইটহার্ট
পরিচালককাজুও ইয়ামাজাকি
স্টুডিওসানরাইজ
লাইসেন্সকারী
ডিস্কোটেক মিডিয়া
মূল নেটওয়ার্কনিপ্পন টিভি
মুক্তি২৫ এপ্রিল ১৯৯৭
চলন সময়৮৮ মিনিট
অ্যানিমে টেলিভিশন চলচ্চিত্র
ডেথ অব দ্য ভিসিয়াস ক্রিমিনাল রিও সায়েবা
পরিচালকমাসাহারু ওকুওয়াকি
স্টুডিওসানরাইজ
লাইসেন্সকারী
ডিস্কোটেক মিডিয়া
মূল নেটওয়ার্কনিপ্পন টিভি
মুক্তি২৩ এপ্রিল ১৯৯৯
চলন সময়৯১ মিনিট
অ্যানিমে চলচ্চিত্র
দ্য মুভি: শিনজুকু প্রাইভেট আইজ
পরিচালককেনজি কোডামা
লেখকইয়োচি কাতো
সঙ্গীততাকু ইওয়াসাকি
স্টুডিওসানরাইজ
লাইসেন্সকারী
ডিস্কোটেক মিডিয়া
মুক্তি৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
চলন সময়৯৫ মিনিট
অভিযোজিত মাধ্যম এবং স্পিন-অফ
সিটি হান্টার আনিমে এবং মাঙ্গা প্রবেশদ্বার

সিটি হান্টার বিভিন্ন দেশের একাধিক অভিযোজিত মাধ্যম ও স্পিন-অফের সমন্বয়ে একটি মাধ্যম ফ্র্যাঞ্চাইজি গড়ে তুলেছে। এই ফ্র্যাঞ্চাইজিতে রয়েছে চারটি অ্যানিমে টেলিভিশন ধারাবাহিক, তিনটি বিশেষ অ্যানিমে টেলিভিশন অনুষ্ঠান, দুটি মূল ভিডিও অ্যানিমেশন, একাধিক পূর্ণদৈর্ঘ্য অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্র (২০১৯-এর ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত চলচ্চিত্রসহ), একাধিক লাইভ-অ্যাকশন চলচ্চিত্র (জ্যাকি চ্যান অভিনীত হংকংয়ের একটি ও ফ্রান্সের অন্য একটি চলচ্চিত্র), ভিডিও গেম এবং একটি সরাসরি মারপিটধর্মী কোরীয় টিভি নাটক। অ্যাঞ্জেল হার্ট নামে এর একটি স্পিন-অফ মাঙ্গাও রয়েছে। অ্যাঞ্জেল হার্ট নিয়ে পরবর্তীতে অ্যানিমে টেলিভিশন ধারাবাহিক, একটি ফিলিপিনীয় লাইভ-অ্যাকশন টিভি নাটক এবং সরাসরি মারপিটধর্মী জাপানি টিভি নাটক নির্মিত হয়েছে।

পটভূমি

সিটি হান্টার “রিও সায়েবা” নামের এক “সুইপার” চরিত্রের গল্প ঘিরে নির্মিত। রিও সায়েবা সবসময় সুন্দরী মেয়েদের পেছনে পেছনে ঘোরে। সে হিদেইউকি মাকিমুরা নামক একজন ব্যক্তিগত গোয়েন্দাকে সাথে নিয়ে টোকিও শহরে অপরাধমূলক কার্যক্রম বন্ধ করতে কাজ করে। তাদের এই ব্যবসাটির নাম “সিটি হান্টার”। এটি গোপন অর্থের বিনিময়ে প্রদত্ত একটি সেবা। শিনজুকু স্টেশনের ব্ল্যাকবোর্ডে ইংরেজি “এক্স ওয়াই জেড” অক্ষর তিনটি লিখে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে হয়।

একদিন হিদেইউকিকে মেরে ফেলা হয়। রিওর ওপরে হিদেউকির বোন কাওরিকে দেখার দায়িত্ব পড়ে। কাওরি চরিত্রটি কিছুটা পুরুষালি গোছের। কাওরি পরবর্তীতে রিওর সহযোগী হিসেবে যুক্ত হয়। তবে কাওরি খুবই সন্দেহপ্রবণ ও হিংসুটে প্রকৃতির। রিও যখন অন্য মেয়ের পেছনে ঘোরে, কাওরি প্রায়শই তখন তার বড় হাতুড়িটি দিয়ে তাকে আঘাত করে। মাঙ্গাতে ঘটনার অন্তরালে প্রতিটি মিশনে রিও ও কাওরির পারস্পরিক সহযোগিতা এবং তাদের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্কের গল্প তুলে ধরা হয়েছে।

চরিত্র

    রিও সায়েবা (冴羽 獠, সায়েবা রিও)
    কণ্ঠ দিয়েছেন: আকিরা কামিয়া (জাপানি); মার্টিন ব্ল্যাকার; স্টিফেন ফু (ইংরেজি)
    রিও এই মাঙ্গার প্রধান চরিত্র। মাত্র তিন বছর বয়সে মধ্য আমেরিকার একটি বিমান দুর্ঘটনায় রিও ছিল একমাত্র বেঁচে যাওয়া মানুষ। রিও তার আসল পরিচয় সম্পর্কে অজ্ঞাত ছিল। মধ্য আমেরিকার গোরিলা যোদ্ধারা তাকে বড় করে তোলে। যুদ্ধ শেষে রিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এবং পরবর্তীতে টোকিওতে চলে যায়।
    জাপানে সে হিদেইউকি মাকিমুরার সাথে “সিটি হান্টার” দল গড়ে তোলে। হিদেইউকির মৃত্যুর পর তার বোন কাওরি রিওর সহযোগী হিসেবে যোগ দেয়। দক্ষ বন্দুক যোদ্ধা হিসেবে আখ্যাত রিও নিশানা অনুযায়ী নির্দিষ্ট বিন্দুতে গুলি চালাতে খুবই দক্ষ বলে জানা যায়। তার পছন্দের অস্ত্র হলো কোল্ট পাইথন .৩৫৭ ম্যাগনাম
    রিও তার সহকর্মী হায়াতো ইজুইনের ডাকনাম রাখে উমিবজু। পক্ষান্তরে উমিবজু রিওর নাম রাখে “দ্য স্ট্যালিয়ন অব শিনজুকু” (新宿の種馬, শিনজুকু নো তনুমা) (এটি একটি বিদ্রূপাত্মক নাম; কারণ রিও ছিল সত্যিকারের বদস্বভাবের একজন ব্যক্তি, যে তার দেখা প্রত্যকে সুন্দরীকে ধরার চেষ্টা করতো এবং প্রতিবারই ব্যর্থ হতো)। রিও রিভলভার, আধা-স্বয়ংক্রিয় বন্দুক, মেশিন-পিস্তল, রাইফেল, কার্বাইন ও ক্রসবোধারী একজন দক্ষ মার্কসম্যান। সে খালি হাতে যুদ্ধ করতেও পটু। প্রয়োজনের সময় রিও একজন সত্যিকারের সাহসী যোদ্ধার মতো অগ্রসর হয়। তার ব্যবহৃত গাড়ি হলো মিনি।
    কাওরি মাকিমুরা (槇村 香, মাকিমুরা কাওরি)
    কণ্ঠ দিয়েছেন: কাজু ইকুরা (জাপানি); পামেলা রিবন; মরগান গ্যারেট (ইংরেজি)
    কাওরি হল রিও সায়েবার সহযোগী। সে রিওর মক্কেলদের সাথে যোগাযোগ ও অন্যান্য ব্যবস্থাপনার কাজ করে থাকে। মেয়েদের স্কার্ট ধরতে রিওর অভ্যাসকে সে সবচেয়ে বেশি অপছন্দ করে। সবসময় একে অপরের সাথে ঝগড়া-মারামারিতে লিপ্ত থাকলেও, মিশনে তারা চমৎকার দল তৈরি করে। সে হিদেউকির পালক বোন। তার আসল নাম কাওরি হিসাইশি (久石 香, হিসাইশি কাওরি)
    হিদেইউকি মাকিমুরা (槇村 秀幸, মাকিমুরা হিদেইউকি)
    কণ্ঠ দিয়েছেন: হিদেউকি তানাকা
    হিদেউকি কাওরির পালক বড় ভাই। ধারাবাহিকের শুরুতে সে রিওর সহযোগী ছিল। কাওরি তার রক্তের সম্পর্কের বোন নয়। কাওরি যখন ছোট ছিল, হিদেইউকির বাবা তখন তাকে দত্তক নেন। সে ছিল ন্যায়পরায়ণ একজন পুলিশ গোয়েন্দা। সন্ত্রাসীদের হাতে মারা যাওয়ার পর কাওরি তার জায়গা করে নেয়। মৃত্যুর আগে রিওর কাছে তার শেষ ইচ্ছা ছিল সে যেন তার বোনকে দেখে রাখে।
    উমিবজু (海坊主)
    কণ্ঠ দিয়েছেন: টেশো গেন্ডা (জাপানি); লু পেরিম্যান; ক্রিস রেজার (ইংরেজি)
    উমিবজু টোকিওতে কাজ করা আরেকজন “সুইপার”। মধ্য আমেরিকার সংঘাতের সময় উমিবজু ছিল রিওর স্পেশাল ফোর্সের শত্রু। একে অপরের বিরোধী হওয়া সত্ত্বেও দুজন দুজনের খুব ভালো বন্ধু এবং তারা একে অপরকে সম্মান করে। উমিবজু সেনাবাহিনীতে তার প্রাক্তন সহযোদ্ধা ও প্রেমিকা মিকির “ক্যাটস আই ক্যাফে”-তে পরিচারক হিসেবে কাজ করে। তার আসল নাম “হায়াতো ইজুইন” (伊集院 隼人, ইজুইন হায়াতো) হলেও, সেনাবাহিনীতে তার নাম হলো “ফ্যালকন” (ファルコン, ফারুকন)। কানজি হায়াকে হায়াবুসা (জাপানি ভাষায় “ফ্যালকন”) হিসেবেও পড়া যেতে পারে। তবে তার উমিবজু ডাকনামটি রিওর দেওয়া। তার প্রিয় অস্ত্র হলো এসঅ্যান্ডডাব্লিউ এম২৯ .৪৪ ম্যাগনাল ছয় ইঞ্চি রিভলবার, সাকো-ডিফেন্স এম৬০ মেশিন গান (মাঝেমধ্যে সে এম২৪৯ ব্যবহার করে) এবং এম১৬ বাজুকা। তার ভয়ঙ্কর চেহারা সত্ত্বেও বিড়ালছানাদের প্রতি ভীতি রয়েছে। সে মহিলাদের প্রতি খুব লাজুক এবং রিওর চেয়ে অনেক বেশি উদার। মধ্য আমেরিকায় গেরিলাযোদ্ধা রিওর সাথে ভাড়াটে যোদ্ধা হিসেবে কাজ করা উমিবজুর একটি লড়াই হয়েছিল। লড়াইয়ের ফলে উমিবজুর দৃষ্টিশক্তি খুবই দুর্বল হয়ে পড়ে। এরপর থেকে উমিবজু এর শেষ হিসেবে রিওর সাথে একটি দ্বন্দ্বযুদ্ধ করতে চাইতো। ধারাবাহিকের শেষ নাগাদ সে চিরতরে অন্ধ হয়ে যাবে এবং তাকে শিখতে হবে যে কীভাবে অন্য চার ইন্দ্রিয় ব্যবহার করে লড়তে হয়। সে ঠিক করে এই ব্যাপারটা শেষ না করে সে অবসর নেবে না। পরবর্তীতে রিওর পালক পিতা, প্রাক্তন গেরিলা যোদ্ধা ও বর্তমান মাদক সম্রাট শিন কাইবারা জাপানে আসে। তার মাদক তরুণকালে উমিবজু ও তার ইউনিটের উপর আক্রমণ করতে রিওকে দেওয়া হয়েছিল। রিওর পরিচিত ও জঙ্গলে তার আরেক পিতৃতুল্য ব্যক্তির মেয়ে ব্লাডি মেরির কাছে থেকে এটা শোনার পর উমিবজু কাইবারার বিরুদ্ধে রিও ও কাওরির সাথে যোগ দেয়। গল্পের শেষদিকে সে মিকিকে বিয়ে করে। কিন্তু রিওর নতুন শত্রুরা মিকিকে গুলি করে। মিকি মারা যাবে না এই বিশ্বাস রেখে উমিবজু আবার নতুন করে লড়াইয়ে প্রবেশ করে।
    উমিবজু হলো জাপানি রূপকথার একটি ইয়োকাই (আত্মা)। বলা হয়, বিদেশি কেউ তার সাথে কথা বললে সে জাহাজ উল্টে‌ দেয়। তাকে বজু-এর (বৌদ্ধ সন্ন্যাসী) ন্যায় টাকমাথার এক ব্যক্তি হিসেবে বর্ণনা করা হয়। তার চারিত্রিক নাম উমি-এর অর্থ সমুদ্র।
    সায়কো নোগামি (野上 冴子, নোগামি সায়কো)
    কণ্ঠ দিয়েছেন: ইয়োকো আসাগামি (জাপানি); জানা ব্রকম্যান; মারিসা লেন্টি (ইংরেজি)
    সায়কো টোকিও পুলিশের গোয়েন্দা ও রেইকার বড় বোন। সে প্রায়ই সিটি হান্টার দলকে পুলিশি কাজ প্রদান করে। রিও সর্বদা তার কাছে সায়কোকে সাহায্যের ফলে জমে থাকা বকেয়ার লম্বা তালিকা রাখে। সায়কো সবসময় এগুলো না দিয়েই পালিয়ে যায়।
    রেইকা নোগামি (野上 麗香, নোগামি রেইকা)
    কণ্ঠ দিয়েছেন: ইয়োশিনো তাকামোরি (জাপানি); ক্যাথরিন ক্যাটমুল (ইংরেজি)
    রেইকা হল সায়কোর ছোট বোন।

মাধ্যম

মাঙ্গা

সিটি হান্টার ধারাবাহিকটি সাপ্তাহিক শৌনেন জাম্প-এ ১৯৮৫ সালের ১৩তম সংখ্যা থেকে শুরু হয়ে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত প্রকাশিত হয়। ১৯৮৬ সালের ১৫ জানুয়ারি থেকে ১৯৯২ সালের ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত শুয়েশা জাম্প কমিক্স-এর অধীনে ৩৫টি নির্বাচিত খণ্ডে এটি প্রকাশ করে। এই খণ্ডগুলোতে ধারাবাহিকের মূল গল্প তুলে ধরার পরিবর্তে ৫৫টি পৃথক পর্বে স্বতন্ত্র কিছু গল্প প্রকাশ করা হয়, যার প্রতিটি কাহিনি আলাদা আলাদা নায়িকা-কেন্দ্রিক। শুয়েশা ১৯৯৬ সালের ১৮ জুন থেকে ১৯৯৭ সালের ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত ১৮ খণ্ডের একটি সংস্করণে ধারাবাহিকভাবে মাঙ্গাটি প্রকাশ করে। তোকুমা শোতেন ২০০৩ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে ২০০৫ সালের ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত ৩২ খণ্ডে মাঙ্গার একটি তৃতীয় সংস্করণ প্রকাশ করে। ধারাবাহিকটির ত্রিশতম বার্ষিকী উপলক্ষে তোকুমা শোতেন ১২ খণ্ডের সিটি হান্টার এক্সওয়াইজেড সংস্করণ নামে একটি চতুর্থ সংস্করণ প্রকাশ করতে শুরু করে। ২০১৫ সালের ১৮ জুলাই এই ধারাবাহিকের প্রথম খণ্ড প্রকাশিত হয়। ধারাবাহিকের অষ্টম খণ্ডটি ২০১৫ সালের ২০ অক্টোবর প্রকাশিত হয়েছে।

তাকেহিকো ইনোয়ি ধারাবাহিকটির সহকারী ছিলেন।

আশির দশকে মার্কিন কমিক বাজারে সিটি হান্টারের লাইসেন্স করিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা দেখা যায়। কিন্তু অঙ্কনশিল্পী হোজো ডান থেকে বাম পদ্ধতিতে মাঙ্গা প্রকাশের প্রতি জোর দেন। ২০০২ সালে কোয়ামিক্স গুটসুন! এন্টারটেইনমেন্ট নামে একটি জোট কোম্পানি গড়ে তোলে। সিটি হান্টার ছিল তাদের রাইজিন কমিক্স সংকলনের একটি ফ্ল্যাগশিপ শিরোনাম। রাইজিনের জন্য তারা সাপ্তাহিকের পরিবর্তে মাসিক পদ্ধতিতে প্রকাশকে বেছে নেয়। কিন্তু ৪৬টি সংখ্যার পর এটির প্রকাশ বন্ধ হয়ে যায়।

আইফোনে রেইনবো অ্যাপসের একটি অ্যাপ্লিকেশনে জাপানি ভাষায় মাঙ্গা ধারাবাহিকটি পড়া যায়।

২০০১ সালে হোজো অ্যাঞ্জেল হার্ট শিরোনামে সিটি হান্টারের একটি স্পিন-অফ ধারাবাহিক শুরু করেন। এর কাহিনি সিটি হান্টারের সমান্তরাল একটি বিশ্বে সংঘটিত হয়, যেখানে কাওরি মাকিমুরা চরিত্রটি মারা যায় এবং তার হৃদপিণ্ড মাঙ্গার প্রধান চরিত্র শিয়াং-ইংয়ের দেহে প্রতিস্থাপন করা হয়।

২০১৯ সালের ২৫ জুলাই তোকুমা শোতেন তাদের মাসিক কমিক জেনন পত্রিকায় কিয়ো কারা সিটি হান্টার নামের আরেকটি স্পিন-অফ মাঙ্গা প্রকাশ করা শুরু করে। এর গল্প ৪০ বছর বয়সী একজন অবিবাহিত মহিলাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়। সে রিও সায়েবা ও সিটি হান্টার মাঙ্গার ভক্ত ছিল। হঠাৎ একটি ট্রেন দুর্ঘটনায় সে মারা যায় এবং পুনর্জন্মের মাধ্যমে সিটি হান্টারের জগতে প্রবেশ করে।

অ্যানিমে

সানরাইজের প্রযোজনা ও কেনজি কোডামার পরিচালনায় নির্মিত সিটি হান্টার অ্যানিমে ধারাবাহিক ইয়োমিউরি টেলিভিশনে সম্প্রচারিত হয়। ১৯৮৭ সালের ৬ এপ্রিল থেকে ১৯৮৮ সালের ২৮ মার্চ পর্যন্ত সিটি হান্টার অ্যানিমের ৫১টি পর্ব প্রচারিত হয় এবং ১০টি ভিএইচএস ক্যাসেট আকারে প্রকাশ করা হয়। এরপর ৮ এপ্রিল থেকে ১৪ জুলাইয়ের মধ্যে ৬৩ পর্বের সিটি হান্টার ২ সম্প্রচারিত হয়। ১৯৮৮ সালের আগস্ট মাস থেকে ১৯৯০ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত এটি ১০টি ভিএইচএস ক্যাসেটে প্রকাশিত হয়। ১৯৮৯ সালের ১৫ অক্টোবর থেকে সিটি হান্টার ৩-এর সম্প্রচার শুরু হয় এবং ১৯৯০ সালের ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত এর ১৩টি পর্ব প্রচারিত হয়। নভেম্বর ১৯৯০ থেকে এপ্রিল ১৯৯১-এর মধ্যে ৬টি ভিএইচএস ক্যাসেটে প্রকাশিত হয়। সিটি হান্টার '৯১ নামের আরেকটি ধারাবাহিক ১৯৯১ সালের ২৮ এপ্রিল থেকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত সম্প্রচার করা হয় এবং ১৯৯২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত ৬টি ভিএইচএস ক্যাসেট আকারে প্রকাশ করা হয়। সম্পূর্ণ অ্যানিমে ধারাবাহিকটি পরবর্তীতে ২০টি ভিডিও ক্যাসেট সংকলনে আবারও প্রকাশ করা হয়।

২০০৫ সালের ৩১ আগস্ট [[অ্যানিপ্লেক্স] জাপানে সিটি হান্টার কমপ্লিট নামে ৩২ ডিস্কের একটি ডিভিডি বাক্সের সেট প্রকাশ করে। সেটটিতে সবগুলো ধারাবাহিক, বিশেষ টেলিভিশন ভিডিও, অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্রসহ রিও ও কাওরির চিত্র সংবলিত একটি ছবির বই রয়েছে। পরবর্তীতে ২০০৭ সালের ১৯ ডিসেম্বর থেকে ২০০৮ সালের ২৭ আগস্ট পর্যন্ত চারটি ধারাবাহিকের ২৬টি ডিস্ক পৃথকভাবে আবারও প্রকাশিত হয়। এই বাক্সের প্রায় ৩০,০০০ সেট বিক্রি হয়েছিল, জাপানে যার মোট মূল্য ছিল প্রায় ¥৩ বিলিয়ন ($৩৮ মিলিয়ন)।

এডিভি ফিল্মস উত্তর আমেরিকায় ধারাবাহিকটি প্রকাশের সত্ত্ব লাভ করে। তাদের হাতে প্রথম সিটি হান্টার ধারাবাহিক ২০০০ সালের মার্চে এডিভি ফ্যানসাবস-এর লেবেলে প্রকাশিত হয়। এডিভিএ এই লেবেল ব্যবহারের উদ্দেশ্য ছিল ভিএইচএসের জন্য দ্রুতগতিতে স্বল্পমূল্যের সাবটাইটেলের ব্যবস্থা করা। ধারাবাহিকটি ১৩টি টেপে প্রকাশ করা হয়, যার প্রতিটি টেপে ৪টি করে পর্ব রাখা হয়েছিল। টেপগুলো পৃথকভাবে বা সাবস্ক্রিপশন পরিষেবার অংশ হিসেবে অর্ডার করা যেত।

পরবর্তীতে এডিভি ডিভিডি আকারে ধারাবাহিকটি প্রকাশ করে। প্রথম ধারাবাহিকটি ৫টি ডিস্ক সম্বলিত দুই বক্সসেটে ২০০৩ সালের ২৯ জুলাই তারিখে প্রকাশিত হয়। ২০০৩ সালের ২৮ অক্টোবর ও ১৮ নভেম্বর ৫টি ডিস্ক সংবলিত আরো দুইটি বক্সসেটে সিটি হান্টার ২ প্রকাশ করা হয়। সিটি হান্টার ৩ এবং সিটি হান্টার '৯১ একটি বক্সসেটে যথাক্রমে ২০০৩ সালের ২ ডিসেম্বর ও ১৬ ডিসেম্বর তারিখে প্রকাশ করা হয়।

সিটি হান্টার মাঙ্গার প্রথম প্রকাশের ত্রিশতম বার্ষিকী উপলক্ষে সিটি হান্টার এক্সওয়াইজেড সংস্করণ-এর ১২টি খণ্ডের সবগুলোর ক্রেতাদের একটি “মোশন গ্রাফিক অ্যানিমে” ডিভিডি প্রদান করা হয়। ডিভিডিতে অ্যাঞ্জেল হার্ট অবলম্বনে অ্যানিমের একটি বিশেষ পর্ব ছিল, যার নাম ছিল রিও’স প্রপোজালসিটি হান্টার-এর মূল কলাকুশলীরা এতে কণ্ঠ দেন। ২০১৯ সালের ২০ এপ্রিলে ডিস্কোটেক মিডিয়া ২০১৯ সালে মুক্তি পাওয়া শিনজুকু প্রাইভেট আইজ চলচ্চিত্রসহ সম্পূর্ণ সিটি হান্টার ফ্র‍্যাঞ্চাইজির সত্ত্ব পাওয়ার ঘোষণা দেয়। ২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারিতে এর প্রথম ২৬টি পর্ব প্রকাশ করা হয়।

চলচ্চিত্র

১৯৮৯ থেকে ১৯৯০ সালের মধ্যে সিটি হান্টার ফ্র্যাঞ্চাইজির তিনটি চলচ্চিত্র মুক্তি পায়। ১৯৮৯ সালের ১৭ জুন মুক্তি পায় .৩৫৭ ম্যাগনাম; বে সিটি ওয়ার্স মুক্তি পায় ১৯৯০ সালের ২৫ আগস্ট; এবং মিলিয়ন ডলার কন্সপাইরেসি মুক্তি পায় ১৯৯০ সালের ২৫ আগস্ট তারিখে।

২০০৩ সালের ৩ জুন এডিভি ফিল্মস একটি বোনাস পর্বসহ বে সিটি ওয়্যার্সমিলিয়ন ডলার কন্সপাইরেসি সংবলিত একটি ডিভিডি প্রকাশ করে।

২০১৯ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি অ্যানিপ্লেক্সের প্রযোজনায় জাপানে সিটি হান্টার দ্য মুভি: শিনজুকু প্রাইভেট আইজ একটি নতুন চলচ্চিত্র মুক্তি দেওয়া হয়। চলচ্চিত্রটির অ্যানিমেশনের কাজ করে সানরাইজ ও পরিচালনা করে কেঞ্জি কোদামা। ক্যাটস আই মাঙ্গার কিসুগি বোনেরা এই চলচ্চিত্রে ক্রসওভার হিসেবে আবির্ভূত হয়। তেরুও সাতোহ এবং তাকাহিকো কিয়ুগো এর পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। অন্যদিকে কুমিকো তাকাহাশি এর চরিত্রনির্মাণ এবং তাকু ইওয়াসাকি এর সঙ্গীত পরিচালনা করেন। চলচ্চিত্রটি জাপানি বক্স অফিসে চতুর্থ স্থান দখল করে। ২০১৯ সালের ১৭ মার্চ নাগাদ এটি সর্বমোট ¥১,৪০,৪৭,৪৭,৩২০ ($১২.১৬ মিলিয়ন) আয় করে। ১৫ এপ্রিল ২০১৯-এর হিসাবানুসারে ছবিটি মুক্তি পাওয়ার দুই মাসের মধ্যে ¥১,৫০,২৬,৬৫,৪৪০ ($১,৩৭,৮৪,৬৯৯) আয় করে ২০১৯ সালের তৃতীয় সর্বোচ্চ আয় করা জাপানি অ্যানিমে চলচ্চিত্রের মর্যাদা লাভ করে। ২০১৯ সালের শেষ নাগাদ এটি জাপানে ¥১.৫৩ বিলিয়ন ($১৪ মিলিয়ন) আয় করে। শিনজুকু প্রাইভেট আইজ সে বছরের ১৩ জুন ফ্রান্সে মুক্তি পায়। সিটি হান্টার অবলম্বনে নির্মিত ফরাসি লাইভ-অ্যাকশন চলচ্চিত্র নিকি লারসন এৎ লা পারফুম ডি কিউপিডন-এর পরিচালক ফিলিপ লাচেউ শিনজুকু প্রাইভেট আইজ-এর ফরাসি ভাষার পরিবেশনার দায়িত্বে ছিলেন। ডিস্কোটেক মিডিয়া চলচ্চিত্রটি ইংরেজি ডাবিংসহ ২০১৯ সালের ওটাকোনে প্রদর্শন করে।

টেলিভিশন চলচ্চিত্র

সিটি হান্টার অবলম্বনে তিনটি টেলিভিশন চলচ্চিত্র প্রযোজিত হয়েছে। ১৯৯৬ সালের ৫ জানুয়ারি সিক্রেট সার্ভিস সম্প্রচারিত হয়। এরপর ১৯৯৭ সালের ২৫ এপ্রিলে গুডবাই মাই সুইটহার্ট প্রচারিত হয়। সর্বশেষ ১৯৯৯ সালের ২৩ এপ্রিল দ্য ডেথ অব ভিসিয়াস ক্রিমিনাল সায়েবা রিও প্রচার করা হয়।

এডিভি ফিল্মস ফ্র্যাঞ্চাইজির গুডবাই মাই সুইটহার্ট চলচ্চিত্রটি প্রথমবারের মতো উত্তর আমেরিকায় সিটি হান্টার: দ্য মোশন পিকচার শিরোনামে প্রকাশ করে।

লাইভ অ্যাকশন চলচ্চিত্র

হংকং চলচ্চিত্র

১৯৯৩ সালে হংকংয়ে সিটি হান্টার ধারাবাহিকের একটি লাইভ-অ্যাকশন চলচ্চিত্র মুক্তি পায়। চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেন ওং জিং। এতে জ্যাকি চ্যান (রিও সায়েবা), জোই ওং (কাওরি) এবং কুমিকো গোটো অভিনয় করেন। চলচ্চিত্রের শুটিং চলাকালে দূর্ঘটনাবশত জ্যাকি চ্যানের কাঁধে আঘাত লাগে। জ্যাকি চ্যান এই চলচ্চিত্রের সমালোচনা করেন। পরবর্তীতে ফরচুন স্টার ও টুয়েন্টিয়েথ সেঞ্চুরি স্টুডিওজ চলচ্চিত্রটি অন্যান্য সস্তা ক্লাসিক চলচ্চিত্রের সাথে আর১ ডিভিডিতে প্রকাশ করে।

সেভিয়র অব দ্য সোল (九一神鵰俠侶 গাউয়াত সান্দিও হাপ্লুই) হলো ১৯৯১ সালে প্রকাশিত আরেকটি লাইক-অ্যাকশন হংকং চলচ্চিত্র। এটি সিটি হান্টারের চরিত্রগুলো নিয়ে নির্মিত হলেও, মাঙ্গার চেয়ে ভিন্ন কাহিনিপট ব্যবহৃত হয়েছিল। ১৯৯৬ সালে মিস্টার মাম্বল চলচ্চিত্রে সিটি হান্টারের গল্প অক্ষুণ্ণ রাখা হলেও, চরিত্রের নামগুলো পাল্টে দেওয়া হয়।

চীনা চলচ্চিত্র

সিটি হান্টার অবলম্বনে একটি চীনা চলচ্চিত্র নির্মাণাধীন রয়েছে। ২০১৬ সালে হংকংয়ের চলচ্চিত্র নির্মাতা স্ট্যানলি টংয়ের পরিচালনায় এই নতুন চলচ্চিত্রের ঘোষণা দেওয়া হয়। এতে রিও সায়েবা চরিত্রে চীনের অভিনেতা হুয়াং জিয়াওমিংয়ের অভিনয় করার কথা রয়েছে।

ফরাসি চলচ্চিত্র

২০১৯ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ফ্রান্সে নিকি লারসন এৎ লা পারফুম ডি কিউপিডন (অর্থ “নিকি লারসন এবং কিউপিডের সুগন্ধি”) নামে আরেকটি মারপিটধর্মী-হাস্যরসাত্মক চলচ্চিত্র মুক্তি পায়। সিটি হান্টার অবলম্বনে নির্মিত এই ফরাসি চলচ্চিত্রে ফিলিপ লাচেউ পরিচালনার পাশাপাশি নিকি লারসন (সিটি হান্টার অ্যানিমে ধারাবাহিকের ফরাসি ডাবে রিও সায়েবা নিকি লারসন নামে পরিচিত) চরিত্রে অভিনয়ও করেছেন। তিনি ছাড়া এলোডি ফন্টান চলচ্চিত্রে লরা মার্কনি (কাওরি মাকিমুরা) চরিত্রে আবির্ভূত হন। চলচ্চিত্রের বিজ্ঞাপনে তারেক বৌদালী, জুলিয়েন আরুতি ও দিদিয়ের বোর্ডনদেরও অভিনয়ে দেখা গেছে। পামেলা অ্যান্ডারসনও এই চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।

টেলিভিশন ধারাবাহিক

২০০৮ সালে সিটি হান্টারের একটি লাইভ-অ্যাকশন টেলিভিশন ধারাবাহিক নির্মাণ করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিলো। এটি পরবর্তীতে ফক্স টেলিভিশন স্টুডিওজ ও দক্ষিণ কোরীয় মিডিয়া কোম্পানি এসএসডির যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত হয়।

একাধিক হলিউড-ভিত্তিক অভিনয়শিল্পীদের সাথে জাং উ-সাংকে রিও চরিত্রে অভিনয়ের জন্য বাছাই করা হয়। এই ধারাবাহিকের দৃশ্যগুলো সিউলটোকিওতে ধারণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২০১১ সালে এসবিএস ধারাবাহিকের ধারণাটিকে একটি একই নামে কোরীয় টিভি ধারাবাহিকে বাস্তবায়ন করে, এই নাটকে অভিনয় করেছে লি মিন-হোপার্ক মিন-ইয়াং। ধারাবাহিকটি ইংরেজি সাবটাইটেল সহ হুলু স্ট্রিমিং সেবায় দেখার সুযোগ রয়েছে।

২০১৪ সালে সিটি হান্টার অবলম্বনে একটি চীনা টেলিভিশন ধারাবাহিক নির্মাণ করা হয় যার চীনা শিরোনাম ছিল 城市猎人 (শেং শি লি রেন)। ২০১৫ সালে সিটি হান্টারের স্পিন-অফ মাঙ্গা অ্যাঞ্জেল হার্ট অবলম্বনে একটি লাইভ অ্যাকশন জাপানি টিভি নাটক নির্মাণ করা হয়।

ভিডিও গেম

১৯৯০ সালের মার্চে পিসি ইঞ্জিনের জন্য সানসফট সিটি হান্টার বাজারে ছাড়ে।

জাম্প ফোর্স ফাইটিং গেমে রিও গেমের চরিত্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

প্রতিক্রিয়া

মাঙ্গা

২০১৬ সালের মধ্যে সিটি হান্টার মাঙ্গা ধারাবাহিক বিশ্বব্যাপী ৫ কোটি ট্যাঙ্কোবন খণ্ড বিক্রি করেছে। এর পাশাপাশি ধারাবাহিকটি ১৯৮৫ থেকে ১৯৯১ পর্যন্ত সাপ্তাহিক শৌনেন জাম্প মাঙ্গা সাময়িকীর মাধ্যমে আনুমানিক ৯০ কোটি সংখ্যক ছড়িয়েছে, সাথে এসব জাম্প সাময়িকী থেকে আনুমানিক $২০০ কোটি আয় হয়েছে। ধারাবাহিকটকে "শৌনেন জাম্প"-এ প্রদর্শিত ১৯তম "সবচেয়ে শক্তিশালী" ধারাবাহিক হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছিল।

মাঙ্গা: দ্য কমপ্লিট গাইড-এ, জেসন থম্পসন কে মাঙ্গার গল্পকে "ভালভাবে বর্ণনাকৃত এবং বিনোদনমূলক" হিসেবে উল্লেখ করেছেন। রাইটিং ফর ম্যানিয়া ডট কমের, এডুয়ার্ডো এম শ্যাভেজ ধারাবাহিকটিকে "মজার, সেক্সি, অ্যাকশন প্যাকড এবং মাঝে মাঝে শুধু প্লেইন হ্যাকড" এবং মারপিট এবং হাস্যরসের মিশ্রণ" হিসেবে প্রশংসা করে। অ্যানিমেফ্রিঞ্জের প্যাট্রিক রাজা ধারাবাহিকটিকে "সম্প্রতি দেখা সবচেয়ে বুদ্ধিদীপ্ত গল্পগুলোর একটি নয়" ব্যাখ্যা করেন। তবে তিনি এটিকে "পড়ার জন্য অসাধারণ" বর্ণনা করেছেন।

আনিমে

টিভি আশাহিতে ২০০৫ সালের টিভি দর্শকদের প্রদত্ত ভোটে দেখা যায় সিটি হান্টার ১০০ সবচাইতে জনপ্রিয় অ্যানিমেটেড টিভি ধারাবাহিকের মাঝে ৬৬তম স্থানে ছিলো। আশাহি টিভির একটি ওয়েব ভোটে সিটি হান্টারকে ৬৫ তম অবস্থানে দেখানো হয়।

রিও এবং কাওরি চরিত্রগুলি ভক্তদের কাছে জনপ্রিয় প্রমাণিত হয়েছিল। ১৯৮৮ সালের অ্যানিমেজ অ্যানিমে গ্র‍্যান্ড প্রিক্স পাঠক ভোটে সায়বা রিওকে দ্বিতীয় সেরা পুরুষ চরিত্র হিসেবে মনোনীত করা হয়েছিল। ১৯৮৯, ১৯৯০ ও ১৯৯১ সালে সায়েবা প্রথম স্থান অধিকার করে। ১৯৯২ সালের ভোটে সায়েবা রিও ষষ্ঠ স্থানে ছিল। ১৯৮৯ সালের পূর্বে কাওরি মাকিমুরাকে সেরা মহিলা চরিত্র শ্রেণিতে ভোটে পঞ্চদশ অবস্থানে মনোনীত করা হয়। এরপর কাওরি অষ্টম অবস্থানে আসে। কাওরি ১৯৯১ ও ১৯৯২ সালে যথাক্রমে ষষ্ঠ ও সপ্তম স্থানে নেমে যায়। এর পূর্বে ১৯৯০ সালে সে পঞ্চম স্থান অধিকার করে।

এর ইংরেজি অনুবাদের মানের জন্য দ্য মোশন পিকচার-এর প্রশংসা করা হলেও চরিত্রের নাম পালটে দেওয়ার জন্য সমালোচনা করা হয়।

প্রথম অ্যানিমে সমাপ্তি সঙ্গীত, টিএম নেটওয়ার্কের "গেট ওয়াইল্ড" এবং এর পরবর্তী ১৯৮৯ সালের রিমিক্স জাপানে ৫,১৫,০১০ সংখ্যক বিক্রি হয়েছিল। এই অ্যানিমে ধারাবাহিকটি ফ্রান্সেও জনপ্রিয় ছিল যেখানে নিকি লারসন-এর ১৪০টি পর্ব ১৯৯০ দশকের প্রথমে ডাব করার পর প্রকাশ করা হয়।

বক্স অফিস

চলচ্চিত্র ধরণ দেশ বছর বক্স অফিসের মোট আয়
জাপান হংকং ফ্রান্স অন্যান্য দেশ
সেভিয়র অব দ্য সোল লাভ অ্যাকশন হংকং ১৯৯১ এইচকে$৩,৬৪,৭৬,৪৯৫
সিটি হান্টার লাইভ অ্যাকশন হংকং ১৯৯৩ ¥১,৪৭,৩০,০০,০০০ এইচকে$৩০,৭৬২,৭৮২ $৫৫৮১১৭৪
নিকি লারসন এট পারফুম ডি কিউপিডন লাইভ অ্যাকশন ফ্রান্স ২০১৯ ¥১৪,৪৫,৮৬,৬০০ $১,২৮,৯৮,৭৪২ $৪,৮২,১২৮
সিটি হান্টার: শিনজুকু প্রাইভেট আইজ অ্যানিমে জাপান ২০১৯ ¥১,৫০,০০,০০,০০০ অজানা $১,৭৫৪
আঞ্চলিক মোট ¥৩,১১,৭৫,৮৬,৬০০ ($৩,৩৫,৪৭,৪৬৭) এইচকে$৬,৭২,৩৯,২৭৭ (মার্কিন $৮৭,০০,৭৩৫) $১,২৮,৯৮,৭৪২+ $৬০,৬৫,০৫৬
বিশ্বব্যাপী মোট $৬,১০,১৮,৮৭৩+

কিংবদন্তি

কাওরির "১০০ টনের হাতুড়ি" ২০০৭ সালে ইয়াহু অকশনে ¥১৮.৩২ লাখ ($১৭,১৫০) উঠেছিলো। এটি ছিল ইয়াহুর জন্য বছরের সর্বোচ্চ মূল্যে বিক্রিত দাতব্য বস্তু।

২০১২ সালে, রিও, কাওরি ও উমিবজু ভার্চুয়াল সঙ্গীতশিল্পী মানার ভিডিওতে উপস্থিত হয়েছিল। মানা হল টিএম নেটওয়ার্কের হোজো এবং তেতসুয়া কমুরোর মধ্যে একটি সহযোগিতামূলক প্রকল্প।

২০১৫ সালে প্রকাশিত ক্রিস ব্রাউনের একক গান "জিরো"-এর প্রচ্ছদ হোজোর সিটি হান্টার প্রচ্ছদের নকশা থেকে নকল করা হয়ে বলে অভিযোগ রয়েছে।

পাদটীকা

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Tags:

সিটি হান্টার পটভূমিসিটি হান্টার চরিত্রসিটি হান্টার মাধ্যমসিটি হান্টার প্রতিক্রিয়াসিটি হান্টার কিংবদন্তিসিটি হান্টার পাদটীকাসিটি হান্টার তথ্যসূত্রসিটি হান্টার বহিঃসংযোগসিটি হান্টারআনিমেজাপানি ভাষামাঙ্গাসুকাসা হোজো

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

ভিসাযিনামাওয়ালিতৃণমূল কংগ্রেসআফগানিস্তানবিরসা দাশগুপ্তহিমালয় পর্বতমালাজনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় (বাংলাদেশ)হনুমান (রামায়ণ)বৌদ্ধধর্মজাযাকাল্লাহআকিজ গ্রুপমানিক বন্দ্যোপাধ্যায়কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টসূরা ইয়াসীনমুহাম্মাদের স্ত্রীগণকুমিল্লাপিঁয়াজবাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধানসেলজুক সাম্রাজ্যঅ্যান্টিবায়োটিক তালিকাজান্নাতুল ফেরদৌস পিয়াবাংলাদেশের কোম্পানির তালিকামঙ্গল গ্রহবিশ্বায়নআসানসোলবারো ভূঁইয়াসাকিব আল হাসানসানি লিওনম্যানচেস্টার সিটি ফুটবল ক্লাবসাহাবিদের তালিকাবাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকাকানাডাশান্তিনিকেতনণত্ব বিধান ও ষত্ব বিধানমুহাম্মাদের সন্তানগণমুজিবনগরগ্রামীণফোনমুহাম্মাদের বংশধারাপদ্মা নদীহারুনুর রশিদস্ক্যাবিসবাংলাদেশ আওয়ামী লীগআন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসইবনে সিনাআরবি বর্ণমালাবাংলাদেশের একাডেমিক গ্রেডিং পদ্ধতিশিশু পর্নোগ্রাফিশ্রীকৃষ্ণকীর্তনশিয়া ইসলামের ইতিহাস১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলননিমমাশাআল্লাহনারায়ণগঞ্জ জেলাভাষাকুরআনের সূরাসমূহের তালিকাইহুদি গণহত্যা২০২২–২৩ নিউজিল্যান্ড পুরুষ ক্রিকেট দলের পাকিস্তান সফর (এপ্রিল ২০২৩)ভগবদ্গীতাপ্রথম ওরহানপশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত ব্যবস্থাআশারায়ে মুবাশশারাভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনরুয়ান্ডানিফটি ৫০জয় শ্রীরামমহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্রশাবনূরজ্যামাইকাবাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পদবিমিজানুর রহমান আজহারীইসলাম ও হস্তমৈথুনমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রশিখধর্মবাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরদের তালিকাএ. পি. জে. আবদুল কালামশীর্ষে নারী (যৌনাসন)🡆 More