ভূপেন্দ্র কুমার দত্ত (৮ অক্টোবর ১৮৯২ - ২৯ ডিসেম্বর ১৯৭৯) ছিলেন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী এবং ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবী। ব্রিটিশ শাসন থেকে ভারতের স্বাধীনতার জন্য তিনি যুদ্ধ করেন। যুগান্তর দলের প্রধান হিসাবে স্বাধীনতা আন্দোলনে তার গভীর অবদান ছিল। ১৯১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে বিলাসপুর জেলে তার ৭৮ দিন অনশন ধর্মঘটের রেকর্ড রয়েছে।
ভূপেন্দ্র কুমার দত্ত | |
---|---|
জন্ম | ঠাকুরপুর, যশোর, বেঙ্গল, ব্রিটিশ ভারত | ৮ অক্টোবর ১৮৯২
মৃত্যু | ২৯ ডিসেম্বর ১৯৭৯ | (বয়স ৮৫)
জাতীয়তা | ভারতীয় |
পেশা | বিপ্লবী |
ভূপেন্দ্র কুমার দত্ত ৮ অক্টোবর ১৮৯২ সালে বাংলাদেশের সালে যশোর জেলার ঠাকুরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা কৈশাল চন্দ্র দত্ত পার্শবর্তী ফরিদপুর জেলার পর্চার ম্যানেজার ছিলেন। তার মাতা বিমলাসুন্দরী একজন দানশীল মহিলা ছিলেন। কামালিনী, যাদুগোপাল, স্নেহলতা, সুপ্রভা নামে তার চার সহদোর ছিল।
কথিত আছে (?) একবার রামায়ণ পড়ার সময় সে লক্ষণের বীরত্বের কাহিনী জানতে পারে এবং ব্রহ্মচর্যে তার দখল সম্পর্কে পড়ে। এরপরে সে তার মার কাছ থেকে ব্রহ্মচর্য সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিজে সেই পথ অনুসরণ করার সিদ্ধান্ত নেয়। এবং তার সম্পূর্ণ জীবনেই অবিবাহিত ছিল এবং সৃষ্টিকর্তার সেবায় নিয়জিত ছিলেন। ফরিদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে থাকাকালীন সময়ে তিনি অনুশীলন সমিতিতে যোগ দেন এবং পরবর্তীতে সে বিভিন্ন মানবিক কার্যক্রম এবং ১৯০৫ সালের দেশ বিভাগের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। ভগবদ্গীতা পড়ে এবং বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ও স্বামী বিবেকানন্দের সাথে কাজ করে নিজেকে তাদের মত একজন অনুসরণীয় ব্যক্তি হিসাবে গড়ে তুলতে উদ্বুদ্ধ করে।
বিপ্লবী বাঘা যতীনের মন্ত্রশিষ্য ছিলেন। জার্মান অস্ত্রসাহায্যে ভারতে সশস্ত্র বৈপ্লবিক অভ্যুত্থানের প্রস্তুতিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। খুলনা ও যশোর কেন্দ্রে বিপ্লবের দায়িত্ব ন্যস্ত ছিল তারই ওপর। বাঘা যতীনের মৃত্যুর পরেও আত্মগোপন অবস্থায় কাজ চালিয়ে যান। আর্মেনিয়ান স্ট্রীটে ডাকাতিতে জড়িত ছিলেন। ১৯১৭ তে গ্রেপ্তার। বিলাসপুর জেলে ৭৮ দিন অনশন করেছিলেন। ১৯২০ সালে মুক্তি পেয়ে গান্ধীজির সংগে দেখা করেন। গণসংযোগের উদ্দেশ্যে কংগ্রেসে যোগদান। তারপর দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের স্বরাজ্য পার্টিতে কাজ করেছেন। ১৯২৩ সালে ব্রহ্মদেশে (মায়ানমার) তাকে জেলবন্দী করা হয়। ১৯২৮ সালে মুক্তি পেয়েও সশস্ত্র বিপ্লবের পথ পরিত্যাগ করেননি। অস্ত্র সংগ্রহ, বোমা তৈরি ইত্যাদিতে যুক্ত থাকায় পুলিশ তাকে বহুবার গ্রেপ্তার করেছে। ১৯৩০ সালে বিপ্লবী সূর্য সেনের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠনের ঘটনা নিয়ে শ্রীসরস্বতী প্রেসে মুদ্রিত ও প্ররকাশিত স্বাধীনতা পত্রিকায় 'ধন্য চট্টগ্রাম' নিবন্ধটি লিখলে সরকার সঙ্গে সঙ্গে পত্রিকা বাজেয়াপ্ত করে ও তাঁকে পুনরায় কারারুদ্ধ করে এবং টানা ৮ বছর জেল খাটেন। ১৯৪১ সালে পুনরায় গ্রেফতার হবার আগে পর্যন্ত ইংরাজী সাপ্তাহিক 'ফরওয়ার্ড' পত্রিকা সম্পাদনা করেন। দেশবিভাগের পর পাকিস্তানের নাগরিক হয়ে সেখানে আন্দোলন সংগঠনে সচেষ্ট হন। পাকিস্তান পার্লামেন্টের সদস্যও হয়েছিলেন । ১৯৬১ সালে রাজনৈতিক ক্রিয়াকলাপ রোধকারী সামরিক আইন জারি হলে তিনি ভারতে ফিরে আসেন এবং প্রত্যক্ষ রাজনীতি থেকে অবসর গ্রহণ করেন ।
ভূপেন্দ্র কুমার দত্ত সুলেখক ছিলেন। তার রচিত গ্রন্থ 'বিপ্লবের পদচিহ্ন', 'ইণ্ডিয়ান রেভলিউশন এন্ড দ্যা কনস্ট্রাকটিভ প্রোগ্রাম'। এছাড়াও বহু বিপ্লবীর জীবনী লিখেছেন তিনি।
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article ভূপেন্দ্র কুমার দত্ত, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.