আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস (en:International Day of the World's Indigenous Peoples) প্রতিবছর ৯ আগস্ট পালন করা একটি আন্তর্জাতিক দিবস। জাতিসংঘ ১৯৯৪ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী পালন করে আসছে এই দিবসটি। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে আদিবাসী শব্দ নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। বাংলাদেশ সরকার সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে দেশের আদিবাসীদের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, সম্প্রদায় বা উপজাতি হিসেবে আখ্যায়িত করলেও বাংলাদেশের আদিবাসীরা নিজেদের আদিবাসী হিসেবে পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। জাতিসংঘও তাদের দাপ্তরিক কাজে ইন্ডিজিনাস অর্থাৎ আদিবাসী শব্দটি ব্যবহার করে।
আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস | |
---|---|
উদযাপন | বিশ্বব্যাপী |
তারিখ | ৯ আগস্ট |
পরবর্তী আয়োজন | ৯ আগস্ট ২০২৪ |
সংঘটন | বার্ষিক |
৫টি মহাদেশের ৪০টির বেশি দেশে বসবাসরত ৫ সহস্রাধিক আদিবাসী জনজাতি মানুষের সংখ্যা ৩০-৩৫কোটি। এদেরকে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নামে পরিচয় প্রথম জাতি, উপজাতি, আদিবাসী, ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠি, ক্ষুদ্র-জাতিসত্ত্বা পরিচয় পাওয়া যায়। তবে আদিবাসী শব্দের সুর্নিদিষ্ট সংজ্ঞা ও তাদের অধিকার নিয়ে রয়েছে জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক তর্ক-বিতর্ক। জাতিসংঘে দীর্ঘ সময়ে বিভিন্ন আলোচনা-পর্যালোচনায় আদিবাসী সংজ্ঞা নিয়ে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারেননি। তবে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার আদিবাসী জাতিসত্ত্বার আত্ম-পরিচয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিকভাবে অধিকার সংরক্ষণের জন্য আদিবাসী ও ট্রাইবেল জনগোষ্ঠি কনভেনশন-১৯৫৭(১০৭) ও পুনসংস্করণ আদিবাসী ও ট্রাইবেল জনগোষ্ঠি কনভেনশন-১৯৮৯(১৬৯) দুটি ধারা গৃহীত হয়।
২৩ ডিসেম্বর, ১৯৯৪ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বিশ্ব আদিবাসী দিবসটি পালনে ৪৯/২১৪ বিধিমালায় স্বীকৃতি পায়। আর্ন্তজাতিক দিবসটি বিশ্বের ৯০টি দেশে ৩৭০ বিলিয়ন আদিবাসীরা প্রতিবছর ৯ আগস্ট উদ্যাপন করে থাকেন। উল্লেখ্য, জাতিসংঘ কর্তৃক ১৯৯৩ সালকে আদিবাসীবর্ষ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। বিশ্বব্যাপী আদিবাসী জনগণ তাদের নিজস্ব সাংস্কৃতিক পরিচয়, ভূমির অধিকার, অঞ্চল বা টেরিটরির অধিকার, প্রাকৃতিক সম্পদের অধিকার ও নাগরিক মর্যাদার স্বীকৃতি দাবীতে দিবসটি পালিত হয়। কানাডার অস্ট্রেলিয়ায় ৫২টি আদিবাসী জাতিগোষ্ঠি(আমাটা, বামাগা, কয়েন প্রভৃতি) বা আদিবাসী বসবাস করছে। আমেরিকায় ক্রো জাতি, আর্জেন্টিনায় কাসি জাতি।
প্রতি বছর ৯ আগস্ট আর্ন্তজাতিক দিবসটি বিশ্বব্যাপী পালিত হলেও বাংলাদেশে ২০০৪ থেকে পালিত হয়ে আসছে। মূলত, ২০০১ সালে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম গঠিত হবার পরে বেসরকারীভাবে বৃহৎকারে আর্ন্তজাতিক দিবসটি পালিত হচ্ছে। বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের জেলা রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, জয়পুরহাট, নাটোর, নওগাঁ, রংপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, গাইবান্ধা ইত্যাদি জেলাগুলিতে সাঁওতাল, শিং (গঞ্জু), ওঁরাও, মুন্ডারি, বেদিয়া মাহাতো, রাজোয়ার, কর্মকার, তেলী,তুরী, ভুইমালী, কোল, কড়া, রাজবংশী, মাল পাহাড়িয়া, মাহালী ইত্যাদি জাতিগোষ্ঠি বসবাস করছে। অন্যদিকে পার্বত্য চট্টগ্রামে (রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি) চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, মুরং বা ম্রো, খিয়াং, লুসাই, পাংখোয়া,বম, খুমী ও চাক জনগোষ্ঠি বসবাস করছে। বিশ্বের তাবৎ আদিবাসী জনগোষ্ঠির পাশাপাশি বাংলাদেশের ৩০ লক্ষাধিক আদিবাসীরা তাদের নিজস্ব সাংস্কৃতিক পরিচয়, ভূমির অধিকার ও নাগরিক মর্যাদার স্বীকৃতি দাবীতে দিবসটি উদ্যাপন করে থাকেন।
বিভিন্ন দেশের সংখ্যায় ক্ষুদ্র জাতিসত্ত্বা ও আদিবাসীদের স্বতন্ত্র সাংস্কৃতিক পরিচয় তুলে ধরার গুরুত্ব নিয়েই পালন করা হয় এই আন্তর্জাতিক দিবসটি।
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.