রসায়নে কোন রাসায়নিক বিক্রিয়া শুরু করতে ন্যূনতম পরিমাণ শক্তি পরিবেশ থেকে দেওয়া বাধ্যতামূলক তাকে সক্রিয়ন শক্তি বলে। বাইরে থেকে শক্তি (চাপ, তাপমাত্রা ইত্যাদি) প্রদানের ফলে বিক্রিয়ক অণু সমূহ বা একাংশ পরস্পরের সঙ্গে সংঘর্ষের ফলে সক্রিয়ন শক্তি লাভ করে এবং বিক্রিয়া অগ্রাভিমুখে ত্বরান্বিত হয়। যে সকল অণু এই শক্তি অর্জন করে তাদের সক্রিয়ন অণু বলে। ১৮৮৯ সালে বিজ্ঞানী সভান্টে আরেনিউস সক্রিয়ন শক্তির কথা প্রথম উল্লেখ করেন। সক্রিয়ন শক্তিকে সাধারনত Ea দিয়ে প্রকাশ করা হয় এবং এর পরিমাপের একক কিলোজুল প্রতি মোল বা কিলোক্যালোরি প্রতি মোল।
আরহেনিয়াস সমীকরণ (আরহেনিয়াস সমীকরণ, ইংঃ Arrhenius equation) কোন রাসায়নিক বিক্রিয়ার গতি ধ্রুবকের (ইংঃ reaction rate constant) সাথে ঐ বিক্রিয়ার তাপমাত্রার সম্পর্ক স্থাপন করে। এই সমীকরণ থেকে কোন বিক্রিয়ার প্রয়োজনীয় সক্রিয়ন শক্তির পরিমাপ করা যেতে পারে।
পরম তাপমাত্রা তে কোন রাসায়নিক বিক্রিয়ার গতি ধ্রুবক এবং সক্রিয়ন শক্তির পরিমাণ হলে, আরহেনিয়াস সমীকরণ হবে,
(১)
যেখানে একটি ধ্রুবক এবং সার্বজনীন গ্যাস ধ্রুবক।
এখন এই ১ নং সমীকরণের প্রাকৃতিক লঘুগুনক (natural logarithm) নিলে পাওয়া যাবে,
(২)
২ নং সমীকরনটিকে সাজিয়ে লিখলে,
(৩)
এটি (৩ নং সমীকরণ) একটি সরলরেখা্র সমীকরণ এর অনুরূপ। যেখানে । তাই কোন রাসায়নিক বিক্রিয়া আরহেনিয়াস সমীকরণ মেনে চললে আমরা যদি ln(k) vs. (1/T ) গ্রাফ বানাই তাহলে একটি সরলরেখার গ্রাফ পাব। সেই সরলরেখার ঢাল (slope or gradient) থেকে সক্রিয়ন শক্তির পরিমাপ করা যাবে। সক্রিয়ন শক্তির পরিমাণ হবে গুনিতক ঐ সরলরেখার ঢাল (সমীকরণ ৪)।
রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী বিক্রিয়ক অণুগুলি প্রয়োজনীয় সক্রিয়ন শক্তি পেয়ে গেলে তাদের পুরাতন রাসায়নিক বন্ধনগুলি ভেঙ্গে ফেলতে শুরু করে এবং নতুন বন্ধন তৈরী হতে শুরু করে, এই মধ্যান্তরের অবস্থাকে অবস্থান্তর অবস্থা (ইংঃ transition state) বলে। ইহাকে অনেক সময় সক্রিয়নকৃত জটিল অবস্থা () বলে। প্রত্যেক রাসায়নিক বিক্রিয়া অবস্থান্তর অবস্থার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়। অবস্থান্তর অবস্থায় হল কোন রাসায়নিক বিক্রিয়ার অণুগুলির সর্বোচ্চ শক্তির পরিমাণ।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে সক্রিয়ন শক্তির পরিমাপ ঋনাত্মক হয়। এসব ক্ষেত্রে পরিবেশ থেকে কোন শক্তি সরবরাহের প্রয়োজন হয় না। দুই বা ততোধিক পদার্থের বিক্রিয়ক অণুগুলিকে একটি বদ্ধ পাত্রের মধ্যে নিয়ে এলে তৎক্ষণাৎ বিক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। এই সব বিক্রিয়ায় কোন শক্তির বাধা থাকে না এবং বিক্রিয়ক অণুসকল স্বতস্ফূর্ত ভাবে বিক্রিয়া করে। এই সব বিক্রিয়ার ক্ষেত্রে তাপমাত্রা বাড়ালে বিক্রিয়ার গতি কমতে থাকে।
মূল পাতাঃ অনুঘটন
যে পদার্থ বিক্রিয়ার অবস্থান্তর অবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়ে সক্রিয়ন শক্তির পরিমাপ কমিয়ে বিক্রিয়ার গতি বাড়াতে সাহায্য করে তাদের অনুঘটক বলে। জৈব রসায়্নে একে উৎসেচক বলা হয়ে থাকে। অনুঘটক বিক্রিয়ার পরে অপরিবর্তিত থাকে। অনুঘটক বিক্রিয়া অংশগ্রহণকারী বিক্রিয়ক এবং উৎপন্নজাত পদার্থের শক্তির পরিমানও অপরিবর্তিত রেখে শুধুমাত্র বিক্রিয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সক্রিয়ন শক্তির পরিমাণ কমিয়ে দেয়।
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article সক্রিয়ন শক্তি, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.