শেখ কামাল: বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ

শেখ কামাল (৫ আগস্ট ১৯৪৯ – ১৫ আগস্ট ১৯৭৫) শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তিনি মুক্তিবাহিনীর অন্যতম সংগঠক ছিলেন। যুদ্ধকালীন সময়ে তিনি মুহাম্মদ আতাউল গণি ওসমানীর এইড ডি ক্যাম্প (এডিসি) হিসেবে কাজ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৪ জুলাই তিনি ক্রীড়াবিদ সুলতানা খুকিকে বিয়ে করেন। তিনি ঢাকা আবাহানী লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তিনি সামরিক অভ্যুত্থানে নিহত হন।

শেখ কামাল
শেখ কামাল: জন্ম ও শিক্ষা, মৃত্যু, সমালোচনা
জন্ম(১৯৪৯-০৮-০৫)৫ আগস্ট ১৯৪৯
টুঙ্গীপাড়া, গোপালগঞ্জ, বাংলাদেশ
মৃত্যু১৫ আগস্ট ১৯৭৫(1975-08-15) (বয়স ২৬)
ধানমন্ডি, ঢাকা
জাতীয়তাবাংলাদেশী
পেশারাজনীতিবিদ, ক্রীড়া সংগঠক
পরিচিতির কারণবঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্র
দাম্পত্য সঙ্গীসুলতানা কামাল
পিতা-মাতা

জন্ম ও শিক্ষা

শেখ কামাল ১৯৪৯ সালের ৫ আগস্ট গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গীপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ভাইবোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। শেখ কামাল শাহীন স্কুল থেকে এসএসসি এবং ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে বিএ (অনার্স) পাস করেন। যুদ্ধের পর তিনি ক্যাপ্টেন (অবসরপ্রাপ্ত) হিসেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ত্যাগ করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে যান। সেখান থেকে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। তিনি ছায়ানট থেকে সেতার শিখেন।

মৃত্যু

১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সামরিক অভ্যুত্থানে শেখ মুজিবুর রহমানসহ শেখ কামাল ও তার পরিবারের সদস্যরা খুন হন।

সমালোচনা

১৯৭৩-এর গুলিবর্ষণ

১৯৭৩ এর শেষের দিকে শেখ কামাল একটি গুলিবর্ষণে জড়িয়ে পড়েন যাতে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। গুলিবর্ষণ কীভাবে ঘটে সে সম্পর্কে একাধিক দাবি রয়েছে। অনেকের দাবি, শেখ কামাল এবং তার বন্ধুরা একটি ব্যাংকের ডাকাতির চেষ্টা করার সময় এই গুলিবর্ষণ হয়েছিল। পরেশ সাহার মতে:

আমি আগেও বলেছি এখনো বলছি, আওয়ামী লীগের সব নেতা-কর্মীই যে ধোয়া তুলসী পাতা - সে কথা বিশ্বাস করার কোন সঙ্গত কারণ নেই। আওয়ামী লীগের কোন কোন নেতা - হাফ নেতা কিংবা সাব নেতার বাড়ি সত্যি সত্যি দুর্নীতির আখড়া হয়ে উঠেছিল, তার প্রমাণ আছে। কিন্তু তাই বলে যারা বলেন, শেখ মুজিবের বড় ছেলে শেখ কামাল ছিলেন পাক্কা দুর্নীতিবাজ, ডাকাতি করে ফিরতেন, তাদের সেই ‘উড়ো কথা’কে সত্য বলে মেনে নিতে আমার নিশ্চই আপত্তি থাকবে। কারণ দেশের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারীর পুত্র যেখানেই হাত বাড়াবেন, সেখান থেকেই টাকা আসবে। একটু মাত্র ইঙ্গিত পেলেই টাকা হুড়হুড় করে তার দিকে ছুটবে, সে জন্য তাকে ডাকাতি করতে হবে কেন? মুজিবের বড় ছেলে হওয়া ছাড়াও শেখ কামালের একটা পরিচয় ছিল। তিনি ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা, একজন প্রথম সারির যুব নেতা। তিনি কি জানতেন না, ব্যংক বা অন্য কোথাও ডাকাতি করার মানে হলো নিজেদের মুখেই কলঙ্কের কালি লেপন করা? কারণ রাষ্ট্রক্ষমতা তারই দলের হাতে। সুতরাং শেখ কামাল সম্পর্কে যারা দুর্নীতির বা উচ্ছৃঙ্খলতার অভিযোগ তোলেন, তাদের মতলব সম্পর্কে আমি সন্দেহ না করে পারিনে।

তবে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল দাবি করেছেন যে এটি আসলে বন্ধুত্বপূর্ণ গুলিবর্ষণের ঘটনা। ১৯৭৩ সালের শেষের দিকে, বাংলাদেশী সুরক্ষা বাহিনী গোপনে সংবাদ পেয়েছিল যে, বামপন্থী বিপ্লবী কর্মী সিরাজ সিকদার এবং তার বিদ্রোহীরা ঢাকার আশেপাশে সমন্বিত হামলা চালাচ্ছে। পুলিশ এবং অন্যান্য নিরাপত্তা কর্মকর্তাগণ পূর্ণ সতর্ক ছিলেন এবং ঢাকার রাস্তায় সাধারণ পোশাকে টহল দিচ্ছিলেন। শেখ কামাল ও তার বন্ধুরা সশস্ত্র অবস্থায় সিরাজ সিকদারকে খুঁজছিল, এবং একটি মাইক্রোবাসে শহরটিতে টহল দিচ্ছিল। যখন মাইক্রোবাসটি ধানমন্ডিতে ছিল তখন পুলিশ শেখ কামাল ও তার বন্ধুদের বিদ্রোহী বলে মনে করে এবং তাদের উপর গুলি চালিয়ে দেয়, ফলে শেখ কামাল আহত হয়। তবে, এটিও দাবি করা হয় যে শেখ কামাল এবং তার বন্ধুরা ধানমন্ডিতে গিয়েছিল তার বন্ধু ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর সম্প্রতি কেনা একটি নতুন গাড়ি চালানোর পরীক্ষা করতে। ঢাকায় যেহেতু পুলিশ ভারী টহল দিচ্ছিল, তাই তৎকালীন শহরের এসপি মহামুদ্দিন বীর বিক্রমের কমান্ডের অধীনে পুলিশ বিশেষ বাহিনী যাত্রীদেরকে দুর্বৃত্ত বলে ভেবে গাড়িতে গুলি চালিয়েছিল।

মেজর ডালিমকে অপহরণ

শেখ কামালের বিরুদ্ধে নিম্মি ডালিম ও তার স্বামী শরিফুল হক ডালিম (যিনি পরে শেখ কামাল ও তার স্বপরিবারকে হত্যা করেছিলেন) ঢাকা লেডিজ ক্লাব থেকে অপহরণ করে এবং জাতীয় রক্ষীবাহিনী সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। গাজী গোলাম মোস্তফা এবং তার দুই ছেলেকেও এই অপহরণে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়। শেখ পরিবার এর বিরুদ্ধে শরিফুল হক ডালিমের বিদ্বেষ পোষণ করার পেছনে এটি অন্যতম কারণ ছিল। তবে এটিও দাবি করা হয় যে, শেখ কামাল এই ঘটনায় জড়িত ছিলেন না এবং গাজী গোলাম মোস্তফা তার ছেলেদের সাথে এই অপহরণে একাই ভূমিকা পালন করেন। দাবি করা হয় যে, শেখ মুজিবুর রহমান ব্যক্তিগতভাবে ডালিম এবং তার স্ত্রীকে মুক্তি দেওয়ার এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলির মধ্যে একটি সমঝোতা করার মধ্যস্থতার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Tags:

শেখ কামাল জন্ম ও শিক্ষাশেখ কামাল মৃত্যুশেখ কামাল সমালোচনাশেখ কামাল তথ্যসূত্রশেখ কামাল বহিঃসংযোগশেখ কামালআবাহনী লিমিটেড (ঢাকা)মুহাম্মদ আতাউল গণি ওসমানীশেখ মুজিবুর রহমানসুলতানা কামাল (খেলোয়াড়)

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

শেখ মুজিবুর রহমানজন্ডিসযতিচিহ্নবিজ্ঞানজনসংখ্যা অনুযায়ী সার্বভৌম রাষ্ট্র ও নির্ভরশীল অঞ্চলসমূহের তালিকাবাংলাদেশের উপজেলাবিরসা দাশগুপ্তযোনিবৌদ্ধধর্মএল নিনোশরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়জগদীশ চন্দ্র বসুকালীবর্তমান (দৈনিক পত্রিকা)এইচআইভিপূর্ণিমা (অভিনেত্রী)দীন-ই-ইলাহিমৌলিক পদার্থের তালিকাচট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রবাসুকীজাতিসংঘতামান্না ভাটিয়াগ্রামীণ ব্যাংকইউটিউববাংলাদেশের সংবাদপত্রের তালিকাআকবরবদরের যুদ্ধমহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্রআল্লাহর ৯৯টি নামএইচআইভি/এইডসতৃণমূল কংগ্রেসকুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টদৈনিক যুগান্তরসাধু ভাষাপর্তুগিজ সাম্রাজ্যফুটবলক্ষুদিরাম বসুআতিকুল ইসলাম (মেয়র)জ্ঞানবক্সারের যুদ্ধযোহরের নামাজদুর্গাপূজামমতা বন্দ্যোপাধ্যায়পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত ব্যবস্থাকরোনাভাইরাসনামাজের নিয়মাবলীটাঙ্গাইল জেলাউদ্ভিদকোষবাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসচিকিৎসকশ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রঅর্থ (টাকা)বৈষ্ণব পদাবলিচাকমাজলাতংকমুসাফিরের নামাজএ. পি. জে. আবদুল কালামরশ্মিকা মন্দানাচুয়াডাঙ্গা জেলাভাষাহারুনুর রশিদদক্ষিণ এশিয়ানারীহামইসনা আশারিয়াবিশ্ব দিবস তালিকাবাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবমৈমনসিংহ গীতিকাত্রিপুরারামবিশ্বায়নগুগলভারতের সংবিধানমালয়েশিয়া🡆 More