লিওনেল প্যালেরিট: ইংরেজ ক্রিকেটার

লিওনেল চার্লস হ্যামিল্টন প্যালেরিট (ইংরেজি: Lionel Palairet; জন্ম: ২৭ মে, ১৮৭০ - মৃত্যু: ২৭ মার্চ, ১৯৩৩) ল্যাঙ্কাশায়ারের গ্রাঞ্জ-ওভার-স্যান্ডস এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ শৌখিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে সমারসেট ও অক্সফোর্ডের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, মিডিয়াম কিংবা ডানহাতি স্লো (আন্ডারআর্ম) বোলিংয়ে পারদর্শীতা দেখিয়েছেন লিওনেল প্যালেরিট।

লিওনেল প্যালেরিট
লিওনেল প্যালেরিটের সাদা-কালো প্রতিকৃতি
১৮৯০-এর দশকে লিওনেল প্যালেরিটের প্রতিকৃতি
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামলিওনেল চার্লস হ্যামিল্টন প্যালেরিট
জন্ম(১৮৭০-০৫-২৭)২৭ মে ১৮৭০
গ্রাঞ্জ-ওভার-স্যান্ডস, ল্যাঙ্কাশায়ার, ইংল্যান্ড
মৃত্যু২৭ মার্চ ১৯৩৩(1933-03-27) (বয়স ৬২)
এক্সমাউথ, ডেভন, ইংল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম,
ডানহাতি স্লো (আন্ডারআর্ম)
সম্পর্কহেনরি প্যালেরিট (বাবা)
রিচার্ড প্যালেরিট (ভ্রাতা)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ১৩৪)
২৪ জুলাই ১৯০২ বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ টেস্ট১১ আগস্ট ১৯০২ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৮৯০–১৯০৯সমারসেট
১৮৯০–১৮৯৩অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ২৬৭
রানের সংখ্যা ৪৯ ১৫৭৭৭
ব্যাটিং গড় ১২.২৫ ৩৩.৬৩
১০০/৫০ ০/০ ২৭/৮৩
সর্বোচ্চ রান ২০ ২৯২
বল করেছে ৮৭৮১
উইকেট  – ১৪৩
বোলিং গড়  – ৩৩.৯০
ইনিংসে ৫ উইকেট  –
ম্যাচে ১০ উইকেট  –
সেরা বোলিং  – ৬/৮৪
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ২/– ২৪৮/১৪
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো, ১৫ এপ্রিল ২০১৮

বর্ণাঢ্যময় খেলোয়াড়ী জীবনে ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রভূতঃ খ্যাতি ছিল তার। ১৯০২ সালে ইংল্যান্ডের পক্ষে দুইবার টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছেন লিওনেল প্যালেরিট। সমসাময়িক খেলোয়াড়েরা তাকে ঐ সময়ের অন্যতম সেরা আক্রমণধর্মী খেলোয়াড়ের মর্যাদা দিয়েছেন। তার স্মরণে দ্য টাইমস উল্লেখ করে যে, সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যান ছিলেন লিওনেল প্যালেরিট। তবে, পরবর্তী শীতকালে সফরে যেতে অনাগ্রহতার কারণে প্যালেরিটের টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ হাতছাড়া করেন। ফলশ্রুতিতে আরও টেস্ট খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ নষ্ট হয় তার।

রেপটন বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন লিওনেল প্যালেরিট। বিদ্যালয়ের ক্রিকেট দলে চার বছর খেলেন। তন্মধ্যে, শেষ দুই বছর দলের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন। এরপর অক্সফোর্ডের অরিয়্যাল কলেজে চলে যান। অক্সফোর্ডে চার বছর থাকাকালে প্রত্যেক বছরই ব্লু লাভে সক্ষমতা দেখান তিনি। এছাড়াও, ১৮৯২ ও ১৮৯৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয় দলের অধিনায়কত্ব করেন। সমারসেটে থাকাকালে নিয়মিতভাবে হার্বি হিউইটের সাথে ব্যাটিং উদ্বোধনে নামতেন তিনি। তন্মধ্যে, ১৮৯২ সালে প্রথম উইকেট জুটিতে তার সাথে ৩৪৬ রান তুলে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে নতুন রেকর্ড স্থাপন করেন। তাদের ঐ রেকর্ডটি অদ্যাবধি সমারসেটের প্রথম উইকেট জুটিতে টিকে রয়েছে স্ব-মহিমায়। ঐ মৌসুমে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা পাঁচজন ক্রিকেটারের অন্যতম হিসেবে ঘোষিত হন লিওনেল প্যালেরিট।

পরবর্তী দশকে ইংল্যান্ডের শীর্ষস্থানীয় শৌখিন ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজেকে পরিচিত করে তুলেন। সাত মৌসুমে সহস্রাধিক প্রথম-শ্রেণীর রান সংগ্রহ করেছেন। দুইটি দ্বি-শতকও হাঁকিয়েছেন তিনি। ১৮৯৫ সালে হ্যাম্পশায়ারের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ২৯২ রান তুলেছেন। তৎকালীন সমারসেটের এ রেকর্ডটি ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত টিকেছিল।

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে মাত্র দুইটি টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ লাভ করেন লিওনেল প্যালেরিট। ১৯০২ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ ও পঞ্চম টেস্টে অংশ নেন। চতুর্থ টেস্টে অস্ট্রেলিয়া মাত্র ৩ রানের ব্যবধানে ও পঞ্চম টেস্টে ইংল্যান্ড মাত্র এক উইকেটের ব্যবধানে জয় তুলে নিয়েছিল।

১৯০৪ সালের পর থেকে সমারসেটের পক্ষে অনিয়মিতভাবে অংশ নিতে থাকেন। তবে, ১৯০৭ সালে পূর্ণাঙ্গ মৌসুম খেলেন। ঐ বছর তিনি দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ১৯০৯ সালে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটকে চিরতরে বিদায় জানান। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে পনেরো হাজারেরও অধিক রান তুলেছেন লিওনেল প্যালেরিট।

প্রারম্ভিক জীবন

২৭ মে, ১৮৭০ তারিখে ল্যাঙ্কাশায়ারের বিখ্যাত সমুদ্র অবকাশ যাপন কেন্দ্র গ্রাঞ্জ-ওভার-স্যান্ডসে লিওনেল প্যালেরিটের জন্ম। হেনরি হ্যামিল্টন প্যালেরিট ও এলিজাবেথ অ্যান বিগ দম্পতির পাঁচ সন্তানের মধ্যে তিনি জ্যেষ্ঠ ছিলেন। তার পিতা হুগুইনট বংশোদ্ভূত। ক্রিকেটের প্রতি সুগভীর আগ্রহ ছিল তার। ১৮৬০-এর দশকের শেষার্ধ্বে মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের পক্ষে দুইটি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। সমারসেটের ক্লেভডনে অবস্থিত রেভারেন্ড এস. কর্নিশ স্কুলে প্রথম পড়াশোনা করেন। সেখানে তিনি উপর্যুপরি সাত বলে সাত উইকেট পেয়েছিলেন। এরপর রেপটন স্কুলে স্থানান্তরিত হন। রেপটনে সর্বক্রীড়ায় দক্ষতা প্রদর্শনে সক্ষম হন। দুই, এক ও অর্ধ-মাইলের মাঝারীপাল্লার দৌঁড়ে বিদ্যালয়ের রেকর্ড ভঙ্গ করেন। ১৮৮৬ থেকে ১৮৮৯ সাল পর্যন্ত বিদ্যালয়ের প্রথম একাদশে খেলেন। তন্মধ্যে, শেষ দুই বছর বিদ্যালয় দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। ১৮৮৯ সালে সি. বি. ফ্রাইয়ের পর বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় সেরা ক্রীড়াবিদের সম্মাননা লাভ করেন। রেপটনের সর্বশেষ বছরে ২৯-এর অধিক গড়ে রান তুলেন ও ১৩-এর কম গড়ে ৫৬ উইকেট লাভ করেছিলেন।

লিওনেল প্যালেরিটের শুরুর দিকের বেশ কিছু সফলতার জন্য পিতার সহযোগিতা বেশ গুরুত্ব পায়। তিনি পরবর্তীকালে উইজডেনের বর্ষসেরা ক্রিকেটারদ্বয় - ফ্রেডরিক মার্টিনউইলিয়াম অ্যাটওয়েলের ন্যায় পেশাদার খেলোয়াড়দেরকে দুই পুত্রের উত্তরণে ইস্টার হলিডেতে বোলিং করতে অর্থ ব্যয় করেন। এছাড়াও, পরবর্তী ক্রিকেট মৌসুমে তাদেরকে সংগঠিত করার প্রয়াস চালান। ১৮৮৯ সালের শেষদিকে প্যালেরিট প্রথমবারের মতো সমারসেট কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবে খেলেন। ঐ সময় সমারসেট দ্বিতীয় শ্রেণীর কাউন্টি দল ছিল। দলটিকে গ্রীষ্মকালে পূর্ব-নির্ধারিত প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর দলের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হতে হতো। জন্মসূত্রে ল্যাঙ্কাশায়ারীয় হলেও প্যালেরিটের পরিববার ডরসেটে ক্যাটিস্টক এলাকায় বসবাস করতেন। দক্ষিণ-পশ্চিম এলাকায় অবস্থান করার কারণে যে-কোন দলে ক্রিকেট খেলার পছন্দ তার ছিল। রেপটনে অধ্যয়ন শেষে অক্সফোর্ডের অরিয়্যাল কলেজে ভর্তি হন।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

অক্সফোর্ডে ভর্তি হবার প্রথম বছরেই অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেট দলের পক্ষে খেলার জন্য লিওনেল প্যালেরিটকে মনোনয়ন দেয়া হয়। মে, ১৮৯০ সালে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া একাদশের বিপক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। প্যালেরিট খেলায় ছয় ও শূন্য রান এবং এক উইকেট দখল করেছিলেন। ঐ খেলায় অস্ট্রেলিয়া ইনিংস ব্যবধানে জয় তুলে নেয়। পরের খেলায় প্যালেরিটের উত্তরণ ঘটে। অক্সফোর্ডের সদস্যরূপে জেন্টলম্যানের বিপক্ষে খেলেন। প্রথম ইনিংসে আট নম্বরে ব্যাটিং করে ৫৪ রান তুলে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন। এটিই তার প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে প্রথম অর্ধ-শতক ছিল। ঐ গ্রীষ্মে অক্সফোর্ডের পক্ষে আর একটি পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস খেলেন। এমসিসি’র বিপক্ষে ৭২ রান করেছিলেন তিনি। ঐ মৌসুমে বিশ্ববিদ্যালয় দলের পক্ষে সকল খেলায় অংশ নিয়ে ১৯.০০ গড়ে ২৮৫ রান করেন। ১৮৯০ সালে মন্দ আবহাওয়ার কারণে প্রত্যাশার তুলনায় ব্যাটিং গড় অত্যন্ত নিম্নগামী ছিল। প্যালেরিটের গড়টি অক্সফোর্ড দলের পক্ষে চতুর্থ স্থানে অবস্থান করে। এছাড়াও, তার সংগৃহীত সর্বমোট ২৮৫ রান দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ ছিল। ফলশ্রুতিতে, ব্লু লাভ করেন ও অক্সফোর্ডের পোশাকে ১৮৯০ সালে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলায় কেমব্রিজের মুখোমুখি হতে তাকে রাখা হয়। এ খেলায় তিনি কিছুটা সফলতার স্বাক্ষর রাখেন। ঐ মৌসুমে সমারসেট দল তেরোটি খেলায় অংশ নেয়। তন্মধ্যে, বারোটিতে জয় পায় ও অন্য একটি টাইয়ে পরিণত হয়। খেলাগুলোর দশটিতে প্যালেরিটের অংশগ্রহণ ছিল। প্রথম খেলাটিতে লিচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে মনোরম সেঞ্চুরি করেছিলেন। ফলশ্রুতিতে, সমারসেটের এ অসামান্য অর্জনের প্রেক্ষিতে দলটি ১৮৯১ সালে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

অক্সফোর্ডের ব্যাটিং সম্পর্কে অক্সফোর্ড ক্রিকেট ঐতিহাসিক জিওফ্রে বোল্টন মন্তব্য করেন যে, ১৮৯১ সালে খেলার মান অগ্রহণযোগ্য। তখন প্যালেরিট বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় বৎসর পার করছিলেন। প্যালেরিটের ব্যাটিং গড় ১৫.৭৮ যা সতীর্থদের মাঝে পঞ্চম স্থান এনে দেয়। এবারও তিনি বিশ্ববিদ্যালয় খেলায় দুই ও এগারো রান তুলে কঠিন সময় পার করেন। অক্সফোর্ডে অবস্থানকালে সচরাচর মাঝারিসারিতে ব্যাট হাতে মাঠে নামতেন লিওনেল প্যালেরিট। অপ্রত্যাশিতভাবে সমারসেটের দলীয় অধিনায়ক হার্বি হিউইটের সাথে ব্যাটিং উদ্বোধন করতে নামেন। এ অবস্থানে থেকে সমারসেট আশাতীত সফলতা পায়। দশ খেলায় ৩১.১১ গড়ে রান তুলেন ও কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে শীর্ষ দশ ব্যাটসম্যানের একজন হন। ঐ বছরই প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে তিনি তার প্রথম সেঞ্চুরি হাঁকান। গ্লুচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে তিনি ১০০ রান তুলেছিলেন।

১৮৯১-৯২ মৌসুমে লর্ড হকের নেতৃত্বাধীন দলের সদস্যরূপে উত্তর আমেরিকা গমনে সম্মতিজ্ঞাপন করেন। কিন্তু শেষ মুহুর্তে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন ও সমারসেটের দলীয় সঙ্গী স্যামি উডস তার স্থলাভিষিক্ত হন।

১৮৯২ সালে প্যালেরিটকে অক্সফোর্ড দলের নেতৃত্বের দায়িত্ব দেয়া হয়। উইজডেনের ভাষ্য মতে, মৌসুমটি সর্বাধিক সফলতম ছিল। প্যালেরিট নিজেকে বোলার হিসেবে তুলে ধরার প্রয়াস চালান। কেবলমাত্র জর্জ বার্কলি তার তুলনায় অধিক বল করেছিলেন। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে দুইবার ইনিংসে পাঁচ উইকেট পেয়েছেন। তন্মধ্যে, জেন্টলম্যানের বিপক্ষে অক্সফোর্ডের প্রথম ইনিংসে প্রথমবারের মতো পাঁচ উইকেট লাভে সক্ষমতা দেখান। এরপর ল্যাঙ্কাশায়ারের উভয় ইনিংসে চারটি করে উইকেট তুলে নেন ও খেলায় তিনি অর্ধ-শতকেরও সন্ধান পান। ফিরতি খেলায় ল্যাঙ্কাশায়ারের বিপক্ষে নিজস্ব ব্যক্তিগত সেরা বোলিং পরিসংখ্যান দাঁড় করান। ওল্ড ট্রাফোর্ডে ৬/৮৪ বোলিং পরিসংখ্যান গড়েছিলেন। পরের খেলায় সাসেক্সের বিপক্ষে দুইটি মনোজ্ঞ ইনিংস খেলেন ও বোলিং করেন যা বোল্টনের ভাষ্য মতে খেলায় বেশ প্রভাববিস্তার করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলায় কেমব্রিজের মুখোমুখি হন। প্রথম ইনিংসে শূন্য রানে বিদায় নেন। তবে, ম্যালকম জারদিন ও ভার্নন হিলের সেঞ্চুরির বদৌলতে অক্সফোর্ড ৩৬৫ রান তুলে। কেমব্রিজ দল ১৬০ রানে অল-আউট হলে ফলো-অনের কবলে পড়ে। ৩৮৮ রানে গুটিয়ে গেলে অক্সফোর্ডের জয়ের লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়ায় ১৮৪। ফিল্ডিং চলাকালে প্যালেরিট আহত হন। ব্যাটিং উদ্বোধনের জন্য ফ্রাঙ্ক ফিলিপসকে তার স্থলে দাঁড় করান। শুরুটা অক্সফোর্ড ভালো করতে পারেনি। ১৭/২ থাকা অবস্থায় ছিল। প্যালেরিট পাঁচ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামেন। প্রায় দেড়ঘণ্টা ক্রিজ আঁকড়ে থেকে ৭১ রান তুলেন ও দলের বিজয়ে অসামান্য ভূমিকা পালন করেন। ১৮৯২ সালে অক্সফোর্ডের পক্ষে ব্যাটিং গড়ে শীর্ষস্থানে আরোহণ করেন। ৩৬.৩৫ গড়ে ৫০৯ রান তুলেন ও ২২.২৮ গড়ে ২৮ উইকেট পান।

বিশ্ববিদ্যালয় খেলায় অসামান্য ভূমিকার কারণে মর্যাদাসম্পন্ন জেন্টলম্যান বনাম প্লেয়ার্সের খেলায় তাকে মনোনীত করা হয়। লর্ডস ও ওভালের ঐ খেলাগুলোয় তিনি জেন্টলম্যানের পক্ষাবলম্বন করেন। সমারসেটে ফিরে জুলাইয়ে শুরুতে গ্লুচেস্টারশায়ারের বিপক্ষ সেঞ্চুরি হাঁকান। আগস্টের শেষদিকে ইয়র্কশায়ারের বিপক্ষে ১৩২ রান তুলেন। এ সময় হিউইটের সাথে ৩৪৬ রানে জুটি গড়েন। এ পর্যায়ে ১৮৬৯ সালে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে প্রথম উইকেট জুটিতে ডব্লিউ. জি. গ্রেসব্রান্সবি কুপারের ২৮৩ রানে জুটির সংগ্রহকে ম্লান করে দেন তারা। যদিও তাদের গড়া এ রেকর্ডটি পরবর্তীতে ভেঙ্গে যায়; তবুও অদ্যাবধি সমারসেটের প্রথম উইকেট জুটিতে বহাল তবিয়তে টিকে রয়েছে। এইচ.এস. অ্যাল্থাম ও ই. ডব্লিউ. সোয়ানটনের যৌথভাবে রচিত এ হিস্ট্রি অব ক্রিকেট গ্রন্থে এ প্রসঙ্গে উল্লেখ রয়েছে যে, এক প্রান্তে বিশুদ্ধ চাকচিক্যময় ও অন্য প্রান্তে খাঁটি আক্রমণ ছিল। ঐ সময়ে দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করে যে, এ জুটি সাড়ে তিন ঘণ্টারও অধিক সময় ক্রিজে অবস্থান করে। প্যালেরিট তার ইনিংসে একটি ছক্কা ও উনিশটি চারের মার মেরেছিলেন। মৌসুম শেষে দুইটি প্রতিনিধিত্বকারী দলের খেলোয়াড় হিসেবে মনোনীত হন তিনি। ওয়েস্টের সদস্যরূপে ইস্টের বিপক্ষে এবং হ্যাস্টিংসে অনুষ্ঠিত খেলায় জেন্টলম্যানের সদস্যরূপে প্লেয়ার্সের বিপক্ষে অংশ নেন। ঐ বছরে সকল প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে ১,৩৪৩ রান তুলেন যা তৃতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ ছিল।

১৮৯৩ সালে উইজডেন ক্রিকেটার্স অ্যালমেনাক তাকে বর্ষসেরা পাঁচজন খেলোয়াড়ের একজনরূপে স্বীকৃতি দেয়। এ প্রসঙ্গে উইজডেন মন্তব্য করে যে, তেমন কোন সন্দেহে নেই যে ক্রিকেট বিশ্ব এরচেয়ে অধিক স্বীকৃতি দিতে কালবিলম্ব করবে।

পূর্ববর্তী বছরের সাথে তুলনা করলে ১৮৯৩ সালটি অক্সফোর্ডের জন্য অন্যতম ব্যর্থতার বছর ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় দলটি কোন খেলাতেই জয়লাভে সক্ষমতা দেখাতে পারেনি। ব্যাটিং উপযোগী পরিবেশ থাকা স্বত্ত্বেও কোন ব্যাটসম্যানই সেঞ্চুরির সন্ধান পাননি। ২১.২৩ গড়ে ২৭৬ রান তুলে প্যালেরিট ব্যাটিং গড়ে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলেন। বোল্টন দল নির্বাচনের বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেন। ঐ বছর প্যালেরিটের অধিনায়কত্বে বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় খেলায় আরও শক্তিশালী দল গঠন করা যেতো। অন্যদিকে কেমব্রিজের ন্যায় শক্তিধর দলে পূর্ববর্তী বছরে অংশগ্রহণকারী আটজন খেলোয়াড় ছিলেন। এছাড়াও, আর্থার জোন্স ও কে. এস. রণজিতসিংজীকে অন্তর্ভুক্ত করে। অক্সফোর্ড খেলায় ২৬৬ রানে পরাজিত হয়। কেবলমাত্র প্যালেরিট ও ফ্রাই দলের চেয়ে ১২ রান বেশি করেছিলেন।

অক্সফোর্ডে চার বছর অবস্থানকালে প্যালেরিট প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে বিশ্ববিদ্যালয় দলের পক্ষে ৩১বার অংশ নেন। ২৩.০৫ গড়ে ১,২৯১ রান তুলেন। নয়টি অর্ধ-শতকের ইনিংসে সর্বোচ্চ ছিল অপরাজিত ৭৫ রান। ২৫.০৩ গড়ে ৫২ উইকেট লাভ করেছেন যা তার খেলোয়াড়ী জীবনের সর্বনিম্ন গড় ছিল। এছাড়াও, কেবলমাত্র একবার পাঁচ উইকেট লাভ করার কৃতিত্ব প্রদর্শন করেছেন। অক্সফোর্ডে অবস্থানকালে অ্যাথলেটিকসে অংশ নিয়ে ব্লু লাভ করেন। ১৮৯২ সালে কেমব্রিজের বিপক্ষে তিন মাইলের দৌঁড়ে অংশ নেন। একই বছর করিন্থিয়ান্সের পক্ষে ফুটবল খেলেন। এছাড়াও সম্মিলিত বিশ্ববিদ্যালয় ও লন্ডনের পক্ষে খেলেন। আঘাতের কারণে কেমব্রিজের বিপক্ষে খেলতে পারেননি। ফলে, ফুটবলেও ব্লু লাভ করেন তিনি।

শৌখিন ব্যাটসম্যান

ডব্লিউ. জি. গ্রেসের ভাষ্য মোতাবেক জানা যায়, পরবর্তী মৌসুমগুলোয় প্যালেরিট শৌখিন ব্যাটসম্যানদের তালিকায় সম্মুখসারিতে অবস্থান করেছিলেন। ১৮৯৩ সালে আর্থার শ্রিউসবারি’র নেতৃত্বাধীন ইংল্যান্ড একাদশের সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া সফরে যান। খেলায় তিনি ৭১ রান তুলে ইংরেজ দলের ইনিংস ও ১৫৩ রানের বিজয়ে প্রভূতঃ ভূমিকা রাখেন। ঐ গ্রীষ্মে সমারসেটের পক্ষে পাঁচটি অর্ধ-শতক করেন। ২৮.৯৪ গড়ে সংগৃহীত রানগুলো কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে কেবলমাত্র দলীয় সঙ্গীর হিউইটের চেয়ে কম ছিল। পরের বছর পালাইরেট তার সাবেক বিশ্ববিদ্যালয় দলের মুখোমুখি হন ও বড় ধরনের রান তুলেন। বিশ্ববিদ্যালয় দলে তার ভাই রিচার্ড পালাইরেট ও ফ্রাই অধিনায়কত্ব করছিলেন। সমারসেটের দ্বিতীয় ইনিংসে ১৮১ রান তুলেন যা ঐ সময়ে তার খেলোয়াড়ী জীবনের সর্বোচ্চ প্রথম-শ্রেণীর রান ছিল। এছাড়াও নটিংহ্যামশায়ারের বিপক্ষে ১১৯ রান তুলে সাবেক প্রশিক্ষক অ্যাটওয়েলের বলে লেগ বিফোর উইকেটের শিকারে পরিণত হন। ১৮৯৪ সালে অল্পের জন্য সহস্রাধিক প্রথম-শ্রেণীর রানের মাইলফলক স্পর্শ করতে পারেননি তিনি। ঐ বছর সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা দলের বিপক্ষে দুইটি অর্ধ-শতকের ইনিংস খেললেও খেলাগুলো প্রথম-শ্রেণীর মর্যাদা না পাওয়ায় এ মাইলফলক লাভ করতে পারেননি লিওনেল পালাইরেট।

১৮৯৫ সালে জাতীয় ব্যাটিং গড়ে লিওনেল পালাইরেট চতুর্থ স্থানে অবস্থান করেছিলেন। ৪৬.৮৯ গড়ে ১,৩১৩ রান তুলেন। ইংল্যান্ডের পক্ষে অংশগ্রহণকারী অপর তিনজন ব্যাটসম্যান - আর্চি ম্যাকলারেন, গ্রেস ও রণজিতসিংজীই কেবল তার তুলনায় অধিক গড়ে রান তুলেছিলেন। ঐ মৌসুমে পালাইরেট তিনটি সেঞ্চুরি করেন। দুইটি মিডলসেক্সের বিপক্ষে করেন। শেষেরটিতে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করে অপরাজিত ছিলেন। অপরটিতে ইয়র্কশায়ারের বিপক্ষে ১৬৫ রান করেন। পরের বছর আবারও সহস্রাধিক রান তুলেন। ৪০ ঊর্ধ্ব ব্যাটিং গড়ে রান তোলা অব্যাহত রাখেন। চতুর্থ ইনিংসে অপরাজিত ৮৩ রানে ইনিংসটি রণজিতসিংজীর কাছ থেকে ভূয়সী প্রশংসা লাভ করেন। ব্যাটিং অনুপযোগী পিচে এক প্রান্ত আগলে রেখে দলকে ড্রয়ের দিকে নিয়ে যেতে সক্ষমতা দেখান তিনি। এক মাস পর প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান তুলেন। হ্যাম্পশায়ারের বিপক্ষে ২৯২ রানের এ ইনিংসটি তার প্রথম দ্বি-শতক ছিল। ঐ সময়ে সমারসেটের যে-কোন ব্যাটসম্যানের তুলনায় তার এ সংগ্রহটি সর্বোচ্চ ছিল। এ প্রসঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার এক সংবাদপত্রে তার ইনিংস সম্পর্কে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। এতে বলা হয় যদি তিনি তার এ খেলার ধারা অব্যাহত রাখেন, তাহলে ওভালে সিরিজের চূড়ান্ত টেস্টে অবশ্যই তাকে দেখা যাবে। হ্যাম্পশায়ারের পর ওভাল ও লর্ডসে জেন্টলম্যানের খেলার কোনটিতেই বড় ধরনের কোন প্রভাব ফেলতে পারেননি তিনি। টনটনে স্বাগতিক সাসেক্সের বিপক্ষে পুনরায় নিজেকে মেলে ধরেন। ১৫৪ রান তুলেন তিনি। এ পর্যায়ে স্বীয় ভ্রাতার সাথে ২৪৯ রানের জুটি গড়েন। খেলাটি চূড়ান্ত টেস্ট শুরুর অল্প কয়েকদিন পূর্বে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। অস্ট্রেলীয় গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও পালাইরেটকে খেলায় অংশগ্রহণের জন্য মনোনয়ন দেয়া হয়নি। তবে, ঐ গ্রীষ্মে সফরকারী দলের বিপক্ষে দুইবার অংশ নিয়েছিলেন। সমারসেটের পক্ষে দুই ইনিংসে তিনি মাত্র ছয় রান তুলেছিলেন। স্কারবোরা উৎসবে চার্লস থর্নটন একাদশের সদস্যরূপে খেলেন ও ৭১ রান তুলে দলকে ইনিংস বিজয়ে ভূমিকা রাখেন।

১৮৯৭ সালে খুব কমসংখ্যক প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নেন পালাইরেট। মাত্র বারো খেলায় অংশ নিয়ে ৩০-এর কম গড়ে ৫৯৩ রান করেন। ১৮৯৫ থেকে ১৯০৬ সালের মধ্যে এটিই তার সর্বনিম্ন গড় ছিল। তাস্বত্ত্বেও সমারসেট কর্তৃপক্ষ তার উপর বেশ আস্থা রেখেছিলেন। ১৮৯৭ সালে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে কাউন্টি দলটির ব্যাটিং গড়ে তিনি শীর্ষস্থানে আরোহণ করেন। ১৮৯৮ সালে চারবারের মধ্যে তৃতীয়বার সহস্রাধিক প্রথম-শ্রেণীর রান তুলেন। ব্রিস্টলে গ্লুচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে অপরাজিত ১৭৯ রানের মূল্যবান ইনিংস উপহার দেন। মৌসুমের শেষভাগে প্রথমবারের মতো সমারসেট দলকে নেতৃত্ব দিয়ে একই দলের বিপক্ষে দলকে ইনিংস ও ১৬৯ রানের জয় এনে দেন। স্কারবোরা উৎসবে দুই খেলায় অংশ নেন। তন্মধ্যে, জেন্টলম্যানের সদস্যরূপে প্লেয়ার্সের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৫৪ রান করেছিলেন। এছাড়াও, থর্নটনের নেতৃত্বাধীন ইংল্যান্ড একাদশের সদস্যরূপে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপাধারী দল ইয়র্কশায়ারের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত খেলায় অংশ নেন।

১৮৯৯ সালের পুরোটা সময় অ্যাপেন্ডিসাইটিসের কারণে খেলা থেকে দূরে অবস্থান করতে বাধ্য হন। তবে, বেইলিজ ম্যাগাজিন অব স্পোর্টস এন্ড পাসটাইমসে উল্লেখ করা হয় য, ঐ গ্রীষ্মে তিনি হয়তোবা ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার খেলায় অংশ নিতে পারতেন। ১৯০০ সালে খেলার জগতে ফিরে আসেন। ৩৫.০৭ গড়ে ৯৪৭ রান তুলেন। হ্যাম্পশায়ারের বিপক্ষে ১৬১ রানের একমাত্র সেঞ্চুরিটি করেন। এ সময় চার্লস বার্নার্ডের সাথে ২৬২ রানের জুটি গড়েন।

১৯০১ সালে দারুণ সময় অতিবাহিত করেন লিওনেল পালাইরেট। পরিসংখ্যানগতভাবে কেবলমাত্র ফ্রাই ও রণজিত সিংহের পরই জাতীয় ব্যাটিং গড়ে অবস্থান করেন। ইয়র্কশায়ারের বিপক্ষে মনোমুগ্ধকর ১৭৩ রানের ইনিংসটি সকলের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে উপনীত হয়। ১৯০০ সালে ইয়র্কশায়ার কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপাধারী দল ছিল। খেলাটি হেডিংলি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় ও ১৯০১ সালে দলের একমাত্র পরাজয়ের স্বাদ আস্বাদন করে সমারসেটের কাছে। সমারসেট প্রথম ইনিংসে ৮৭ রানে অল-আউট হয় ও ইয়র্কশায়ার ৩২৫ রান তুলে ২৩৮ রানে এগিয়ে যায়। প্রথম ইনিংসে পালাইরেট ও সতীর্থ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান লেন ব্রন্ড কোন রান তুলতে না পারলেও দ্বিতীয় ইনিংসে দুজনে ১৪০ মিনিট ব্যাটিং করে ২২২ রানের জুটি গড়েন। দুজনেই সেঞ্চুরি করেন। ১০৭ রানে ব্রন্ড ফিরে গেলেও পালাইরেট তার ব্যাটিং কার্য চালিয়ে যান। এক পর্যায়ে ১৭৩ রান তুলে কট এন্ড বোল্ড হন। এরপর ফ্রাঙ্ক ফিলিপস ১২২ রান করে দলের তৃতীয় সেঞ্চুরি করেন। ৬৩০ রান করে সমারসেটের ইনিংস শেষ হয়। পরবর্তীতে ব্রন্ড ও বিউমন্ট ক্রানফিল্ড উভয়ের চার উইকেট লাভের কল্যাণে ১১৩ রানে ইয়র্কশায়ার দল গুটিয়ে যায়। ফলশ্রুতিতে, সমারসেট ২৭৯ রানে জয় পায়। ইয়র্কশায়ারের অধিনায়ক লর্ড হক ঘোষণা করেন যে, খেলাটিতে পরাজয়বরণ করলেও আমার দেখা সেরা খেলাগুলোর এটি একটি। একই বছর পালাইরেট ল্যাঙ্কাশায়ারের বিপক্ষে ১৮২ ও সাসেক্সের বিপক্ষে ১৯৪ রান তুলেন। ১৯০১ সালে সর্বমোট পাঁচ সেঞ্চুরি ও এগারোটি অর্ধ-শতক করেন। ৫৭.৭৫ গড়ে ১৯০৬ রান তুলেন যা তার খেলোয়াড়ী জীবনে এক মৌসুমে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ছিল।

ইংল্যান্ড দলে অন্তর্ভুক্তি

১৯০২ সালের ইংরেজ গ্রীষ্ম মৌসুমটি বৃষ্টিতে ব্যাপকভাবে আক্রান্ত হয়। ফলশ্রুতিতে, ব্যাটিং করা বেশ দুষ্কর হয়ে দাড়িয়েছিল। পুরো মৌসুম জুড়ে পালাইরেট কোন সেঞ্চুরির সন্ধান পাননি। তাস্বত্ত্বেও, সহস্রাধিক রান উঠানোয় সক্ষমতা দেখান। আবারও তিনি ইয়র্কশায়ারের পরাজয়ের প্রতীকী কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হন। স্যার হোম গর্ডন বৃষ্টি আক্রান্ত উইকেটে পালাইরেটের ২৫ ও ২৪ রানের পাশাপাশি উভয় ইনিংসে ব্রন্ডের দুই অঙ্কে স্পর্শের কথা তুলে ধরেন। উইজডেনের মতে, এ জুটির ব্যাটিং অবিশ্বাস্য ও সমারসেটের ৩৪ রানে জয়ে প্রভূতঃ ভূমিকা রাখে যা বছরে দলটির বিপক্ষে দ্বিতীয়বার জয় পায়। কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে সমারসেটই একমাত্র দল হিসেবে ইয়র্কশায়ারকে পরাজিত করেছিল।

১৯০২ সালে অস্ট্রেলিয়া দল ইংল্যান্ড সফরে আসে। সিরিজের প্রথম টেস্ট শুরুর এক সপ্তাহ পূর্বে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলার জন্য মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে খেলার জন্য মনোনীত হন। ড্র হওয়া খেলায় তিনি ৩৯ ও ৪৪ রান তুলেন। প্রথম তিন টেস্টে তার খেলার সুযোগ হয়নি। পালাইরেটকে রণজিত সিংহ ও ফ্রেড টেটকে ফ্রাই, জর্জ হার্স্টগিলবার্ট জেসপের স্থলাভিষিক্ত করা হবে। উইজডেন খেলার প্রতিবেদনে উল্লেখ করে যে, ফ্রাইকে বাদ দেয়া যথোপযুক্ত সিদ্ধান্ত ছিল। কিন্তু হার্স্ট ও জেসপকে খেলানো হবে। অ্যাল্থাম তার এ হিস্ট্রি অব ক্রিকেট গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন যে, পালাইরেটকে হয়তো বা নেয়া হবে না। দল নির্বাচকমণ্ডলী একমত হয়েছেন হার্স্টের ন্যায় অল-রাউন্ডারের পরিবর্তে লিওনেল পালাইরেটকে মনোনীত করা প্রশ্নের উদয় ঘটাবে।

টেস্ট অভিষেকে পালাইরেট ব্যাটিং উদ্বোধনে নামেন ও ছয় রান তুলে প্যাভিলিয়নে ফেরৎ যান। ইংল্যান্ডের ইনিংসের প্রথম ৪৫ মিনিটে জ্যাক সন্ডার্সহিউ ট্রাম্বলের বোলিং তোপে প্রথম পাঁচজন শিকারের অন্যতম ছিলেন তিনি। দ্বিতীয় ইনিংসেও পুনরায় ব্যাটিং উদ্বোধন করতে মাঠে নামেন পালাইরেট। এবার অন্য সঙ্গী হিসেবে ম্যাকলারেন ববি অ্যাবলের পরিবর্তে উদ্বোধনে নামেন। এ জুটি ৪৪ রান তুলে। উইজডেন মন্তব্য করে যে, খেলতে যতোটা অস্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেছেন, তারচেয়ে বেশি বোলিং আক্রমণ সামাল দিতে হয়েছে তাদেরকে। সন্ডার্সের বলে আউট হন পালাইরেট। ১২০ রানে ইংল্যান্ডের ইনিংস গুটিয়ে যায় ও চার রানের ব্যবধানে পরাজিত হয় ইংরেজ দল।

সিরিজের পরবর্তী পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে পালাইরেটকে দলে রাখা হয়। হার্স্ট ও জেসপকে দলে ফিরিয়ে আনা হয়। পুরোদিন সফরকারী দল ব্যাট করে ৩২৪ রান তুলে। রাতে বৃষ্টি নামলে ব্যাটিং করা বেশ দূরূহ হয়ে পড়ে। দ্বিতীয় দিনে ইংল্যান্ড ১৮৩ রান সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়। ট্রাম্বলের বলে ২০ রানে পালাইরেট বিদায় নেন। অ্যাল্থাম তার ব্যাটিংয়ের ভূয়সী প্রশংসা করেন। অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে ও খেলায় জয়ের জন্য ইংল্যান্ডেরে প্রয়োজন পড়ে ২৬৩ রান। পালাইরেট ছয় রানে আউট হন ও ইনিংসে ট্রাম্বলের তৃতীয় বোল্ড হন তিনি। এ পর্যায়ে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ১০/৩ হয়। নিচেরসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে জেসপ ও হার্স্ট দলকে তুলে ধরেন ও ইংল্যান্ড এক উইকেটের নাটকীয় জয় পায়। ঐ গ্রীষ্মে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সমারসেটের সদস্যরূপে আরও একটি খেলায় অংশ নেন। টনটনে অনুষ্ঠিত ড্র হওয়া খেলাটিতে তিনি ৪৪ ও ৯০ রান তুলেছিলেন। এরপর আর তাকে টেস্ট খেলায় অংশ নিতে দেখা যায়নি। সংক্ষিপ্ত টেস্ট খেলোয়াড়ী জীবনে ১২.২৫ গড়ে ৪৯ রান তুলেছেন লিওনেল পালাইরেট। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পূর্বে অস্ট্রেলিয়া দলকে সেরা টেস্ট দলরূপে আখ্যায়িত করা হতো।

শেষদিকের কাউন্টি ক্রিকেট

১৯০৩ সালে এগারোটি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নেন লিওনেল পালাইরেট। এ মৌসুমে একটিমাত্র সেঞ্চুরি করার কৃতিত্ব প্রদর্শন করেন তিনি। প্রথম ইনিংসে সারের বিপক্ষে অর্ধ-শতক হাঁকানোর পর দ্বিতীয় ইনিংসে ১১৪ রান তুলেন। এছাড়াও আরও তিনবার পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস খেলেন। বছর শেষে ৩৫.৩৮ গড়ে ৬৩৭ রান তুলেন। পরের বছর তিনি আরও নিয়মিতভাবে খেলতে থাকেন। খেলোয়াড়ী জীবনে সর্বশেষবারের মতো সহস্রাধিক রান তুলেন। গ্লুচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে ১৬৬ রান তুলে মৌসুম শুরু করেন। বাথ ক্রিকেট উৎসবে ১১১ রান তুলেন। এ পর্যায়ে ব্রন্ডের সাথে উদ্বোধনী জুটিতে ১৬১ রান তুললেও ল্যাঙ্কাশায়ারের কাছে দশ উইকেটে পরাজিত হয় তার দল। ঐ মাসের শেষদিকে ওরচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে ব্যক্তিগত দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত দ্বি-শতকটি হাঁকান। ২০৩ রানের ঐ ইনিংসটি ওরচেস্টারশায়ারের প্রথম ইনিংসের দলীয় সংগ্রহেরও অধিক ছিল। খেলায় সমারসেট ইনিংস ও ১১৪ রানে জয়ী হয়। ক্রিকেট ঐতিহাসিক ডেভিড ফুট ১৯০৪ ও পরবর্তী কয়েকটি মৌসুমে সমারসেটের ছন্দপতন লক্ষ্য করেন। ঐ সময় ও প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়কালের মধ্যবর্তী সময়ে ক্লাবটি কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে দশম স্থানের অধিক উচ্চতায় অগ্রসর হতে পারেনি। ১৯০৫ ও ১৯০৬ সালের অধিকাংশ সময়ই ক্রিকেট খেলার বাইরে অবস্থান করেন পালাইরেট। এ সময় তিনি ডেভনের আর্লের পক্ষে ভূমি প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতে থাকেন। ১৯০৫ সালে তিনবার খেলায় অংশ নেন। সফরকারী অস্ট্রেলিয়া একাদশ, কেন্ট ও ওয়ারউইকশায়ারের বিপক্ষে খেলেন। ১৯০৬ সালে কেবলমাত্র ইয়র্কশায়ারের বিপক্ষে একটিমাত্র খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। ১৮৯৪ সাল থেকে সমারসেটের অধিনায়ক উডস ১৯০৬ সাল শেষে অবসর নেন। পূর্ববর্তী বছরগুলোয় খেলায় সীমিত পর্যায়ে অংশ নিলেও ১৯০৭ সালে পালাইরেটকে উডসের স্থলাভিষিক্ত করা হয়।

১৯০৭ সালে পালাইরেট কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে সমারসেটের পক্ষে সবগুলো খেলাতেই অংশগ্রহণ করেছিলেন। এছাড়াও, ১৯০৭ সালে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা একাদশের বিপক্ষে ক্লাবের সদস্যরূপে অংশ নেন। এক পর্যায়ে কিছু খেলায় ক্লাবটিতে যোগ্যতাসম্পন্ন এগারোজন খেলোয়াড়কে নিয়ে খেলতে হিমশিম খায়। ফলশ্রুতিতে, টেড টাইলরকে পুনরায় জোরপূর্বক দলে খেলতে বাধ্য করা হয়। টাইলর চার বছর ধরে সমারসেটের পক্ষে খেলেননি ও ১৯০০ সাল থেকে মাত্র পাঁচ খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। পালাইরেট নিজেও কঠিনতম সময় পার করেন। দশ বা ততোধিক খেলায় অংশ নেয়ার ক্ষেত্রে মাত্র ২১.৩৩ গড়ে রান তুলেন যা তার যে-কোন মৌসুমের তুলনায় সর্বনিম্ন ছিল। মাত্র তিনবার পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস খেলেছেন। তন্মধ্যে, টনব্রিজের অ্যাঞ্জেল গ্রাউন্ডে কেন্টের বিপক্ষে ১১৬ রানের ইনিংস ছিল তার। এ সেঞ্চুরিটি তার খেলোয়াড়ী জীবনের সর্বশেষ ছিল।

মৌসুম শেষে সমারসেট কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের পয়েন্ট তালিকায় ষোল দলের মধ্যে চৌদ্দতম স্থান দখল করে। এর পরপরই দলের অধিনায়কত্ব থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন তিনি। ক্লাবের বার্ষিক সাধারণ সভায় যোগ্য খেলোয়াড়ের অভাব ও দলের উজ্জ্বীবনী শক্তির অভাবের কথা তুলে ধরেন লিওনেল পালাইরেট। ১৯০৭ সালের পর তিনি আর মাত্র আটট প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। ১৯০৯ সালে টনটনে কেন্টেের বিপক্ষে সর্বশেষ খেলায় অংশ নেন। প্রথম ইনিংসে এক রান ও দ্বিতীয় ইনিংসে তিন রান তুলেছিলেন। খেলাগুলোয় তিনি হার্লিকুইন্স ক্রিকেট টুপি পরিধান করেন। দলীয় সঙ্গীদের কাছে বেশ সমীহের কারণ হয়ে দাঁড়ান। পূর্ণাঙ্গ প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবনে ৩৩.৬৩ গড়ে ২৭ সেঞ্চুরি সহযোগে ১৫,৭৭৭ রান তুলেন ও ৩৩.৯১ গড়ে ১৪৩ উইকেট দখল করেন।

ব্যক্তিগত জীবন

ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত লিওনেল পালাইরেট ১৮৯৪ সালে উইল্টশায়ারের সুপরিচিত ক্রিকেট উপদেষ্টা উইলিয়াম হেনরি লেভারটনের কন্যা ক্যারোলিন মাবেল লেভারটনের সাথে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন। এ দম্পতির দুই সন্তান ছিল। ১৮৯৫ সালে এভলিন মাবেল হ্যামিল্টন ও পরের বছর হেনরি এডওয়ার্ড হ্যামিল্টন জন্মগ্রহণ করে।

পালাইরেটের ভাই রিচার্ড পালাইরেট ১৮৯১ থেকে ১৯০২ সাল পর্যন্ত সমারসেটের পক্ষাবলম্বন করেন। তবে, যোগ্যতার মানদণ্ডে লিওনেলের তুলনায় কমই সফলতার স্বাক্ষর রেখেছেন।

ক্রিকেটের পাশাপাশি পালাইরেট অন্যান্য ক্রীড়ায়ও তার আগ্রহ বজায় রেখেছিলেন। ১৯০১ সালে বেইলিজ ম্যাগাজিনে প্রকাশিত জীবন-বৃত্তান্তে খেঁকশিয়াল শিকারকে প্রধান খেলারূপে তুলে ধরা হয়েছিল। ক্রিকেট থেকে অবসর নেয়ার পর লিওনেল পালাইরেট দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের প্রথিতযশা গল্ফার হিসেবে আবির্ভূত হন। ১৯১১ সালে ডেভন কাউন্টি গল্ফ ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠার পর তিনি প্রথম সভাপতির দায়িত্ব লাভের গৌরব অর্জন করেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে-পরে ১৯১৪ থেকে ১৯২৬ সাল পর্যন্ত গল্ফে ডেভন দলের অধিনায়কের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হন। এছাড়াও, ১৯২৩ থেকে ১৯৩২ সাল পর্যন্ত ইউনিয়নের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। ডেভনে আন্তঃক্লাব দলগত চ্যাম্পিয়নশীপের ধারণা তিনিই তুলে ধরেন ও বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন যা পালাইরেট ট্রফি নামে অদ্যাবধি প্রচলিত রয়েছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে ডেভন আর্ল আসনের অধীন পাওয়ারহাম এলাকায় রিওমন্ট ডিপোর কমান্ডের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

২৭ মার্চ, ১৯৩৩ তারিখে এক্সমাউথ এলাকায় ৬২ বছর বয়সে দেহাবসান ঘটে লিওনেল পালাইরেটের।

পাদটীকা

তথ্যসূত্র

গ্রন্থপঞ্জি

বহিঃসংযোগ

ক্রীড়া অবস্থান
পূর্বসূরী
স্যামি উডস
সমারসেট কাউন্টি ক্রিকেট অধিনায়ক
১৯০৭
উত্তরসূরী
জন ড্যানিয়েল

Tags:

লিওনেল প্যালেরিট প্রারম্ভিক জীবনলিওনেল প্যালেরিট প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটলিওনেল প্যালেরিট শৌখিন ব্যাটসম্যানলিওনেল প্যালেরিট ইংল্যান্ড দলে অন্তর্ভুক্তিলিওনেল প্যালেরিট শেষদিকের কাউন্টি ক্রিকেটলিওনেল প্যালেরিট ব্যক্তিগত জীবনলিওনেল প্যালেরিট পাদটীকালিওনেল প্যালেরিট তথ্যসূত্রলিওনেল প্যালেরিট গ্রন্থপঞ্জিলিওনেল প্যালেরিট বহিঃসংযোগলিওনেল প্যালেরিটFast bowlingইংরেজি ভাষাইংল্যান্ড ক্রিকেট দলসমারসেট কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

ফেসবুকশাবনূরপ্লাস্টিক দূষণসুনীল গঙ্গোপাধ্যায়যুক্তফ্রন্টজেলা প্রশাসকভীমরাও রামজি আম্বেদকরও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদহরপ্পাম্যানুয়েল ফেরারাআর্যরাধামরক্কো জাতীয় ফুটবল দলবিভিন্ন দেশের মুদ্রাআবুল আ'লা মওদুদীপ্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়নারী ক্ষমতায়নসোনালী ব্যাংক লিমিটেডনিমভুট্টাক্ষুদিরাম বসুবিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিমসবচেয়ে বেশি গোলকারী ফুটবলারের তালিকাবুধ গ্রহপ্রশান্ত মহাসাগরনৈশকালীন নির্গমনসূরা আরাফশ্রীবিজয়া এয়ার ফ্লাইট ১৮২পায়ুসঙ্গমসূরা কাওসারহনুমান (রামায়ণ)কোষ বিভাজনপুঁজিবাদমুসাফিরের নামাজটেনিস বলজাতীয় স্মৃতিসৌধবাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষকদারুল উলুম দেওবন্দসংস্কৃতিবাংলা লিপিলিঙ্গ উত্থান ত্রুটিসূরা বাকারারাশিয়ায় ইসলামবাংলাদেশে পালিত দিবসসমূহক্রোমোজোমসিরাজউদ্দৌলাপদ (ব্যাকরণ)ভারত বিভাজনদেশ অনুযায়ী ইসলামবিকাশবাংলাদেশের জনমিতিসংস্কৃত ভাষাকালো জাদুত্রিপুরারাসায়নিক বিক্রিয়াজোয়ার-ভাটাঔষধইরানআফগানিস্তানপলাশীর যুদ্ধসূরা লাহাবআলীবাঙালি হিন্দুদের পদবিসমূহখেজুরসত্যজিৎ রায়হান্স ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডারসনরামসার কনভেনশনমামুনুর রশীদসূরা নাসবাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিকনমেবলসেশেলসসালোকসংশ্লেষণমোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীশ্রীলঙ্কাদুর্গাপূজাহস্তমৈথুনপূরণবাচক সংখ্যা (ভাষাতত্ত্ব)নিরাপদ যৌনতা🡆 More