রিপাবলিকান পার্টি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি ঐতিহাসিক রাজনৈতিক দল। এই দলকে জিওপি (GOP) বা গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টি হিসেবেও অভিহিত করা হয়। ঐতিহাসিকভাবেই এই দলের প্রতিদ্বন্দ্বী হলো ডেমোক্রেটিক পার্টি।
রিপাবলিকান পার্টি | |
---|---|
সভাপতি | রোনা ম্যাকড্যানিয়েল (মিশিগান) |
রাষ্ট্রপতি | ডোনাল্ড ট্রাম্প (নিউ ইয়র্ক) |
উপ-রাষ্ট্রপতি | মাইক পেন্স (ইন্ডিয়ানা) |
হাউস লিডার | স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি (ক্যালিফোর্নিয়া) |
সিনেট লিডার | মেজোরিটি লিডার মিচ ম্যাককোনেল (কেন্টাকি) |
চেয়ার অব গভর্নরস অ্যাসোসিয়েশ্যান | ডাগ ডুসি (অ্যারিজোনা) |
প্রতিষ্ঠা | ২০ মার্চ ১৮৫৪ |
পূর্ববর্তী | হুইগ পার্টি ফ্রী সয়েল পার্টি পিপল'স পার্টি |
সদর দপ্তর | ৩১০ ফার্স্ট স্ট্রিট এসই ওয়াশিংটন ডি. সি. ২০০০৩ |
ছাত্র শাখা | কলেজ রিপাবলিকান্স |
যুব শাখা | ইয়াং রিপাবলিকান্স টিন এইজ রিপাবলিকান্স |
মহিলা শাখা | ন্যাশনাল ফেডারেশন অব রিপাবলিকান উইমেন |
বৈদেশিক শাখা | রিপাবলিকান্স ওভারসিস |
সদস্যপদ (২০২০) | ৩,৩২,৮৪,০২০ |
ভাবাদর্শ | সংখ্যাধিক্য: রক্ষণশীলতা অর্থনৈতিক উদারনীতি রাজকোষ রক্ষণশীলতা সামাজিক রক্ষণশীলতা সংখ্যালঘু: ডানপন্থা কেন্দ্রপন্থী রাজনীতি |
ইউরোপীয় অধিভুক্তি | অ্যালায়েন্স অব ইউরোপিয়ান কনজার্ভেটিভস অ্যান্ড রিফরমিস্ট (আঞ্চলিক অংশীদার) |
আন্তর্জাতিক অধিভুক্তি | ইন্টারন্যাশনাল ডেমোক্রেট ইউনিয়ন |
আঞ্চলিক সংযুক্তিকরণ | এশিয়া প্যাসিফিক ডেমোক্রেট ইউনিয়ন |
আনুষ্ঠানিক রঙ | Red |
সিনেটে আসন | ৫১ / ১০০ |
হাউসে আসন | ২১১ / ৪৩৫ |
রাজ্যপাল-শাসন | ৩১ / ৫০ |
রাজ্য উচ্চকক্ষে আসন | ১,০৮০ / ১,৯৭২ |
রাজ্য নিম্নকক্ষে আসন | ২,৭৭৩ / ৫,৪১১ |
স্থানিক রাজ্য-শাসন | ১ / ৬ |
আঞ্চলিক উচ্চ চেম্বার আসন | ১২ / ৯৭ |
আঞ্চলিক নিম্ন চেম্বার আসন | ১৪ / ৯১ |
নির্বাচনী প্রতীক | |
ওয়েবসাইট | |
www |
এ পর্যন্ত ১৯ জন প্রেসিডেন্ট রিপাবলিকান দল থেকে নির্বাচিত হয়েছেন যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হিসেবে আছেন রিপাবলিকান দল থেকে প্রথম নির্বাচিত হওয়া ১৬ তম মার্কিন রাষ্ট্রপতি অ্যাব্রাহাম লিংকন যিনি ১৮৬১ সাল থেকে ১৮৬৫ সালে আততায়ীর হাতে খুন হওয়ার আগ পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি পদে নিয়োজিত ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫ তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে রিপাবলিকান দল থেকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে আসীন ছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি ২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে তার দাপ্তরিক কাজ শুরু করেন।
প্রজাতন্ত্রের (রিপাবলিকানিজম) নামানুসারে এবং মার্কিন বিপ্লবের মূল্যবোধ থেকেই রিপাবলকান পার্টির নামকরণ করা হয়। মূলত দাস-প্রথা বিরোধী সক্রিয় কর্মী, হুইগ পার্টির (১৯ দশকের একটি মার্কিন রাজনৈতিক দল) ও ফ্রি সয়েল পার্টির (১৮৪৮ সাল থেকে ১৮৫২ পর্যন্ত স্বল্প-স্থায়ী একটি মার্কিন রাজনৈতিক দল) প্রাক্তন নেতা-কর্মীদের দ্বারা গঠিত রিপাবলিকান দল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জাতীয়ভাবে বেশ প্রভাবশালী একটি রাজনৈতিক পার্টি। ১৮৬০ থেকে ১৯৩২ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে উত্তরের অঙ্গরাজ্যগুলো রিপাবলিকান দল কর্তৃক ব্যাপকভাবে প্রভাবিত ছিলো।
রিপাবলিকান পার্টির বর্তমান ভাবাদর্শ হলো মার্কিন রক্ষণশীলতা নীতি। এই নীতি রিপাবলিকান দলের চির প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্রেটিক পার্টির উদারপন্থা মতবাদ বিরোধী। রিপাবলিকান দলের কর্মপন্থা মূলত মুক্ত বাজার পুঁজিবাদ, শক্তিশালী প্রতিরক্ষা নীতি, বিনিয়ন্ত্রণ (অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অঙ্গরাজ্যসমূহের আইন লঘু করার পদ্ধতি) নীতি, সামাজিক রক্ষণশীল নীতি (বিশেষভাবে গর্ভপাত এবং সমকামীদের বিবাহ বিরোধিতা) এবং ঐতিহ্যগত মার্কিন মূল্যবোধ সমর্থিত। অতীতে এই দলের সমর্থন যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পূর্ব রাজ্য (কানেক্টিকাট, মেইন, ম্যাসাচুসেট্স, নিউ হ্যাম্প্শায়ার, নিউ জার্সি, পেন্সিল্ভেনিয়া, নিউ ইয়র্ক, রোড আইল্যান্ড, ভার্মন্ট) এবং মধ্য-পশ্চিম (মিশিগান, ইন্ডিয়ানা, ক্যান্সাস, মিসৌরি, উইসকনসিন, আইওয়া, ইলিনয়, নর্থ ডাকোটা, নেব্রাস্কা, ওহাইও, সাউথ ডাকোটা এবং মিনেসোটা) রাজ্যগুলোতে জুড়ে থাকলেও বর্তমানে দক্ষিণের অঙ্গরাজ্যগুলো (ফ্লোরিডা, টেনেসি, আর্কানসাস, লুইজিয়ানা, ক্যান্টাকি, নর্থ ক্যারোলাইনা, সাউথ ক্যারোলাইনা, অ্যালাবামা, মিসিসিপি এবং পশ্চিম ভার্জিনিয়া) এবং মাউন্টেন অঙ্গরাজ্যসমূহে (আইডাহো, ওয়াইয়োমিং, অ্যারিজোনা, কলোরাডো, নিউ মেক্সিকো, নেভাডা ও ইউটা) রিপাবলিকানদের সমর্থন বিস্তৃত। ক্যাথলিক এবং ইভাঞ্জিলিক্যাল খ্রিস্টানরাই রিপাবলিকানদের সিংহভাগ সমর্থনকারী।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভ এবং সিনেটে রিপাবলিকান দল বর্তমানে সংখ্যালঘু।
১৮৫৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তরের রাজ্যগুলোতে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই রিপাবলিকান পার্টি ডেমোক্রেটিক দলের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠে। মূলত সেই সময় এই দুই দলের দ্বন্দ্বের মূল কারণ ছিল রিপাবলিকান পার্টির ক্যান্সাস-নেব্রাস্কা চুক্তি বিরোধিতা, যেটি মিসৌরি সমঝোতা ক্যান্সাস বাইরে দাসপ্রথা রহিত করার ব্যাপার নিয়ে নাকচ করে আসছিলো। কেননা উত্তরের রিপাবলিকানরা সেই সময় দাসপ্রথার সম্প্রসারণকে অশুভ হিসেবেই বিবেচনা করতো। নেব্রাস্কা আন্দোলনের বিরোধিতা করে ১৮৫৪ সালের ২০ মার্চ উইসকনসিন রাজ্যের রিপন শহরে দাসপ্রথা বিরোধী কর্মীরা একটি গণ-মিলনায়তনের আয়োজন করে। আর সেই সময় দাসপ্রথা বিরোধী এই পার্টির নাম রাখা হয় "রিপাবলিকান দল"। আর সেই থেকে এই দলের নাম নির্ধারিত রিপাবলিকান পার্টি।
রিপাবলিকান পার্টির প্রথম অফিশিয়াল অধিবেশনের আয়োজন করা হয় ১৮৫৪ সালের জুলাই মাসের ৬ তারিখ মিশিগান অঙ্গরাজ্যের জ্যাকসন শহরে। ১৮৫৮ সালের মধ্যে রিপাবলিকান পার্টি উত্তরের সব অঙ্গরাজ্যগুলোতে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করে। ১৮৬৯ সালের মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টি প্রথম ক্ষমতায় আসে। সেই নির্বাচনে রাষ্ট্রপতি হিসেবে অ্যাব্রাহাম লিংকন ক্ষমতায় আসীন হন। ক্ষমতায় আসার পরেই রিপাবলিকান দল তাদের দলের ঐক্যাবস্থান সংরক্ষণ, দাস-প্রথার সমাপ্তিকরণ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গৃহযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সকল যোদ্ধাদের দেখাশোনা এবং গৃহযুদ্ধবিদ্ধস্থ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পুনঃনির্মাণের প্রতি মনোনিবেশ করে।
রিপাবলিকান পার্টির গোড়ার দিকের আদর্শের পরিচয় পাওয়া যায় তাদের ১৮৫৬ সালের স্লোগান "মুক্ত শ্রম, মুক্ত ভূমি, মুক্ত লোক সরবরাহ" থেকে। "মুক্ত শ্রম" বলতে এখানে রিপাবলিকান দলের দাস-প্রথা বিরোধী মনোভাব এবং শিল্পী কারিগর ও ব্যবসায়ীদের কর্মের স্বাধীনতা বুঝায়। "মুক্ত ভূমি" বলতে এখানে প্রকৃত কৃষকদের তাদের ভূমি ফেরত দেওয়া এবং দাস-মালিকদের চাষাবাদের ভূমি কেনা থেকে তাদের বাধা দেওয়াকে বুঝায় যাতে করে দাস-মালিকরা যেন দাস দিয়ে তাদের আবাদি জমির চাষাবাদ করতে না পারে। রিপাবলিকান পার্টি সেই সময় দাস-প্রথার সম্প্রসারণ রোহিত করার জন্য আপ্রাণ সংগ্রাম করেছিলো। ফলশ্রুতিতে যুক্তরাষ্ট্রে দাস-প্রথার মেরুদন্ড ভেঙ্গে পড়ে এবং নীরিহ দাস-দাসীদের ব্যক্তিস্বাধীনতা পুনরুদ্ধার হয়ে মানুষ হয়ে তারা আবার বাঁচতে শুরু করে।
রিপাবলিকান পার্টি হচ্ছে ব্যবসায় বান্ধব রাজনৈতিক দল। তারা সেই সময় স্বর্ণের মানদন্ডে অর্থ-ব্যবস্থা এবং উচ্চ শুল্ক ব্যবস্থা আরোপে বিশ্বাসী ছিলো যাতে করে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, উচ্চ মজুরি এবং উচ্চ মুনাফা অর্জন করা সম্ভবপর হয়। এছাড়াও রিপাবলিকান পার্টি মার্কিন সৈনিকদের উত্তর বেতনের (পেনশন) ব্যবস্থা এবং হাওয়াই অঙ্গরাজ্যকে সাফ্যলের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একীভূত করেছিলো।
২০০৮ সালের মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে অ্যারিজোনার সিনেটর জন ম্যাককেইন রাষ্ট্রপতি হিসেবে এবং অ্যালাস্কার গভর্নর সারাহ প্যালিন ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে রিপাবলিকান দল থেকে প্রার্থীতা অর্জন করেন। কিন্তু শেষ অব্দি নির্বাচনী দৌড়ে তারা ইলিনয় রাজ্যের তৎকালীন সিনেটর বারাক ওবামা এবং ডেলাওয়্যার রাজ্যের সিনেটর জো বাইডেনের কাছে হেরে যায়। তবে ২০০৯ সালে রিপাবলিকান দল থেকে ক্রিস ক্রিসটি এবং বব ম্যাকডোনেল নিউ জার্সি এবং ভার্জিনিয়া রাজ্যে নির্বাচনে জয় লাভ করে গভর্নর পদে নিযুক্ত হয়।
২০১০ সাল ছিলো রিপাবলিকান দলের জন্য একটি সাফল্যমন্ডিত নির্বাচনী বছর, যেখানে রিপাবলিকান দল থেকে স্কট ব্রাউন ম্যাসাচুসেট্স অঙ্গরাজ্যের সিনেট নির্বাচনে জয় লাভ করে। রিপাবলিকান দলের জন্য এই জয় বিশেষভাবে গৌরবাণ্বিত ছিলো কেননা পদটিতে ডেমোক্রেটিক পার্টির কেনেডি-ভ্রাতারা কয়েক দশক ধরে ঐ পদে আসীন ছিলো। সেই বছর নভেম্বরের জাতীয় কংগ্রেশনাল নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টি হাউস অব রিপ্রেজেন্টিটিভে তাদের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা পুনর্দখল, সিনেটে তাদের আসন সংখ্যা বৃদ্ধিকরণ এবং গভর্নরশিপে তাদের দলের সংখ্যাধিক্যতা অর্জন করে। পাশাপাশি, রিপাবলিকান দল ডেমোক্রেটিক পার্টি শাসিত অন্তত ১৯ টি অঙ্গরাজ্যের আইনসভার নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা দখল করে।
২০১২ সালের মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে রিপাবলিকান দল থেকে রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থীতা দেওয়া হয় ম্যাসাচুসেট্স অঙ্গরাজ্যের প্রাক্তন গভর্নর মিট রমনি এবং উপ-রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থীতা দেওয়া হয় উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যের নির্বাচিত প্রতিনিধি পল রায়ান। আর সেই নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে পূর্বের বারাক ওবামা আর জো বাইডেন নির্বাচনের জন্য প্রার্থীতা পায়। ২০১২ সালের সেই নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টি এফোর্ড্যাবল কেয়ার এক্ট, উচ্চ বেকারত্ব এবং জাতীয় ঋণ নিরসন সমস্যাকে তাদের নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতিশ্রুতি হিসেবে প্রাধান্য দেয়। কিন্তু ২০১২ সালের সেই নির্বাচনেও রমনি আর পল তথা পুরো রিপাবলিকান পার্টি হেরে যায়। সেই বছর মানে ২০১২ সালের জাতীয় কংগ্রেশ্যানাল নির্বাচনেও রিপাবলিকান পার্টি ৭ টি সিট হারায়। শেষতক রিপাবলিকান দল সিনেটে তাদের পূর্বের ক্ষমতা ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হয় এবং সংখ্যালঘু পদমর্যাদা হিসেবে সিনেটে তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে বাধ্য হয়।
কিন্তু ২০১৪ সালের মধ্যবর্তী কংগ্রেশ্যানাল নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টি ৯ টি আসন জিতে সিনেটের নিয়ন্ত্রণভার আবার অর্জন করতে শুরু করে। সেই নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টি হাউস অব রিপ্রেজেনটিভে ২৪৭ টি আসন (৫৬.৮%) আসন এবং ৫৪ টি আসন সিনেটে অর্জন করে। ১৯২৯ সালের ৭১তম আইনসভার পর এটিই রিপাবলিকান দলের সবচেয়ে বড় অর্জন।
অভিবাসন নীতি নিয়ে রিপাবলিকানরা দুই অবস্থানে বিভক্ত। প্রথম অবস্থানের রিপাবলিকানদের মতে অভিবাসিদের কাজ করার অধিকার এবং নাগরিকত্ব প্রদান করা উচিত। অন্যদিকে দ্বিতীয় অবস্থানের রিপাবলিকানদের মতে, দেশের সীমারেখার নিরাপত্তা জোড়দার করা উচিত এবং সকল অবৈধ অভিবাসিদের বিতাড়িত করা উচিত। ২০০৬ সালে হোয়াইট হাউস এবং কিছু রিপাবলিকান সিনেটের সমর্থনে অবৈধ অভিবাসীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য অভিবাসি সম্পর্কিত একটি প্রবাসন আইন পেশ করে কিন্তু রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত হাউস অব রিপ্রেজেন্টিটিভ শেষতক সেই বিলটি পাশ হওয়া থেকে বাধা প্রদান করে।
২০১২ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টি হারার পর, অভিবাসিদের সাথে বিশেষত ল্যাটিনের অভিবাসিদের সাথে রিপাবলিকানরা একটি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের আবহ সৃষ্টি করে। অভিবাসীদের ব্যাপারে রিপাবলিকানদের এই উদার নীতি নির্বাচনী পোলে কিছু সমর্থন অর্জনে সাহায্যও করেছিলো। ২০১৩ সালে পোলের রিপোর্ট অনুযায়ী ৬০% রিপাবলিকান সমর্থক রিপাবলিকান দলের অভিবাসীদের নিয়ে এই উদার নীতিকে স্বাগত জানায়।
কিন্তু ২০১৬ মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে রিপাবলিকানদের আবার উল্টো চিত্র দেখাতে শুরু করে। ২০১৬ সালে মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পদ-প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ম্যাক্সিকো-যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তে একটি দেয়াল নির্মাণের প্রস্তাব করে এবং উক্ত দেয়াল নির্মাণের ব্যয়ভার ম্যাক্সিকান সরকারকে নেওয়ার জন্য আহ্বান করে।
নয়-এগারোর হামলার পর থেকেই রিপাবলিকান দলের সদস্যরা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের (ওয়ার অন টেরর) ইস্যু নিয়ে "নিউ কন্সার্ভেটিভ নীতি" সমর্থন করে আসছে। এমনকি জর্জ ডব্লিউ বুশ একটি অবস্থানও নিয়েছিলেন যেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, বেআইনি যোদ্ধাদের ক্ষেত্রে জেনেভা কনভেনশন আইন কার্যকরী হবে না। কিন্তু তার এই অবস্থানের বিরুদ্ধে অন্যান্য প্রখ্যাত রিপাবলিকানরা বিরোধিতা করেছিলো এই ভেবে যে, এই ধরনের অবস্থানে আইনের অপব্যবহার হতে পারে।
রিপাবলিকান পার্টি যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ইসরায়েলের শক্তিশালী বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সমর্থন করে এবং ইসরায়েলের সাথে অন্যান্য প্রতিবেশী আরবদেশগুলোর সম্পর্ক উন্নয়নের প্রচেষ্টায়ও রিপাবলিকান পার্টি বদ্ধ পরিকর।
২০১৬ সালে রিপাবলিকান পার্টি তাদের দলীয় কর্মপন্থার এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছিলো, "তাইওয়ানের ভবিষ্যৎ সম্পর্কিত সকল ইস্যু শান্তিপূর্ণভাবে আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে সমাধান করতে হবে এবং এই আলাপ-আলোচনা অবশ্যই তাইওয়ানের জনগণের অনুকূলে থাকতে হবে।"। ঐ বিবৃতিতে আরো বলা হয়, "চীন যদি শান্তি আলোচনার নীতি সমূহের উলংঘন করে তবে তাইওয়ান রিল্যাশ্যান্স এক্ট এর চুক্তি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র নিজেই তাইওয়ানকে তাদের প্রতিরক্ষায় সহায়তা করবে।"।
রিপাবলিকান দলের সংখ্যাধিক্য সদস্যরা ধর্মীয় এবং নৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে ভ্রূণ-হত্যার বিরোধিতা করে। ২০১২ সালে রিপাবলিকান পার্টি ভ্রূণ হত্যা বন্ধের জন্য একটি কর্ম-পন্থা অনুমোদন করে।
যদিও রিপাবলিকানরা বৈজ্ঞানিক গবেষণায় সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা সমর্থন করে কিন্তু কিছু সদস্যরা সক্রিয়ভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের ভ্রূণ-কোষ গবেষণার এই পৃষ্ঠপোষকতার বিরোধিতাও করে। কেননা, এই ধরনের গবেষণা করতে গেলে মানব ভ্রূণকে নষ্ট করতে হয়।
রিপাবলিকান পার্টি আগ্নেয়াস্ত্র মালিকানা সম্পর্কিত অধিকার সমর্থন করে এবং আগ্নেয়াস্ত্র বিরোধী আইনের বিরোধিতা করে।
রক্ষণশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে রিপাবলিকান পার্টি সমকামীদের অধিকার সম্পর্কিত সমস্ত আন্দোলনের বিরোধিতা করে। অনেকের মতে ২০০৪ সালে জর্জ বুশের নির্বাচনে দ্বিতীয়বার জয়ী হওয়ার নেপথ্যে রিপাবলিকান পার্টির সমকামী বিরোধিতা নীতি বিরাট ভূমিকা রেখেছিলো। ২০০৪ এবং ২০০৬ সালে সংসদের রিপাবলিকান নেতারা কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক একটি বৈবাহিক আইন সংশোধনের ব্যবস্থা নিয়েছিলো যেটি ছিলো সমকামীদের অধিকার পরিপন্থী। কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমাণ ভোটের অভাবে রিপাবলিকানদের বৈবাহিক আইন সংশোধনের সেই প্রচেষ্টা ধোপে টিকে নি। ২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অঙ্গরাজ্যগুলো যখন সমকামীদের বৈবাহিক অধিকারে বৈধতা দান করছিলো, তখন রিপাবলিকান দল প্রত্যকে রাজ্যগুলোকে রিপাবলিকানদের তৈরীকৃত বৈবাহিক নীতি অনুসরণের আহ্বান জানিয়ে আসছিলো। ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ-আদালত যখন পুরো দেশজুড়ে সমকামী সম্প্রদায়ের বিবাহ বন্ধনের আইনের বৈধতা প্রদান করে, তখন রিপাবলিকানরা সমকামী বিবাহ ইস্যু নিয়ে মৌন অবস্থান গ্রহণ করে এবং পরবর্তীতে রিপাবলিকানদের এই ইস্যু ধীরে ধীরে রাজনৈতিক প্রভাবত্ব হারাতে থাকে।
রিপাবলিকান পার্টি ঐতিহ্যগতভাবেই ব্যবসায় বান্ধব রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচিত। বড় ধরনের ইন্ডাস্ট্রি থেকে ছোট ব্যবসায় পর্যন্ত সব ধরনের ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে রিপাবলিকান দলের সমর্থন রয়েছে। রিপাবলিকান সমর্থকদের মধ্যে শতকরা ভাগই স্ব-নির্ভর এবং সু-ব্যবস্থাপনায় কাজ করে।
২০১২ সালে ওয়াশিংটন পোস্টের করা এক জরিপ অনুযায়ী,শতকরা ৬১ শতাংশ ছোট বাণিজ্যের ব্যবসায়ীরা সেই সময় ২০১২ সালের নির্বাচনে মিট রমনিকে ভোট দেওয়ার জন্য মনস্থির করে। কেননা সেই সময় ২০১২ সালে রিপাবলিকানদের জাতীয় অধিবেশনে ক্ষুদ্র বাণিজ্যকে প্রধান বিষয় হিসেবে প্রাধান্য দেওয়া হয়।
২০২০-এর হিসাব অনুযায়ী[হালনাগাদ], ডেমোক্র্যাটিক পার্টি হতে মোট ১৯ জন রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন।
# | রাষ্ট্রপতি | চিত্র | রাজ্য | রাষ্ট্রপতিত্ব সূচনা | রাষ্ট্রপতিত্ব সমাপ্তি দিবস | দপ্তরের মেয়াদকাল |
---|---|---|---|---|---|---|
১৬ | আব্রাহাম লিংকন (1809–1865) | ইলিনয় | March 4, 1861 | April 15, 1865 | ৪ বছর, ৪২ দিন | |
১৮ | ইউলিসিস এস. গ্রান্ট (1822–1885) | ইলিনয় | March 4, 1869 | March 4, 1877 | ৮ বছর, ০ দিন | |
১৯ | রাদারফোর্ড বি. হেইজ (1822–1893) | ওহাইও | March 4, 1877 | March 4, 1881 | ৪ বছর, ০ দিন | |
২০ | জেমস এ. গারফিল্ড (1831–1881) | ওহাইও | March 4, 1881 | September 19, 1881 | ১৯৯ দিন | |
২১ | চেস্টার এ. আর্থার (1829–1886) | নিউ ইয়র্ক | September 19, 1881 | March 4, 1885 | ৩ বছর, ১৬৬ দিন | |
২৩ | বেঞ্জামিন হ্যারিসন (1833–1901) | ইন্ডিয়ানা | March 4, 1889 | March 4, 1893 | ৪ বছর, ০ দিন | |
২৫ | উইলিয়াম ম্যাকিনলি (1843–1901) | ওহাইও | March 4, 1897 | September 14, 1901 | ৪ বছর, ১৯৪ দিন | |
২৬ | থিওডোর রুজভেল্ট (1858–1919) | নিউ ইয়র্ক | September 14, 1901 | March 4, 1909 | ৭ বছর, ১৭১ দিন | |
২৭ | উইলিয়াম হাওয়ার্ড ট্যাফ্ট (1857–1930) | ওহাইও | March 4, 1909 | March 4, 1913 | ৪ বছর, ০ দিন | |
২৯ | ওয়ারেন জি. হার্ডিং (1865–1923) | ওহাইও | March 4, 1921 | August 2, 1923 | ২ বছর, ১৫১ দিন | |
৩০ | ক্যালভিন কুলিজ (1872–1933) | ম্যাসাচুসেটস | August 2, 1923 | March 4, 1929 | ৫ বছর, ২১৪ দিন | |
৩১ | হার্বার্ট হুভার (1874–1964) | ক্যালিফোর্নিয়া | March 4, 1929 | March 4, 1933 | ৪ বছর, ০ দিন | |
৩৪ | ডোয়াইট ডি. আইজেনহাওয়ার (1890–1969) | কানসাস | January 20, 1953 | January 20, 1961 | ৮ বছর, ০ দিন | |
৩৭ | রিচার্ড নিক্সন (1913–1994) | ক্যালিফোর্নিয়া | January 20, 1969 | August 9, 1974 | ৫ বছর, ২০১ দিন | |
৩৮ | জেরাল্ড ফোর্ড (1913–2006) | মিশিগান | August 9, 1974 | January 20, 1977 | ২ বছর, ১৬৪ দিন | |
৪০ | রোনাল্ড রেগন (1911–2004) | ক্যালিফোর্নিয়া | January 20, 1981 | January 20, 1989 | ৮ বছর, ০ দিন | |
৪১ | জর্জ হারবার্ট ওয়াকার বুশ (1924–2018) | টেক্সাস | January 20, 1989 | January 20, 1993 | ৪ বছর, ০ দিন | |
৪৩ | জর্জ ডব্লিউ. বুশ (1946–) | টেক্সাস | January 20, 2001 | January 20, 2009 | ৮ বছর, ০ দিন | |
৪৫ | ডোনাল্ড ট্রাম্প (1946–) | নিউ ইয়র্ক | January 20, 2017 | বর্তমানে অধিষ্ঠিত | ৭ বছর, ৮৭ দিন |
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article রিপাবলিকান পার্টি (যুক্তরাষ্ট্র), which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.