মালে জাতি

মালে উপজাতির ধারণা মূলত জার্মান বিজ্ঞানী জোহান ফ্রাইড্রিক ব্লুমানবাখ (১৭২৫-১৮৪০) প্রস্তাবিত এবং একটি বাদামী জাতি হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে। ১৯ শতকের শেষের দিকে এবং ২০ শতকের শুরুতে অস্ট্রোনেসিয়ান জনগণের বর্ণনা / অস্ট্রোনেসিয়ান ভাষাভাষীদের উপজাতি হিসেবে শ্রেণীভুক্ত করার জন্য অস্পষ্টভাবে শব্দ মালে ব্যবহৃত হয়।

মালে জাতি
ঐতিহাসিকভাবে আদি অস্ট্রোনেসিয়ান জনগণ এবং পরে দেশান্তরের দ্বারা অধ্যুষিত এলাকা।
মালে জাতি
পশ্চিম সুমাত্রা, ইন্দোনেশিয়ার মিনিংকাবাউ পুরুষ

ব্লুমানবাখের পর অনেক নৃতাত্ত্বিকেরা পাঁচটি উপজাতির তত্ত্বকে শ্রেণীবদ্ধ উপজাতির প্রবল জটিলতা উল্লেখ করে প্রত্যাখ্যান করেছেন। সুমাত্রা এবং বোর্নিওর মালয় দ্বীপপুঞ্জর অংশ এবং উপদ্বীপ মালয়েশিয়ার জাতিগত মালয়ের সাথে "মালে উপজাতি" ধারণার পার্থক্য রয়েছে।

বু্ত্পত্তি

মালেয়ু বা মালে শব্দটি প্রথমবারের মতো পাওয়া যায় একটি চীনা রেকর্ড থেকে যেখানে মালেয়ু নামে একটি রাজ্য থেকে ৬৪৫ খ্রিষ্টাব্দে প্রথমবার চীনের আদালতে দূত পাঠিয়েছিল। এটি সং রাজবংশের সময় ওয়াং পু এর সংগৃহীত টাঙ্গ হুয়ায়ো বইটিতে লেখা ছিল। আরেকটি চীনা উৎসে মালেউ রাজ্যের উল্লেখ রয়েছে। একজন বৌদ্ধ সন্ন্যাসী আই-টিজিং বা আই চিং (義 淨; পিনিন ইয়ে জিং) (৬৩৪-৭১৩) দুটি বই লেখেন। ৬৭১ খ্রিষ্টাব্দে চীন থেকে ভারত যাওয়ার পথে তিনি লিখেছিলেন:

"উত্তরপূর্ব বায়ু প্রবাহিত হলে, আমরা ক্যান্টন ছেড়ে দক্ষিণে রওনা দিলাম.... যাত্রার ২০ দিন পর,আমরা শ্রীবিজয়ার মাটিতে পৌঁছালাম। ওখানে আমরা শব্দবিদ্যা শিখতে প্রায় ছয় মাস থাকি। রাজা আমাদের প্রতি খুব দয়ালু ছিলেন। তিনি আমাদের মালাউতে যেতে সাহায্য করেছিলেন, আমরা সেখানে ২ মাস ছিলাম। পরে আমরা কেদার উদ্দেশ্য রওনা দেই....কেদা থেকে উত্তরে গেলে, আমরা উলঙ্গ মানুষের দ্বীপে পৌছাই (নিকোবর)...এখান থেকে পশ্চিমে গিয়ে ১৫ দিন পরে অবশেষে তাম্রলিপিতে পৌছাই (ভারতীয় পূর্ব উপকূল)"

পরবর্তী সময়কার আরেকটি সূত্রের নাম ভূমি মালয়ু; ধর্মসরেয়ায় ১২৮৬ খ্রিষ্টাব্দে পাদং রোকো শিলালিপিতে লেখা, পরে ১৩৪৭ খ্রিষ্টাব্দে আদিত্ববর্মণ আমোঘপাশা মূর্তিতে লিখিত তার নিজস্ব শিলালিপি সম্পাদনা করে নিজেকে মালাউপুরার শাসক ঘোষণা করেন। ১৩৬৫ খ্রিষ্টাব্দে মাজাপাহিত রেকর্ড নাগারাক্রিটাগামাতে মালাউর জমি মাজাপাহিতের শাসনাধীন ছিল বলে উল্লেখ আছে। এই সকল রেকর্ড অনুসারে মালাউকে মোহনা থেকে পিছনে, আজকের দিনের জাম্বির বাটাং হারী নদীর কূলের এলাকা এবং পশ্চিম সুমাত্রা প্রদেশের কিছু অংশ হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। সুমাত্রার পূর্বাঞ্চলীয় উপকূল এবং মালে উপদ্বীপের কিছু অংশে বসবাসকারীরা নিজেদেরকে মালয় ভাষী হিসেবে তথা মালে জাতি হিসেবে অভিহিত করে। ১৬ শতাব্দীতে ইউরোপীয়দের আগমনের পর, ইউরোপীয়রা মালাক্কা প্রণালীর উভয় উপকূলের বাসিন্দাদের মালে জাতি হিসেবে চিহ্নিত করেছিল। এই শব্দটি আশেপাশের একই ধরনের মানুষের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য ছিল।

মালেদেরকে একবার চীনের রেকর্ডে "কুণ-লুন" হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল। কুনলুন প্রাথমিকভাবে তিব্বত ও ভারত অংশ জুড়ে একটি কাল্পনিক পর্বতমালাকে বোঝায়। ভৌগোলিকভাবে পরিচিত বিশ্ব থেকে দূরে পাহাড় এবং জঙ্গলের কালো, কোঁকড়া চুলের বর্বরদের বোঝাতে চীনারা এই শব্দটি ব্যবহার করত। মালে বা অস্ট্রেনেশিয়ানদের আগে চীনারা খুমের ও চামস দের কুনলুন বলে ডাকত। ৭৫০ তে, জিয়ানজেন (৬৮৮-৭৬৫) "কুয়াংচৌতে ব্রাহ্মণ, পারসিক এবং কুনলুন" এর অধিক উপস্থিতি দেখেছেন। ট্যাং-এর পুরাতন বই অনুসারে "প্রতি বছর, কুনলুন বণিকগণ চীনাদের সাথে বাণিজ্য করতে তাদের জাহাজে মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে আসে।"

সংজ্ঞা

ব্লুমানবাখ ১৭৭৫ সালে De generis humani varietate nativa (মানবজাতির প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যের উপর) গবেষণায় গায়ের রঙের উপর ভিত্তি করে চারটি প্রধান মানব জাতি উল্লেখ করেন। ককেশীয় জাতি (সাদা), নিগ্রয়েড (কালো), আদি আমেরিকান (লাল) এবং মঙ্গোলীয় (হলুদ)।  

১৭৯৫ তে, ব্লুমানবাখ মালে নামে অন্য একটি উপজাতি, ইথিওপিয়ান ও মঙ্গোলয়েড জাতির উপশ্রেনীতে অন্তর্ভুক্ত করেন। "বাদামী রঙ: জলপাই এবং একটি পরিষ্কার মেহেগনি থেকে কালো লবঙ্গ বা বাদামী" এর মধ্যে মালে উপজাতি বিদ্যমান। মালে শব্দকে ফিলিপাইন, মালুকাস, সান্দাস, ইন্দোচীন ও মারিয়ানা দ্বীপপুঞ্জের আদি বাসিন্দা এবং সেইসাথে প্যাসিফিক দ্বীপপুঞ্জের তাহিতিয়ানদের ক্ষেত্রেও বর্ধিত করেন। তিনি একটি তাহিতিয়ান খুলিকে হারানো যোগসূত্র বলে মনে করতেন; যা প্রকট ককেশিয়ান ও প্রছন্ন নিগ্রয়েড উপজাতির মধ্যে রুপান্তর দেখায়।

ব্লুমানবাখ লিখেছেন:

মালে বিচিত্র। কটা রঙের; চুল কালো, নরম, কোঁকড়া, পুরু এবং প্রচুর; মাথা পরিমিতরূপে সংকীর্ণ; কপাল সামান্য ফোলা; নাক পরিপূর্ণ, অধিকতর প্রশস্ত, বিস্তৃত, শেষ প্রান্ত পুরু; মুখ বড়, পাশ দিয়ে দেখলে উপরের চোয়াল কিছুটা মুখের অংশের সাথে যুক্ত মনে হয়, একে অপরের থেকে যথেষ্ট লক্ষণীয় এবং স্বতন্ত্র। শেষ বৈচিত্রটি প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপপুঞ্জ সহ মেরিয়াননাস, ফিলিপাইন, মোলুকা এবং সুন্দা দ্বীপপুঞ্জ এবং মালেয়ান দ্বীপপুঞ্জের অধিবাসীদের বাসিন্দাদের মধ্যে দেখা যায়। আমি এদের মালে ডাকতে চাই, কারণ এই বৈচিত্র্যের মানুষ সংখ্যাগরিষ্ঠ, বিশেষ করে মালাক্কা উপদ্বীপের কাছাকাছি ভারতীয় দ্বীপগুলিতে বসবাসকারীরা, সেইসাথে স্যান্ডউইচ, সোসাইটি, এবং বন্ধুত্বপূর্ণ দ্বীপপুঞ্জ হিসাবে, এছাড়াও মাদাগাস্কারের মালাম্বীর নিচে ইস্টার দ্বীপের বাসিন্দাদের ক্ষেত্রে, মালে আইডম ব্যবহার করুন।

উপনিবেশিক প্রভাব

স্ট্যামফোর্ড রাফেলসের মালেদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি ইংরেজিভাষীদের উপর এক উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছিল, যা বর্তমান যুগেও বিদ্যমান। সম্ভবত তিনি 'মালে' উপজাতিকে মালে জাতিগত গোষ্ঠীতে সীমাবদ্ধ না করে, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দ্বীপপুঞ্জের একটি বড় অনির্ধারিত অংশের মানুষদের স্বেচ্ছায় এবং উৎসাহীভাবে সমর্থনদানকারী সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। রাফেলস মালেদের একটি ভাষা ভিত্তিক 'জাতি' হিসাবে ইংরেজি রোমান্টিক আন্দোলনের মতামত অনুসারে দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করেছিলেন এবং ১৮০৯ সালে এশিয়াটিক সোসাইটিতে এই বিষয়ে একটি সাহিত্যিক প্রবন্ধ পাঠিয়েছিলেন। পাগরুংয়ের রাজত্বের সাবেক মিনাঙ্গকাবাতে অভিযান চালানোর পর তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন 'সেই শক্তির উৎস, সেই জাতির উৎপত্তি, ব্যাপকভাবে পূর্ব দ্বীপপুঞ্জে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে'। পরবর্তী লেখায় তিনি মালে শব্দটি জাতি থেকে উপজাতিতে রূপান্তর করেন।

মালয়েশিয়া

মালয়েশিয়ায়, প্রাথমিক উপনিবেশিক আদমশুমারিতে পৃথক জাতিগত গোষ্ঠীগুলির তালিকা করেছিল যেমন "মালে, বায়ানিজ, আচিনিয়, জাভানি, বাগিস, ম্যানিলামেন (ফিলিপিনো) এবং শ্যামদেশীয়"। ১৮৯১ সালের আদমশুমারি এই নৃতাত্ত্বিক দলগুলিকে আধুনিক মালয়েশীয়-চীনা, 'তামিল ও ভারতের অন্যান্য অধিবাসী' এবং 'মালে ও দ্বীপপুঞ্জের অন্যান্য অধিবাসী' এই তিনটি জাতিগত শ্রেণিতে বিভক্ত। উপজাতি একটি জৈবিকভাবে বিজ্ঞানভিত্তিক শ্রেণী, এই ইউরোপীয় দৃষ্টিভঙ্গি উপর ভিত্তি করে বিভক্ত করেছিল। ১৯০১ সালের আদমশুমারি জন্য, সরকার "উপজাতি" শব্দটি "জাতীয়তা" দিয়ে প্রতিস্থাপিত করতে পরামর্শ দেয়।

এই গোষ্ঠীতে শ্রেণীবদ্ধ হওয়ার কয়েকটি প্রজন্মের পরে, মালে উপজাতি ধারণার স্বতন্ত্র পরিচয় গঠিত হয়। তরুণ প্রজন্ম, একে ঔপনিবেশিক শক্তিসমূহ এবং অ-মালে অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ঐক্য ও সংহতি হিসেবে দেখে। পরে মালয়েশীয় জাতির কেন্দ্রবিন্দু মালে জাতি দিয়ে গঠিত হয় এবং দেশের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়।

ফিলিপাইন

ফিলিপাইনের অনেক নাগরিক দেশের পাশাপাশি প্রতিবেশী ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর এবং ব্রুনাইয়ের আদিবাসী জনগোষ্ঠীদের ক্ষেত্রে "মালে" শব্দটি স্বজাতীয় অর্থে বিবেচনা করে। এই ধারণাটি আমেরিকান নৃবিজ্ঞানী এইচ. ওটলি বেয়ারের অংশে রয়েছে, তিনি প্রস্তাব করেছিলেন যে ফিলিপাইনের নাগরিকরা মূলত মালে জাতি যারা আজকের মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া থেকে উত্তরে স্থানান্তরিত হয়েছে। এই ধারণাটি ফিলিপাইনের ইতিহাসবিদদের প্রচলিত ছিল এবং এখনও অনেক স্কুলে পড়ানো হয়। যাইহোক, সমসাময়িক নৃবিজ্ঞানী, প্রত্নতাত্ত্বিক এবং ভাষাবিদদের ঐক্যমত্য ভিন্ন; সুন্দা দ্বীপ, মাদাগাস্কার এবং ওশেনিয়ার অস্ট্রেনেশিয়া জনগনের পূর্বপুরুষ প্রাগৈতিহাসিক যুগে মূলত তাইওয়ানের থেকে উদ্ভূত ফিলিপাইন থেকে দক্ষিণে স্থানান্তরিত হয়েছিল।

"তাইওয়ান মডেলের বাইরে" সম্প্রতি লিডস্ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৮ সালের একটি গবেষণায় চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে এবং আণবিক জীববিজ্ঞান এবং বিবর্তনে প্রকাশিত হয়েছে। মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএর বংশানুক্রমিক পরীক্ষার ফলাফল অনুসারে তারা আগের বিশ্বাসের থেকে আরও দীর্ঘ সময় ধরে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দ্বীপে (আইএসইএ) বিকশিত হয়েছিল। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ার সাথেসাথে জনসংখ্যা ছড়িয়ে পড়ছিল, ফলে গত ১০,০০০ বছরের মধ্যে ফিলিপাইন থেকে আরো উত্তরে তাইওয়ান পর্যন্ত স্থানান্তরিত হয়েছিল। জনসংখ্যার স্থানান্তর বিশাল প্রাচীন উপমহাদেশ সুন্দাল্যান্ড ডুবে যাওয়ার প্রভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হয়েছিল (যা এশিয়ার জমি বোর্নিও ও জাভা পর্যন্ত বিস্তৃত করছিল)। শেষ বরফ যুগের পর ১৫,০০০ থেকে ৭,০০০ বছর আগে এই ঘটনা ঘটেছে। ওপেনহাইমার বর্ণনা করেন কীভাবে তিনটি শক্তিশালী অনুরণনে সমুদ্রস্তরের উচ্চতাবৃদ্ধি সুন্দা উপমহাদেশকে বন্যাকবলিত ও আংশিক নিমজ্জিত করে, জাভা ও দক্ষিণ চীন সমুদ্র এবং আজকের ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনের মত হাজার হাজার দ্বীপপুঞ্জ তৈরি করেছিল।

ইন্দোনেশিয়া

মালে জাতি 
ইন্দোনেশিয়ার অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে মালে জাতি। মালে জাতি ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে বিস্তৃত বন্টিত জাতিগুলির একটি। মালে এলাকা সবুজ এবং অন্যান্য উপ-জাতিগুলি গাঢ় বা হালকা সবুজ রঙে দেখানো হয়েছে। মালে জাতি সুমাত্রার পূর্ব উপকূলে এবং উপকূলীয় কালিমমানে বসবাসকারী হিসাবে দেখানো হয়েছে।

ইন্দোনেশিয়ায়, "মালে" শব্দটি (ইন্দোনেশিয়ান: মেলাইয়ু) 'মালে উপজাতি' থেকে মালে জাতির সাথে যুক্ত। কারণ ইন্দোনেশিয়ায় বসবাসকারী অন্যান্য জাতিগত সম্প্রদায়গুলো ইতোমধ্যে তাদের সংস্কৃতি এবং পরিচয় প্রতিষ্ঠা ও দৃঢ় করেছে যারা ঐতিহ্য এবং ভাষায় উপকূলীয় মালেদের থেকে নিজেদের আলাদা ভাবে। এভাবে, মালেকে  জাভানি (তাদের উপ-জাতি যেমন অসিং এবং টেনগিরিস সহ) , সুদানী, মিনাঙ্গ্কাবাউ, বাতাক উপজাতি, বুগিস, দায়াক, আসেনিজ বালিনীয়, টোরাজান ইত্যাদির সঙ্গে সমান পদমর্যাদা সাথে অসংখ্য ইন্দোনেশিয়ান জাতিগুলির একটি হিসেবে গড়ে তোলে।

'মালে উপজাতি' শব্দটি প্রথম উপনিবেশিক সময়ের বৈদেশিক বিজ্ঞানীগণ উদ্ভাবন করেছিলেন। ডাচ ইস্ট ইন্ডিজ যুগে, ইউরেশিয়ান ইন্দো মানুষ এবং এশিয়ান অভিবাসীদের (চীনা, আরব ও ভারতীয় বংশোদ্ভূত) বিপরীতে স্থানীয় ইন্দোনেশিয়ানদের বর্ণনা করার জন্য স্থানীয় বা প্রিবুমির আওতায় অধিবাসীদের গোষ্ঠীভুক্ত করা হয়েছিল। মালে উপজাতি ধারণাটি মালয়েশিয়া এবং ফিলিপাইনের কিছু কিছু অংশ ভাগাভাগি করে এবং কিছু ইন্দোনেশিয়ানদের দ্বারা অন্তর্নিহিত ও সংহতির নীতিতে প্রভাবিত ও ভাগাভাগিও করতে পারে, সাধারণ বানান পু্য়াক মালাইয়ু (মালে উপজাতি) বা রুম্পুন মালাইয়ু (মালে পরিবার)। তবে, মালয়েশিয়ার ধারণা এবং উপাধিও ইন্দোনেশিয়ায় পরিবর্তিত হয়, অস্ট্রোনেসীয় জনগণের বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে জাম্বিকে সীমাবদ্ধ করে যেখানে 'মালে' নামটি প্রথম রেকর্ড করা হয়েছিল। আজ, মালেদের সাধারণ পরিচয় তাদের ভাষা (তাদের মধ্যে বিদ্যমান দ্বান্দ্বিকতার সাথে), ইসলাম ও সংস্কৃতি একসাথে তাদের একত্রিত করে।

যুক্তরাষ্ট্র

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, ২০ শতকের শুরুর দিকে জাতিগত শ্রেণিবিন্যাস "মালে উপজাতি" মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাংশের কয়েকটি রাজ্যের বর্ণ-বিরোধী আইনগুলির মধ্যে চালু করা হয়েছিল। বর্ণ-বিরোধী আইন ছিল রাজ্যের আইন যা ইউরোপীয় আমেরিকান এবং আফ্রিকান আমেরিকানরা এবং কিছু রাজ্যে অন্যান্য অশ্বেতাঙ্গদের মধ্যে বিবাহ নিষিদ্ধ করেছিল। ফিলিপিনো অভিবাসীদের একটি প্রবাহের পরে, এই আইন ককেশিয়ান এবং ফিলিপিনোদের মধ্যে বিবাহ নিষিদ্ধ করার জন্য কয়েকটি পশ্চিমা রাজ্যে সংশোধিত হয়েছিল, যারা মালে উপজাতির সদস্য হিসেবে পরিচিত হত এবং জাতি বিভাজন সমর্থনকারী কয়েকটি দক্ষিণা রাজ্য মামলা করেছিল। অবশেষে, ৯টি রাজ্যে (আরিজোনা, ক্যালিফোর্নিয়া, জর্জিয়া, মেরিল্যান্ড, নেভাদা, সাউথ ডাকোটা, উটাহ, ভার্জিনিয়া এবং ওয়াইয়োমিং) স্পষ্টতই ককেশিয় এবং এশীয়দের মধ্যে বিবাহ নিষিদ্ধ করে। ক্যালিফোর্নিয়ায় কিছু বিভ্রান্তি ছিল আগের-বিদ্যমান রাষ্ট্রীয় আইনগুলিতে সাদা এবং "মঙ্গোলিয়ানদের" মধ্যে বিবাহ নিষিদ্ধ ছিল যা সাদা এবং ফিলিপিনোদের বিবাহ নিষিদ্ধ করে। ক্যালিফোর্নিয়ায় ১৯৩৩ সালের সুপ্রিম কোর্টে রোল্ডান বনাম লস এঞ্জেলেস কাউন্টির মামলায় এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে, এই ধরনের বিবাহ বৈধ ছিল কারণ ফিলিপিনোরা "মালে উপজাতির" সদস্য ছিল এবং বিবাহে নিষিদ্ধ উপজাতির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত নয়। ক্যালিফোর্নিয়ার আইনসভা এরপরেই আইন সংশোধন করে বর্ধিত করে শ্বেতাঙ্গ ও ফিলিপিনোদের মধ্য বিয়ে নিষিদ্ধ করে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৮ সালে ক্যালিফোর্নিয়া থেকে শুরু হয়ে বেশ কয়েকটি বর্ণ-বিরোধী আইন ধীরে ধীরে বাতিল করা হয়। 1967 সালে বিভিন্ন বিবাহের বিরুদ্ধে সমস্ত অবশিষ্ট নিষেধাজ্ঞা Loving v. Virginia তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট অসাংবিধানিক গণ্য করে বাতিল করে।  

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

Tags:

মালে জাতি বু্ত্পত্তিমালে জাতি সংজ্ঞামালে জাতি উপনিবেশিক প্রভাবমালে জাতি মালয়েশিয়ামালে জাতি ফিলিপাইনমালে জাতি ইন্দোনেশিয়ামালে জাতি যুক্তরাষ্ট্রমালে জাতি আরও দেখুনমালে জাতি তথ্যসূত্রমালে জাতি

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

২০২৩বাংলা ব্যঞ্জনবর্ণবাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলজীবনানন্দ দাশশর্করাদুবাইবাঙালি জাতিমেটা প্ল্যাটফর্মসকালেমাজাতিসংঘরাদারফোর্ড পরমাণু মডেলআলিসূরা ইয়াসীনদ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধযুক্তরাজ্যআকিজ গ্রুপহরমোনইহুদিযৌনাসনপ্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারইসলাম ও হস্তমৈথুনতারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ইন্দোনেশিয়াপুদিনামহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্রজাতীয় গণহত্যা স্মরণ দিবসপাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারআসিফ নজরুলযাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রমতিউর রহমান নিজামীলোকসভাভারতের প্রধানমন্ত্রীদের তালিকাইশার নামাজরাশিয়ারামায়ণপলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমরাজশাহীসিদরাতুল মুনতাহাবাংলাদেশ বিমান বাহিনীসূরা নাসবর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রসিরাজউদ্দৌলাতাজবিদআল্লাহর ৯৯টি নামআয়তন অনুযায়ী ভারতের রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলসমূহের তালিকাসর্বনামস্বরধ্বনিনেপোলিয়ন বোনাপার্টজাতীয় স্মৃতিসৌধথ্যালাসেমিয়াবাংলাদেশের কোম্পানির তালিকাপিরামিডমুস্তাফিজুর রহমানমাহিয়া মাহিগাঁজা (মাদক)পূর্ণিমা (অভিনেত্রী)বিটিএসতামান্না ভাটিয়াদক্ষিণ কোরিয়াবিজয় দিবস (বাংলাদেশ)ধানমাহরামকাজী নজরুল ইসলামকনডমময়মনসিংহ বিভাগজোট-নিরপেক্ষ আন্দোলনআহসান হাবীব (কার্টুনিস্ট)এশিয়ামিশরমঙ্গল গ্রহবাংলাদেশের পোস্ট কোডের তালিকামতিউর রহমান (বীরশ্রেষ্ঠ)মহাস্থানগড়রাধাকরসাইবার অপরাধঅর্শরোগবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলদেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী🡆 More