জমিরুদ্দিন আহমদ (১৮৭৮ — ১৯৪০) ছিলেন একজন বাংলাদেশি দেওবন্দি ইসলামি পণ্ডিত ও আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব। তিনি দারুল উলুম হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে দীর্ঘ ৩৫ বছর প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। তিনি রশিদ আহমদ গাঙ্গুহির শিষ্য হিসেবে বঙ্গ অঞ্চলে ধর্মীয় সংস্কার করেছিলেন। তার নির্দেশে আল জামিয়া আল ইসলামিয়া পটিয়া প্রতিষ্ঠিত হয়। তার শিষ্যদের মধ্যে আজিজুল হক, মুহাম্মদ ইউনুস উল্লেখযোগ্য। তার প্রসিদ্ধ উপাধি ছিল ‘শায়খুল মাশায়েখ’।
শায়খুল মাশায়েখ, মাওলানা জমিরুদ্দিন আহমদ | |
---|---|
ব্যক্তিগত তথ্য | |
জন্ম | ১৮৭৮ |
মৃত্যু | ৬ জুলাই ১৯৪০ | (বয়স ৬১–৬২)
সমাধিস্থল | মাকবারায়ে হাবিবী, নূর মসজিদ, হাটহাজারী |
ধর্ম | ইসলাম |
জাতীয়তা | ব্রিটিশ ভারত |
পিতামাতা |
|
জাতিসত্তা | বাঙালি |
যুগ | আধুনিক |
আখ্যা | সুন্নি |
ব্যবহারশাস্ত্র | হানাফি |
আন্দোলন | দেওবন্দি |
প্রধান আগ্রহ | হাদিস, ফিকহ, তাসাউফ |
যেখানের শিক্ষার্থী | দারুল উলুম দেওবন্দ |
মুসলিম নেতা | |
যার দ্বারা প্রভাবিত | |
যাদের প্রভাবিত করেন |
জমিরুদ্দিন আহমদ ১৮৭৮ সালে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার অন্তর্গত সুয়াবিল গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম নুরুদ্দিন। পিতার মৃত্যুর পর আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় কুরআন ও অল্প প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন করে জীবিকার তাগিদে তিনি রেঙ্গুনে চলে যান এবং কারখানায় চাকরি নেন। অবসর সময়ে তিনি স্থানীয় মসজিদের ইমামের নিকট ‘রাহে নাজাত’ কিতাবটি পড়তেন।
এসময় তিনি নানারকম স্বপ্ন দেখেন এবং তার বিবরণ স্বীয় শিক্ষক ইমামের কাছে উপস্থাপন করেন। ইমাম স্বপ্নের বিবরণ শুনে তাকে ভারতের গাঙ্গুহ নগরে অবস্থানরত রশিদ আহমদ গাঙ্গুহির কাছে যাওয়ার উপদেশ দেন। গাঙ্গুহির নিকট গেলে তিনি প্রথমে তাকে শরিয়তের জ্ঞান অর্জন করতে নির্দেশ দেন। নির্দেশ মোতাবেক তিনি দারুল উলুম দেওবন্দ চলে যান।
দেওবন্দের মুহতামিম হাফেজ মুহাম্মদ আহমদ এই নবাগত ছাত্রের খাওয়া-দাওয়ার ভার গ্রহণ করেন। চট্টগ্রামের ছাত্র আফাজ উদ্দিনের নিকট প্রাথমিক কিতাবাদী অধ্যয়ন করে তিনি মাদ্রাসায় ভর্তি হন এবং ৬ বছর পর দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) সমাপ্ত করেন। পাশাপাশি তিনি আজিজুর রহমান উসমানির কাছে ফিকহ অধ্যয়ন করতেন। দাওরায়ে হাদিস সমাপ্ত করে তিনি রশিদ আহমদ গাঙ্গুহির নিকটও ফিকহ অধ্যয়ন করেন। ফলে তিনি ফিকহ শাস্ত্রে অধিক পারদর্শী হয়ে উঠেন।
প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা সমাপ্তির পর তিনি গাঙ্গুহির হাতে বায়আত গ্রহণ করেন। তিন বছর পর গাঙ্গুহি তাকে খেলাফত প্রদান করেন। এরপর তিনি বাড়িতে চলে আসেন এবং ধর্মীয় সংস্কারে নিয়োজিত হন। দারুল উলুম হাটহাজারী মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়ে দ্রুত উন্নতির দিকে ধাবিত হলে একজন পৃষ্ঠপোষকের প্রয়োজন দেখা যায়। এজন্য হাবিবুল্লাহ কুরাইশি আশরাফ আলী থানভীর কাছে একটি চিঠি লিখেন। থানভীর নির্দেশে জমিরুদ্দিনকে মাদ্রাসার প্রধান পৃষ্ঠপোষক নিয়োগ করা হয়।
মুহাম্মদ ফয়জুল্লাহ তার ফার্সি কাব্যগ্রন্থ কান্দে খাকিতে লিখেছেন,
،سرپرستش قطب عالم اور ضمیر،فیضیاب ازوئے صغیر وہم کبیر ،اولیا را سرور و نیم پیشوا ! اتقارابادی و نام مقتدا
অর্থঃ এই প্রতিষ্ঠানের পৃষ্ঠপােষক সেই মহান বুযুর্গ কুতুবে আলম মাওলানা জমিরুদ্দিন সাহেব রহ., যার থেকে ছােট-বড় সকলে উপকৃত হচ্ছে, যিনি আউলিয়াদের সর্দার ও ইমাম, মুত্তাকীনদের দিশারী ও আদর্শ।
তার উল্লেখযোগ্য শিষ্যদের মধ্যে রয়েছেন: আজিজুল হক, মুহাম্মদ ইউনুস, ইমাম আহমদ, আব্দুল কাইয়ুম প্রমুখ। তিনি প্রথমে সুফি আজিজুর রহমানের ভাতিজির সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন।
১৯৪০ সালের ৬ জুলাই তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর।
তার জীবনীগ্রন্থের মধ্যে ফয়েজ আহমদ ইসলামাবাদী রচিত ‘তাজকেরায়ে জমির’ এবং ২০১০ সালে মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ রচিত ‘ইবতিকার ফউন্ডেশন বাংলাদেশ’ প্রকাশিত “কুতবে যমান আল্লামা শাহ জমিরুদ্দিন রহ.” অন্যতম।
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article জমিরুদ্দিন আহমদ, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.