চৈতন্য মহাপ্রভু (১৪৮৬ খ্রিঃ – ১৫৩৩ খ্রিঃ) ছিলেন ভারতবর্ষে আবির্ভূত এক বহু লোকপ্রিয় বৈষ্ণব সন্ন্যাসী ও ধর্মগুরু মহাপুরুষ এবং ষোড়শ শতাব্দীর বিশিষ্ট সমাজ সংস্কারক। তিনি গৌড়বঙ্গের নদিয়া অন্তর্গত নবদ্বীপে (অধুনা পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলা) হিন্দু ব্রাহ্মণ পণ্ডিত শ্রীজগন্নাথমিশ্র ও শ্রীমতী শচীদেবীর গৃহে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। শ্রী চৈতন্য দেবের পৈতৃক নিবাস বর্তমান বাংলাদেশের সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের দত্তরাইল গ্রামে অবস্থিত।তাঁকে শ্রীরাধাকৃষ্ণের যুুুগল প্রেমাবতার বলা হয়। শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য ছিলেন শ্রীমদ্ভাগবত পুরাণ ও শ্রীমদ্ভগবদ্গীতায় উল্লিখিত দর্শনের ভিত্তিতে ভক্তিযোগ ভাগবত দর্শনের বিশিষ্ট প্রবক্তা ও প্রচারক। তিনি বিশেষত পরম সত্ত্বা রাধা ও কৃষ্ণের উপাসনা প্রচার করেন। জাতিবর্ণ নির্বিশেষে ব্রাহ্মণ থেকে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী পর্যন্ত শ্রীহরি নাম, ভক্তি ও হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র বিতরণ করেন যা শ্রীকলিসন্তরন উপনিষদে ও শ্রীপদ্মপুরাণের হরপার্বতী সংবাদে উল্লেখিত রয়েছে। হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্রকে এই কলিযুগে জড়জগৎ থেকে মুক্তি পেয়ে পারমার্থিক ধামে যাবার একমাত্র পন্থা হিসেবে গন্য করা হয়।
শ্রীমহাপ্রভু চৈতন্যদেব | |
---|---|
ব্যক্তিগত তথ্য | |
জন্ম | গৌরাঙ্গ চন্দ্র দেব, বিশ্বম্ভর মিশ্র |
মৃত্যু | ১৪ জুন ১৫৩৩ | (বয়স ৪৭)
ধর্ম | সনাতন |
দাম্পত্য সঙ্গী | লক্ষ্মীপ্রিয়া দেবী (১ম স্ত্রী) বিষ্ণুপ্রিয়া দেবী(২য় স্ত্রী) |
যে জন্য পরিচিত | গৌড়ীয় বৈষ্ণবধর্ম, কীর্তন |
এর প্রতিষ্ঠাতা | গৌড়ীয় বৈষ্ণবধর্ম অচিন্ত্য ভেদ অভেদ |
দর্শন | অচিন্ত্য অদ্বৈতাদ্বৈত (ভেদাভেদ) বেদান্ত দর্শন, শ্রীব্রহ্মসূত্র-গোবিন্দভাষ্যম্, ভক্তিযোগ গৌড়ীয় ভাগবত(বৈষ্ণব) মত |
ঊর্ধ্বতন পদ | |
গুরু | স্বামী ঈশ্বরপুরী (মন্ত্র প্রদাতা গুরু) স্বামী কেশব ভারতী (সন্ন্যাস দীক্ষা গুরু) |
শিষ্য | |
সাহিত্যকর্ম | শিক্ষাষ্টক |
হরের্নাম, হরের্নাম, হরের্নামৈব কেবলম্।
কলৌঃ নাস্ত্যেব নাস্ত্যেব নাস্ত্যেব গতিরন্যথা।।
মহামন্ত্র
হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে।
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।।
সংস্কৃত ভাষায় শিক্ষাষ্টক নামক প্রসিদ্ধ স্তোত্রটিও তারই রচনা।ভাগবত পুরাণের শেষের দিকের শ্লোকগুলোতে রাধারাণীর ভাবকান্তি সংবলিত শ্রীকৃষ্ণের চৈতন্যরূপে প্রেমাবতার গ্রহণের কথা বর্ণিত হয়েছে। শ্রীভবিষ্যপুরাণেও শ্রীকৃষ্ণচৈতন্যেরদেবের বিশেষ উল্লেখ আছে তাঁহার জন্মতিথি প্রতিবছর দোলযাত্রা দিনে বাঙ্গালী দের বহু ঘরে এবং ভারতের সম্পূর্ণ গৌড়ীয় ভাগবত মত অনুসরণকারী দের বাড়ি ও মন্দিরে গৌরপূর্ণিমা রূপে উদ্যাপন করা হয়।
চৈতন্য মহাপ্রভুর পূর্বাশ্রমে নামকরণ 'শ্রীশ্রী বিশ্বম্ভর মিশ্র' করা হয়েছিল। তার গাত্রবর্ণ গৌর ও স্বর্ণালি আভাযুক্ত ছিল বলে তাঁকে 'গৌরাঙ্গ' বা 'গৌরচন্দ্র' নামে অভিহিত করা হত; অন্যদিকে, নিম্ব বৃক্ষের নিচে জন্ম বলে তার মাতা তাঁকে 'নিমাই' বলে ডাকতেন তাই নবদ্বীপ বাসিও নিমাই পণ্ডিত বলে তাঁকে অভিহিত করতেন। ষোড়শ শতাব্দীতে চৈতন্য মহাপ্রভুর জীবনী সাহিত্য বঙ্গীয় সন্তজীবনী ধারায় এক নতুন যুগের সূচনা ঘটিয়েছিল। সে যুগে একাধিক কবি চৈতন্য মহাপ্রভুর জীবনী অবলম্বনে কাব্য রচনা করে গিয়েছেন। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল: শ্রীকৃষ্ণদাস কবিরাজ গোস্বামীর:- শ্রীশ্রীচৈতন্যচরিতামৃত(সবথেকে পুরনো এবং প্রমাণিত শ্রীচৈতন্যদেবের জীবনচরিত্রাবলী), শ্রীবৃন্দাবন দাস ঠাকুরের:- শ্রীমদ্ চৈতন্য ভাগবত, এবং শ্রীলোচন দাস ঠাকুরের:- শ্রীশ্রীচৈতন্যমঙ্গল।
চৈতন্য চরিতামৃত গ্রন্থের বর্ণনা ও বঙ্গীয় সনাতন ধর্মালম্বীদের মতানুযায়ী, ১৪০৭ শকাব্দের বা ১৪৮৬ খ্রিস্টাব্দে চৈতন্য মহাপ্রভু ফাল্গুনী পূর্ণিমার (দোল যাত্রা উৎসব) সন্ধ্যাকালে সিংহলগ্নে চন্দ্রগ্রহণের সময় নদিয়ার নবদ্বীপে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার পিতামাতা ছিলেন প্রাচীন গৌড়বঙ্গে নদিয়া অন্তর্গত নবদ্বীপের অধিবাসী জগন্নাথ মিশ্র ও শচী দেবী।
সেন রাজবংশ-এর সময় নবদ্বীপ ছিল বাংলার অন্যতম রাজধানী।:৩১–৩২ ত্রয়োদশ শতাব্দীর প্রথমে বক্তিয়ার খিলজি এই নবদ্বীপ জয় করেই বাংলা জয়ের সূচনা করেন। নবদ্বীপের সমৃদ্ধি বহুকালের , গঙ্গাতীরে নবদ্বীপ তখন ছিল বাংলাদেশের অন্যতম সমৃদ্ধ স্থান । বাণিজ্য ও বিদ্যাচর্চার কেন্দ্র হিসাবে খ্যাতিলাভ করায় বাংলাদেশের নানা অঞ্চল থেকে গুণীজ্ঞানী ব্রাহ্মণপণ্ডিত ও জীবিকাপ্রার্থীদের আগমনে নবদ্বীপ খুবই বড় হয়ে উঠতে থাকে।
শ্রীচৈতন্যের জন্মের সমকালে দেশের মধ্যে রাজনৈতিক অশান্তি তেমন ছিল না। ১৪৯৩ খ্রিস্টাব্দে সিংহাসন অধিকার করে আলাউদ্দিন হোসেন শাহ দেশের শান্তি অক্ষুণ্ণ রাখেন।
হিন্দুদের মধ্যে উচ্চবর্ণের শিক্ষিতরা সরকারি চাকরি ইত্যাদি করে অভিজাত শ্রেণীতে উন্নীত হয়েছিল। কিন্তু অন্য-দিকে আবার দেখা যায় অনুন্নত সমাজের মানুষেরা অবহেলিত হচ্ছিল। ঐশ্বর্যের সঙ্গে দারিদ্র সহাবস্থান করছিল। উচ্চশ্রেণীর জীবনযাপনে “ম্লেচ্ছাচার” প্রবল হয়ে দেখা দিয়েছিল। বৃন্দাবন দাসের বর্ণনা অনুসারে জানতে পারি, তখন মানুষ অত্যন্ত ধর্মবিমুখ হয়ে পড়েছিল। ধর্মকর্মের মধ্যে ছিল সারারাত জেগে “মঙ্গলচণ্ডীর গীত” শোনা, মদমাংস দিয়ে “যক্ষপূজা”, ধূমধাম করে বিষহরির পূজা আর পুত্রকন্যার বিয়েতে অর্থের অপচয় করা। এবিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে সে সময়ে সমাজের মধ্যে মূঢ়তা ও উদ্দেশ্যহীনতার মানসিকতা সৃষ্টি হয়েছিল, যা একদল চিন্তাশীল ও ভাবুককে বিচলিত করে তুলেছিল। রামানন্দ বসু, রূপ-সনাতনের মত প্রতিষ্ঠিত, ধনী ও অভিজাত উচ্চ বংশের শিক্ষিত হিন্দুরা উদ্দেশ্যহীন ঐশ্বর্য প্রতিষ্ঠার অসারতা অনুভব করছিলেন।
চৈতন্যদেবের মাতামহ ও পিতৃ প্রদত্ত নাম ছিল শ্রীবিশ্বম্ভর মিশ্র। কিশোরাবস্থায় তার পিতৃবিয়োগ ঘটে। প্রথম যৌবনে তিনি ছিলেন স্বনামধন্য পণ্ডিত। তার প্রধান আগ্রহের বিষয় ছিল সংস্কৃত গ্রন্থাদি পাঠ ও জ্ঞানার্জন। ব্যাকরণশাস্ত্রে ব্যুৎপত্তি অর্জনের পর মাত্র কুড়ি বছর বয়সে তিনি ছাত্রদের অধ্যয়নের জন্য একটি টোল স্থাপন করেন। তর্কশাস্ত্রে নবদ্বীপের নিমাই পণ্ডিতের খ্যাতি ছিল অবিসংবাদিত। দ্বিগ্বিজয়-কেশবকাশ্মীর নামক এক দিগ্বিজয়ী পণ্ডিতকে তরুণ নিমাই তর্ক-যুদ্ধে পরাস্ত করেন। জপ ও শ্রী হরির নাম কীর্তনের প্রতি তার আকর্ষণ যে ছেলেবেলা থেকেই বজায় ছিল, তা জানা যায় তার জীবনের নানা কাহিনি থেকে। তার প্রথম ধর্মপত্নী লক্ষ্মীপ্রিয়াদেবী কে বিয়ের পর একবার আদিনিবাস শ্রীহট্ট গিয়েছিলেন তিনি। পূর্ববঙ্গে পর্যটনকালে লক্ষ্মীপ্রিয়াদেবীর সর্পদংশনে মৃত্যু ঘটলে তিনি মায়ের অনুরোধে বিষ্ণুপ্রিয়া দেবীর সাথে পাণিগ্রহণ করেন।
এরপর গয়ায় পিতার পিণ্ডদান করতে গিয়ে পিতা ও প্রথম স্ত্রীর বিয়োগ কাতর নিমাই তার মন্ত্রদাতাগুরু স্বামী ঈশ্বর পুরীর সাক্ষাৎ পান। ঈশ্বর পুরীর নিকট তিনিশ্রীশ্রীগোপাল অষ্টাদশাক্ষর মহামন্ত্রেরাজে দীক্ষিত হন। এই ঘটনা নিমাইয়ের পরবর্তী জীবনে গভীর প্রভাব বিস্তার করে। বাংলায় প্রত্যাবর্তন করার পর শিক্ষাভিমানী পণ্ডিত থেকে কৃষ্ণভাবময় ভক্ত রূপে তার অপ্রত্যাশিত মন পরিবর্তন দেখে অদ্বৈত আচার্যের নেতৃত্বাধীন স্থানীয় বৈষ্ণব সমাজ আশ্চর্য হয়ে যান। অনতিবিলম্বে নিমাই নদিয়ার বৈষ্ণব সমাজের এক অগ্রণী নেতায় পরিণত হন। হিন্দুধর্মের জাতিভেদ উপেক্ষা করে তিনি সমাজের নিম্নবর্গীয় মানুষদের বুকে জড়িয়ে ধরে “হরি বল” ধ্বনি বিতরণ করতেন এবং হরিনাম প্রচারে মৃদঙ্গ (শ্রীখোল)-করতাল সহযোগে অনুগামীদের নিয়ে নবদ্বীপের রাজপথে ‘নগর সংকীর্তন’-এ বের হতেন। অত্যাচারী জগাই ও মাধাইকে তিনি ভক্তেরূপে পরিণত করেন। তার প্রভাবে মুসলমান ‘যবন’ (হরিদাস ঠাকুর) সনাতন ধর্ম ও বৈষ্ণব মত গ্রহণ করেন এবং নবদ্বীপের শাসক চাঁদকাজী তার আনুগত্য স্বীকার করেন। চৈতন্যভাগবত-এ আছে, জাতিভেদের অসারতা দেখানোর জন্য তিনি শূদ্র রামরায়কে দিয়ে শাস্ত্র ব্যাখ্যা করিয়েছিলেন।
মাত্র চব্বিশ বছর বয়সে কাঞ্চন নগরে স্বামী কেশব ভারতীর নিকট সন্ন্যাসাশ্রমে দীক্ষিত হওয়ার পর নিমাই পণ্ডিত শ্রীমন্ কৃষ্ণচৈতন্যদেব নাম গ্রহণ করেন। সন্ন্যাস গ্রহণের পর তিনি জন্মভূমি গৌড়বঙ্গ ও নদিয়া ত্যাগ করে কয়েক বছর ভারতের বিভিন্ন তীর্থস্থান যথা: নীলাচল, দাক্ষিণাত্য, পণ্ডরপুর, বৃন্দাবন আদিতে তীর্থ পর্যটন করেন। পথে সত্যবাই, লক্ষ্মীবাই নামে বারাঙ্গনাদ্বয় এবং ভীলপন্থ, নারেজী প্রভৃতি দস্যুগণ তার শরণ গ্রহণ করে। এইসব স্থানে ভ্রমণের সময় তিনি এতদাঞ্চলের ভাষা (যথা: ওড়িয়া, তেলুগু, মালয়ালম প্রভৃতি) বিশেষভাবে শিক্ষা করেন। এই সময় তিনি অশ্রুসজল নয়নে অবিরত কৃষ্ণনাম জপ ও কঠোর বৈরাগ্য সাধন (আহার-নিদ্রা ত্যাগ করে কৌপীনসার হয়ে) করতেন। জীবনের শেষ চব্বিশ বছরের অধিকাংশ সময় তিনি অতিবাহিত করেন জগন্নাথধাম পুরীতে। ওড়িশার সূর্যবংশীয় সনাতনধর্মীয় সম্রাট গজপতি মহারাজা প্রতাপ রুদ্রদেব চৈতন্য মহাপ্রভুকে কৃষ্ণের সাক্ষাৎ অবতার রূপে উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন। মহারাজা প্রতাপরুদ্র চৈতন্যদেব ও তার সংকীর্তন দলের পৃষ্ঠপোষকে পরিণত হয়েছিলেন। জীবনের শেষপর্বে চৈতন্যদেব ভক্তিরসে আপ্লুত হয়ে হরিনাম সংকীর্তন করতেন এবং অধিকাংশ সময়েই ভাবসমাধিস্থ থাকতেন। ১৫৩৩ খ্রীষ্টাব্দে আষাঢ় মাসের শুক্লা সপ্তমী তিথিতে রবিবারে পুরীধামে ৪৮ বছর বয়সে তার লীলাবসান ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনানুসারে তিনি পুরীধামের জগন্নাথের দেহাভ্যন্তরে লীন হয়ে যান।
নবদ্বীপ শহরের মহাপ্রভু ধাম মন্দিরে শ্রী শ্রী বিষ্ণুপ্রিয়া সমিতির তত্ত্বাবধানে রয়েছে শ্রীচৈতন্যর পাদুকা যুগল। কাঠের এই পাদুকা দু’টি ৫০০বছর আগে বিষ্ণুপ্রিয়া দেবীকে দিয়ে গিয়েছিলেন স্বয়ং মহাপ্রভু। কথিত রয়েছে, শ্রীচৈতন্যদেব সন্ন্যাস নেওয়ার এক বছরের মাথায় শান্তিপুরে এসেছিলেন শচীমাতাকে দর্শনের জন্য। শচীমাতাকে দর্শনের পরেই পুরীধামে চলে যাওয়ার কথা ছিল তার। অচমকা পুরীর যাত্রা বাতিল করে তিনি নবদ্বীপে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। শ্রীবাস, গদাধরকে সঙ্গে নিয়ে কীর্তন করতে তিনি নবদ্বীপে চলে আসেন। বিষ্ণুপ্রিয়াদেবী সেই সময় বাড়িতে পুজো করছিলেন। সন্ন্যাসীদের স্ত্রীর মুখ দর্শনের নিয়ম নেই। তাই উঠোনে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিলেন মহাপ্রভু। বিষ্ণুপ্রিয়াদেবী ঘর থেকে বের হয়ে স্বামীকে প্রণাম করতে যান। প্রণাম শেষ হতেই বিষ্ণুপ্রিয়াদেবী দেখেন, এক জোড়া পাদুকা রেখে গিয়েছেন মহাপ্রভু। সামনে মহাপ্রভু নেই। ওই দিন রাতে বিষ্ণুপ্রিয়াদেবী মায়ের স্বপ্নাদেশ পান, জন্মভিটের নিম গাছ থেকে কাঠের বিগ্রহ তৈরি করে পুজো করতে এবং তার সঙ্গে পাদুকাও পুজো হবে। সেই থেকে মহাপ্রভুর পাদুকা পুজো হয়ে আসছে। বিষ্ণুপ্রিয়াদেবীর ভাইয়ের বংশধররা ওই পাদুকা যুগল সুরক্ষিত রেখেছেন। ১৯৬০সালের পর ওই পাদুকা দু’টিকে একটি রুপোর খাপের মধ্যে রাখা হয়।
গৌড়ীয় বৈষ্ণবদের মতে, চৈতন্য মহাপ্রভু ঈশ্বরের তিনটি পৃথক পৃথক রূপের আধার: প্রথমত, তিনি কৃষ্ণের ভক্ত; দ্বিতীয়ত, তিনি কৃষ্ণভক্তির প্রবক্তা; এবং তৃতীয়ত, তিনি রাধিকার সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য বন্ধনে আবদ্ধ কৃষ্ণের স্বরূপ। ষোড়শ শতাব্দীতে রচিত চৈতন্য জীবনীগ্রন্থগুলিতে লিপিবদ্ধ রয়েছে যে, তিনি একাধিকবার অদ্বৈত আচার্য ও নিত্যানন্দ প্রভুকে কৃষ্ণের মতো বিশ্বরূপ দেখিয়েছিলেন।
চৈতন্যদেবের দেহকান্তি ও স্বভাব সম্পর্কিত একটি পদ নিম্নরূপ:
“ | প্রকান্ড শরীর শুদ্ধ কাঞ্চন বরণ আজানুলম্বিত ভুজ কমল লোচন। বাহু তুলি হরি বলি প্রেমদৃষ্ট্যে চায় করিয়া কল্মষ নাশ প্রেমেতে ভাসায়। | ” |
শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর অবতার গ্রহণের বিষয়ে তিনটি মত বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য তা হল:
জীবনী কাব্যগুলোতে মূলত এই তিনটি কারণের কথাই ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article চৈতন্য মহাপ্রভু, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.