চলচ্চিত্রনির্মাণ (চলচ্চিত্র নির্মাণ) হল চলচ্চিত্র নির্মাণের কৌশল। চলচ্চিত্র নির্মাণে কয়েকটি ধাপ রয়েছে, যেমন প্রারম্ভিক কাহিনী বা ধারণার উন্নয়নের পরে চিত্রনাট্য রচনা, অভিনয়শিল্পী নির্বাচন, চিত্রগ্রহণ, শব্দগ্রহণ, চলচ্চিত্র সম্পাদনা ও চলচ্চিত্র প্রদর্শন। চলচ্চিত্র প্রদর্শন চলচ্চিত্র নির্মাণের শেষ ধাপ। এই ধাপে চলচ্চিত্র মুক্তি ও প্রদর্শনীর মাধ্যমে দর্শকদের সামনে নির্মিত চলচ্চিত্রটি পেশ করা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিকসহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর চলচ্চিত্র নির্মিত হয়ে থেকে। এতে বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি ও পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। সাধারণত একটি চলচ্চিত্র নির্মাণে অনেক সংখ্যক লোকবল ও কয়েক মাস থেকে কয়েক বছর পর্যন্ত সময় লাগে।
চলচ্চিত্র নির্মাণে পাঁচটি ধাপ রয়েছে:
এই ধাপে চলচ্চিত্র প্রযোজক চলচ্চিত্রের কাহিনী নির্বাচন করে। কাহিনী বই, নাটক, অন্য চলচ্চিত্র, সত্য ঘটনা অবলম্বনে, ভিডিও গেম, কমিক বই, গ্রাফিক উপন্যাস বা মৌলিক ধারণা থেকে গৃহীত হতে পারে। মূল বিষয়বস্তু ঠিক করার পর প্রযোজক লেখককে দিয়ে কাহিনী লেখান, যেখানে গল্পকে নাটকীয়ভাবে উপস্থাপনের উপযুক্ত করে তোলা হয়। এতে গল্প, ভাব, চরিত্র ও সংলাপ যুক্ত করা হয়।
পরে চিত্রনাট্যকার কিছু সময় নিয়ে গল্প উপযোগী চিত্রনাট্য লিখেন। চিত্রনাট্যকার নাটকীয়তা প্রদান, চরিত্রায়ণ, সংলাপ, ও সর্বোপরি একটি কাঠামো দাড় করানোর জন্য কাহিনী কয়েকবার পুনঃলিখন করে থাকেন। প্রযোজক অবশ্য এই ধাপগুলো বাদ দিতেও পারেন। চিত্রনাট্য লেখার পর প্রারম্ভিক পর্যায়ে বাজার সম্পর্কে ধারণা লাভের জন্য পরিবেশকের সাথে যোগাযোগ করা হয়। কারণ সব চলচ্চিত্র প্রেক্ষাগৃহ থেকে আয় দিয়ে লাভ করতে পারে না, ফলে তার হোম ভিডিও মুক্তিতেও মনযোগী হয়।
অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্রের উন্নয়ন কিছুটা ভিন্ন হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে পরিচালক নিজেই চলচ্চিত্রের গল্প তৈরি করে এবং প্রযোজককে তা বর্ণনা করে এবং এতে কোন চিত্রনাট্যের পান্ডুলিপি তৈরি করা হয় না। তবে যদি চলচ্চিত্রের আরও উন্নয়ন ও প্রাক-নির্মাণের প্রয়োজন হলে চিত্রনাট্য লেখার জন্য একজন চিত্রনাট্যকার নিয়োগ করা হয়।
প্রাক-নির্মাণকালে চলচ্চিত্র নির্মাণের সকল ধাপ সতর্কতার সাথে পরিকল্পনা করা হয়। প্রযোজনা সংস্থা ও প্রযোজনা অফিস প্রতিষ্ঠা করা হয়। পরিচালক চলচ্চিত্রের প্রাক-দৃশ্যায়ন করে অথবা চিত্রশিল্পীর মাধ্যমে স্টোরিবোর্ড তৈরি করা হয়। নির্মাণ ব্যয় নির্ধারণ করা হয়। বড় ধরনের নির্মাণের ক্ষেত্রে কোন দুর্ঘটনা থেকে ক্ষতিপূরণ লাভের আশায় অনেক সময় বীমাও করা হয়।
প্রাক-নির্মাণকালে নিম্নোক্ত কলাকুশলীরা প্রধান ভূমিকা রাখে:
এই ধাপে ভিডিও নির্মাণ বা চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য চিত্রগ্রহণ শুরু হয়। অনেক ধরনের কলাকুশলী, যেমন স্বত্বাধিকারী, কাহিনী বিন্যাসকারী, সহকারী পরিচালক, স্থিরচিত্রগ্রাহক, চিত্র সম্পাদক, ও শব্দ সম্পাদক নিয়োগ করা হয়। চলচ্চিত্র নির্মাণে এগুলো সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত কার্যাবলী; প্রযোজনা অফিসে আরও কোন দায়িত্ব থাকলে তা বণ্টন করে দেওয়া হয়।
কোন নির্দিষ্ট দিনে চিত্র ধারণ শুরু হয় সাধারণত অভিনয়শিল্পীদের সেটে আসার পর। ভিন্ন ভিন্ন অভিনয়শিল্পীর সেটে আসার সময় ভিন্ন হয়ে থাকে। কিন্তু তার আগেই সেট নির্মাণ, রুপসজ্জা, আলোকসজ্জা করা হয়ে থাকে। গ্রিপ, বৈদ্যুতিক ও নির্মাণ পরিকল্পনাকারীরা সাধারণত ক্যামেরা ও শব্দ বিভাগের আগে কাজ শুরু করে।
এপর্যায়ে ধারণকৃত ভিডিও একত্রীত ও সম্পাদনা করা হয়। নির্মাণকালে ধারণকৃত শব্দ সম্পাদনা করা হয় এবং সঙ্গীতের সুর করা ও সঙ্গীত ধারণ করা হয়। কম্পিউটার গ্রাফিক কোন দৃশ্য থাকলে তা যোগ করা হয়। সবশেষে সব ধরনের শব্দ মিশ্রণ করা হয়।
চলচ্চিত্র নির্মাণের সর্বশেষ ধাপ হল প্রেক্ষাগৃহে চলচ্চিত্র মুক্তি দেওয়া। কিছু চলচ্চিত্র বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয় এবং রোডশোতে প্রদর্শিত হয়। পাশাপাশি ডিভিডি, ভিসিডি, ভিএইচএস, ব্লু-রে ডিস্ক ও সরাসরি ডিজিটাল মিডিয়া ডাউনলোডের সুযোগ থাকে।
মূলধারার চলচ্চিত্র নির্মাণের বাইরে চলচ্চিত্র নির্মাণ হল স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাণ। চলচ্চিত্র নির্মাতা চিত্রগ্রহণের পর কোন প্রযোজনা অফিসে না গিয়ে নিজের কম্পিউটারে চলচ্চিত্র সম্পাদনা, শব্দ ও সঙ্গীত সংযোজন ও মিশ্রণ করে থাকে।
টেমপ্লেট:চলচ্চিত্রের কলাকুশলী
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article চলচ্চিত্রনির্মাণ, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.