ঘুড়ি এক প্রকারের হাল্কা খেলনা, যা সুতা টেনে আকাশে ওড়ানো হয়। পাতলা কাগজের সাথে চিকন কঞ্চি লাগিয়ে সাধারণত ঘুড়ি তৈরি করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের এবং বিভিন্ন উপাদান ও নকশার ঘুড়ি রয়েছে। বিশ্বজুড়েই ঘুড়ি ওড়ানো একটি মজার খেলা। এছাড়াও বহু দেশে ঘুড়ি ওড়ানোর উৎসব ও প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান প্রভৃতি দেশে ঘুড়ি ওড়ানো একটি বিনোদনমূলক অবসর বিনোদন। বাংলাদেশে, বিশেষ করে পুরনো ঢাকায় পৌষ মাসের শেষ দিন, অর্থাৎ পৌষ সংক্রান্তিতে ঘুড়ি ওড়ানো উৎসব পালন করা হয়। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বিশ্বকর্মা পূজার দিন ঘুড়ি ওড়ানোর প্রথা রয়েছে।
বিভিন্ন দেশে ঘুড়ির বিভিন্ন রকম নামকরণ করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশে ঘুড়ির নিম্নবর্ণিত নামগুলো রয়েছে:-
চারকোণা আকৃতির বাংলা ঘুড়ি, ড্রাগন, বক্স, মাছরাঙা, ঈগল, ডলফিন, অক্টোপাস, সাপ, ব্যাঙ, মৌচাক, কামরাঙা, আগুন পাখি, প্যাঁচা, ফিনিক্স, চিল, জেমিনি, চরকি লেজ, পাল তোলা জাহাজ, জাতীয় পতাকা প্রমূখ।
ধারণা করা হয় যে, প্রায় ২,৮০০ বছর পূর্বে চীন দেশে ঘুড়ির সর্বপ্রথম ঘুড়ির উৎপত্তি ঘটেছে। পরবর্তীকালে এটি এশিয়ার অন্যান্য দেশ - বাংলাদেশ, ভারত, জাপান এবং কোরিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়াও, ইউরোপে ঘুড়ি খেলাটির প্রচলন ঘটে প্রায় ১,৬০০ বছর পূর্বে। প্রথমদিকে ঘুড়ি কাগজ অথবা হাল্কা তন্তুজাতীয় সিল্কের কাপড় দিয়ে উড়ানো হতো। ব্যবহৃত অন্যান্য উপাদানের অংশ হিসেবে ঘুড়িতে বাঁশের কঞ্চি কিংবা অন্যান্য শক্ত অথচ নমনীয় কাঠ দিয়ে তৈরী করা হয়। এছাড়াও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে সুতা কিংবা পাতলা দড়ি ব্যবহৃত হয়।
আধুনিককালের ঘুড়িগুলোয় সিনথেটিকজাতীয় পদার্থের প্রচলন রয়েছে। বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের ঘুড়ি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রচলিত। কোনটি আকারে খুব বড় ও দেখতে নয়ন মনোহর। আবার কোনটি আকারে খুবই ছোট যা দ্রুত উড়তে কিংবা প্রতিযোগিতায় ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
২০১১ সালে অনুষ্ঠিত ব্রিষ্টল ঘুড়ি উৎসব শেষে সবচেয়ে বড় ঘুড়িটি প্রায় ২০ মিনিট আকাশে অবস্থান করে। এটি ভূমির প্রায় ১০,৯৭১ বর্গফুট জায়গা দখল করেছিল।
ঘুড়ির কাগজ সাধারণত হয় বেশ পাতলা, যাতে ঘুড়ি হয় হালকা এবং বাতাসে ভাসার উপযোগী। অনেক দেশেই ঘুড়ি বানানোর জন্য সাদা কাগজের পাশাপাশি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রঙিন কাগজ ব্যবহারের রীতি দেখা যায়, এবং এর মূল কারণ মনোরঞ্জন ও সৌন্দর্য্যবৃদ্ধি।
অন্য ঘুড়ির সুতা কাটার উদ্দেশ্যে এরারট সাবু, বার্লি, লাতা-পাতার রস, রং, কাচের গুঁড়া দিয়ে আঠায় মিশিয়ে বিশেষ মশলা যা সুতায় মাখিয়ে রোদে শুকিয়ে কড়া মাঞ্জা, হাত-মাঞ্জা তৈরি হতো।
ঘুড়ি কাটাকাটির লড়াই সারা বছরই দেখা গেলেও বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান প্রভৃতি ভারতবর্ষীয় অঞ্চলগুলোতে ঘুড়ি উড়ানোর বিশেষ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। ঘুড়ির লড়াইয়ে সাধারণত একাধিক লড়াকু মাঞ্জা দেওয়া সূতা দিয়ে ঘুড়ি উড়িয়ে একজন আরেকজনের ঘুড়িকে টেনে অথবা ছেড়ে (ঢিল পদ্ধতিতে) ঘুড়ি কাটার চেষ্টা করেন। বিজয়ী ঘুড়ি আকাশে উড়তে থাকে আর হেরে যাওয়া অর্থাৎ কেটে যাওয়া ঘুড়ি বাতাসে দুলতে দুলতে ভুপাতিত হয়। ভুপাতিত ঘুড়ি কুড়িয়ে নেয়ার জন্য কিশোর-যুবক-বৃদ্ধ চেষ্টা করেন।
একসময় সারাবছর কম-বেশি এবং পৌষ ভাদ্রে মাঠে-ঘাটে পত পত শব্দে আকাশে উড়ত অসংখ্য রঙ-বেরঙের ঘুড়ি।
ফসল কিংবা বিস্তীর্ণ অনাবাদী জমি, বিচরণভূমি আর খেলার মাঠে দলবেঁধে শিশু- কিশোর, যুবক এমনকি বড়দেরও লাটাই হাতে নিয়ে আকাশের দিকে ঘুড়ির পানে চেয়ে থাকাতে দেখা যেতো। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আকাশ ছেড়ে যেতো ঘুড়িতে। ক্রমশ: মাঠ-ঘাট ,আবাদী অনাবাদী জমি সংর্কীর্ণ , বিচরণভূমি হ্রাস এবং ক্রমাগত বহুতল ভবন নির্মাণের কারণে ঘুড়ি ওড়ানোর পরিধি কমে আসছে এবং ভিডিও গেমস এর প্রভাবে ঘুড়ি ওড়ানোয় আগ্রহী মানুষের সংখ্যাও দিন দিন কমছে। অন্য দিকে কিছু মানুষের সেই ইচ্ছে থাকলেও বাধ সাধছে দৈনন্দিন জীবনে সময়ের অভাব। সর্বপরী কমছে বাঙালীর ঐহিত্যবাহী এই খেলা। ঘুড়ির সেই বিলাশ আজ স্মৃতিতে।
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article ঘুড়ি, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.