গ্লোমেরুলোনেফ্রাইটিস

গ্লোমারুলোনেফ্রাইটিস ( জিএন ) এমন একটি শব্দ যা বেশ কয়েকটি বৃক্কের রোগকে (যেগুলো সাধারণত উভয় কিডনিকেই প্রভাবিত করে) বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। এই রোগগুলি গ্লোমেরুলি বা বৃক্কের ক্ষুদ্র রক্তনালীগুলির প্রদাহ দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। তবে এই রোগগুলির সবগুলোতে প্রদাহ নাও দেখা দিতেপারে।

গ্লোমেরুলোনেফ্রাইটিস
গ্লোমেরুলোনেফ্রাইটিস
ক্রিসেন্টিক গ্লোমেরুলোনেফ্রাইটিসে আক্রান্ত ব্যক্তির বৃক্কের প্রস্থচ্ছেদের অতিক্ষুদ্র চিত্র।যেখানে হেমাটোটক্সিলিন এবং ইউসিলিন স্পষ্ট প্রতীয়মান
বিশেষত্বnephrology উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন

যেহেতু এটি কোনও একক রোগ নয় তাই এর লক্ষনগুলি নির্দিষ্ট রোগের উপর নির্ভর করে। এটি বিচ্ছিন্ন হেমাটুরিয়া এবং / বা প্রোটিনিউরিয়া ( প্রস্রাবে রক্ত বা প্রোটিনের উপস্থিতি) দিয়ে উপস্থিত হতে পারে। অথবা নেফ্রোটিক লক্ষন, নেফ্রিটিক লক্ষন, বৃক্কে তীব্র আঘাত বা দীর্ঘস্থায়ী বৃক্কের রোগ হিসাবে উপস্থিত হতে পারে।

লক্ষণ ও উপসর্গ

গ্লোমেরুলোনেফ্রাইটিস 
গ্লোমেরুলাস, একটি কার্যকরী ইউনিট যা রক্ত এবং মূত্রের পরিস্রাবণ এবং পুুনরুৎপাদনের প্রথম পদক্ষেপের প্রতিনিধিত্ব করে।

গ্লোমেরুলোনেফ্রাইটিস বলতে গ্লোমারুলাসের প্রদাহ বোঝায়।গ্লোমেরুলাস হলো বৃক্কে তরল পরিস্রাবণের সাথে জড়িত একক। এই প্রদাহের মধ্যে সাধারণত নেফ্রোটিক বা নেফ্রিটিক লক্ষণগুলির মধ্যে একটি বা উভয়ই হতে পারে। :৫০০

নেফ্রোটিক লক্ষণ

প্রস্রাবে প্রোটিন বৃদ্ধি এবং রক্তে প্রোটিন হ্রাস হওয়া, রক্তে বাড়তি চর্বিযুক্ত ব্যক্তির মধ্যে এডিমা শনাক্তকরনের মাধ্যমে নেফ্রোটিক লক্ষণগুলি চিহ্নিত করা হয়।এক্ষেত্রে প্রদাহ গ্লোমেরুলাস, পোডোসাইটের চারপাশের কোষগুলিকে প্রভাবিত করে প্রোটিন বৃদ্ধি করে, ফলে প্রস্রাবে প্রোটিন বৃদ্ধি পায়। প্রস্রাবে প্রোটিনের পরিমাণ যখন যকৃতের ক্ষতিপূরণ করার ক্ষমতাকে ছাড়িয়ে যায় তখন রক্তে কম প্রোটিন শনাক্ত হয় - বিশেষত অ্যালবুমিন। যেটি প্রচলিত প্রোটিনের সিংহভাগ তৈরি করে। রক্তে প্রোটিন হ্রাসের সাথে রক্তের অ্যানকোটিক চাপ কমে যায়। এটির ফলে এডিমা হয়, কারণ টিস্যুতে অনকোটিক চাপ একই থাকে। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে যে দূরবর্তী নেফ্রনের (নালী সংগ্রহের ক্ষেত্রে) মধ্যে সোডিয়ামের প্রচুর পরিমাণে ধারণ করাই নেফ্রোটিক লক্ষণের ক্ষেত্রে জল ধরে রাখা এবং শোথের প্রধান কারণ। এটি অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি দ্বারা ক্ষরিত অ্যালডোস্টেরন হরমোনের প্রভাবে আরও খারাপ হতে পারে । :৫৪৯

নেফ্রিটিক লক্ষণ

গ্লোমেরুলোনেফ্রাইটিস 
পোডোসাইটস কোষগুলি যা গ্লোমেরুলাসের রেখায় থাকে, যা ঋণাত্বকভাবে চার্জিত করা হয় এবং এদের মাঝে ছোট ফাঁক থাকে যা বড় অণুগুলির পরিস্রাবণ প্রতিরোধ করে। প্রদাহ দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হলে প্রোটিনগুলির প্রবেশযোগ্যতা বৃদ্ধি পায়।এভাবে নেফ্রিটিক লক্ষন শনাক্ত হয়।

নেফ্রিটিক লক্ষণ প্রস্রাবে রক্তের উপস্থিতি দ্বারা চিহ্নিত করা হয় (বিশেষত লোহিত রক্ত কণিকা)। এছাড়া উচ্চ রক্তচাপের উপস্থিতিতে প্রস্রাবের পরিমাণ হ্রাস পেলেও লক্ষণ চিহ্নিত হয় । এই লক্ষণে গ্লোমেরুলাস আস্তরণকারী কোষগুলিতে প্রদাহজনক ক্ষতির ফলে এপিথেলিয়াল বাধা ধ্বংস হয় এবং রক্ত প্রস্রাবে পাওয়া যায় বলে মনে করা হয়। একই সময়ে, প্রতিক্রিয়াশীল পরিবর্তনগুলি, যেমন ম্যাসাঞ্জিয়াল কোষগুলির বিস্তার, বৃক্কে রক্ত প্রবাহ হ্রাস পাওয়ার ফলে প্রস্রাবের উৎপাদন হ্রাস পেতে পারে। রেনিন-অ্যাঞ্জিওটেনসিন সিস্টেম পরবর্তীকালে সক্রিয় হতে পারে কারণ জাক্সটাগ্লোমেরুলার অ্যাপারেটাসে রক্ত সরবরাহ হ্রাস পাওয়ায় উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে। :৫৫৪

রোগ নির্ণয়

গ্লোমেরুলোনেফ্রাইটিস 
দীর্ঘস্থায়ী বৃক্ক রোগের ক্ষেত্রে বৃৃৃৃৃক্কের আল্ট্রাসনোগ্রাফি যেখানে কর্টিকাল পুরুত্বের কমার সাথে যে গ্লোমেরুলোনেফ্রাইটিস ঘটে তা দেখানো হয়েছে । আল্টাসনোগ্রাফি চিত্রে বৃক্কের দৈর্ঘ্যের পরিমাপ '+' এবং একটি ড্যাশযুক্ত রেখার দ্বারা চিত্রিত করা হয়েছে ।

ইতিহাস এবং পরীক্ষার ফলাফলের উপর ভিত্তি করে গ্লোমেরুলোনফ্রাইটিসের কিছু প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চিকিৎসার দ্বারা নির্ণয় করা হয়। অন্যান্য পরীক্ষার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে:

  • প্রস্রাব পরীক্ষা
  • এফবিসি, প্রদাহজনক চিহ্নিতকারী এবং বিশেষ পরীক্ষাগুলি ( এএসএলও, এএনসিএ, অ্যান্টি-জিবিএম, পরিপূরক স্তর, অ্যান্টি-পারমাণবিক অ্যান্টিবডিগুলি সহ) কারণগুলির তদন্তকারী রক্ত
  • বৃক্কের বায়োপসি
  • বৃক্কের আল্ট্রাসনোগ্রাফি দীর্ঘস্থায়ী বৃক্ক রোগের লক্ষণগুলি শনাক্ত করার জন্য দরকারী। যা গ্লোমেরুলোনেফ্রাইটিস ব্যতীত অন্য অনেক রোগের কারণে হতে পারে।

চিকিৎসা

স্ট্রেপ্টোকক্কাল সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক থেরাপি (প্রফিল্যাক্সিস) দেওয়া যেতে পারে । স্টেরয়েড হরমোনগুলো এক্ষেত্রে অনাক্রম্যতা দমন করতে পারে। উচ্চ ক্যালোরি এবং কম আমিষযুক্ত খাবার , সোডিয়াম এবং পটাসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার সরবরাহ করতে হবে। পাশাপাশি বৃক্কের ব্যর্থতা, হার্ট ফেইলিউর, এবং হাইপারটেনসিভ এনসেফালোপ্যাথির লক্ষণগুলো পর্যবেক্ষণ করতে হবে ।

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

শ্রেণীবিন্যাস
বহিঃস্থ তথ্যসংস্থান

Tags:

গ্লোমেরুলোনেফ্রাইটিস লক্ষণ ও উপসর্গগ্লোমেরুলোনেফ্রাইটিস রোগ নির্ণয়গ্লোমেরুলোনেফ্রাইটিস চিকিৎসাগ্লোমেরুলোনেফ্রাইটিস আরও দেখুনগ্লোমেরুলোনেফ্রাইটিস তথ্যসূত্রগ্লোমেরুলোনেফ্রাইটিস বহিঃসংযোগগ্লোমেরুলোনেফ্রাইটিসপ্রদাহবৃক্ক

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

আইজাক নিউটনজ্যামাইকাইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়আয়তন অনুযায়ী এশিয়ার দেশসমূহের তালিকাঈদুল আযহাঅ্যান্টিবায়োটিক তালিকাইসরায়েলের ইতিহাসমানবজমিন (পত্রিকা)স্বামী বিবেকানন্দপ্রধান পাতাউসমানীয় খিলাফতনিফটি ৫০দীপু মনিচন্দ্রযান-৩ইন্দিরা গান্ধীউত্তম কুমারআত্মহত্যাঢাকা জেলাশশাঙ্কব্রহ্মপুত্র নদমিয়া খলিফাফ্যাসিবাদশিব নারায়ণ দাসচর্যাপদমহাভারতহাদিসসাপচিরস্থায়ী বন্দোবস্তদেশ অনুযায়ী ইসলামউপজেলা পরিষদডিএনএপ্রাচীন ভারতইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিভোটজসীম উদ্‌দীনজনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় (বাংলাদেশ)টাইফয়েড জ্বরনূর জাহানকলকাতাইউক্রেনে রুশ আক্রমণ (২০২২-বর্তমান)গাণিতিক প্রতীকের তালিকাসমকামিতাবাংলা সাহিত্যের ইতিহাসবিজয় দিবস (বাংলাদেশ)পারমাণবিক অস্ত্রধারী রাষ্ট্রসমূহের তালিকাবাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়এল নিনোসাঁওতাল বিদ্রোহসন্ধিবাংলাদেশের সংবিধানের সংশোধনীসমূহভাইরাসপারি সাঁ-জেরমাঁকোষ (জীববিজ্ঞান)প্যারাচৌম্বক পদার্থরাঙ্গামাটি জেলাচাকমারেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাসমরেশ মজুমদারঅক্ষয় তৃতীয়ামহাস্থানগড়ভারতের রাষ্ট্রপতিদের তালিকাবাংলাদেশের কোম্পানির তালিকাগাজীপুর জেলাউমাইয়া খিলাফতউমর ইবনুল খাত্তাবমমতা বন্দ্যোপাধ্যায়আডলফ হিটলারের ধর্মীয় বিশ্বাসআয়িশাবাংলাদেশের প্রধান বিচারপতিশিয়া ইসলামের ইতিহাসঅণুজীব২৪ এপ্রিলআর্দ্রতাজান্নাতপাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন, ১৯৭০দুর্নীতি দমন কমিশন (বাংলাদেশ)🡆 More