ইলেকট্রন বিজ্ঞান

ইলেকট্রন বিজ্ঞান ফলিত পদার্থবিজ্ঞান ও তড়িৎ প্রকৌশলের একটি আন্তঃক্ষেত্রীয় শাখা যেখানে বায়ুশূন্য নল (ভ্যাকিউম টিউব), গ্যাস অথবা অর্ধপরিবাহী যন্ত্রাংশের মধ্য দিয়ে বৈদ্যুতিক সঙ্কেত বহনকারী ইলেক্ট্রনের নিঃসরণ, প্রবাহ, নিয়ন্ত্রণ, ব্যবহারিক আচরণ ও প্রক্রিয়া আলোচিত হয়। ১৯০৪ সালে জন অ্যামব্রোস ফ্লেমিং দুইটি তড়িৎ ধারক বৈশিষ্ট সম্পূর্ণ বদ্ধ বায়ুশূন্য কাচের নল (vacuum tube) উদ্ভাবন করেন ও তার মধ্য দিয়ে একমুখী তড়িৎ পাঠাতে সক্ষম হন। তাই সেই সময় থেকে ইলেকট্রন বিজ্ঞানের যাত্রা শুরু হয়েছে বলা যায়। ইংরেজি পরিভাষাতে একে ইলেকট্রনিক্স (ইংরেজি Electronics ইলেকট্রনিক্‌স্‌) বলা হয়।

নিউমেটিক সংকেত কন্ডিশনার
নিউমেটিক সংকেত কন্ডিশনার

ইলেকট্রন বিজ্ঞান ক্ষেত্রে প্রধানত ইলেকট্রনীয় বর্তনীর নকশা প্রণয়ন এবং পরীক্ষণ করা হয়। ইলেকট্রনীয় বর্তনী সাধারণত রেজিস্টর, ক্যাপাসিটর, ইন্ডাক্টর, ডায়োড প্রভৃতি দ্বারা কোন নির্দিষ্ট কার্যক্রম সম্পাদন করার জন্য তৈরি করা হয়। বেতার যন্ত্রের টিউনার যেটি শুধুমাত্র আকাংক্ষিত বেতার স্টেশন ছাড়া অন্যগুলোকে বাতিল করতে সাহায্য করে, সেটি ইলেকট্রনীয় বর্তনীর একটি উদাহরণ। পাশে আরেকটি উদাহরণের (নিউমেটিক সংকেত কন্ডিশনারের ) ছবি দেওয়া হলো।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে ইলেকট্রন বিজ্ঞান রেডিও প্রকৌশল বা বেতার প্রকৌশল নামে পরিচিত ছিল। তখন এর কাজের পরিধি রাডার, বাণিজ্যিক বেতার (Radio) এবং আদি টেলিভিশনে সীমাবদ্ধ ছিল। বিশ্বযুদ্ধের পরে যখন ভোক্তা বা ব্যবহারকারী-কেন্দ্রিক যন্ত্রপাতির উন্নয়ন শুরু হল, তখন থেকে প্রকৌশলের এই শাখা বিস্তৃত হতে শুরু করে এবং আধুনিক টেলিভিশন, অডিও ব্যবস্থা, কম্পিউটার এবং মাইক্রোপ্রসেসর (অণুপ্রক্রিয়াকারক বা সমন্বিত বর্তনী) এই শাখার অন্তর্ভুক্ত হয়। পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝি থেকে বেতার প্রকৌশল নামটি ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হয়ে দশকের শেষ নাগাদ ইলেকট্রন বিজ্ঞান (ইলেকট্রনিক্‌স) নাম ধারণ করে।

উইলিয়াম ব্র্যাডফোর্ড শকলি, জন বারডিন এবং ওয়াল্টার হাউজার ব্র্যাটেইন একসাথে যৌথভাবে ট্রানজিস্টর উদ্ভাবন করেন। ১৯৪৮ সালে ট্রানজিস্টর উদ্ভাবন ও ১৯৫৯ সালে সমন্বিত বর্তনী (integrated circuit or IC) উদ্ভাবনের আগে ইলেকট্রনীয় বর্তনী তৈরি হতো বড় আকারের পৃথক পৃথক বায়ুশূন্য নল যন্ত্রাংশ দিয়ে। এই সব বিশাল আকারের যন্ত্রাংশ দিয়ে তৈরি বর্তনীগুলো বিপুল জায়গা দখল করত এবং এগুলো চালাতে অনেক শক্তি লাগত। এই যন্ত্রাংশগুলির গতিও ছিল অনেক কম। অন্যদিকে সমন্বিত বর্তনী বা আইসি অসংখ্য (প্রায়ই ১০ লক্ষেরও বেশি) ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র তড়িৎ যন্ত্রাংশ, যাদের বেশিরভাগই মূলত ট্রানজিস্টর দিয়ে গঠিত হয়। এই যন্ত্রাংশগুলোকে একটি ছোট্ট পয়সা আকারের সিলিকন চিলতে বা চিপের উপরে সমন্বিত করে সমন্বিত বর্তনী তৈরি করা হয়। বর্তমানের অত্যাধুনিক কম্পিউটার বা নিত্যপ্রয়োজনীয় ইলেকট্রনীয় যন্ত্রপাতি সবই প্রধানত সমন্বিত বর্তনী বা আই সি দ্বারা নির্মিত।

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Tags:

অর্ধপরিবাহীইংরেজি ভাষাইলেকট্রনগ্যাসতড়িৎ প্রকৌশলফলিত পদার্থবিজ্ঞানবায়ুশূন্য নল

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

আরসি কোলাশাহ জাহানভাইরাসমাহরামঢাকা জেলারশিদ চৌধুরীমিয়া খলিফাহিট স্ট্রোকইউক্রেনে রুশ আক্রমণ (২০২২-বর্তমান)পশ্চিমবঙ্গে ভারতের সাধারণ নির্বাচন, ২০২৪পাবনা জেলাবাগদাদ অবরোধ (১২৫৮)প্রাকৃতিক সম্পদডায়াজিপামসাধু ভাষাঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরপশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত ব্যবস্থাব্যক্তিনিষ্ঠতাপুরুষে পুরুষে যৌনতাবাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টবাংলাদেশের জাতীয় পতাকাবাংলা বাগধারার তালিকাক্রিস্তিয়ানো রোনালদোবাংলাদেশী জাতীয় পরিচয় পত্রপদ্মা নদীবৌদ্ধধর্মদ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনজয়া আহসানলক্ষ্মীশিবলী সাদিকচট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সিলেটরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবন (১৮৬১–১৯০১)ডিএনএআমজওহরলাল নেহেরুইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মাদ বিন বখতিয়ার খলজিবিশেষণবগুড়া জেলাভারতের সংবিধানসাপবাংলাদেশের সংবিধানলোহিত রক্তকণিকাবাংলাদেশের জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকার তালিকাকৃষ্ণভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনসৌদি রিয়ালসূরা ফাতিহাকুয়েত২০২২ বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জিম্বাবুয়ে সফরলিওনেল মেসিঅ্যান্টিবায়োটিক তালিকাকাজী নজরুল ইসলামের রচনাবলিগীতাঞ্জলিসাদ্দাম হুসাইনহিন্দি ভাষাতাসনিয়া ফারিণমৌসুমীমহাস্থানগড়আল্লাহর ৯৯টি নামজহির রায়হানভৌগোলিক আয়তন অনুযায়ী সার্বভৌম রাষ্ট্র ও নির্ভরশীল অঞ্চলসমূহের তালিকাফেনী জেলাবিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সদৈনিক ইত্তেফাকতাপ সঞ্চালনতাজমহলমাদারীপুর জেলাআয়াতুল কুরসি২৫ এপ্রিলহার্নিয়াবাংলাদেশের স্থল বন্দরসমূহের তালিকাউসমানীয় সাম্রাজ্যক্ষুদিরাম বসুশিক্ষাদীন-ই-ইলাহিপারমাণবিক অস্ত্রধারী রাষ্ট্রসমূহের তালিকাটিকটক🡆 More