আবুধাবি (আরবি: أَبُو ظَبِي (Abū Ẓabī) আরবি উচ্চারণ: ) মধ্যপ্রাচ্যের রাষ্ট্র সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী ও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জনবহুল নগরী (দুবাইয়ের পরে)। এটি দেশটিকে গঠনকারী সাতটি আমিরাতের (আমিরশাসিত রাজ্য) মধ্যে বৃহত্তম এবং আবুধাবি আমিরাতের রাজধানীও বটে। আবুধাবি নগরীটি পারস্য উপসাগরের একটি ছোট ত্রিভুজাকৃতি দ্বীপে অবস্থিত এবং একটি সেতুর মাধ্যমে মূল ভূখণ্ডের সাথে সংযুক্ত । ২০১৯ সালের হিসাব অনুযায়ী আবুধাবি শহরের জনসংখ্যা প্রায় ১৪ লক্ষ।
আবুধাবি أَبُو ظَبْيٍ | |
---|---|
রাজধানী/মহানগরী | |
আবুধাবির অবস্থান (সংযুক্ত আরব আমিরাত) | |
স্থানাঙ্ক: ২৪°২৮′ উত্তর ৫৪°২২′ পূর্ব / ২৪.৪৬৭° উত্তর ৫৪.৩৬৭° পূর্ব | |
দেশ | সংযুক্ত আরব আমিরাত |
আমিরাত | আবুধাবি |
সরকার | |
• ধরন | মিউনিসিপালিটি |
• জেনারেল ম্যানেজার অব সিটি মিউনিসিপালিটি | সাইফ বদর আল কুবাইসি |
আয়তন | |
• মোট | ৯৭২ বর্গকিমি (৩৭৫ বর্গমাইল) |
উচ্চতা | ২৭ মিটার (৮৯ ফুট) |
জনসংখ্যা (২০১৮) | |
• মোট | ১৪,৫০,০০০ |
• জনঘনত্ব | ১,৫০০/বর্গকিমি (৩,৯০০/বর্গমাইল) |
বিশেষণ | আবুধাবিয় (Abu Dhabian), ধাবিয়ানি |
সময় অঞ্চল | সংযুক্ত আরব আমিরাত মান সময় (ইউটিসি+০৪:০০) |
জিডিডি পিপিপি | ২০১৪ সালের হিসাব অনুযায়ী |
সর্বমোট | ইউএসডি ১৭৮ বিলিয়ন |
মাথাপিছু | ইউএসডি ৬১,০০০ |
ওয়েবসাইট | tamm.abudhabi |
আবুধাবি আঞ্চলিক ও কেন্দ্রীয় সরকারের কার্যালয়গুলির পাশাপাশি সংযুক্ত আরব আমিরাতের সরকারেরও অবস্থানস্থল। এছাড়া এখানে সুপ্রিম অয়েল কাউন্সিল অবস্থিত এবং এটা আবুধাবির আমিরি পরিবারের বসবাসের স্থান। আবুধাবির রাষ্ট্রপ্রধান এই পরিবারেরই সদস্য। এই অঞ্চলের ত্বরিত গতির উন্নয়ন, নগরায়ন, তেল ও গ্যাস সম্পদের প্রাচুর্য এবং তুলনামূলক উচ্চ মাথাপিছু আয়ের কারণে এই শহরটি বর্তমানে উন্নত ও সমৃদ্ধ মহানগরীতে পরিণত হয়েছে।
রাজধানী হওয়ার কারণে আজকের দিনে এই শহরটি দেশের রাজনৈতিক কেন্দ্র, শিল্পের কেন্দ্র, অন্যতম প্রধান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এবং বাণিজ্যিক কেন্দ্রও বটে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের কমবেশি ৪০ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের অর্থনীতির তিন ভাগের দুই ভাগই আবুধাবি-কেন্দ্রিক।
স্থানীয় কিছু গোত্র ১৭৬১ সালে আবুধাবি এলাকাতে বসতিস্থাপন করে। ইতিহাসের বেশিরভাগ সময় ধরেই এটি একটি ক্ষুদ্র ও অনুনন্নত লোকালয় ছিল। ১৯৫৮ সালে আবু ধাবি রাজ্যে সমৃদ্ধ খনিজ তৈলক্ষেত্র আবিষ্কৃত হবার পরে আবুধাবির ভাগ্য পরিবর্তন হয়। তেল বিক্রির অর্থ দিয়ে শহরটির আধুনিকায়ন করা হয়। বিদ্যুৎ, পানি ও পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা স্থাপন করা হয়। আধুনিক ভবনাদি ও একটি নতুন সমুদ্র বন্দর নির্মাণ করা হয়। আধুনিকায়নের সাথে সাথে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায়।
১৯৭১ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। ১৯৯০-এ দশকের শুরুতে আবুধাবি দেশটি স্থায়ী রাজধানীতে পরিণত হয়।
আরও দেখুন: আবুধাবির কালানুক্রমিক ইতিহাস
আবুধাবি এবং এর সংলগ্ন অঞ্চল সমূহে অনেকানেক পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শনের দেখা মেলে। এসব নিদর্শনগুলো পর্যবেক্ষণ করলে উপলব্ধি করা যায় প্রাচীনকালে এই অঞ্চলে উম্ম আন-নার এবং অনুরূপ আরও সভ্যতার ক্রমবিকাশ ঘটে থাকতে পারে। বর্তমান আবুধাবির বাইরে আমিরাতের পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলে প্রাচীনকালে বসতি গড়ে উঠেছিল বলে প্রমাণ পাওয়া যায়।
আরবি শব্দ 'ধাবি'(ظَبِي) অর্থ 'গ্যাজেল' (এক ধরনের হরিণ জাতীয় প্রাণী)। আর আবুধাবি অর্থ হয় 'গ্যাজেলের পিতা'।এই অঞ্চলে গ্যাজেল জাতীয় হরিণের প্রাচুর্য এবং 'শাখবুত বিন দিয়াব আল নাহিয়ানের' সম্পর্কে প্রচলিত একটি লোককথার উপর ভিত্তি করে আবুধাবির নামকরণ করা হয়েছে বলে ধরা হয়।
মূল নিবন্ধ: আল নাহিয়ান পরিবার
'বনি ইয়াস' বেদুইনরা মূলত আরব আমিরাতের পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত লিউয়া মরুদ্যান এবং এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চল সমূহে বসবাস করত। ২০ টি উপগোত্রসহ বিশাল এই গোত্রটি তখন এই অঞ্চলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গোত্র হিসেবে পরিগণিত হতো। ১৭৯৩ সালের দিকে স্বাদু পানির সন্ধান পেয়ে এই গোত্রের আল বু-ফালাহ উপগোত্রটি পারস্য উপসাগরীয় উপকূলের আবুধাবি দ্বীপে এসে বসবাস শুরু করে। এই উপগোত্রের একটি পরিবার— 'আল নাহিয়ান' পরিবার। আজকের দিনে এই 'আল-নাহিয়ান' পরিবারের সদস্যদের মধ্য থেকেই আবুধাবির শাসক নির্বাচন করা হয়ে থাকে।
বিশাল তেল-সম্পদের আবিষ্কারের আগে মুক্তা-অনুসন্ধান এবং এর বাণিজ্য ছিল এই অঞ্চলের প্রধান শিল্প। বলা হয় পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চল মুক্তা অনুসন্ধানের জন্য সবচেয়ে আদর্শ স্থান। ডুবুরিরা সাধারণত প্রতিদিন ৩০ বারের মত মুক্তার অনুসন্ধানে ডুব দিত এবং প্রতিবারই তারা এক-দেড় মিনিট পানির তলায় অবস্থান করতো।
ডুবুরিদের জন্য এয়ার-ট্যাংক বা অন্য কোনরকম যন্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ ছিল। তবে তারা চামড়া-নির্মিত, নাকে পরিধানযোগ্য এক ধরনের ক্লিপ এবং হাত ও পায়ের আঙ্গুলে চামড়া-নির্মিত আবরণী ব্যবহার করত, যাতে করে ঝিনুক অনুসন্ধানের সময়ে আঙ্গুলগুলো সুরক্ষিত থাকে। ডুবুরিদের কে প্রতিদিনের কাজের জন্য মজুরি প্রদান করা হতো না, বরং তারা প্রতি মৌসুমে মোট যে আয় করত, মৌসুম শেষে তার একটি অংশ মজুরি হিসেবে লাভ করত।
ঊনবিংশ শতাব্দীতে পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের আরবীয় শেখদের সাথে গ্রেট বৃটেনের কিছু চুক্তি সম্পাদিত হয়। ফলে এ অঞ্চলে বৃটেনের প্রতিপত্তি বৃদ্ধি পায়। পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের কুখ্যাত জলদস্যুদের কবল থেকে ভারতীয় বাণিজ্যপথ সুরক্ষিত রাখা ছিল এই চুক্তির মূল উদ্দেশ্য। তবে এই উদ্দেশ্য সাধন হওয়ার পরেও চুক্তিটি টিকিয়ে রাখার জন্য উপযুক্ত আরও অন্যান্য কারণ আবির্ভূত হয়;—যেমন,কৌশলগত প্রয়োজনে অন্যান্য বিশ্ব শক্তির প্রভাব থেকে এই অঞ্চলকে মুক্ত রাখা এবং নিজেদের প্রভাব বলয়ে আবদ্ধ রাখা।
১৯৪৭ সালে ভারতীয় উপমহাদেশ ত্যাগ করার পরেও আবুধাবি এবং এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চল সমূহে তেল প্রাপ্তির ব্যাপক সম্ভাবনা দেখা দেওয়ার ফলে ব্রিটিশরা এই অঞ্চলের সাথে তাদের চুক্তি এবং সম্পর্ক বজায় রাখে।
১৯৩০ এর দশকের মাঝামাঝি থেকে শেষের দিকটা পর্যন্ত মুক্তা-বাণিজ্য কমতে থাকে। কারণ এই সময়ে পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে তেল প্রাপ্তির প্রভূত সম্ভাবনা দেখা দেয়। ১৯৩৬ সালের ৫ই জানুয়ারি এই অঞ্চলে তেল অনুসন্ধানের জন্য পেট্রোলিয়াম ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের আবুধাবি শাখা (ইরাক পেট্রোলিয়াম কোম্পানির একটি সহকারী শাখা) তৎকালীন শাসক শেখ শাখবুত বিন সুলতান আল নাহিয়ানের সাথে একটি সমঝোতামূলক চুক্তিতে আবদ্ধ হয়। এরপর ১৯৩৯ সালের জানুয়ারি মাসে এই কোম্পানিকে ৭৫ বছরের জন্য তেল অনুসন্ধানের সরকারি অনুমতি দিয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। মরু এলাকা হওয়ার কারণে এ অঞ্চলের মূল ভূখণ্ডে অনুসন্ধান কার্য চালানো কঠিন হয়ে পড়েছিল। ১৯৫৩ সালে ডি'আর্কি এক্সপ্লোরেশন কোম্পানি (ব্রিটিশ পেট্রোলিয়াম— বিপির হয়ে অনুসন্ধান কার্যাবলী সম্পাদন করে) আবুধাবির সমুদ্র এবং এর উপকূলবর্তী এলাকা সমূহে তেলের জন্য অনুসন্ধান চালানোর অনুমতি পায়। আবুধাবি মেরিন এরিয়াস(ADMA) ছিল 'বিপি' এবং 'টোটাল'-এর একটি যৌথ প্রচেষ্টা। ১৯৫৮ সালে এডিএমএ এন্টারপ্রাইজ (ADMA Enterprise) জলভাগে ২৬৬৯ মিটার (৮৭৫৫ ফুট) গভীরে উম্ম শাইক তেলকুপটি আবিষ্কার করে। এরপর পিডিটিসি ১৯৫৯ সালে ভূভাগে মারবান নাম্বার-৩ এ আরেকটি তেলকুপ খুজে পায়। ১৯৬২ তে এই কোম্পানি বু-হাসা এবং এডিএমএ ১৯৬৫ সালে জলভাগে যাকুম তেলকুপটির সন্ধান পায়। তবে আজকের দিনে উল্লেখিত তেলক্ষেত্রগুলো ছাড়াও ভূভাগে আসাব, সাহিল ও শাহ এবং জলভাগে আল বুনদুক, আবু আল-বুখশ ইত্যাদি অন্যতম প্রধান তেলক্ষেত্র।
১৯০৪ খ্রিষ্টাব্দে জার্মান পরিদর্শক হেরমান বুরচার্ত (Hermann Burchardt) আবুধাবির ঐতিহাসিক স্থান এবং স্থাপনা গুলোর অনেক আলোকচিত্র সংগ্রহ করেন। এই ছবিগুলো এখন ইথনোলজিক্যাল মিউজিয়াম অব বার্লিনে (Ethnological Museum of Berlin) সংরক্ষিত আছে।
এটা দেশটির মূল ভূখণ্ড থেকে মোটামুটি ২৫০ মিটার (৮২০ ফিট) দূরে একটি দ্বীপে অবস্থিত। আবুধাবি মাক্তা ও মুসাফা সেতুদ্বয় দ্বারা মূল ভূখণ্ডের সাথে যুক্ত। ২০১০ সালে তৃতীয় একটি সংযোগকারী সেতু স্থাপিত হয়। এটির নাম শেখ জায়েদ সেতু। এটির ডিজাইনার জাহা হাদিদ। আবুধাবির সাথে সাদিয়াত দ্বীপেরও একটি সংযোগকারী সেতু আছে, যেটা ৫ লেন বিশিষ্ট এবং মোটরযান চলাচলের উপযুক্ত। রিম দ্বীপের সাথেও এর একটি সংযোজক সেতু আছে। ২০১১ সালে নির্মিত এই সেতুটির নাম আল-মাসরাফ। এটি একটি ২৭ লেন বিশিষ্ট মাল্টিলেয়ার ইন্টারচেঞ্জ সেতু এবং এর মাধ্যমে ঘণ্টায় ২৫,০০০ যান চলাচল করতে পারে।
আবুধাবি শহরের প্রধান অংশটি আবুধাবি দ্বীপে অবস্থিত তবে মূল ভূখণ্ডেও এর কিছু কিছু অংশ আছে। উদাহরণস্বরূপ— খলিফা সিটি এ, বি, সি; খলিফা সিটি আল রাহা বীচ; আলবাহিয়া সিটি- এ, বি, সি; আল শাহামা, আল রাহবা, বনি ইয়াস, শামখা, আল ওয়াতবা, মুসাফা রেসিডেন্সিয়াল ইত্যাদি।
আবুধাবির গালফে 'ইন্দো-প্যাসিফিক কুঁজো ডলফিনদের' প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। দ্বীপটির পূর্বে রয়েছে ম্যানগ্রোভ ন্যাশনাল পার্ক। আল-কার্ম কার্নিশে এটি অবস্থিত। আরবীতে আল-কার্ম অর্থ ম্যানগ্রোভ।
আবুধাবির জলবায়ু উষ্ণ মরু-জলবায়ু। এখানে পুরোটা বছর জুড়েও রৌদ্রোজ্জ্বল মেঘমুক্ত আকাশ থাকতে পারে। সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা, গড়ে ৪১° সে., থাকে জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এ সময় মাঝে মাঝেই মরুঝড় হয়। ঝড়ের ফলে অনেক সময় দৃষ্টিসীমা কয়েক মিটারে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত তুলনামূলক শীতল আবহাওয়া বিরাজ করে। এই সময়কালে মাঝে মাঝে কুয়াশা এবং বৃষ্টি দেখা যেতে পারে।
গড় হিসাবে এখানে জানুয়ারি শীতলতম এবং অগাস্ট উষ্ণতম মাস। কর্কটক্রান্তি রেখা আরব আমিরাতের উপর দিয়ে গেছে, ফলে এর দক্ষিণভাগ ক্রান্তীয় অঞ্চলে পড়ে।
এখানে সবচেয়ে কম গড় তাপমাত্রা ১৮° সে. হলেও এখানকার আবহাওয়া বেশ শুষ্ক এবং এটিকে ক্রান্তীয় আবহাওয়া বলে গণ্য করা যেতে পারে।
আবুধাবি-এর আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য | |||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
মাস | জানু | ফেব্রু | মার্চ | এপ্রিল | মে | জুন | জুলাই | আগস্ট | সেপ্টে | অক্টো | নভে | ডিসে | বছর |
সর্বোচ্চ রেকর্ড °সে (°ফা) | ৩৩.৭ (৯২.৭) | ৩৮.১ (১০০.৬) | ৪৩.০ (১০৯.৪) | ৪৪.৭ (১১২.৫) | ৪৬.৯ (১১৬.৪) | ৪৮.৮ (১১৯.৮) | ৪৮.৭ (১১৯.৭) | ৪৯.২ (১২০.৬) | ৪৭.৭ (১১৭.৯) | ৪৩.০ (১০৯.৪) | ৩৮.০ (১০০.৪) | ৩৩.৪ (৯২.১) | ৪৯.২ (১২০.৬) |
সর্বোচ্চ গড় °সে (°ফা) | ২৪.১ (৭৫.৪) | ২৬.০ (৭৮.৮) | ২৯.৫ (৮৫.১) | ৩৪.৫ (৯৪.১) | ৩৯.৩ (১০২.৭) | ৪০.৮ (১০৫.৪) | ৪২.১ (১০৭.৮) | ৪২.৯ (১০৯.২) | ৪০.৪ (১০৪.৭) | ৩৬.৫ (৯৭.৭) | ৩১.১ (৮৮.০) | ২৬.৩ (৭৯.৩) | ৩৪.৫ (৯৪.০) |
দৈনিক গড় °সে (°ফা) | ১৮.৮ (৬৫.৮) | ১৯.৬ (৬৭.৩) | ২২.৬ (৭২.৭) | ২৬.৪ (৭৯.৫) | ৩১.২ (৮৮.২) | ৩৩.০ (৯১.৪) | ৩৪.৯ (৯৪.৮) | ৩৫.৩ (৯৫.৫) | ৩২.৭ (৯০.৯) | ২৯.১ (৮৪.৪) | ২৪.৫ (৭৬.১) | ২০.৮ (৬৯.৪) | ২৭.৪ (৮১.৩) |
সর্বনিম্ন গড় °সে (°ফা) | ১৩.২ (৫৫.৮) | ১৪.৬ (৫৮.৩) | ১৭.৫ (৬৩.৫) | ২০.৮ (৬৯.৪) | ২৩.৮ (৭৪.৮) | ২৬.১ (৭৯.০) | ২৮.৮ (৮৩.৮) | ২৯.৫ (৮৫.১) | ২৬.৬ (৭৯.৯) | ২৩.২ (৭৩.৮) | ১৮.৭ (৬৫.৭) | ১৫.৮ (৬০.৪) | ২১.৫ (৭০.৮) |
সর্বনিম্ন রেকর্ড °সে (°ফা) | ৫.০ (৪১.০) | ৫.০ (৪১.০) | ৮.৪ (৪৭.১) | ১১.২ (৫২.২) | ১৬.০ (৬০.৮) | ১৯.৮ (৬৭.৬) | ১৬.৫ (৬১.৭) | ১৭.০ (৬২.৬) | ১৯.০ (৬৬.২) | ১২.০ (৫৩.৬) | ১০.৫ (৫০.৯) | ৭.১ (৪৪.৮) | ৫.০ (৪১.০) |
অধঃক্ষেপণের গড় মিমি (ইঞ্চি) | ৭.০ (০.২৮) | ২১.২ (০.৮৩) | ১৪.৫ (০.৫৭) | ৬.১ (০.২৪) | ১.৩ (০.০৫) | ০ (০) | ০ (০) | ১.৫ (০.০৬) | ০ (০) | ০ (০) | ০.৩ (০.০১) | ৫.২ (০.২০) | ৫৭.১ (২.২৪) |
অধঃক্ষেপণ দিনগুলির গড় (≥ ০.২ mm) | ১.২ | ২.৮ | ২.৮ | ১.২ | ০.১ | ০.০ | ০.০ | ০.১ | ০.০ | ০.০ | ০.২ | ১.৫ | ৯.৯ |
আপেক্ষিক আদ্রতার গড় (%) | ৬৮ | ৬৭ | ৬৩ | ৫৮ | ৫৫ | ৬০ | ৬১ | ৬৩ | ৬৪ | ৬৫ | ৬৫ | ৬৮ | ৬৩ |
মাসিক সূর্যালোক ঘণ্টার গড় | ২৪৬.১ | ২৩২.৬ | ২৫১.১ | ২৮০.৫ | ৩৪২.২ | ৩৩৬.৯ | ৩১৪.২ | ৩০৭.৫ | ৩০২.৪ | ৩০৪.৭ | ২৮৬.৬ | ২৫৭.৬ | ৩,৪৬২.৪ |
উৎস: NOAA (1971–1991) |
জানুয়ারি | ফেব্রুয়ারি | মার্স | এপ্রিল | মে | জুন | জুলাই | অগাস্ট | সেপ্টেম্বর | অক্টোবর | নভেম্বর | ডিসেম্বর |
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
২২.২ °সে ৭২.০ °ফা | ২০.৬ °সে ৬৯.১ °ফা | ২২.৪ °সে ৭২.৩ °ফা | ২৫.০ °সে ৭৭.০ °ফা | ২৯.০ °সে ৮৪.২ °ফা | ৩১.৬ °সে ৮৮.৯ °ফা | ৩২.৭ °সে ৯০.৯ °ফা | ৩৩.৮ °সে ৯২.৮ °ফা | ৩৩.৪ °সে ৯২.১ °ফা | ৩১.৫ °সে ৮৮.৭ °ফা | ২৮.৩ °সে ৮২.৯ °ফা | ২৪.৫ °সে ৭৬.১ °ফা |
এই শহরটি সেন্ট্রাল ক্যাপিটাল ডিস্ট্রিক্ট এর অংশ এবং মিউনিসিপাল ডিপার্টমেন্ট দ্বারা শাসিত। এটাকে আবুধাবি আমিরাত এর পূর্বাঞ্চলীয় বা পশ্চিমাঞ্চলীয় মিউনিসিপ্যাল এলাকার অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। ২০১৭ সালের মার্চ মাসে শেখ খলিফা একটি অধ্যাদেশ জারি করেন যাতে পূর্বাঞ্চলের (অফিশিয়ালি আল আইন রিজিওন) প্রধান সেটেলমেন্ট হয় আল আইন সিটি; ঐ একই অধ্যাদেশের ফলে পশ্চিম অঞ্চলের (আল-দাফ্রা রিজিয়ন) প্রধান সেটেলমেন্ট হয় মদিনাত যায়েদ।
শহরের অবকাঠামোর সাথে সম্পৃক্ত বিষয়গুলো দায়িত্বে থাকে 'আবুধাবি নগর পরিকল্পনা কাউন্সিল', 'রেগুলেশন ও সুপারভিশন ব্যুরো' ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান গুলো। অর্থনৈতিক বিষয়গুলো রাজ্য সরকারের দায়িত্বে থাকে। আবুধাবি যেহেতু সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী প্রেসিডেন্টের বাসভবনও এখানে অবস্থিত।
শেখ জায়েদ এর নির্দেশক্রমে জাপানি স্থপতি কাতসুহিকো তাকাহাশি ১৯৬৭ সালে ৪০,০০০ লোকের জন্য আবুধাবির নগর পরিকল্পনা শুরু করেন।
আবুধাবিতে জনসংখ্যার ঘনত্ব অতি দ্রুত পরিবর্তনশীল, তবে শহরের কেন্দ্রীয় এলাকায় অনেক কর্মসংস্থানের বলে জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি থাকে।
ডাউনটাউনে অনেক মানুষের বসবাস। তবে আবুধাবির শহরতলীতে তুলনামূলক কম জনসংখ্যা বাস করে।
অধিক জনসংখ্যার স্থান সংকুলানের জন্য আবুধাবিতে মাঝারি এবং বড় অনেক বহুতল আকাশচুম্বী ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। ইতিহাদ টাওয়ার্স, টি আই ডি এ টাওয়ার, আবুধাবি ন্যাশনাল ব্যাংক হেডকোয়ার্টার্স, বেনুনা টাওয়ার (হিল্টন হোটেল), ইতিসালাত হেডকোয়াটার্স ইত্যাদি এসব বহুতল ভবনের মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
তাছাড়া আবুধাবিতে নির্মিত আল্ডার হেডকোয়ার্টার্স মধ্যপ্রাচ্যের প্রথম সার্কুলার স্কাইস্ক্র্যাপার।এমিরেটস প্যালেসও উল্লেখযোগ্য একটি ভবন, যেটি মূলত আরবীয় ঐতিহ্যের সাথে সামঞ্জস্য রেখে নির্মাণ করা হয়েছে।
'আবুধাবি প্ল্যান ২০৩০'-এ এই ধরনের আকাশচুম্বী ভবন এর নির্মিতিকে উৎসাহিত করা হয়েছে। বিশেষত আবুধাবির প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র সম্প্রসারনের জন্য আলমারিয়া এবং আল রিম দ্বীপেও অনেকগুলো আকাশচুম্বী ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। ইতঃমধ্যেই আবুধাবিতে বেশ কিছু সুউচ্চ ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। সুউচ্চ ভবন গুলোর মধ্যে সেন্ট্রাল মার্কেট রেসিডেনশিয়াল টাওয়ার(৩৮২ মিটার/১২৫৩.২৮ ফুট), দা ল্যান্ডমার্ক (৩২৪ মিটার/১০৬২.৯৯ ফুট), ৭৪ তলা স্কাই টাওয়ার (৩১০ মিটার/১০১৭.০৬ ফুট) ইত্যাদি নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। ২০০৮ এর জুলাই মাসের হিসাব অনুযায়ী ৬২ টি উচ্চ ভবন নির্মাণের অনুমোদন দেয়া হয় যেগুলোর উচ্চতা ৩০ মিটার থেকে শুরু করে ১৫০ মিটার পর্যন্ত।
শেখ জায়েদ মসজিদ এর নির্মাণশৈলী দেখে আবুধাবির স্থাপত্য প্রীতি সহজেই অনুধাবন করা যায়। এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল প্রয়াত প্রেসিডেন্ট শেখ জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ান-এর আমলে যিনি আধুনিক সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রতিষ্ঠার অন্যতম পুরোধা। এই মসজিদটি নির্মাণের জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উপাদান সংগ্রহ করা হয়েছে। এই মসজিদটি 'Unite the World' মূলনীতির প্রতীক হিসেবে দন্ডায়মান। সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইতালি, জার্মানি, মরক্কো, পাকিস্তান, তুর্কি, ইরান, চায়না, ভারত, নিউজিল্যান্ড প্রভৃতি দেশ থেকে উপাদান সংগ্রহ করে এটি নির্মাণ করা হয়েছে। ৩০০০ এর বেশি শ্রমিক এবং ৩৮ টি কন্ট্রাক্টিং কোম্পানি এই মসজিদের নির্মাণ কাজে অংশ নেয়। স্থায়িত্বের দিকে দৃষ্টি রেখে এর নির্মাণের উপকরণ গুলো সংগ্রহ করা হয়েছে। মার্বেল পাথর, স্বর্ণ, মাঝারি দামি মূল্যবান পাথর, স্ফটিক প্রভৃতি উপাদান এর নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত হয়েছে। মসজিদ নির্মাণের কাজ শুরু হয় ১৯৯৬ সালের ৫ই নভেম্বর এবং ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে সবার জন্য উন্মুক্ত করা হয়। এটা কমবেশি ৪১,০০০ লোকের জন্য স্থান সংকুলান করতে পারে। পুরো স্থাপনাটি ২২৪১২ বর্গমিটার (২,৪১,২৪০ বর্গফুট) এলাকা জুড়ে বিস্তৃত।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের সবচেয়ে বেশি দেখা ভবনগুলোর একটি এই মসজিদ। এ কারণে এটি এমন ভাবে নির্মিত যাতে একই সাথে ভবনটিকে প্রার্থনার স্থান, শুক্রবারের জনসমাগম, দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজ, শিক্ষার প্রসার ইত্যাদি কাজে ব্যবহার করা যায়। এখানে দর্শনার্থীদের জন্যও বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
এটা সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রথম প্রেসিডেন্ট শেখ জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ান এর স্মরণে নির্মিত একটি স্মৃতিস্তম্ভ। শেখ জায়েদ ২০০৪ সালে পরলোকগমন করেন। এই স্মৃতিস্তম্ভের অন্তর্গত হেরিটেজ গার্ডেন ও স্যাংচুয়ারি গার্ডেন অত্যন্ত মনোহর এবং এদের মাঝে একটি কিউব আকৃতির প্যাভিলিয়নে 'দ্য কনস্টেলেশন' নামের একটি চিত্রকর্ম রয়েছে যেটা শেখ জায়েদ এর স্মরণে নির্মিত।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ 'কারম আল-ওয়াতান'— যার অর্থ 'জাতির প্রাসাদ'। ২০১৯ সালের মার্চ মাসে জনগণের জন্য এটা উন্মুক্ত করা হয়। এটা 'লেডিস সৈকতে' অবস্থিত। এর নির্মাণকাজ ২০১৮ সালে শেষ হয়।
আবুধাবিতে অনেকগুলো পার্ক এবং উদ্যান রয়েছে মোট ৬০০ কিলোমিটার (২৪৯ মাইল) সমুদ্র সৈকতের মধ্যে ১০ কিলোমিটার (৬ মাইল) বিভিন্ন বিনোদনের কাজে ব্যবহৃত হয়।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিশাল তেল সম্পদের কারণে এখানে মাথাপিছু আয় অনেক বেশি। দেশের ৯৫% তেল এবং ৯২% গ্যাস আবুধাবির দখলে। পৃথিবীর তেল সম্পদের ৯% (৯৮.২ বিলিয়ন ব্যারেল) এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের ৫% (২০০ বিলিয়ন কিউবিক ফুট) সংযুক্ত আরব আমিরাতের দখলে। ২০১০ সাল থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের তেল উত্তোলন ক্ষমতা দিনপ্রতি ২.৩ বিলিয়ন এবং এটা ৩ মিলিয়ন ব্যারেল এ উন্নীত করার কাজ চলছে। বর্তমানে অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধি তেল ক্ষেত্র ডিস্যালাইনেশন এবং রিইনজেকশন এর জন্য গ্যাস উত্তোলনের দিকেও বিশেষভাবে নজর দেয়া হচ্ছে। তবে হাইড্রোজেন সালফাইড এর উপস্থিতির কারণে এখানে গ্যাস উত্তোলন তুলনামূলক কঠিন।
২০০৯ সালের দিকে সরকার দেশের অর্থনীতিতে বৈচিত্র আনতে শুরু করে। তেলের উচ্চ মূল্যের উপর নির্ভর করে এই বৈচিত্র আনা শুরু হলেও বর্তমানে তেল বাদে অন্য সেক্টর গুলোর অবদান মোট জিডিপির ৬৪%। আবুধাবিতেও এই ধারার প্রভাব পড়েছে। দেশের অন্যান্য অংশের তুলনায় এখানে শিল্প, আবাসন প্রকল্প, পর্যটন এবং অন্যান্য ব্যবসার ক্ষেত্রে অনেক বিনিয়োগ বাড়ানো হয়েছে। তেলের বড় উৎপাদক হিসেবে আবুধাবি এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থনীতির তেল নির্ভরতা দূর করতেই মূলত এই সব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। আবুধাবি ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিটি, টুফোর৫৪ আবুধাবি মিডিয়া ফ্রি জোন, আই সি এ ডি ২ ইত্যাদি বাণিজ্যিক এলাকা প্রতিষ্ঠা করা থেকে এটা পরিষ্কার যে অর্থনীতিকে শিল্প-নির্ভর করে তুলতে চেষ্টা করা হচ্ছে। আবাসন প্রকল্প পর্যটন ইত্যাদির উন্নতির জন্য আবুধাবি পর্যটন কর্তৃপক্ষ( আবুধাবি ট্যুরিজম অথরিটি) এবং ট্যুরিজম এন্ড ডেভেলপমেন্ট ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি বিভিন্ন কর্ম পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।
জিডিপি এবং মাথাপিছু আয়ের ভিত্তিতে আবুধাবি সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে। এই শহরে সারা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের এক মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা আছে। ২০১০ সালের হিসাব অনুযায়ী আবুধাবির মাথাপিছু আয় ছিল ৪৯৬০০ ইউএসডি যেটা ছিল বিশ্বে নবম। সংযুক্ত আরব আমিরাতের অন্যান্য অংশের মতো আবুধাবিতেও তেল এবং ব্যাংক বাদে অন্য সকল কোম্পানি করমুক্তভাবে তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারে। তাছাড়া আবুধাবি জিসিসি(Corporation Council for the Arab States of the Gulf)-এর সকল ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার ২৯% এর অংশীদার। সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি দ্রুত বর্ধনশীল অর্থ ব্যবস্থা রয়েছে। ২০০৬ সালে মাথাপিছু আয় ৯ শতাংশ বেড়ে ৪৯,৭০০ ডলার হয় এবং ক্রয় ক্ষমতার ভিত্তিতে পৃথিবীর তৃতীয় হয়। আবু ধবি বিনিয়োগ কর্তৃপক্ষ (Abu Dhabi investment authority -ADIA) মোট সম্পদের ভিত্তিতে পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী সার্বভৌম ফান্ড। ইতিহাদ এয়ারওয়েজের হেডকোয়ার্টার আবুধাবিতে অবস্থিত। আবুধাবি সরকার তেল ও গ্যাস হতে অর্জিত আয় পর্যটন এবং এই ধরনের অন্যান্য সেক্টর গুলোতে ব্যবহার করছে, যাতে করে বিভিন্ন ধরনের মানুষ আকর্ষিত হয়। এই লক্ষ্যে আবুধাবি তাদের এয়ারপোর্ট গুলোকে উন্নত করেছে। ২০০৯ সালে আবুধাবি এয়ারপোর্ট গুলোর ব্যবহার ৩০%+ বর্ধিত হয়েছে।
মোটাদাগে এসব উদ্যোগ এবং কর্মপরিকল্পনা মূলত 'আবুধাবি ইকনোমিক ভিশন ২০৩০' প্রকল্পের অংশ। প্রকল্পটি আবুধাবি নগর পরিকল্পনা কাউন্সিল দ্বারা সফল ভাবে পরিচালিত হয়ে তেল বাদে অন্যান্য সেক্টর গুলোর আয় ৪০% থেকে ৭০% তে উন্নীত করতে সহায়ক হবে বলে আবুধাবি সরকার আশা করে। প্রকল্পটি আবুধাবি নগর পরিকল্পনা কাউন্সিল দ্বারা সফল ভাবে পরিচালিত হয়ে তেল বাদে অন্যান্য সেক্টর গুলোর আয় ৪০% থেকে ৭০% তে উন্নীত করতে সহায়ক হবে বলে আবুধাবি সরকার আশা করে। এই লক্ষ্যে আবুধাবি বিশ্বের বিভিন্ন বিনোদন পার্টনারদের জন্য ১৬৩ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করেছে (জুলাই, ২০১৯ এর হিসাব অনুযায়ী)। অনেক দেশি এবং হলিউডের চলচ্চিত্র নির্মাতারা সংযুক্ত আরব আমিরাতকে লোকেশন হিসেবে ব্যবহার করেছেন। পার্শ্ববর্তী দুবাইয়ের কারণে আবুধাবিও অনেকের মনোযোগ আকর্ষণ করে। বর্তমানে আবুধাবি ও একটি জনপ্রিয় লোকেশন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। ইতিহাদ টাওয়ার্স এবং এমিরেটস প্যালেস হোটেলের মত ল্যান্ডমার্ক গুলো ফিউরিয়াস৭ চলচ্চিত্রের লোকেশন হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। এই চলচ্চিত্রের একটি দৃশ্যে দেখা যায় একটা বহুতল ভবনের মধ্য দিয়ে দ্রুত কার চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে এবং সেগুলো ইতিহাদ টাওয়ার্স এর জানালার কাচ ভেঙে ভবনের ভেতরে ঢুকে পড়ছে।
আবুধাবিতে পানি পরিশোধন ও সরবরাহ এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহ নিয়ন্ত্রণের কাজে নিয়োজিত সংস্থা হল আবুধাবি ওয়াটার এন্ড ইলেকট্রিসিটি অথরিটি (ADWEA)। এই সংস্থা ২০০৬ সালে দিন প্রতি ৫৬০.২ মিলিয়ন ইম্পেরিয়াল গ্যালন পানি সরবরাহ করে যেখানে চাহিদা ছিল দিন প্রতি ৫১১ মিলিয়ন ইম্পিরিয়াল গ্যালন। আবুধাবি এনভায়রনমেন্ট এজেন্সি (EAD) প্রকাশ করেছে আবুধাবির পানির মূল উৎস ভূনিম্নস্থ পানি। উম্ম আল-নার জলাধার টি সবচেয়ে বড় এবং এর উৎপাদন ক্ষমতা দিন প্রতি ৪০.৬ মিলিয়ন ইম্পেরিয়াল গ্যালন, এরপরই শুয়েইহাত এবং তাওয়িলাহ নদীদ্বয়ের অবস্থান। জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং ভূনিম্নস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ার ফলে আবুধাবিতে পানির সরবরাহ কঠিন হয়ে পড়েছে। দিন প্রতি প্রতি জনের পানি ব্যবহারের পরিমাণ গড়ে ৫৫০ লিটার (১২০ ইম্পেরিয়াল গ্যালন/১৫০ ইউএস গ্যালন)। প্রতিদিন ১৫৩২ টন কঠিন বর্জ্য উৎপন্ন হয় যেগুলো নিঃসরণ এর জন্য তিনটি ভাগাড় রয়েছে। তাছাড়া গৃহস্থালির বর্জ্য নিঃসরণের পরিমান দিন প্রতি ৩৩০ ইম্পেরিয়াল গ্যালন এবং শিল্পের তরল বর্জ্যের পরিমাণ দিন প্রতি ৪০ মিলিয়ন ইম্পেরিয়াল গ্যালন। ২০০৭ সালের হিসাব অনুসারে প্রতিজন ৪১০০০ কিওঘ বিদ্যুৎ ব্যবহার করে এবং মোট সরবরাহকৃত বিদ্যুতের পরিমাণ ৮৩৬৭ মেগাওয়াট। স্কিপকো পাওয়ার(SCIPCO Power) এবং এপিসি এনার্জি (APC Energy) বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের 'এনার্জি স্ট্র্যাটেজি ২০৫০' এ কার্বন নিঃসরণ ৭০% কমানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই লক্ষ্যে 'নূর আবুধাবি সৌর পার্ক' প্রজেক্ট হাতে নেওয়া হয়েছে যেটা কিনা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সোলার প্রজেক্ট। এটা শেষ হয় ২০০৯ সালের ২ রা জুলাই। আবুধাবি ফায়ার সার্ভিসের ১৩ টি স্টেশন রয়েছে এগুলো বছরে প্রায় ২০০০ বার বিভিন্ন উদ্ধার কাজে অংশ নেয়।
রাষ্ট্রায়ত্ত ইতিসালাত এবং বেসরকারি দু (du) কমিউনিকেশন কোম্পানিগুলো আবুধাবিতে টেলিফোন ও সেলফোন সেবা প্রদান করে। বিভিন্ন ধরনের সেবার পাশাপাশি উভয় কোম্পানি জিএসএম এবং সিডিএমএ প্রযুক্তির সেবা প্রদান করে। ২০০৬ সালের আগে ইতিসালাত টেলিকমিউনিকেশনের ক্ষেত্রে একাধিপত্য বিস্তার করেছিল কারণ তখন পর্যন্ত আবুধাবিতে অন্য কোন টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানির আবির্ভাব ঘটেনি। ১৯৯৫ সালে আবুধাবিতে প্রথম ইন্টারনেট সেবা চালু হয়। বর্তমান নেটওয়ার্কের ব্যান্ডওয়াইডথ ৬ জিবি, ৫০,০০০ ডায়াল আপ এবং ১,৫০,০০০ ব্রডব্যান্ড পোর্ট। ২০০৯ সালের শেষের দিকে ইতিসালাত ঘোষণা করে পৃথিবীর প্রথম শহর হিসেবে আবুধাবি শহর জুড়ে ফাইবার-টু-দ্য-হোম (FTTH) নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হবে।
১৯৭০ এর দশকে সর্বোচ্চ ৬,০০,০০০ জনসংখ্যার জন্য আবুধাবির নগর পরিকল্পনা করা হয়। ওই সময়ের নগর পরিকল্পনার ধারা অনুসারে আবুধাবিতেও ঘন ভবনসমূহ এবং গ্রিড-প্যাটার্নের চওড়া রাস্তা রয়েছে। দ্বীপের উত্তরাঞ্চলে জনসংখ্যার ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি। এই এলাকায় রাজপথের পাশে অসংখ্য আকাশচুম্বী ভবন এর সারি দেখতে পাওয়া যায় যেগুলোর বেশির ভাগই ২০ তলা থেকে ৩০ তলা ভবন। এই ভবনগুলো আয়তক্ষেত্রাকার প্যাটার্নে আলাদা আলাদা ব্লকে নির্মাণ করা হয়েছে। এই আয়াতাকার ব্লক গুলোর ভিতরে গ্রিড আকারে রাস্তা রয়েছে এবং এই রাস্তাগুলোর পাশে দুই তলা থেকে ছয় তলা বিভিন্ন উচ্চতার ভবন রয়েছে, যেগুলো প্রধানত বসবাসের জন্য ব্যবহৃত হয়। এই পরিকল্পনার ফলশ্রুতিতে এখানে অন্যান্য বড় শহরের মতো সুউচ্চ ভবন, চওড়া রাস্তা এবং ব্যস্ত বিপনী দেখতে পাওয়া যায়।
প্রধান সড়কগুলোর মধ্যে রয়েছে কার্নিশ রোড, এয়ারপোর্ট রোড, শেখ জায়েদ স্ট্রীট, হামদাম স্ট্রীট এবং খলিফা স্ট্রীট।
আবুধাবি সবুজ শহর হিসেবে পরিচিত। যদিও এটা আগে মরুভূমির অংশ ছিল, বর্তমানে এখানে অনেক গুলো পার্ক এবং উদ্যান রয়েছে। শহরের ভিতরের রাস্তা গুলো এবং প্রধান রাস্তা গুলো সুসজ্জিত। কার্নিশ থেকে শুরু করে সকল আনুভূমিক রাস্তা গুলো বিজোড় নাম্বার যুক্ত এবং সকল উলম্ব রাস্তা গুলো জোড় নাম্বার যুক্ত। যেমন— কার্নিশ রোডের নাম্বার ১, খলিফা স্ট্রিট হল ৩ নং রাস্তা, হামদাম স্ট্রীট ৫ নং রাস্তা, ইলেক্ট্রা স্ট্রীট ৭ নং রাস্তা, আবার সালাম স্ট্রীট ৮ নং রাস্তা।
চিঠিপত্র সাধারণত পোস্ট অফিসের বক্সে দেয়া হয়। তবে বাণিজ্যিক সংস্থা গুলোর জন্য ডোর-টু-ডোর সার্ভিসও রয়েছে। সারা শহর জুড়ে অনেকগুলো পার্ক ও উদ্যান রয়েছে। এই সকল পার্ক ও উদ্যানে শিশুদের বিনামূল্যে প্রবেশাধিকার রয়েছে কিন্তু বয়স্কদের ফি প্রদান করতে হয়।
কার্নিশ হলো শহরের একমাত্র সমুদ্র তীরবর্তী বেড়ানোর স্থান। এর দৈর্ঘ্য ১০ কিলোমিটার (৬.২ মাইল) এবং এতে কয়েকটি উদ্যান, খেলার মাঠ, এবং স্কেটবোর্ড রিং আছে।
২০০৭ সালে আবুধাবি আরবান প্ল্যানিং কাউন্সিল(UPC) প্রতিষ্ঠা করা হয়। আবুধাবি শহরের বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ পরিবেশ সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করাই এর কাজ। এই সংস্থার মাধ্যমেই 'প্ল্যান আবুধাবি ২০৩০;আরবান স্ট্রাকচার ফ্রেমওয়ার্ক প্লান' ( সেপ্টেম্বর, 2007)-এর নীতি নির্ধারণ করা হয়েছে। এই কাউন্সিলটি আল-আইন এবং আল গারবিয়া শহরেরও নগর পরিকল্পনার দায়িত্বে আছে। আবুধাবির দ্রুত উন্নতির ফলে এখানে নগর পরিকল্পনার দায়িত্বে থাকা সংস্থাকে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়। যেমন—
নামবিও ওয়েবসাইট ২০১৮ সালে আবুধাবিকে সবচেয়ে নিরাপদ শহর হিসাবে চিহ্নিত করে।
বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা আবুধাবির মানবাধিকার লঙ্ঘনের ব্যাপারে ব্যাপক সমালোচনা করেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের অন্যান্য অংশের মতো আবুধাবিতে ভিনদেশী শ্রমিকের শ্রমিকদের সঠিক মূল্যায়ন হয় না এবং সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন কোম্পানিগুলোর আরও উন্নতি করার সুযোগ রয়েছে। ২০০৯ সালের এপ্রিলে একটা গোপন ভিডিও ফাঁস হয় যাতে দেখা যায় ব্যবসায়ী ঈসা বিন জায়েদ আল নাহিয়ান জনৈক ব্যক্তি কে অত্যাচার করছেন এবং তার উপর দিয়ে বারবার একটি এসইউভি চালিয়ে দিচ্ছেন। এছাড়াও ঈশ্বর বিপক্ষে অন্যান্য অনেক বিদেশী নাগরিকদের সাথে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে।
বছর | জন. | ±% |
---|---|---|
১৯৬০ | ২৫,০০০ | — |
১৯৬৫ | ৫০,০০০ | +১০০% |
১৯৬৯ | ৪৬,৪০০ | −৭.২% |
১৯৭৫ | ১,২৭,৭৬৩ | +১৭৫.৪% |
১৯৮০ | ২,৪৩,২৫৭ | +৯০.৪% |
১৯৮৫ | ২,৮৩,৩৬১ | +১৬.৫% |
১৯৯৫ | ৩,৯৮,৬৯৫ | +৪০.৭% |
২০০৩ | ৫,৫২,০০০ | +৩৮.৫% |
২০০৯ | ৮,৯৬,৭৫১ | +৬২.৫% |
২০১৩ | ৯,২১,০০০ | +২.৭% |
২০১৪ | ১২,০৫,৯৬৩ | +৩০.৯% |
২০১৮ | ১৮,০৭,০০০ | +৪৯.৮% |
আবুধাবিতে প্রথম শুমারী হয় ১৯৬৮ সালে। এর আগের সকল তথ্য populstat.info থেকে গৃহীত। তথ্যের উৎস: |
আবুধাবি আমিরাত এর আয়তন ৬৭৩৪ বর্গ কিমি, এবং এটাই সংযুক্ত আরব আমিরাতের সবচেয়ে বড় আমিরাত( সংযুক্ত আরব আমিরাতের মোট আয়তনের ৮৭%)। এখানে জনসংখ্যার ঘনত্ব ২১.৭৩/বর্গ কিমি (৫৬.৩/বর্গ মাইল)। আবুধাবি পৃথিবীর সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহর গুলোর ক্রমে ৬৭ তম এবং আরব অঞ্চলে ২য় (দুবাই প্রথম)। ২০১৪ সালের হিসাব অনুযায়ী মোট ২৬,৫০,০০০ জনসংখ্যার মধ্যে মাত্র ৪,৭৭,০০০ দেশীয় জনসংখ্যা রয়েছে। মোট জনসংখ্যার প্রায় ৮০% ভিনদেশী। আবুধাবীতে অবিবাহিতদের গড় বয়স ৩১.১ বছর। ২০০৫ সালের হিসাব অনুযায়ী জন্মহার ১৩.৬% এবং মৃত্যুহার ২%। সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রাদেশিক সংবিধানের ৭ নম্বর অনুচ্ছেদে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। সরকার প্রায় ৯৫% মসজিদে ভর্তুকি প্রদান করে এবং সকল মসজিদে সরকারিভাবেই ইমাম নিয়োগ করা হয়। সিংহভাগ মসজিদ মালিকি অথবা মুওয়াহিদ মতাবলম্বী। আবুধাবিতে বসবাসকারীদের অধিকাংশই নেপাল, ভারত, পাকিস্তান, ইরিত্রিয়া, ইথিওপিয়া, সোমালিয়া, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, ফিলিপাইন, যুক্তরাজ্য এবং বিভিন্ন আরব দেশ থেকে আগত বিদেশী শ্রমিক। এই শ্রমিকদের অধিকাংশই বহু বছর সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাস করার পরও এখানকার নাগরিকত্ব পান নি। এজন্য এখানে ইংরেজি, বাংলা, হিন্দি, উর্দু, মালায়ালাম, তামিল, টুলু, সোমালি, তিগরিনিয়া, আমারিক ইত্যাদি ভাষা বহুল প্রচলিত। দেশীয় লোকজন মূলত আরবিভাষী আরব এবং তারা গোত্র ভিত্তিক সমাজে বসবাস করে। 'বনি ইয়াস' গোত্রের 'আল-ফালাহ' শাখার একটি উপগোত্র 'আল-নাহিয়ান' পরিবার আবুধাবি শাসন করে এবং বিশেষ মর্যাদা ভোগ করে। এখানে আরব বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত আরবরাও রয়েছে।
'শেখ জায়েদ বিন সুলতান স্ট্রীট' আবুধাবির অন্যতম ব্যস্ততম সড়কগুলোর একটি। এটা সালাম স্ট্রিট নামেও পরিচিত। এই সড়কটি আল-কুর্ম কার্নিশ পর্যন্ত গেছে। কার্নিশ নিজেই একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক এবং এটা হতে আরব্য উপসাগরের দৃশ্যাবলী উপভোগ করা যায়।
আবুধাবি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আবুধাবির আকাশপথ যোগাযোগের কেন্দ্রস্থল এবং আবুধাবির দ্বিতীয় ব্যস্ততম বিমানবন্দর। ২০১০ সালে এই বিমানবন্দরে যাত্রীর সংখ্যা ১৭.২% বৃদ্ধি পেয়ে মোট যাত্রী সংখ্যা ২৩ মিলিয়নের বেশি হয়। সম্প্রতি এখানে দ্বিতীয় একটি রানওয়ে এবং একটি নতুন টার্মিনাল স্থাপন করা হয়েছে। ১৯৮২ সালে এই বিমানবন্দরটি স্থাপনের আগে সেখানে 'আল বাতিন এক্সিকিউটিভ এয়ারপোর্ট' একমাত্র আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছিল। বর্তমানে পুরাতন এই বিমানবন্দরটি সামরিক কাজে এবং ছোট ছোট বাণিজ্যিক বিমান চলাচলের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। ২০১৯ সালের ৩০ শে জুন 'ডিপার্টমেন্ট অফ কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট' বিমানবন্দর হতে একটু দূরে বিভিন্ন ধর্ম বিশ্বাসে বিশ্বাসী দের জন্য একক প্রার্থনালয় নির্মাণ করে, যেটা আবুধাবির ধর্মীয় সহনশীলতার অনন্য দৃষ্টান্ত।
আবুধাবির গণপরিবহন ব্যবস্থা বাস, ট্যাক্সি, ফেরি এবং বিমানের সমন্বয়ে গঠিত। গণপরিবহনের জন্য ব্যবহৃত ট্যাক্সি গুলো সহজেই চিহ্নিত করা যায় ; নতুন ট্যাক্সিগুলো রুপালি রঙের এবং হলুদ ছাদ বিশিষ্ট এবং পুরাতন ট্যাক্সিগুলো সাদা-সোনালী রং বিশিষ্ট এবং সবুজ ছাদ যুক্ত। তবে বর্তমানে পুরাতন ট্যাক্সি গুলো একেবারেই সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এখন পুরাতন ট্যাক্সিগুলো আর গণপরিবহনের কাজে ব্যবহৃত হয় না।
১৯৬৯সালের দিকে গণপরিবহন ব্যবস্থায় অত্যন্ত ক্ষুদ্র পরিসরে প্রথম বাস সেবা চালু হয়। আবুধাবি কেন্দ্রীয় বাস স্টেশনে আন্তঃনগর বাস সার্ভিস চালু আছে। এই বাসগুলো শুধুমাত্র আবুধাবি আমিরাতেই সেবা প্রদান করেনা বরং অন্যান্য আমিরাত গুলোতেও সেবা প্রদান করে থাকে। ২০০৮ সালের ৩০ শে জুন থেকে 'ডিপার্টমেন্ট অব ট্রান্সপোর্ট' আবুধাবির চারটি রুটে পাবলিক বাস চালু করে। বিমানবন্দরেও বাস সার্ভিস চালু আছে। জনগণকে বাস ব্যবহারে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ২০০৮ সালের শেষ পর্যন্ত সকলের জন্য বিনামূল্যে বাস সেবা দেওয়া হতো। সকাল ৬ টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ৪ টি রুটে ১০ থেকে ২০ মিনিট পরপর বাস সেবা দেওয়া হতো। এই সেবা চালু হওয়ার প্রথম সপ্তাহেই অনেকে এতে আকৃষ্ট হয়। ৪৫ জনের স্থান সংকুলান হয় এমন বাসগুলোতে শুধুমাত্র দাঁড়ানোর জায়গা খালি থাকে এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে ১০০ জন যাত্রীও একবারে একটি বাসে উঠে পড়ে বলে জানা যায়। বিনামূল্যে বাস সেবা চালু করার ফলে ট্যাক্সির চাহিদা ব্যাপক হারে কমে যায়। ফলে ট্যাক্সিচালকদের আয় এবং জীবন-মান বহুগুণে কমে যায়। অপরদিকে বাস স্টেশনগুলোতে মানুষের লম্বা লাইন দেখা যেতে থাকে। তারপরও বাস সেবা চালু থাকে এবং ক্রমান্বয়ে একে বর্ধিত করা হয়। ২০০৮ সালের শেষের দিকে মোট বাস সংখ্যা দাঁড়ায় ২৩০ টি তে। ২০০৯ সালে 'ডিপার্টমেন্ট অফ ট্রান্সপোর্ট' শহরে মোট বাসরুট ২১ টি তে এবং সেবা প্রদানকারী বাসের সংখ্যা ৮৩০ টি তে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেয়। তাছাড়া ২০১০ সালের মধ্যে তাদের মোট বাস সংখ্যা ১৩৬০ টিতে উন্নীত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করে। সরকারিভাবে গৃহীত 'সারফেস ট্রান্সপোর্ট মাস্টারপ্ল্যান ২০৩০'-এ গণপরিবহন ব্যবস্থায় ব্যাপক উন্নতি করার জন্য বিভিন্ন নীতি এবং উদ্দেশ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এই পরিকল্পনার উদ্দেশ্য ১৩০ কিলোমিটার মেট্রো ও ৩৪০ কিলোমিটার ট্রাম চলাচলের রাস্তা এবং/অথবা বাস চলাচলের রাস্তা তৈরি করা।
আমিরাতে অনেকগুলো বন্দর আছে। যেমন— পোর্ট জায়েদ, মুসাফা পোর্ট, খলিফা পোর্ট (২০১২) ইত্যাদি। 'আবুধাবি পোর্টস' এই বন্দরগুলোর মালিক তবে বন্দরগুলো পরিচালিত হয় 'আবুধাবি টার্মিনালস' দ্বারা। এছাড়া সরকারি ভাবে বেশ কিছু ফেরিও চালু করা হয়েছে।
আবুধাবিতে বিভিন্ন বৈচিত্রপূর্ণ সংস্কৃতির সমাজব্যবস্থা চালু রয়েছে। আবুধাবির সংস্কৃতি প্রাথমিকভাবে ছিল জাতিগতভাবে ছোট এবং মুক্তা-ব্যবসা কেন্দ্রিক। এর সাংস্কৃতিক বৈচিত্র শুরু হয় ১৯০০ শতকের শুরুর দিকে ইরানিদের আগমনের পর থেকে। তারপর ১৯৫০ ও ৬০ এর দশকে আবুধাবিতে এশীয় এবং ইউরোপীয়দের আগমনের ফলে এর সংস্কৃতি ব্যাপকভাবে বৈচিত্র্যপূর্ণ হয়ে ওঠে।
এখানে শ্রেণীভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা চালু রয়েছে এবং এখানকার শ্রেণীবৈষম্যের প্রকটতা ব্যাপকভাবে সমালোচিত। বিদেশি শ্রমিকরা সবচেয়ে নিম্ন শ্রেণিভুক্ত এবং তারা প্রায়শই বিভিন্ন অত্যাচারের শিকার হয়।
আবুধাবিতে প্রধান ছুটির দিনগুলো হলো ঈদ-উল-ফিতর, যেটা রমজান মাসের সমাপ্তি নির্দেশ করে; ঈদুল আজহা, যেটা হজ্জের সমাপ্তি নির্দেশ করে, এবং জাতীয় দিবস (২ রা ডিসেম্বর), যেটা সংযুক্ত আরব আমিরাত গঠনের দিন।
এই আলাদা ধরনের আর্থসামাজিক অগ্রগতির কারণে আবুধাবি, সৌদি আরব সহ এর অন্যান্য প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় বেশি সহনশীল। এখানে মসজিদের পাশাপাশি চার্চ, মন্দির, গুরুদুয়ারা ইত্যাদি প্রার্থনালয় সচ্ছন্দে তাদের কার্যক্রম চালনা করতে পারে। তবে এখানে কোন সিনাগোগ নেই। শহরের পরিবেশ সময়ের সাথে সাথে অধিকতর কসমোপলিটন রূপ পরিগ্রহ করেছে। এখানে এখন অনেক এশীয় এবং পশ্চিমা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সাংস্কৃতিক দল এবং বিশেষায়িত রেস্তোরাঁ দেখতে পাওয়া যায়। এখানে 'কালচারাল ফাউন্ডেশন' এবং 'ন্যাশনাল থিয়েটার'-এর মতো সাংস্কৃতিক সংস্থা চালু রয়েছে। ২০১১ সালে কালচারাল ফাউন্ডেশনকে নতুন করে সাজিয়ে 'সংযুক্ত আরব আমিরাত পাবলিক লাইব্রেরী এবং কালচারাল সেন্টারে' রূপদান করা হয়। 'আবুধাবি ক্লাসিকাল মিউজিক সোসাইটি' বেশ প্রভাবশালী একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন। এখানে 'এমিরেটস ফাউন্ডেশন' এর মতো প্রতিষ্ঠান চালু হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো কলা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, শিক্ষা, পরিবেশ রক্ষা এবং সামাজিক উন্নয়নের জন্য গৃহীত পদক্ষেপসমূহ কে আর্থিক এবং অন্যান্য বিভিন্ন ধরনের সহায়তা প্রদান করে থাকে। 'দ্য ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ ফর এরাবিক ফিকশন' (আই পি এ এফ) আবুধাবি কেন্দ্রিক একটি সাহিত্য পুরস্কার। তাছাড়া এই শহরে কলা এবং সাহিত্য বিষয়ক অনেক কনফারেন্স এবং প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। এই উদ্দেশ্যে এখানে 'আবুধাবি ন্যাশনাল এক্সিবিশন সেন্টার'-এর মত প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেটা কিনা পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের সবচেয়ে বড় প্রদর্শনী কেন্দ্র। আবুধাবি নেশনাল এক্সিবিশন সেন্টার প্রতিবছর প্রতিবছর কমবেশি ১.৮ মিলিয়ন দর্শনার্থীর জন্য বিভিন্ন প্রদর্শনীর আয়োজন করে থাকে।
এখানে 'রেডবুল এয়ার রেস ওয়ার্ল্ড সিরিজ' অনুষ্ঠিত হয়। এটা মূলত বৈমানিকদের দক্ষতার প্রতিযোগিতা মূলক একটি খেলা। এই খেলা দেখতে হাজার হাজার মানুষের সমাবেশ ঘটে।
আরও একটি বড় মাপের ইভেন্ট হলো 'আবুধাবি ইন্টারনেশনাল পেট্রোলিয়াম এক্সিবিশন অ্যান্ড কনফারেন্স' (এডিআইপিইসি)।
আবুধাবির রন্ধনশিল্পও একই সাথে বিভিন্ন জাতির মানুষের অবস্থিতির কারণে ব্যাপকভাবে বৈচিত্র্যপূর্ণ। এখানে আরবীয় খাবার-দাবার খুবই জনপ্রিয় এবং ছোট বড় সব রেস্তোরাঁতেই এই খাবারগুলো পাওয়া যায়। বিভিন্ন ধরনের ফাস্টফুডের পাশাপাশি এখানে দক্ষিণ এশীয় খাবারদাবারও বেশ জনপ্রিয়।
এখানে শূকরের মাংস ক্রয়-বিক্রয় অবৈধ নয়, তবে কিছু নিয়ম নীতি রয়েছে। কিছু বিশেষ জায়গায় অমুসলিমদের কাছে শূকরের মাংস বিক্রয় করা হয়।
একইভাবে অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়ের ব্যবহারও আইনের প্রয়োগ দ্বারা সীমিত। অ্যালকোহল ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য সরকারের অনুমতিপত্র লাগে। চার এবং পাঁচ তারকা হোটেলগুলোর বার এবং রেস্তোরাঁয় অ্যালকোহল পাওয়া যায়। তবে প্রতিবেশী শহর দুবাইয়ের মত এখানে অ্যালকোহল ক্রয়-বিক্রয় অতটা বেশি অবাধ নয়। আবুধাবিতে 'শীশা' এবং 'কাহওয়া' বুটিক খুব জনপ্রিয়।
আবুধাবি এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে কবিতার ব্যাপক চল রয়েছে। বেশিরভাগ কবিতাই এখানে বীরত্ব, ধর্ম, পরিবার স্যাটায়ার এবং প্রেম কেন্দ্রিক। কবিদের মধ্যে অনেকেই শিক্ষক, নাবিক, রাজপুত্র, এবং শেখ। অষ্টম শতকে এই অঞ্চলের কবি 'আল খলিল বিন আহমেদ' আরবিতে এক বিশেষ ধরনের কবিতার প্রবর্তন করেন (১৬ মিটার ৫২ ফিট)। আরেকজন আমিরাতি কবি ইবনে দাহের (১৭ শতকের কবি) 'নাবাতি' বা 'বেদুইন কবিতার' পথিকৃৎ ছিলেন (লৌকিক আরবিতে নয় বরং আরবি ভার্নাকুলার যে কবিতার ভাষা সেটাই মূলত বেদুইন বা নাবাতি কবিতা)।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাব্যপ্রতিভা হল—
প্রমূখ, আর তারা মূলত ধ্রুপদী আরবি কবিতায় ব্যাপক অবদান রেখেছেন। এখন আবুধাবিতে 'আবুধাবি কালচারাল ফাউন্ডেশন' নামে একটি সংগঠন আছে, যেটা শহরের কলা ও সংস্কৃতির ধারণ-বাহনে সচেষ্ট। 'ইংলিশ পেন অ্যাটলাস'-এ প্রকাশিত একটি নিবন্ধে বলা হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রথম বের হওয়া পাণ্ডুলিপি হলো "আল জাওয়াহির ওয়াল লা'লি"। আর একটি নিবন্ধে বলা হয়েছে এটা ১৯৯০ এর দশকে প্রকাশিত এবং রাজপরিবারকে সমালোচনার দোষে এটা নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়।
আবুধাবিতে অনেক আন্তর্জাতিক, জাতীয়, এবং বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি, মাসদার ইনস্টিটিউট অফ সাইন্স এন্ড টেকনোলজি, নিউইয়র্ক ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি, হায়ার কলেজেস অব টেকনোলজি, নিউ ইয়র্ক ফিল্ম একাডেমি, প্যারিস-সরবন ইউনিভার্সিটি আবুধাবি,এবং আবুধাবি ইউনিভার্সিটি। এখানে বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের বাস। শিক্ষা ক্ষেত্রে এই বৈশিষ্ট্যটিও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস স্কুল অন্যান্য কোর্স এর পাশাপাশি এক্সিকিউটিভ এমবিএ প্রোগ্রামের জন্য আবুধাবিতে একটি ক্যাম্পাস স্থাপন করে। ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে সরকারি সহায়তায় নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় আবুধাবিতে একটা স্যাটেলাইট ক্যাম্পাস স্থাপন করে। আবুধাবির সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান 'আবুধাবি শিক্ষা কাউন্সিল' দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। আবুধাবি শিক্ষা কাউন্সিল আবুধাবির সকল সরকারি, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তত্ত্বাবধান করে থাকে। ২০০৯ সাল থেকে 'নিউ স্কুল মডেল প্রোগ্রাম' বাস্তবায়ন করতে তাদের সরকারি স্কুল সমূহে ইংরেজি ভাষাভাষী দেশসমূহের হাজার হাজার শিক্ষকদের শিক্ষাদানের লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। আবুধাবি শিক্ষা কাউন্সিল জুজুৎসু তে আগ্রহীদের জন্য অতিরিক্ত স্কুল-পরবর্তী কর্মসূচি চালু করেছে। ২০০৮ সালে মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান এর পৃষ্ঠপোষকতায় 'আবুধাবি জুজুৎসু স্কুল প্রোগ্রাম' শুরু হয়। মোহাম্মদ বিন জায়েদ নিজেই ব্রাজিলিয়ান জুজুৎসুর বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন। এই প্রোগ্রামটি প্রাথমিকভাবে ১৪ টি বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য চালু করা হলেও বর্তমানে ৪২ টি সরকারি বিদ্যালয় এটা প্রসারিত করা হয়েছে। এজন্য তাদের ৮১ জন ব্রাজিলীয় জুজুৎসু বিশেষজ্ঞ রয়েছে। ৯ থেকে ১৩ বছর বয়স্ক সকল শিক্ষার্থী তাদের পাঠক্রমের অন্তর্ভুক্ত বিষয় হিসেবে জুজুৎসু শেখে। শিক্ষা কাউন্সিলের চেষ্টা ছিল কম বেশি ৪০০ টি বিদ্যালয় ২০১০ সালের মধ্যে স্কুল প্রোগ্রামের আওতায় আনা। শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ এর বিশেষ অনুরোধে 'আমিরাত জুজুৎসু টিমের' প্রধান কোচ কার্লোস সান্তোস (ইনি স্কুল জুজুৎসু প্রজেক্ট'-এর ম্যানেজিং ডাইরেক্টরও) এই প্রোগ্রাম শুরু করেন।
প্রতি বছর ভর্তির মৌসুমে সরকারি তত্ত্বাবধানে আবুধাবি এক্সিবিশন সেন্টারে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়— এতে বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় তাদের ক্যারিয়ার প্রোগ্রাম এবং স্কলারশিপ প্রোগ্রাম নিয়ে আলোচনা করে। এটা সকল দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত। হেরিওট-ওয়াট ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অফ বলটন, ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটি, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি, পেট্রোলিয়াম ইন্সটিটিউট,খলিফা ইউনিভার্সিটি এবং আবুধাবি ইউনিভার্সিটি এতে অংশগ্রহণ করে।
আবুধাবিতে চারটি ফুটবল স্টেডিয়াম আছে— আল জাজীরা স্টেডিয়াম, আল-ওয়াহদা স্টেডিয়াম, শেখ জায়েদ ফুটবল স্টেডিয়াম (জায়েদ স্পোর্টস সিটি) এবং হাজজা স্টেডিয়াম। জায়েদ স্পোর্টস সিটিতে একটি টেনিস কোর্ট, একটি আইস রিঙ্ক, একটি বাউলিং এ্যালি, এবং এর বাইরের দিকে একটি ক্রিকেট স্টেডিয়াম 'শেখ জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়াম' রয়েছে। এটা বর্তমানে পাকিস্তান ক্রিকেট টিমের প্রধান স্টেডিয়াম। এই স্টেডিয়ামটি বিগত চার বছর ধরে প্রতিবছর কমপক্ষে দুটি করে সিরিজ খেলায়। ২০১৪ সালে এখানে আইপিএল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। এটা বি পাকিস্তান সুপার লিগের ও ভেন্যু হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
আবুধাবিতে ক্রিকেট এবং ফুটবল খুবই জনপ্রিয়। তরুণরা বিভিন্ন ফাঁকা মাঠে ফুটবল খেলে থাকে। অনেক দক্ষিণ এশীয় মানুষ থাকে বলে এখানে ক্রিকেটও সমানভাবে জনপ্রিয়। এখানে ফুটবল এবং ক্রিকেটে অনেক ছোট ছোট প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
'ডম' নামে আর একটি জায়গা আছে যেখানে শুধুমাত্র ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। এটা আবুধাবি সিটির প্রাণকেন্দ্রে গড়ে তোলা হয়েছে যাতে করে কর্মব্যস্ত মানুষেরা ইনডোর-আউটডোর বিভিন্ন ধরনের খেলার মাধ্যমে চিত্ত বিনোদনের সুযোগ পায়।
মূল নিবন্ধ: আবুধাবি গ্রান্ড প্রিক্স
2009 সাল থেকে ফি বছর নভেম্বর মাসে আবুধাবির 'ইয়াস মেরিনা সার্কিটে' একটি 'ফর্মুলা ওয়ান' রেসের আয়োজন করা হয়। এখানে মোটর-রেসিং বেশ জনপ্রিয়।এই সার্কিটে অন্যান্য ইভেন্ট এর পাশাপাশি 'ভি৮ সুপারকার্স' প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
'আন্তর্জাতিক জুডো ফেডারেশন' এর গ্র্যান্ড স্লাম নিয়মিতভাবে আবুধাবিতে অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৭ সালে এতে ইসরাইলি পতাকা ও জাতীয় সংগীত অনুমোদন না দেওয়াতে বিতর্কের সৃষ্টি হয় এবং অনেকে এই উদ্যোগকে অ্যান্টি-সেমেটিক বলে অভিমত প্রকাশ করেন। ২০১৮ সালে ইসরাইলকে আবার তাদের পতাকা ও জাতীয় সংগীত ব্যবহার করতে অনুমতি দেওয়া হয়। ইসরাইলি ক্রীড়ামন্ত্রী মিরি রেগেব এই ইভেন্টে অতিথি হিসেবে যোগদান করেন।
মূল নিবন্ধ: স্পেশাল অলিম্পিকস ওয়ার্ল্ড গেমস আবুধাবি ২০১৯
২০১৯ এর মার্চে মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যে আবুধাবিতে প্রথম স্পেশাল অলিম্পিক গেমস অনুষ্ঠিত হয় ১৪ থেকে ২১ শে মার্চ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এই খেলায় ২৪ টি ডিসিপ্লিনে ৭,৫০০ এর বেশি খেলোয়াড় অংশগ্রহণ করেন।
২০১০ সাল থেকে আবুধাবিতে অনেক বিদেশী চলচ্চিত্রের শ্যুীটিং হয়েছে, সেগুলোর কয়েকটি মুক্তির ক্রমানুযায়ী উল্লেখ করা হল-
আবুধাবি নিম্নোক্ত শহর গুলোর সাথে সংযুক্ত:
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article আবুধাবি, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.