বেলজিয়াম উত্তর সাগরের সীমান্তবর্তী পশ্চিম ইউরোপে অবস্থিত একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় রাষ্ট্র। বেলজিয়ামের সাথে ফ্রান্স (৫৫৬ কিমি), জার্মানি (১৩৩ কিমি), লুক্সেমবার্গ (১৩০ কিমি) এবং নেদারল্যান্ড (৪৭৮ কিমি) এর সীমান্ত রয়েছে। বেলজিয়াম ফ্ল্যান্ডার্স, ওয়ালোনিয়া এবং ব্রাসেলস এই তিনটি অঞ্চলে বিভক্ত।
মহাদেশ | ইউরোপ |
---|---|
অঞ্চল | পশ্চিম ইউরোপ |
স্থানাঙ্ক | ৫০°৫০′ উত্তর ৪°০০′ পূর্ব / ৫০.৮৩৩° উত্তর ৪.০০০° পূর্ব |
আয়তন | ১৩৬ তম |
• মোট | ৩০,৬৮৯ কিমি২ (১১,৮৪৯ মা২) |
• স্থলভাগ | ৯৩.৫% |
• জলভাগ | এক্সপ্রেশন ত্রুটি: অপরিচিত বিরামচিহ্ন অক্ষর "৯"।% |
উপকূলরেখা | ৬৬.৫ কিমি (৪১.৩ মা) |
সীমানা | মোট স্থল সীমানা: ১,২৯৭ কিমি |
সর্বোচ্চ বিন্দু | সিগন্যাল দে বোটরেঞ্জ ৬৯৪ মি (২,২৭৭ ফু) |
সর্বনিম্ন বিন্দু | দে মোরেন −৩ মি (−১০ ফু) |
দীর্ঘতম নদী | এসকাউত ২০০ কিমি |
মোট পুনর্নবীকরণযোগ্য পানি সম্পদ: ১৮.৩ ঘন কিমি (২০১১)
মিঠা পানির ব্যবহার (গার্হস্থ্য/শিল্প/কৃষি):
মোট: ৬.২২ ঘন কিমি/বছর (১২%/৮৮%/১%)
মাথা পিছু ব্যবহার: ৫৮৯.৮ ঘন মিটার/বছর (২০০৭)
প্রাকৃতিক দুর্যোগ: অধিগ্রহণকৃত উপকূলীয় ভূমিতে বন্যা হুমকিস্বরূপ, কংক্রিটের প্রাচীর দিয়ে সমুদ্র থেকে সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছ।
ভূগোল - টীকা: পশ্চিম ইউরোপের মিলনস্থল; বেশিরভাগ পশ্চিম ইউরোপীয় দেশের রাজধানী ব্রাসেলসের ১,০০০ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত এবং এখানে ইইউ এবং ন্যাটোর সদর দফতর অবস্থিত।
দীর্ঘতম দূরত্ব: ২৮০ কিলোমিটার দক্ষিণপূর্ব থেকে উত্তরপশ্চিম/ ২২২ কিলোমিটার উত্তরপূর্ব থেকে দক্ষিণপশ্চিম
বেলজিয়ামের আয়তন ৩০,৬৮৯ বর্গ কিলোমিটার, এর মধ্যে ওয়ালোনিয়ার আয়তন ১৬,৯০১ বর্গ কিমি (৬,৫২৬ বর্গ মাইল), ফ্লেমিশ অঞ্চলের আয়তন ১৩,৬২৫ বর্গ কিমি (৫,২৬১ বর্গ মাইল) এবং ব্রাসেলস রাজধানী অঞ্চলের আয়তন ১৬২.৪ বর্গ কিমি (৬২.৭ বর্গ মাইল)। বেলজিয়ামের প্রদেশেসমূহ:
বেলজিয়ামের মোট আয়তন পেতে হলে ব্রাসেলস-রাজধানী অঞ্চলের আয়তন তালিকায় যুক্ত করতে হবে কারণ ব্রাবান্ট প্রদেশটি বিভক্ত হয়ে যাওয়ার পরে ব্রাসেলস আর কোনও বেলজিয়াম প্রদেশের সাথে যুক্ত নেই। বেলজিয়ামের উত্তর সাগরে ৩,৪৬২ বর্গ কিলোমিটার সমুদ্র অঞ্চল রয়েছে। ২০০০ সালের ২৯ মে নেদারল্যান্ড বেলজিয়ামকে ২,০০০ বর্গমিটার জায়গা (ঘেন্ট–টেরুজেন খাল বরাবর জেল্জাতে এক খন্ড জমি) দিতে রাজি হয়।
অন্যান্য দেশের সাথে তুলনা করলে দেখা যায় বেলজিয়াম যুক্তরাজ্যের ওয়েলসের চেয়ে ৪৪% বড় এবং যুক্তরাষ্ট্রে মেরিল্যান্ডের আয়তনের চেয়ে সামন্য ছোট। বেলজিয়াম প্রকৃতপক্ষে দেশের আকারের তুলনায় পরিমাপের একটি অস্বাভাবিক একক হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
২০১৬ সালের নভেম্বরে বেলজিয়াম এবং নেদারল্যান্ড মোজ নদীর (বা ডাচ ভাষায় মাশ) গতিপথের পরিবর্তন বিবেচনা করে ছোট, বসতিহীন ভূমির অংশ সমর্পণ করতে সম্মত হয়। ভূমি বিনিময় ২০১৮ সালে কার্যকর হয়।
বেলজিয়ামের তিনটি প্রধান ভৌগোলিক অঞ্চল রয়েছে: উত্তর-পশ্চিমে উপকূলীয় সমভূমি, কেন্দ্রীয় মালভূমি এবং দক্ষিণ-পূর্বে আর্দেনেস উচ্চভূমি। উপকূলীয় সমভূমিটি মূলত বালিয়াড়ি এবং সমুদ্রগর্ভ থেকে পুনরুদ্ধারকৃত জমি (polders) নিয়ে গঠিত। পোল্ডার হলো এমন ভূমি যা সমুদ্রপৃষ্ঠের কাছাকাছি বা নীচে থেকে পুনরুদ্ধার করা হয়েছে, সেগুলিকে বাঁধের সাহায্যে উপরন্তু অন্তর্দেশীয় খাল দিয়ে পানি নিষ্কাষণ করে সুরক্ষিত করা হয়। দ্বিতীয় ভৌগোলিক অঞ্চল কেন্দ্রীয় মালভূমি আরও অভ্যন্তরে অবস্থিত। এটি মসৃণভাবে ধীরে ধীরে উত্থিত একটি অঞ্চল, এখানে অনেক উর্বর উপত্যকা রয়েছে এবং বহু নাব্য খালের সাহায়ে সেচ দেওয়া হয়। এখানে গুহা এবং ছোট গিরিখাত সহ অসমতল ভূমিও পাওয়া যায়। তৃতীয় ভৌগোলিক অঞ্চল আর্দেনেস প্রথম দুটির চেয়ে বেশি রূক্ষ। এটি একটি ঘন অরণ্যযুক্ত মালভূমি, এটি খুব পাথুরে এবং কৃষিকাজের পক্ষে খুবই অনুপযুক্ত, এটি উত্তর ফ্রান্স এবং জার্মানি পর্যন্ত প্রসারিত সেখানে এটি আইফেল নামে পরিচিত। এখানেই বেলজিয়ামের বন্যপ্রাণীর সন্ধান পাওয়া যায়। বেলজিয়ামের সর্বোচ্চ বিন্দু সিগন্যাল দে বোতর্যাঞ্জ এই অঞ্চলে অবস্থিত এবং এটি মাত্র ৬৯৪ মিটার (২,২৭৭ ফুট) উঁচু। বেলজিয়ামে তুলনামূলকভাবে কয়েকটি প্রাকৃতিক হ্রদ রয়েছে এবং এগুলি তেমন বড় আকারের নয়।
উল্লেখযোগ্য প্রাকৃতিক অঞ্চলগুলির মধ্যে রয়েছে আর্দেনেস, ক্যাম্পাইন এবং হাই ফেনস।
ওয়াজ নদীর মাধ্যমে ইংলিশ চ্যানেলে নিষ্কাশিত হওয়া মোমিনিজ পৌরসভা (ম্যাককুইনয়েজ) ব্যতীত সমস্ত বেলজিয়াম উত্তর সাগরে নিষ্কাশিত হয়েছে। সমুদ্রের মধ্যে প্রবাহিত প্রধান তিনটি নদী হলো: শেল্ড (বেলজিয়ামে ২০০ কিলোমিটার, মোট দৈর্ঘ্য ৩৫০ কিলোমিটার), মোজ (বেলজিয়ামের ১৮৩ কিলোমিটার, মোট ৯২৫ কিলোমিটার) এবং এইজের (বেলজিয়ামের ৫০ কিলোমিটার, মোট ৭৮ কিলোমিটার)। অন্যান্য নদী হলো রুপেল, সেন, সঁব্র্, লিসে, অওত, লিজ এবং ডেল নদী। প্রধান হ্রদের মধ্যে জেনভাল হ্রদ, বাতজেনবাচ হ্রদ, ইয়ু দ'হিউর হ্রদ, গিলিপ হ্রদ, ইউপেন হ্রদ এবং রবার্টভিল হ্রদ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
বেলজিয়ামে অনেকগুলি কৃত্রিম নৌপথ বা খাল রয়েছে, এদের মধ্যে রয়েছে ব্রাসেলস-শেল্ড্ট উপকূলবর্তী খাল, ব্রাসেলস-চারলেরোই খাল, ক্যানেল দু সেন্ট্রে এবং অ্যালবার্ট খাল।
বেলজিয়ামের জলবায়ু উত্তর-পশ্চিম ইউরোপের বেশিরভাগ অঞ্চলের মতোই সমুদ্রতীরবর্তী নাতিশীতোষ্ণ এবং সকল ঋতুতে উল্লেখযোগ্য পরিমান বৃষ্টিপাত হয় (কোপেন জলবায়ু শ্রেণিবিন্যাস: সিএফবি; গড় তাপমাত্রা জানুয়ারিতে ৩ °সে (৩৭.৪ °ফা) এবং জুলাই মাসে ১৮ °সে (৬৪.৪ °ফা) হয়; গড় বৃষ্টিপাত জানুয়ারিতে ৬৫ মিমি (২.৬ ইঞ্চি) এবং জুলাই মাসে ৭৮ মিমি (৩.১ ইঞ্চি))। বেলজিয়ামে সাধারণত ঠান্ডা শীতকালে থাকে তবে তাপমাত্রা -১৬° ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড (৩ ° ফারেনহাইট) এর কম হয়ে থাকে এবং গ্রীষ্মকাল আরামদায়কভাবে উষ্ণ থাকে তবে তাপমাত্রা মাঝেমধ্যে ৩০ °সেন্টিগ্রেড (৮৬ °ফারেনহাইট) এর বেশি হতে পারে।
বেলজিয়ামের সর্বোচ্চ বিন্দু সিগন্যাল দে বোতর্যাঞ্জ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৬৯৪ মিটার উপরে অবস্থিত। বেলজিয়ামের অন্যান্য পাহাড়ের মধ্যে রয়েছে কেমেলবার্গ (১৫৯ মিটার উঁচু) এবং কোপেনবার্গ (৭৭ মিটার উঁচু) এগুলি যথাক্রমে জেন্ট-ওয়েভেলজেম এবং ট্যুর অব ফ্ল্যান্ডারস সাইকেল রেসের (সাইকেল দৌড়) অংশ হিসাবে পরিচিত।
এটি বেলজিয়ামের চরম বিন্দুর একটি তালিকা, যে বিন্দুগুলি অন্য যে কোন স্থানের চেয়ে আরও উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিম, উচ্চতম বা নিম্নতাম স্থানে রয়েছে।
বেলজিয়ামের ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক ইনস্টিটিউট এর গণনালব্ধ ফলাফল অনুসার বেলজিয়ামের কেন্দ্রীয় বিন্দুর স্থানাঙ্ক ৫০°৩৮′২৮″ উত্তর ৪°৪০′০৫″ পূর্ব / ৫০.৬৪১১১° উত্তর ৪.৬৬৮০৬° পূর্ব ওয়ালহাইন পৌরসভার নীল-সেন্ট-ভিনসেন্ট-সেন্ট-মার্টিন এ অবস্থিত।
বেলজিয়ামের প্রাকৃতিক সম্পদের মধ্যে নির্মাণ সামগ্রী, সিলিকা বালি এবং কার্বনেট অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। বেলজিয়ামে কয়লা খনি ছিল। ২০১২ পর্যন্ত ভূমির ব্যবহার নিম্নরূপ ছিল:
২০০৭ সালের হিসাব মতে সেচ সম্পন্ন ভূমির আনুমানিক আয়তন ছিল ২৩৩.৫ বর্গ কিলোমিটার।
উচ্চ জনসংখ্যার ঘনত্ব এবং পশ্চিম ইউরোপের কেন্দ্রে অবস্থানের কারণে বেলজিয়ামকে মারাত্মক পরিবেশগত সমস্যা মোকাবেলা করতে হয়। ২০০৩ সালের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে বেলজিয়ামের নদীগুলির পানি ইউরোপের সর্বনিম্ন মানের এবং ১২২ টি দেশের নীচে অবস্থান করছে। এর পরিবেশ মানুষের ক্রিয়াকলাপের দ্বারা তীব্র চাপের মুখোমুখি হয়: নগরায়ন, ঘন পরিবহন ব্যবস্থা, শিল্প কারখান, ব্যাপক প্রাণী লালনপালন এবং ফসল চাষ; বাতাস এবং পানি দূষণের পরিণাম প্রতিবেশী দেশগুলির জন্যও বিপর্যয় নিয়ে এসেছে; যুক্তরাষ্ট্রীয় এবং আঞ্চলিক দায়িত্ব সম্পর্কিত অনিশ্চয়তা (এখন সমাধান হয়েছে) পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় অগ্রগতি কমিয়ে দিয়েছে।
জনসংখ্যার ভিত্তিতে বেলজিয়ামের প্রধান শহরগুলি হলো ব্রাসেলস, অ্যান্টওয়ার্প, ঘেন্ট, চারলেরোই এবং লিজে। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য শহরগুলির মধ্যে রয়েছে ব্রুজেস, নামুর, লেউভেন, মোনস এবং মেকেলেন।
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article বেলজিয়ামের ভূগোল, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.