ক্রিকেটার, জন্ম ১৯১১ জো হার্ডস্টাফ

যোসেফ হার্ডস্টাফ জুনিয়র (ইংরেজি: Joe Hardstaff Jr; জন্ম: ৩ জুলাই, ১৯১১ - মৃত্যু: ১ জানুয়ারি, ১৯৯০) নটিংহ্যামশায়ারের নানকারগেট এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৩৫ থেকে ১৯৪৮ সময়কালে ইংল্যান্ড দলের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে নটিংহ্যামশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতি মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন জো হার্ডস্টাফ।

জো হার্ডস্টাফ জুনিয়র
ক্রিকেটার, জন্ম ১৯১১ জো হার্ডস্টাফ
১৯৩৬ সালে জো হার্ডস্টাফ
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামযোসেফ হার্ডস্টাফ
জন্ম(১৯১১-০৭-০৩)৩ জুলাই ১৯১১
নানকারগেট, নটিংহ্যামশায়ার, ইংল্যান্ড
মৃত্যু১ জানুয়ারি ১৯৯০(1990-01-01) (বয়স ৭৮)
ওয়ার্কসপ, নটিংহ্যামশায়ার, ইংল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ২৩ ৫১৭
রানের সংখ্যা ১৬৩৬ ৩১৮৪৭
ব্যাটিং গড় ৪৬.৭৪ ৪৪.৩৫
১০০/৫০ ৪/১০ ৮৩/১৬৬
সর্বোচ্চ রান ২০৫* ২৬৬
বল করেছে ৩৮৯০
উইকেট ৩৬
বোলিং গড় ৫৯.৪৭
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৪/৪৩
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৯/– ১২৩/–
উৎস: ক্রিকইনফো, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৮

প্রারম্ভিক জীবন

হার্ডস্টাফের পিতা জো হার্ডস্টাফ সিনিয়রও নটিংহ্যামশায়ার ও ইংল্যান্ডের পক্ষে ক্রিকেট খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। একই নামের জো নামীয় সন্তান প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। নানকারগেটে জন্মগ্রহণকারী জো হার্ডস্টাফ ১৯৩০-এর দশকে সর্বপেক্ষা নন্দিত মাঝারিসারির ব্যাটসম্যানের মর্যাদা পেয়েছিলেন। ঐ দশকে ইংরেজ ব্যাটসম্যানদের সমৃদ্ধ সময় লক্ষ্য করা গিয়েছিল।

উনিশ বছর বয়সে নটিংহ্যামশায়ারের পক্ষে প্রথমবারের মতো খেলতে নামেন। ১৯৩৪ সালে ১৮১৭ রান তুলেন।

টেস্ট ক্রিকেট

ঘরোয়া ক্রিকেটে অপূর্ব ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শনের স্বীকৃতিস্বরূপ টেস্ট দলে অন্তর্ভূক্তি ঘটে তার। এরফলে পরের বছর বব ওয়াটের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দলের সদস্যরূপে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলার জন্য মনোনীত হন। ১৩ জুলাই, ১৯৩৫ তারিখে টেস্ট অভিষেক ঘটে জো হার্ডস্টাফের। ১৯৩৫ থেকে ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত জো হার্ডস্টাফের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পদচারণা ছিল। এ সময়ে তিনি তেইশটি টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন।

১৯৩৫-৩৬ মৌসুমে এরল হোমসের নেতৃত্বাধীন দলের সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া সফরে যান ও সফলতার পরিচয় দেন। প্রস্তুতিমূলক খেলাগুলোয় সহস্রাধিক রান তুলেন। কিন্তু, ১৯৩৬-৩৭ মৌসুমে টেস্ট সফরে তেমন ভালো খেলেননি। স্বাভাবিক স্ট্রোক প্লের পরিবর্তে রক্ষণাত্মক ভঙ্গীমায় খেলাই এর জন্য দায়ী ছিল। ১৯৩৭ সালে ঘরোয়া ক্রিকেট চমৎকারভাবে অতিবাহিত করেন। তিনটি দ্বি-শতকসহ আড়াইহাজারের অধিক রান তুলেন। মৌসুমের শুরুতে দ্রুততম সেঞ্চুরি করার প্রেক্ষিতে ওয়াল্টার লরেন্স ট্রফি লাভ করেন তিনি। এক ঘণ্টারও কম সময় ১১৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। পর্বতসম রানের লক্ষ্যমাত্রায় কেন্টকে পরাজিত করে তার দল। ঘরোয়া ক্রিকেটে অসামান্য ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের ফলে ১৯৩৮ সালে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটারের মর্যাদা পান জো হার্ডস্টাফ।

টেস্ট খেলায়ও তার এ রান সংগ্রহের ধারা অব্যাহত থাকে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৭০ গড়ে ৩৫০ রান তুলেন। তবে, ১৯৩৮ সালে প্রথম দুই টেস্টে তাকে একাদশের বাইরে রাখা হয়। ওভালে লেন হাটনের গড়া বিশ্বরেকর্ডের সাথে তিনি করেন ১৬৯ রান। বিস্ময়করভাবে ১৯৩৮-৩৯ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে তাকে নেয়া হয়নি। কিন্তু, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবার পূর্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্ট সিরিজে অংশ নিয়েছিলেন।

যুদ্ধের ফলে অন্যান্যদের ন্যায় তাকেও বেশ মাশুল গুণতে হয়েছিল। ক্রিকেটের প্রচলন শুরু হলে ১৯৪৬ সালে ভারতের বিপক্ষে অপরাজিত দ্বিশতকের ইনিংস খেলেন। ১৯৪৬-৪৭ মৌসুমে এমসিসি দলের সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া সফরে যান। কিন্তু, আঘাতের কারণে একটিমাত্র টেস্ট খেলেন ও প্রথম ইনিংসে ৬৭ রান তুলেছিলেন।

ব্যক্তিত্বের সংঘাত

১৯৪৭-৪৮ মৌসুমে গাবি অ্যালেনের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দলের সদস্য হিসেবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ গমন করেন। কিন্তু, ব্যক্তিত্বের সংঘাতে কেউ চোখে চোখ রাখতেন না। দেশে ফিরে আসার পর অ্যালেন তাকে আর কোন টেস্ট না খেলার ঘোষণা দেন। এর জবাবে হার্ডস্টাফ ১০০-১ বাজী ধরেন ও পাঁচ পাউন্ডের অর্থের পিছনে তা লিখে রাখেন। হার্ডস্টাফকে ঐ গ্রীষ্মে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অ্যাশেজ সিরিজের প্রথম টেস্টে খেলানো হয়নি। ৫০০ পাউন্ডের একটি চেক গ্রহণ করে পরবর্তীতে অ্যালেনের কাছে ডাকযোগে ফিরিয়ে দেন। এরপর আর তাকে ইংল্যান্ডের পক্ষে খেলতে দেখা যায়নি।

কাউন্টি ক্রিকেটে ঠিকই মহাশক্তিধরের ভূমিকায় আসীন ছিলেন জো হার্ডস্টাফ। ১৯৪৭ সালে ৬৪.৭৫ গড়ে ২,৩৯৬ রান তুলেন। টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের বছরে ৪৬.৭৪ গড়ে ১,৬৩৬ রান করেছিলেন। ১৯৪৯ সালে ৭২.৬১ গড়ে ২,২৫১ রান তুলে জাতীয় পর্যায়ে শীর্ষস্থানে ছিলেন। গণমাধ্যমে তাকে জাতীয় দলে খেলার জন্য প্রচারণা চালানো হলেও অ্যালেনের প্রভাবে তা আর হয়ে উঠেনি।

অবসর

১৯৫৫ সালে হার্ডস্টাফ অবসর গ্রহণ করেন। এ সময়ে ৪৪.৩৫ গড়ে প্রায় ৩২,০০০ রান সংগ্রহ করেন। এরফলে নটিংহ্যামশায়ারের ক্রিকেটের ইতিহাসে অন্যতম সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী ছিলেন। নিজ কাউন্টি দল ব্যতীত অন্য সকল কাউন্টি দলের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করার কৃতিত্ব প্রদর্শন করেন। সর্বমোট তিরাশিটি সেঞ্চুরির মধ্যে দশটি দ্বি-শতক ছিল। তেরো মৌসুমে সহস্রাধিক রান করেছিলেন। তিনবার মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের (এমসিসি) সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া, একবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুদ্ধের পর নিউজিল্যান্ডে দুই মৌসুম প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন তিনি।

আউটফিল্ডার হিসেবে ক্ষিপ্রগতিতে ফিল্ডিংয়ে সুনাম ছিল তার। এছাড়াও, অদ্ভুত ধরনের মিডিয়াম পেস বোলিং করে ৩৬ উইকেট পেয়েছেন। ক্রিকেট সংবাদদাতা কলিন বেটম্যান তার সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন যে, জো হার্ডস্টাফ ক্রিকেট মাঠে পায়ের কারুকাজ দেখিয়ে অন্যতম সেরা ধ্রুপদী ব্যাটসম্যান হিসেবে স্মরণীয় করে রেখেছেন নিজেকে। কিন্তু, গাবি অ্যালেনের সাথে বাদানুবাদের খেসারত হিসেবে বেশ চড়ামূল্য গুণতে হয়েছিল।

ব্যক্তিগত জীবন

হার্ডস্টাফের পুত্র তৃতীয় জো হার্ডস্টাফ প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ফ্রি ফরেস্টার্সের পক্ষে খেলেছেন ও পরবর্তীকালে মিডলসেক্সের সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।

১ জানুয়ারি, ১৯৯০ তারিখে ৭৮ বছর বয়সে নটিংহ্যামশায়ারের ওয়ার্কসপ এলাকায় জো হার্ডস্টাফের দেহাবসান ঘটে।

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Tags:

ক্রিকেটার, জন্ম ১৯১১ জো হার্ডস্টাফ প্রারম্ভিক জীবনক্রিকেটার, জন্ম ১৯১১ জো হার্ডস্টাফ টেস্ট ক্রিকেটক্রিকেটার, জন্ম ১৯১১ জো হার্ডস্টাফ ব্যক্তিত্বের সংঘাতক্রিকেটার, জন্ম ১৯১১ জো হার্ডস্টাফ অবসরক্রিকেটার, জন্ম ১৯১১ জো হার্ডস্টাফ ব্যক্তিগত জীবনক্রিকেটার, জন্ম ১৯১১ জো হার্ডস্টাফ তথ্যসূত্রক্রিকেটার, জন্ম ১৯১১ জো হার্ডস্টাফ বহিঃসংযোগক্রিকেটার, জন্ম ১৯১১ জো হার্ডস্টাফNottinghamshire County Cricket Clubইংরেজি ভাষাইংল্যান্ড ক্রিকেট দল

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

বায়ুদূষণবাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকাদেশ অনুযায়ী ইসলামইলেকট্রন বিন্যাসআব্দুল হামিদআহসান মঞ্জিলবাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, ২০২৩বিভিন্ন দেশের মুদ্রাবিবাহঅ্যান মারিইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডজসীম উদ্‌দীনইসলামে যৌনতাস্লোভাক ভাষাগুপ্ত সাম্রাজ্যশশাঙ্কহিরো আলমএইচআইভিসজনেহনুমান (রামায়ণ)পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমহরমোনবাংলাদেশী টাকাসাঁওতালনেপালইজিও অডিটরে দা ফিরেনজেফাতিমাদেব (অভিনেতা)ণত্ব বিধান ও ষত্ব বিধানজুবায়ের জাহান খানআল-আকসা মসজিদব্রিটিশ রাজের ইতিহাসপিপীলিকা (অনুসন্ধান ইঞ্জিন)আরবি বর্ণমালাজিৎ অভিনীত চলচ্চিত্রের তালিকাগাণিতিক প্রতীকের তালিকাকাজী নজরুল ইসলামের রচনাবলিআইনজীবীচাঁদমরক্কো জাতীয় ফুটবল দলসিংহবাংলাদেশের নদীর তালিকাজামালপুর জেলাপ্রধান পাতামাটিবাংলাদেশ বিমান বাহিনীভারতজোয়ার-ভাটাগঙ্গা নদীবাংলাদেশের পদমর্যাদা ক্রমসুন্দরবনমুহাম্মাদের বংশধারাকক্সবাজারমৌলিক পদার্থইক্বামাহ্‌প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়সেন্ট মার্টিন দ্বীপকম্পিউটার কিবোর্ডস্বাস্থ্যের উপর তামাকের প্রভাবসমকামিতাঋগ্বেদইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মাদ বিন বখতিয়ার খলজিভ্লাদিমির পুতিননীল তিমিরনি তালুকদারসিপাহি বিদ্রোহ ১৮৫৭অভিমান (চলচ্চিত্র)বাংলাদেশ ছাত্রলীগনামাজের নিয়মাবলীসাহাবিদের তালিকাবঙ্গাব্দকালীক্রিকেটশিল্প বিপ্লবদ্বিঘাত সমীকরণনরেন্দ্র মোদীসজীব ওয়াজেদঅনুসর্গ🡆 More