আইগুনের চুক্তি

আইগুনের চুক্তি (রুশ: Айгунский договор; প্রথাগত চীনা: 璦琿條約; সরলীকৃত চীনা: 瑷珲条约; ফিনিন: Àihún Tiáoyuē) ছিল ১৮৫৮ সালে রুশ সাম্রাজ্য ও চীনের চিং রাজবংশের মধ্যকার সুদূর পূর্ব রাশিয়া ও মাঞ্চুরিয়া (মাঞ্চু জাতির পৈতৃক জন্মভূমি) তথা বর্তমান উত্তরপূর্ব চীনের আধুনিক সীমান্ত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে স্বাক্ষরিক একটি ঐতিহাসিক চুক্তি। এই চুক্তির ফলে স্ট্যানোভয় পর্বতমালা ও আমুর নদীর মধ্যকার ভূমি চীনের চিং থেকে রুশ সাম্রাজ্যে স্থানান্তরিত হওয়ার মধ্য দিয়ে নারচিন্সকের চুক্তি (১৬৮৯) বাতিল হয়ে যায়। রাশিয়া মাঞ্চুরিয়া থেকে ৬,০০,০০০ বর্গকিলোমিটার (২,৩১,৬৬০ মা২) ভূমি প্রাপ্ত হয়। যদিও ছিং সরকার প্রাথমিকভাবে চুক্তির বৈধতা স্বীকার করতে অস্বীকার করেছিল, আইগুন চুক্তির অধীনে রাশিয়ার দাবী ১৮৬০ সালের চীন-রাশিয়ান কনভেনশন অফ পিকিং এর অংশ হিসাবে নিশ্চিত করা হয়।

আইগুনের চুক্তি
আইগুনের চুক্তি
১৭-১৯শ শতাব্দীর রুশ-চীনা সীমান্তে পরিবর্তন
চীনা নাম
ঐতিহ্যবাহী চীনা 璦琿條約
সরলীকৃত চীনা 瑷珲条约
রুশ নাম
রুশАйгунский договор
রোমানীকরণAygunskiy dogovor

পটভূমি

রাশিয়ার দ্বিতীয় ক্যাথেরিনের আমলে (১৭৬২ – ১৭৯৬), রাশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরে নৌ শক্তি হতে চেয়েছিল। তারা তা অর্জন করতে কামচাতকা উপদ্বীপ দখল করে ১৭৪০ সালে পেট্রোপাভলভস্ক-কামচাটস্কিতে একটি নৌ ফাঁড়ি নির্মাণ করে, রুশ আলাস্কায় ও আমুর নদীর জলাশয়ের নিকট নৌ ফাঁড়ি রুশদের সেখানে গিয়ে বসতি স্থাপন ও আমুর অঞ্চলে শক্ত সামরিক উপস্থিতি তৈরি করতে উৎসাহিত করে। চীন কখনো এই অঞ্চলে কার্যকরীভাবে শাসন বা আঞ্চলিক সমীক্ষা পরিচালনা করেনি এবং রুশদের এই কার্যকলাপগুলো তারা লক্ষ্য করেনি।

১৮৫০ থেকে ১৮৬৪ সালে চীন তাইপিং বিদ্রোহে লড়াইয়ে ব্যস্ত ছিলো, সুদূর পূর্ব রাশিয়ার গভর্নর-জেনারেল নিকোলাই মুরাভিয়েভ অতীত বসতিস্থাপনের ভিত্তিতে আমুরের উপর বৈধ রুশ নিয়ন্ত্রণ জারি করতে মঙ্গোলিয়ামাঞ্চুরিয়ার সীমান্তে দশ হাজার পদাতিক বাহিনী নিয়ে সামরিক শিবির স্থাপন করে। যখন এটা স্পষ্ট হয়ে গেল যে চীন দ্বিতীয় আফিম যুদ্ধে হেরে যাচ্ছে তখন মুরাভিয়েভ সেই সুযোগ লুফে নেয় এবং চীনের বিরুদ্ধে আরেকটি যুদ্ধের আয়োজন করে তাদের হুমকির মুখে ফেলে দেয়। চিং রাজবংশ রাশিয়ার সাথে আলোচনায় যেতে রাজি হয়।

চুক্তি স্বাক্ষর

দুই অঞ্চলের সামরিক গভর্নর রুশ প্রতিনিধি নিকোলাই মুরাভিয়েভ এবং চিং প্রতিনিধি ইশান চুক্তিটি আইগুন শহরে ১৮৫৮ সালের ২৮ মে তারিখে স্বাক্ষর করে।

ফলাফল

চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে আমুর নদীর তীরে রুশ ও চীনা সাম্রাজ্যের মধ্যকার একটি সীমান্ত স্থাপিত হয়। (হেইলংজিয়াং নদীর পূর্বে চৌষট্টিটি গ্রামের চীনা ও মাঞ্চু অধিবাসীরা মাঞ্চু সরকারের অধীনে সেখানে বাস করার অনুমতি পেয়েছিলো।) আমুর, সুনগারি, এবং উসসুরি নদীগুলো শুধুমাত্র চীনা ও রুশ জাহাজগুলোর জন্য খোলা ছিলো। পশ্চিমে উসসুরি, উত্তরে আমুর এবং পূর্ব ও দক্ষিণে জাপান সাগর পরিবেষ্টিত অঞ্চলটি রাশিয়া ও চীন যৌথভাবে পরিচালিত করত যা ১৮১৮-এর চুক্তির ব্রিটিশ ও মার্কিনদের ওরেগন অঞ্চল পরিচালনার "যুগ্ম শাসন" ব্যবস্থার মত ছিল (দুই বছর পর রাশিয়া এই ভূখণ্ডের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ লাভ করে)।

  1. আমুর, সুঙ্গারি এবং উসুরি নদীর তীরবর্তী বাসিন্দাদের একে অপরের সাথে ব্যবসা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
  2. রুশরা বইয়ের রুশ ও মাঞ্চু অনুলিপি এবং চীনা মাঞ্চু ও মঙ্গোলীয় অনুলিপি ধরে রাখতো।
  3. সীমান্তে বাণিজ্যের ওপর থেকে সব নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছিলো।

চীনের উপলব্ধি

চীনে ১৯২০ এর দশকে চীনা জাতীয়তাবাদ এবং সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী আন্দোলনের উত্থানের পরে,[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] এই চুক্তিকে একটি সমতাহীন চুক্তি হিসেবে দেখা হয়েছিলো।

আরও দেখুন

  • পিকিং এর সম্মেলন
  • আমুর অধিগ্রহণ
  • চীন-রুশ সীমান্ত সংঘাত
  • বহিঃ মাঞ্চুরিয়া
  • সমতাহীন চুক্তি
  • এশিয়ায় পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদ

তথ্যসূত্র

Tags:

আইগুনের চুক্তি পটভূমিআইগুনের চুক্তি চুক্তি স্বাক্ষরআইগুনের চুক্তি ফলাফলআইগুনের চুক্তি চীনের উপলব্ধিআইগুনের চুক্তি আরও দেখুনআইগুনের চুক্তি তথ্যসূত্রআইগুনের চুক্তিআমুর নদীছিন রাজবংশপ্রথাগত চীনা অক্ষরসমূহফিনিনমাঞ্চুরিয়ারুশ ভাষারুশ সাম্রাজ্যসরলীকৃত চীনা অক্ষর

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

বিপন্ন প্রজাতিযকৃৎপ্রথম উসমানসোডিয়াম ক্লোরাইডনেইমারআফতাব শিবদাসানিরাম নবমীবাল্যবিবাহতাল (সঙ্গীত)সজীব ওয়াজেদসুভাষচন্দ্র বসুগেরিনা ফ্রি ফায়ারবাংলাদেশের মেডিকেল কলেজসমূহের তালিকাভূগোলকাজী নজরুল ইসলামইব্রাহিম (নবী)বুধ গ্রহআরবি বর্ণমালাইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগবাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীবাংলাদেশ রেলওয়েক্যান্টনীয় উপভাষাশেখ মুজিবুর রহমানপশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত ব্যবস্থাবাংলাদেশের পোস্ট কোডের তালিকামাযহাবজীবাশ্ম জ্বালানিখালেদা জিয়াবাংলা বাগধারার তালিকাতারাইহুদি ধর্মবাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রমিয়োসিসস্ক্যাবিসপিপীলিকা (অনুসন্ধান ইঞ্জিন)দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধশ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়হান্স ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডারসনবিভিন্ন ধর্ম ও বিশ্বাসের তালিকাবাংলাদেশের বিভাগসমূহজনসংখ্যা অনুযায়ী সার্বভৌম রাষ্ট্র ও নির্ভরশীল অঞ্চলসমূহের তালিকামামুনুর রশীদরূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রইউরোপবৃহস্পতি গ্রহঅশ্বগন্ধাবাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরকুমিল্লাআমাশয়ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানএ. পি. জে. আবদুল কালামবিশ্বের ইতিহাসআর্যমানব মস্তিষ্কপায়ুসঙ্গমঅশোক (সম্রাট)পৃথিবীর ইতিহাসজরায়ুবঙ্গভঙ্গ (১৯০৫)মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্রইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডইসলামি সহযোগিতা সংস্থাগীতাঞ্জলিমৌলিক সংখ্যাআবহাওয়াগানা ডট কমকুরাসাও জাতীয় ফুটবল দলযতিচিহ্নশশাঙ্কচট্টগ্রামনিউমোনিয়ামক্কাঅনুসর্গদুর্গাপূজাসিরাজউদ্দৌলামৃত্যু পরবর্তী জীবনফিতরাইতিহাসবাবর🡆 More