হারম্যান জোসেফ মুলার

হারম্যান জোসেফ মুলার (২১ ডিসেম্বর ১৮৯০ - ৫ এপ্রিল ১৯৬৭) ছিলেন একজন মার্কিন জিনতত্ত্ববিদ, শিক্ষক ও নোবেল বিজয়ী। তিনি তেজস্ক্রিয় বিকিরণের ক্ষতিকর শারীরিক ও জিনগত প্রভাবের উপর তার করা কাজের জন্য খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। স্পষ্টবাদী রাজনৈতিক বক্তা হিসেবেও তার সুনাম ছিল। মুলার পারমাণবিক যুদ্ধ ও পারমাণবিক পরীক্ষার তেজস্ক্রিয় প্রভাব সম্পর্কে অবহিত ছিলেন।

হারম্যান জোসেফ মুলার

ForMemRS
হারম্যান জোসেফ মুলার
হারম্যান জে মুলার ১৯৫২ সালে বিশ্ব বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী সম্মেলনে বক্তৃতা দিচ্ছেন
জন্ম(১৮৯০-১২-২১)২১ ডিসেম্বর ১৮৯০
নিউ ইয়র্ক সিটি, যুক্তরাষ্ট্র
মৃত্যু৫ এপ্রিল ১৯৬৭(1967-04-05) (বয়স ৭৬)
ইন্ডিয়ানাপোলিস, ইন্ডিয়ানা, যুক্তরাষ্ট্র
জাতীয়তাযুক্তরাষ্ট্র
মাতৃশিক্ষায়তনকলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়
পরিচিতির কারণতেজস্ক্রিয় বিকিরণের জিনগত প্রভাব
দাম্পত্য সঙ্গী
  • জেসি মেরি জ্যাকবস (m. 1923)
  • ডরোথিয়া কান্তোরোভিজ (m. 1939)
সন্তান
পুরস্কার১৯২৭
  • Newcomb Cleveland Prize
  • 1946 Nobel Prize in Physiology or Medicine
  • Linnean Society of London's Darwin–Wallace Medal (1958)
  • Foreign Member of the Royal Society
  • 1963 Humanist of the Year (American Humanist Association)
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্রবংশগতিবিদ্যা , আণবিক জীববিদ্যা
ডক্টরাল উপদেষ্টাথমাস হান্ট মর্গান
ডক্টরেট শিক্ষার্থীএইচ বেন্টলি গ্লাস
যাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেনজে টি প্যাটারসন

প্রারম্ভিক জীবন

হারম্যান জোসেফ মুলার নিউ ইয়র্ক শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ফ্রান্সেস (লিওনস) ও হারম্যান জোসেফ মুলার সিনিয়রের সন্তান। মুলার সিনিয়র একজন শিল্পী ছিলেন, যিনি ধাতু নিয়ে কাজ করতেন। তিনি একজন তৃতীয় প্রজন্মের আমেরিকান ছিলেন, যার বাবার পূর্বসূরিরা ক্যাথলিক ছিলেন। তারা কোবলেঞ্জ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আগমন করেন। তার মায়ের পরিবার মিশ্র ইহুদি (পর্তুগিজ ও স্পেনীয় বংশোদ্ভূত ইহুদিদের সন্তান) এবং ইংরেজ পটভূমি হতে আগত এবং ব্রিটেনের প্রাক্তন বাসিন্দা ছিল। হার্বার্ট জে মুলার ও আলফ্রেড ক্রোবার তার চাচাতো ভাই। শুরুতে মুলার নিজেকে একত্ববাদী চার্চের সদস্য ছিলেন, এবং নিজেকে সর্বেশ্বরবাদী বিবেচনা করতেন। তবে উচ্চবিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালীন তিনি নিরীশ্বরবাদে দীক্ষিত হন। বিদ্যালয়ে পড়ার সময় তিনি অসাধারণ প্রতিভার পরিচয় দেন। ১৬ বছর বয়সে তিনি কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। প্রথম সেমিস্টার থেকেই তিনি জীববিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন। তিনি বিশ্বাস করতে শুরু করেন, মেন্ডেলের ক্রোমোজোমীয় বংশগতিবিদ্যা এবং জিনগত পরিবৃত্তি ও প্রাকৃতিক নির্বাচন বিবর্তনের ভৌত ভিত্তি। তিনি একটি জীববিজ্ঞান ক্লাব গঠন করেন। জীববিজ্ঞান ও সমাজের আন্তঃসম্পর্ক সর্বদাই তার চিন্তাকে প্রভাবিত করত। মুলার ১৯১০ সালে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।

স্নাতকোত্তর পর্যায়ে মুলার কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়েই লেখাপড়া করেন।আলফ্রেড স্টুর্টভ্যান্ট ও ক্যালভিন ব্রিজেস তার জীববিজ্ঞান ক্লাবে যোগদান করার পর ফলের মাছি বা ড্রসোফিলা ব্যবহার করে বংশগতীয় অধ্যয়নে মুলার আগ্রহী হয়ে ওঠেন। থমাস হান্ট মর্গান এর অন্যতম প্রবক্তা হিসেবে স্বীকৃত। ১৯১১-১২ সালে কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিপাক নিয়ে পড়লেও কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাকার্যে হারম্যান যুক্ত ছিলেন।

কর্মজীবন

১৯১৪ সালে জুলিয়ান হাক্সলে উইলিয়াম মার্শ রাইস ইনস্টিটিউটে মুলারকে চাকরি করার আহবান জানান। পিএইচডি ডিগ্রি লাভের জন্য মুলার ১৯১৫-১৯১৬ সালে হিউস্টন অবস্থান করেন। ১৯১৮ সালে হুগো ডি ভ্রাইস এর বিবর্তন তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে হারম্যান মুলার Oenothera larmarckiana-এর বৈশিষ্ট্যের নাটকীয় পরিবর্তনসম্পর্কিত ব্যাখ্যা প্রদান করেন। পরিবৃত্তির হার ও বিষাক্ত পরিবৃত্তি নিয়ে হারম্যান আগ্রহী হয়ে ওঠেন। ১৯১৮ সালে তিনি কলাম্বিয়া প্রত্যাবর্তন করেন।

সেখানে মুলার এডগার অল্টেনবুর্গের সাথে বিষাক্ত পরিবৃত্তির বৈশিষ্ট্য অধ্যয়নে গবেষণা করেন। এজন্য তাদের নারী মাছির সন্তানদের লিঙ্গানুপাত নির্ণয় করতে হয়। তারা ভবিষ্যদ্বাণী করেন, এক্স ক্রোমোজোমে হ্রাসকৃত পরিবৃত্তির কারণে এই লিঙ্গানুপাত ১:১ হবে না। ১৯১৯ সালে মুলার ক্রসিং ওভার (দুটি ক্রোমাটিডের মধ্যে অংশের বিনিময়) রোধকারী পরিবৃত্তি উপাদান আবিষ্কার করেন। ১৯২০ সালের গ্রীষ্মকালে মুলার টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন। ১৯৩২ পর্যন্ত তিনি সেখানেই কর্মরত ছিলেন।

১৯২৬ সালে মুলার রঞ্জনরশ্মির পরিবৃত্তি আবিষ্কার করেন। এটি জীববিজ্ঞানের অগ্রগতিতে নাটকীয় পরিবর্তন আনয়ন করে। ১৯৩২ সালের সেপ্টেম্বরে মুলার বার্লিনে নিকোলায় রেসোভস্কির সঙ্গে কাজ করেন। ১৯৩৫ সালে মুলার ও স্ত্রীর বিবাহবিচ্ছেদ হয়।

১৯৪০ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসেন এবং আর্মহার্স্ট কলেজে যোগদান করেন। ১৯৪৬ সালে রঞ্জনরশ্মির বিবর্তন আবিষ্কারের জন্য হারম্যান নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন।

১৯৬৪ সালে হারম্যান মুলার অবসর গ্রহণ করেন।

ব্যক্তিগত জীবন

মুলারের কন্যা হেলেন জে মুলার নিউ মেক্সিকো বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক। তার ছেলে ডেভিড ই মুলার ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ছিলেন, যিনি ২০০৮ সালে মৃত্যুবরণ করেন। সাংবাদিক মিলি বেনেটের সঙ্গে মুলারের "বিশেষ সম্পর্ক" ছিল।

তথ্যসূত্র

Tags:

হারম্যান জোসেফ মুলার প্রারম্ভিক জীবনহারম্যান জোসেফ মুলার কর্মজীবনহারম্যান জোসেফ মুলার ব্যক্তিগত জীবনহারম্যান জোসেফ মুলার তথ্যসূত্রহারম্যান জোসেফ মুলার

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরবাংলাদেশী অভিনেত্রীদের তালিকাআল-আকসা মসজিদরাজনীতিদেশ অনুযায়ী ইসলামই-মেইলকাঁঠাল২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপ২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগগোলাপপদ্মা সেতুলিওনেল মেসিইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিসজনেবাংলাদেশী জাতীয় পরিচয় পত্রইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মাদ বিন বখতিয়ার খলজিসমকামিতাবাংলা শব্দভাণ্ডারদীপু মনিবাংলাদেশ ব্যাংকসত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্রবাংলাদেশের জাতীয় পতাকাআন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলওয়েবসাইটকৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাট্রাভিস হেডফিলিস্তিনমৌলিক সংখ্যাহজ্জনিউটনের গতিসূত্রসমূহবাংলাদেশের পৌরসভার তালিকাবাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধানরাধাপারমাণবিক ভরের ভিত্তিতে মৌলসমূহের তালিকাবাণাসুরঅমর সিং চমকিলাইসলামি সহযোগিতা সংস্থাআরবি ভাষাআদমভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসইসতিসকার নামাজময়মনসিংহরাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)শ্রীকৃষ্ণকীর্তনপারমাণবিক অস্ত্রধারী রাষ্ট্রসমূহের তালিকাজান্নাতুল ফেরদৌস পিয়া২০২২–২৩ নিউজিল্যান্ড পুরুষ ক্রিকেট দলের পাকিস্তান সফর (এপ্রিল ২০২৩)পানিঢাকালক্ষ্মীপ্রেমালুবাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়বিদায় হজ্জের ভাষণনিজামিয়া মাদ্রাসামোশাররফ করিমঅষ্টাঙ্গিক মার্গসরকারি বাঙলা কলেজবাঙালি হিন্দু বিবাহপাল সাম্রাজ্যতাপমাত্রাস্ক্যাবিসআমার সোনার বাংলাপলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমবাংলা লিপিতুরস্কআসমানী কিতাববঙ্গভঙ্গ আন্দোলনঈদুল আযহাহুমায়ূন আহমেদবাংলাদেশের মন্ত্রিসভাবাংলাদেশের সংবিধানের সংশোধনীসমূহরাজশাহী বিভাগদৈনিক যুগান্তররক্তের গ্রুপমানবজমিন (পত্রিকা)🡆 More