রোগবিস্তার বিজ্ঞানের আলোচনায় স্থানিক রোগ (ইংরেজি: Endemic disease) বলতে কোনও বিশেষ ভৌগোলিক অঞ্চলে বা বিশেষ জনগোষ্ঠীর মধ্যে যে রোগের সংক্রমণ বা বিস্তার বহিরাগত কোনও কারণ ব্যতীত একটি ন্যূনতম ভিত্তিস্তরে দীর্ঘকাল যাবৎ স্থিতিশীল থাকে, সেই রোগকে বোঝায়। যেমন যুক্তরাজ্যে গুটিবসন্ত রোগটি স্থানিক, কিন্তু ম্যালেরিয়া তা নয়। প্রতি বছর যুক্তরাজ্যে স্বল্পসংখ্যক ব্যক্তি ম্যালেরিয়ার রোগে আক্রান্ত হয়, কিন্তু উপযুক্ত বাহকের অভাবে (এক্ষেত্রে অ্যানোফিলিস গণের মশা) রোগটি দীর্ঘস্থায়ীভাবে জনসমষ্টির মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে না।
আবার, যদিও সাধারণভাবে বলা হয়ে থাকে যে এইডস বহুসংখ্যক আফ্রিকান দেশের একটি স্থানিক রোগ, অর্থাৎ রোগটিকে ঐসব অঞ্চলে দেখতে পাওয়া যায়, পরিভাষাটির এই ব্যবহার আসলে ভাষাগত ব্যুৎপত্তিমূলক, রোগবিস্তার বিজ্ঞানের ভাষা অনুযায়ী নয়। আফ্রিকাতে এইডস রোগীর সংখ্যা সময়েরর সাথে সাথে বৃদ্ধি পাচ্ছে, সুতরাং রোগটি স্থানিক স্থিতাবস্থায় (Endemic steady state) নেই। একারণে আফ্রিকাতে এইডস রোগের বিস্তারের ঘটনাটিকে মহামারী এমনকি বৈশ্বিক মহামারী বা বিশ্বমারী নামেও অভিহিত করা যেতে পারে।
যদি কোনও স্থানিক রোগের বিস্তার ব্যক্তি-থেকে-ব্যক্তিতে রোগ সংবহনের উপরে নির্ভর করে, তাহলে ঐ রোগে আক্রান্ত প্রতিটি ব্যক্তিকে অবশ্যই গড়ে আরও একটি ব্যক্তিতে রোগটিকে ছড়িয়ে দিতে হবে। যদি অনুমান করা হয় যে, সংশ্লিষ্ট জনসমষ্টি সম্পূর্ণ ঝুঁকিপ্রবণ, তাহলে রোগটির সংক্রমণের মৌলিক জনন সংখ্যার (R0 "আর নট") মান অবশ্যই ১ হতে হবে। যদি কোনও জনগোষ্ঠীতে কিছু অনাক্রম্য ব্যক্তি উপস্থিত থাকে, তাহলে মৌলিক জনন সংখ্যাকে কোনও জনসমষ্টিতে ঝুঁকিপ্রবণ ব্যক্তিদের ভগ্নাংশ (S) দিয়ে গুণ করলে গুণফলকে অবশ্যই ১ হতে হএব। এই হিসাবে ঝুঁকিপ্রবণ প্রতিটি ব্যক্তির রোগে সংক্রমিত হবার সম্ভাবনা গণনায় ধরা হয়, এবং এভাবে জনসমষ্টির অনাক্রম্য খাতটিকে ধর্তব্যের বাইরে রাখা হয়। সুতরাং, স্থানিক স্থিতাবস্থা-য় থাকা রোগের জন্য:
এভাবে সংক্রমণ কখনোই শেষ হয় না, কিন্তু একই সাথে সংক্রমিত রোগীর সংখ্যাও সূচকীয় হারে বৃদ্ধি পায় না এবং বলা হয় যে রোগটি স্থানিক স্থিতাবস্থায় বিরাজ করছে। যে রোগটি একটি মহামারী হিসেবে শুরু হয়, সেটি শেষ পরিণামে বন্ধ হয়ে যেতে পারে (তবে তাত্ত্বিকভাবে পূর্বাভাসযোগ্য চক্রাকার উপায়ে এটি আবার ফেরত আসার সম্ভাবনাও থাকে) কিংবা সেটি স্থানিক স্থিতাবস্থায় পৌঁছাতে পারে। এ ব্যাপারটি বেশ কিছু নিয়ামকের উপরে নির্ভরশীল, যাদের মধ্যে রোগটির সংক্রমণ প্রাবল্য (Virulence) এবং সংবহনের পদ্ধতি উল্লেখ্য।
যদি কোনও রোগ কোনও প্রদত্ত জনসমষ্টিতে স্থানিক স্থিতাবস্থায় বিরাজ করে, তাহলে উপরোল্লিখিত গাণিতিক সম্পর্কটি আমাদেরকে রোগটির মৌলিক জনন সংখ্যা নির্ণয় করতে সাহায্য করে। এই সংখ্যাটিকে আবার মহামারীটির জন্য নির্মিত গাণিতিক প্রতিমানে প্রবেশ করানো হতে পারে।
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article স্থানিক রোগ, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.