সিসিলীয় মাফিয়া

সিসিলীয় মাফিয়া, সাধারণ্যে মাফিয়া নামে পরিচিত, এবং এর সদস্যদের ভাষায় কজা নস্ত্রা (ইতালীয় উচ্চারণ: , আমাদের জিনিস), হলো ইতালির সিসিলি দ্বীপের একটি অপরাধচক্র। পরস্পর দৃঢ় সম্পর্কবিহীন কিন্তু অভিন্ন সাংগাঠনিক কাঠামো এবং আচরণবিধি ধারণকারী অপরাধী দলগুলোর জোটই মাফিয়া। মূল দলটাকে বলা হয় ফ্যামিলিয়া (পরিবার), ক্ল্যান বা কোসকা। প্রত্যেক পরিবারই নির্দিষ্ট একটি অঞ্চলে, সাধারণত কোনো শহর বা গ্রাম বা বড় নগরের নিকটস্থ এলাকায় (বর্গাটা), সার্বভৌমত্ব দাবি করে, যেখানে তারা তাদের র‌্যাকেট (অবৈধ অর্থের লেনদেন) চালায়। মাফিয়ার সদস্যরা নিজেদেরকে বলে সম্মানিত ব্যক্তি, তবে জনসাধারণ তাদেকে 'মাফিয়োজি' (একবচনে 'মাফিয়োসো') বলে থাকে। মাফিয়ার মূল কর্মকাণ্ড হলো প্রোটেকশন র্যাকেট, বিবাদমান অপরাধীদের মধ্যে মধ্যস্থতা করা, এবং অবৈধ অর্থ লেনদেন বা চুক্তির সমন্বয় ও দেখভাল করা।

সিসিলীয় মাফিয়া,
প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলসিসিলি
সক্রিয়১৯ শতাব্দী থেকে
বিচরনইউরোপে ইতালি, যুক্তরাজ্য এবং জার্মানি
যুক্তরাষ্ট্র
জাতিমেড ম্যান বা দীক্ষিত সদস্যরা ইতালীয়, যার অধিকাংশ সিসিলীয়
সন্ত্রাসী কর্মকান্ডর‌্যাকেটিয়ারিং, মাদক পাচার, খুন, চাঁদাবাজি, হুমকিপ্রদান, নিলাম জোচ্চুরি, কুসীদবৃত্তি, শারীরিক আক্রমণ, চোরাচালান, রাজনৈতিক দুর্নীতি, অবৈধ জুয়া, শিল্পকর্ম-চুরি, পতিতাবৃত্তি, মানি লন্ডারিং, চোরাই মালের ব্যবসা, অপহরণ, ডাকাতি
মিত্রআমেরিকান মাফিয়া, কামোরা, এনদ্রাংগেটা, কর্সিকান মাফিয়া, মেক্সিকান ড্রাগ কার্টেল, এবং পূর্বে, বান্দা দেলা ম্যাগলিয়ানা ও মালা দেল ব্রেনতা
প্রতিদ্বন্দ্বীবিভিন্ন কামোরা এবং এনদ্রাংগেটা ক্ল্যানসমূহ[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

অভিবাসনের স্রোতে কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো অনেক দেশে মাফিয়া ছড়িয়ে পড়েছে।

ব্যুৎপত্তি

মাফিয়া শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে সিসিলিতে। সিসিলীয় ভাষার বিশেষণ মাফিয়ুসু (ইতালীয়: মাফিয়োসো) শব্দটির মোটামুটি অর্থ হলো "সদম্ভে হাঁটা", তবে "বাহাদুরি" বা "নির্ভীকতা" অর্থেও ব্যবহার করা হয়। দিয়েগো গ্যামবেটার মতে ১৯ শতকে সিসিলিতে মাফিয়ুসু শব্দের স্পষ্ট কোনো অর্থ ছিল না; এটা দিয়ে বোঝাতো মাস্তান, উদ্ধত তবে একইসাথে নির্ভীক, উদ্যমী এবং গর্বিত একজনকে। মেয়েদের ক্ষেত্রে শব্দটির স্ত্রীরূপ "মাফিয়ুসা" বলতে বোঝায় সুন্দরী এবং আকর্ষণীয়। সিসিলির ত্রপানি এবং মারসালা শহরের গুহাগুলোকে সিসিলীয় ভাষায় বলে "মাফিয়ে", যেগুলা কিনা শরণার্থী এবং অপরাধীদের লুকিয়ে থাকার স্থান হিসেবে পরিচিত ছিল।

সিসিলি একসময় মুসলিম আমিরাত বা রাজ্য ছিল, তাই "মাফিয়া" শব্দটির উৎস আরবিও হতে পারে। শব্দটির সম্ভাব্য আরবি মূলগুলোর মধ্যে রয়েছে:

  • মাহয়াস (مهياص) = উদ্ধতভাবে দম্ভপ্রকাশ
  • মারফুদ (مرفوض) = প্রত্যাখ্যাত
  • মুয়াফা = নিরাপত্তা, রক্ষা
  • মা আফির = একটি আরব গোত্র যারা পালের্মো শাসন করতো।

অপরাধীদের গোপন সংঘের সাথে শব্দটা জুড়ে যায় সম্ভবত ১৮৬৩ সালের একটি মঞ্চনাটক "I mafiusi di la Vicaria" ("ভিকারিয়ার মাফিয়োজি") থেকে। গুসেপ্পে রিজোট্টো এবং গেটানো মসকা পরিচালিত নাটকটিতে মাফিয়া বা মাফিয়োজি শব্দগুলো ব্যবহৃত হয়নি, তবে একটু স্থানীয় আবহ যোগ করার জন্য নাটকের নামে ঐ শব্দটি যোগ করা হয়েছিল। নাটকটা ছিল পালের্মোর এক কারাগারের ভেতরের অপরাধচক্রকে ঘিরে, মাফিয়ার মতোই সেই চক্রে থাকে একজন বস, নতুন সদস্যদের দীক্ষাদান করা হয়, এবং "উমির্তা" (ওমের্তা বা নীরবতার নিয়ম) ও "পিজ্জো" (চাঁদাবাজির টাকা) প্রভৃতি ব্যবহৃত হয়। ইতালিতে নাটকটি অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়। কিছুদিনের মধ্যেই ইতালীয় রাজ্যসমূহের সংবাদ প্রতিবেদনে অনুরূপ ব্যাপারগুলোকে "মাফিয়া" বলে আখ্যায়িত করা হতে থাকে। তবে শব্দটির প্রথম প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবহার হয় ১৮৬৫ সালে, পালের্মোর প্রিফেক্ট ফিলিপ্পো আন্তোনিও গুয়ালতেরিওর লেখা একটি প্রতিবেদনে।

বর্তমানে অনুরূপ গঠনকাঠামো, কর্মপদ্ধতি ও স্বার্থবিশিষ্ট যেকোনো সংঘবদ্ধ অপরাধী নেটওয়ার্কের জন্য মাফিয়া শব্দটি শ্রেণিনাম হয়ে উঠেছে। অবশ্য মাফিয়াবিরোধী বিচারক জিওভান্নি ফ্যালকোনি, যিনি ১৯৯২ সালে মাফিয়াদের দ্বারা নিহত হন, সংঘবদ্ধ অপরাধ আর "মাফিয়া" দুটো বিষয়কে সাধারণত এক করে দেখার বিরুদ্ধে আপত্তি করেন:

While there was a time when people were reluctant to pronounce the word "Mafia" ... nowadays people have gone so far in the opposite direction that it has become an overused term ... I am no longer willing to accept the habit of speaking of the Mafia in descriptive and all-inclusive terms that make it possible to stack up phenomena that are indeed related to the field of organised crime but that have little or nothing in common with the Mafia.

— Giovanni Falcone, 1990

দলত্যাগী মাফিয়োসোদের কথানুসারে, মাফিয়ার প্রকৃত নাম "কোসা নস্ত্রা" ("আমাদের ব্যাপার")। ইতালীয়-আমেরিকান মাফিয়োসো জোসেফ ভালাচি ১৯৬৩ সালে ইউএস সিনেট কমিটি অন গভর্নমেন্ট অপারেশনসের পার্মাপেন্ট সাবকমিটি অন ইনভেস্টিগেশনে জবানবন্দি দেয় যা "ভালাচি শুনানি" নামে পরিচিত। সে জানায়, মার্কিন মাফিয়োসিরা তাদের সংগঠনকে বলতো কোসা ন্স্ত্রা ("আমাদের ব্যাপার" বা "আমাদের বিষয়") সেসময় নামটা যথার্থ মনে হওয়ায় এফবিআই সেটা চালু রাখে এবং সংবাদমাধ্যমও এই নাম ব্যবহার করতে থাকে। এমনকি এফবিআই কথাটার আগে পদাশ্রিত নির্দেশক লা বসিয়ে করে দেয় লা কোসা নস্ত্রা (যদিও ইতালীয় ভাষায় কোসা নস্ত্রার আগে লা যোগ করা হয় না)।

১৯৮৪ সালে মাফিয়া দলত্যাগী টমাসো বুসেটা মাফিয়াবিরোধী বিচারক জিওভান্নি ফ্যালকোনিকে জানায় যে সিসিলীয় মাফিয়াও কোসা নস্ত্রা নামটা ব্যবহার করে। "মাফিয়া" শব্দটাকে সে সাহিত্যিকদের সৃষ্টি বলে উড়িয়ে দেয়। অ্যান্টোনিনো ক্যালডেরোন এবং সালভাতর কনটর্নো প্রমুখ দলত্যাগীরাও সংঘের সদস্যদের কোসা নস্ত্রা শব্দবন্ধটি ব্যবহার করার কথা স্বীকার করে। মাফিয়োসিরা পরিচিত সদস্যদের অপরের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে বলে, সে কোসা নস্ত্রা ("আমাদের বিষয়")-এর লোক অথবা লা স্টেসা কোসা ("একই বিষয়"), অর্থাৎ "সেও তোমার মতোই একজন - মাফিয়োসো।"

ইতিহাসে দেখা যায়, সিসিলীয় মাফিয়ার পরিচয়ে আরো কিছু নাম ব্যবহৃত হয়েছে, যেমন "সম্মানিত সংঘ"। মাফিয়োসিরা নিজেদের মধ্যে "সম্মানিত ব্যক্তি" বা "মর্যাদাবান ব্যক্তি" বলে কথিত হয়।

কোসা নস্ত্রাকে ইতালির আর দশটা মাফিয়া-অনুরূপ সংঘ, যেমন কালাব্রিয়ার দ্রাংঘেটা, কাম্পানিয়ার কামোরা, বা আপুলিয়ার সাকরা কোরোনা উনিটার সাথে গুলিয়ে ফেলা যাবে না।

ইতিহাস

মাফিয়োসিরা অত্যন্ত গোপনীয়তাপ্রবণ এবং তারা নিজেদের কোনো ঐতিহাসিক দলিল রাখে না বলে কোসা নস্ত্রার উৎপত্তির রূপরেখা আবিষ্কার করা কঠিন। দেখা গেছে তারা নিজেদের অতীত সম্পর্কে বানোয়াট কাহিনী ছড়ায়, এবং কখনোবা নিজেরাই সেগুলো সত্য ভেবে বিশ্বাস করতে থাকে।

সামন্ততন্ত্র-উত্তর সিসিলি

মাফিয়ার উদ্ভব হয় ১৯ শতাব্দীতে। আধুনিক গবেষকগণের মতে ১৮১২ সালে সিসিলির সামন্ততন্ত্রের অবসানকাল এবং ১৮৬০ সালে ইতালির সিসিলি দখলের সময়েই মাফিয়ার বীজ উপ্ত হয়েছিল। সামন্ততন্ত্রে অভিজাত ব্যারনরা ছিলেন অধিকাংশ জমির মালিক এবং নিজস্ব সৈন্যদল দিয়ে তারা আইনকানুন বজায় রাখতেন। ১৮১২র পরে এই ব্যারনরা ধীরে ধীরে তাদের জমিজমা সাধারণ লোকদের কাছে বিক্রি বা ভাড়া দিয়ে দেন। এদিকে জ্যেষ্ঠাধিকার প্রথা বাতিল করা হয়, ঋণ শোধের জন্য জমি দখলেরও আর সুযোগ থাকে না এবং জমির এক-পঞ্চমাংশ চাষীদের দিয়ে দেয়া হয়। এরপর ১৮৬০ সালে ইতালি সিসিলি দখল করে এবং সেখানকার সরকারি ও চার্চের মালিকাধীন জমির বিরাট অংশ সাধারণ জনগণের মধ্যে পুনর্বণ্টন করে দেয়। যার ফলে ভূমিমালিকদের সংখ্যা অনেক বেড়ে যায় - ১৮১২-তে ২,০০০ থেকে ১৮৬০-তে হয়ে যায় ২০,০০০। ভূমিমালিকদের এরূপ বৃদ্ধি এবং ব্যবসার প্রসারের সাথে সাথে ব্যবসায়িক কোন্দলও বাড়তে থাকে। সেসব কোন্দল মিটানো, চুক্তিবদ্ধকে চুক্তি মেনে চলতে বাধ্য করা, অর্থ স্থানান্তরের সময় নজরদারি এবং সম্পত্তির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আইনপ্রয়োগকারী বাহিনীর দরকার পড়ে। এদিকে ব্যারনরা তাদের নিজস্ব রক্ষীবাহিনীগুলোকে অব্যাহতি দিয়ে দিয়েছিলেন যেন নবগঠিত রাষ্ট্র আইনপ্রয়োগের দায়িত্বটা নেয়, কিন্তু নতুন কর্তৃপক্ষ সেকাজে সক্ষম ছিলনা, পুঁজিবাদ সম্পর্কে তাদের অনভিজ্ঞতা যার জন্য প্রধানত দায়ী। আরেকটি সমস্যা ছিল লোকবলের অভাব; প্রায়ই পুরো দ্বীপে ৩৫০-এরও কম পুলিশ কাজ করতো। কোনো কোনো শহরে স্থায়ী পুলিশবাহিনীও ছিল না,কয়েক মাস পরপর কিছু সৈন্য এসে ঘুরে যেতো, আর বাকি সময়টায় অপরাধীরা নির্বিঘ্নে তাদের কর্মকাণ্ড চালাতে পারতো। সর্বোপরি ছিল দস্যুবৃত্তি- খাদ্যদ্রব্যের উচ্চমূল্য, সরকার ও চার্চের জমি হ্রাস, এবং সামন্তযুগের গণঅধিকার হারানো- ব্যাপারগুলো অনেক দরিদ্র চাষীকে চুরির পথে ঠেলে দেয়। এরূপ ক্রমবর্ধমান অপরাধ কর্মকাণ্ড, কর্তৃপক্ষের অকর্মণ্যতা, অন্যদিকে ব্যবসার বিপুল বিস্তারে সম্পত্তিমালিকরা আইনবহির্ভূত সালিশ এবং রক্ষকদের শরণাপন্ন হতে থাকে। আর এই আইনবহির্ভূত রক্ষকেরাই ক্রমে সংগঠিত হয়ে গঠন করে প্রথম মাফিয়া ক্ল্যান(গোষ্ঠী)।

যেসব ছোট শহরগুলোতে সরকারি কনস্টেবলদল থাকতো না সেখানে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা যুবকদের নিয়ে "কোম্পানী-অ্যাট-আর্মস" (companies-at-arms) বা সশস্ত্রবাহিনী গঠন করতো। এরা চোরদের ধরে আনতো এবং এদের মধ্যস্থতায় চুরি-যাওয়া সম্পদ ফেরত পাওয়া যেতো, বিনিময়ে চোরকে ক্ষমার পাশাপাশি কিছুপরিমাণ অর্থও দেয়া হতো। এই কোম্পানী-অ্যাট-আর্মস গঠন করা হতো প্রায়শই সাবেক ডাকাত বা অপরাধীদের নিয়ে, বিশেষত যারা সবচেয়ে দক্ষ এবং তেজি। এতে করে সমাজের লোকজন আলাদা পুলিশবাহিনী প্রশিক্ষণ দেয়ার ঝামেলা থেকে মুক্তি পেতো ঠিকই, কিন্তু কোম্পানীস-অ্যাট-আর্মসরা সম্ভবত তাদের পুরনো বন্ধুদের ধ্বংস করার বদলে তাদের সাথে আতাঁত করতেই বেশি পছন্দ করতো। সালভাদর লুপো এবং আরো গবেষকগণ এরকম বাহিনীগুলোকে বলেছেন "প্রোটো-মাফিয়া" বা মাফিয়ার আদিরূপ।

সিসিলীয় মাফিয়া 
১৯৯০ সালের সিসিলিতে মাফিয়ার বিস্তৃতির চিত্র। মাফিয়া-উপদ্রুত শহরগুলো লাল ফোটা দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে। দ্বীপের সমৃদ্ধ কৃষিজ অর্থনীতিবিশিষ্ট পশ্চিমাঞ্চলে মাফিয়া অধিক ক্রিয়াশীল ছিল।

সিসিলিতে মাফিয়া আগেও এবং এখনো অনেকটাই পশ্চিমাঞ্চলীয় ব্যাপার হয়ে রয়েছে। দ্বীপের পূর্বাঞ্চলে মাফিয়া কর্মকাণ্ড খুব সামান্যই ছিল। তার মানে এই নয় যে সেখানে খুনজখম কম হতো, বরং সবচেয়ে ভয়ানক লড়াইগুলোই হতো সেখানে, কিন্তু সেসবে মাফিয়া জড়িত ছিল না। সামন্ততন্ত্র হতে ধনতন্ত্রে রূপান্তরের সময় পূর্বাঞ্চলে শাসনকারী প্রভাবশালী ব্যক্তিরা অধিক সংগঠিত ও সক্রিয় ছিলেন। তারা নিজস্ব রক্ষীবাহিনী প্রতিপালন করতেন এবং মাথা-চাড়া দিয়ে ওঠা নতুন সন্ত্রাসী দলগুলোকে হয় দলে টেনেছেন নয়তো কঠোরভাবে দমন করেছেন। এছাড়াও, পূর্বাঞ্চলে জমি ছিল কম সংখ্যক বড় বড় তালুকে বিভক্ত, ফলে ভূমিমালিক (জোতদার) কম ছিল; আর তাদের বিরাট তালুকগুলো (একক মালিকানায় থাকা জমি) সবসময় পাহারা দেয়ার প্রয়োজন হতো। এমন মালিকেরা তাই সার্বক্ষণিক প্রহরী চাইতেন। পক্ষান্তরে পশ্চিমাঞ্চলে তালুকগুলো ছিল ছোট ছোট, তাই সেসব একদম অষ্টপ্রহর পাহারা দেয়ার দরকার পড়তো না। সেকারণে এসব জমিতে সার্বক্ষণিক প্রহরী রাখার বদলে কোনো মাফিয়াসোর সাথে চুক্তি করে নেওয়া মালিকদের জন্য সহজ হতো। এই অঞ্চলে একজন মাফিয়াসোর পক্ষে একইসাথে অনেকগুলো ছোটছোট তালুক নজরদারি করা সম্ভব ছিল, ফলে সে তার কাজের বিনিময়মূল্য যথেচ্ছ পরিমাণ ধার্য করার সুযোগ পেতো। আর এখানকার ভূমিমালিকরাও প্রায়শই অনুপস্থিত থাকতেন, ফলে সম্পত্তি নজরদারির সুযোগ হতো না; তাদের এই সীমাবদ্ধতাকে ব্যবহার করে মাফিয়ারা নিজেদের মূল্য আরো বাড়িয়ে তুলতো।

প্রথমযুগের মাফিয়া মূলত লেবুচাষী এবং পশুখামারীদের সাথে জড়িত ছিল, কারণ এই ক্ষেত্রগুলো বিশেষভাবে চুরি বা ক্ষয়ক্ষতির শিকার হতো, ফলে রক্ষণাবেক্ষণ ছিল অত্যন্ত জরুরি। লেবু বা কমলার বাগানগুলোয় উৎপাদন ব্যবস্থা এমন ছিল যে সহজেই অন্তর্ঘাতের শিকার হতে পারতো। একইভাবে, গবাদি পশুও সহজেই চুরি যেতো। আর চুরি-যাওয়া পশু উদ্ধারে পুলিশের চেয়ে মাফিয়াই প্রায়শ বেশি কার্যকর ছিল; উল্লেখ্য, ১৯২০ এর দশকে যেখানে অপহৃত গবাদি পশু উদ্ধারে মাফিয়ার সাফল্য ছিল ৯৫%, সেখানে পুলিশের সাফল্যের হার মাত্র ১০%।

১৮৬৪ সালে পালের্মো ন্যাশনাল গার্ডের নেতা নিকোলো তুরিসি কোলোনা তার প্রতিবেদনে এক "তস্কর সম্প্রদায়" ("sect of thieves")-এর কথা লেখেন যা কিনা সিসিলিতে পরিচরণ করতো। প্রধানত গ্রামাঞ্চলীয় এই সম্প্রদায় গঠিত হতো পশুচোর, চোরাচালানকারী, সম্পন্ন কৃষক আর তাদের রক্ষীদের নিয়ে। এছাড়া "গ্রাম থেকে উঠে আসা বুদ্ধিমান তরুণ, পালের্মোর ফসলীঅঞ্চলের ভূমিরক্ষক আর চোরাচালানিদের দলে টেনে প্রতিনিয়ত সম্প্রদায় বড় হয়ে ওঠে। আভ্যন্তরীণ ব্যবসা বা লেনদেনকারী কিছু বিশেষ লোকেরা এই সম্প্রদায়কে নিরাপত্তা দেয় এবং সম্প্রদায় তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। এই সম্প্রদায় সরকারি বাহিনী সামান্যই ভয় করে বা আদৌ করে না, কারণ এর সদস্যরা বিশ্বাস করে যে তারা সহজেই এসব এড়িয়ে যেতে পারবে।" তারা পরস্পরকে চেনার জন্য বিশেষ সংকেত ব্যবহার করতো, অর্থের বিনিময়ে নিরাপত্তাসেবা দিতো, আইনকে অবজ্ঞা করতো এবং পুলিশের প্রতি অসহযোগিতামূলক আনুগত্যবিধি - ওমের্তা ("নীরবতার নিয়ম") পালন করতো। কোলোনা তার প্রতিবেদনে সতর্ক করেছিলেন যে ইতালীয় সরকার যে নিষ্ঠুর ও বিবেচনাহীন পদ্ধতিতে অপরাধদমনের চেষ্টা করছিল তাতে উল্টো জনগণ সরকার হতে বিমুখ ও বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে এবং পরিস্থিতি খারাপতর হচ্ছে। ১৮৬৫ সালে রোমে প্রেরিত পালের্মোর প্রিফেক্টের একটি সরকারি পত্রে সর্বপ্রথম দাপ্তরিকভাবে "মাফিয়া" শব্দটি ব্যবহৃত হয়। আর ১৮৭৬ সালের একটি পুলিশ প্রতিবেদনে মাফিয়াদের দীক্ষানুষ্ঠানের সবচেয়ে পুরনো বিবরণ পাওয়া গেছে।

শুরু থেকেই মাফিয়া রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করতে থাকে, তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেয়ার জন্য ভোটারদেরকে বলপ্রয়োগ বা ভয় দেখিয়ে বাধ্য করে। সেই সময়ে সিসিলির জনগণের অল্প কিছু সংখ্যক কেবল ভোট দিতে পারত, ফলে এককভাবে একজন মাফিয়া বসই ভোটারদের বেশ বড় অংশকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারতো এবং এই প্রভাব কাজে লাগিয়ে রাজনৈতিক সুবিধা নিতে পারতো। এভাবে ইতালির চরম অস্থিতিশীল ও ভেঙে-পড়া রাজনৈতিক ব্যবস্থায় মাফিয়া-মিত্র রাজনীতিকরা দল পাকিয়ে প্রভাবশালী হয়ে উঠতো। আর মাফিয়োসিরা শাসনবিভাগে তাদের মিত্রদের ব্যবহার করে আদালতের বিচার বা সাজা এড়াতো এবং প্রতিদ্বন্দ্বীদের শায়েস্তা করতো।

১৮৯৮ এবং ১৯০০ সালের মধ্যে ধারাবাহিক অনেকগুলো প্রতিবেদনে পালের্মোর পুলিশ চীফ এরমাননো স্যানগিওরগি আটটি মাফিয়া ক্ল্যানের ৬৭০ জন মাফিয়োসোকে শনাক্ত করেন; ক্ল্যানগুলো কখনো জোটবদ্ধ হয়েছে আবার কখনো পরস্পর সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে। প্রতিবেদনে দীক্ষানুষ্ঠান এবং আচরণবিধির উল্লেখ ছিল, ছিল মাফিয়াকৃত অপরাধের বর্ণনা, যেমন জালিয়াতি, মুক্তিপণের জন্য অপহরণ, খুন, ডাকাতি, এবং সাক্ষীদের হুমকি দেয়া বা ভীতিপ্রদর্শন। মাফিয়াদের নিজস্ব তহবিল থাকতো যেখান থেকে তাদের কারাবন্দী সদস্যদের পরিবারের ভরণপোষণ এবং মামলায় উকিল নিয়োগ করা হতো। ১৮৯৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইতালীয় সৈন্যরা মাফিয়া নির্মূলকরণের উদ্দেশ্যে ৬৪ জন লোককে গ্রেফতার করে।

২০১৫ সালে দ্য ইকোনোমিক জার্নাল-এর একটি গবেষণায় সিসিলীয় মাফিয়ার উৎপত্তির কারণ হিসেবে 'রিসোর্স কার্স'অধিক প্রাকৃতিক সম্পদবিশিষ্ট দেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের বিকাশ কম হয় - এই ধারণা।কে দায়ী করা হয়েছে। প্রথমদিকে মাফিয়ার তৎপরতা সেসব পৌরএলাকায় বেশি ছিল যেগুলো ছিল সালফারে সমৃদ্ধ, যা কিনা সিসিলির সবচেয়ে মূল্যবান রপ্তানিদ্রব্য। দুর্বল রাষ্ট্রব্যবস্থা এবং লুণ্ঠনীয় প্রাকৃতিক সম্পদ এই দুয়ের ফলেই সিসিলির সালফার-সমৃদ্ধ অঞ্চলগুলো মাফিয়াজাতীয় সংগঠনের উদ্ভবের সহায়ক হয়ে ওঠে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ব্যবস্থা দুর্বল বা অনুপস্থিত এমন জায়গায় যদি মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ থাকে তবে তা রক্ষণাবেক্ষণের দরকার পড়ে (মাফিয়াজাতীয় সংগঠনগুলো তা করে থাকে) এবং চাঁদাবাজির সুযোগও তৈরি হয় (মাফিয়াজাতীয় সংগঠন এ কাজটাও করে)। ২০১৭ সালে জার্নাল অফ ইকোনোমিক হিস্ট্রিতে প্রকাশিত আরেকটি গবেষণা অনুসারে, ১৮ শতকের শেষাংশে সাইট্রাস বা লেবুজাতীয় ফল স্কার্ভি রোগ সারায় এই আবিষ্কার কমলা ও লেবুর চাহিদা বাড়িয়ে দেয়, আর এই লেবুচাষ ও রক্ষণাবেক্ষণের সাথে সিসিলীয় মাফিয়ার উৎপত্তির সম্পর্ক রয়েছে।

ফ্যাসীবাদী কর্তৃক দমন

১৯২৫ সালে, বেনিতো মুসোলিনি মাফিয়া নির্মূল করা এবং সিসিলীয় জনজীবনে ফ্যাসীবাদী নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে অভিযান শুরু করেন। মাফিয়ারা তাকে হুমকি দিয়েছিল এবং সিসিলিতে তার ক্ষমতা খর্ব করছিল, আর এই অভিযানে সফল হলে একজন নতুন নেতা হিসেবে তার প্রতিষ্ঠা এবং তার শাসনের বৈধতা পাওয়ার সুযোগ ছিল। ফ্যাসীবাদের পক্ষে এটা হতোছিল এক বড়সড় প্রচারণামূলক আলোড়ন, পাশাপাশি তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে শায়েস্তা করার একটা অজুহাত, কারণ সিসিলির অনেক রাজনীতিকেরই মাফিয়ার সাথে সম্পৃক্ততা ছিল।

১৯২৪ সালের মে মাসে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মুসোলিনি সিসিলি সফরে যান; সেখানে পিয়ানা দেই গ্রেসি শহরে মেয়র কাম মাফিয়া বস ফ্রান্সেসকো কিউচা তাকে অধ্যর্থনা জানান। একপর্যায়ে মুসোলিনির সাথে পুলিশ প্রহরীদল দেখে কিউচা অবাক হন এবং তার কানে কানে বলেন: "আপনি আমার সাথে আছেন, আপনার নিরাপত্তার দায়িত্ব আমার। এই পুলিশগুলো সাথে রাখার দরকার কী?" কিন্তু মুসোলিনি কিউচার নিরাপত্তা দেয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। এতে কিউচা মনে করেন যে তার প্রস্তাবের অমর্যাদা করা হয়েছে এবং তিনি শহরবাসীকে নির্দেশ দেন মুসোলিনির জনসভায় না যেতে। এর ফলে মুসোলিনি অপমানবোধ করেন ও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।

কিউচার ঐ অবিবেচনাপ্রসূত মন্তব্য মাফিয়ার বিরুদ্ধে মুসোলিনির যুদ্ধের অনুঘটক হিসেবে ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছে। ১৯২৫ সালের জানুয়ারিতে মুসোলিনি দৃঢ়ভাবে তার কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেন; এবং অক্টোবরে সিজেরে মোরিকে মাফিয়ার বিরুদ্ধে লড়ার জন্য বিশেষ ক্ষমতা দিয়ে পালের্মোর প্রিফেক্ট হিসেবে নিয়োগ করেন। মোরি পুলিশ, ক্যারাবিনিয়ারি এবং মিলিশিয়াদের নিয়ে একটি ছোট সৈন্যদল গঠন করেন যারা শহরে শহরে ঘুরে সন্দেহভাজনদের গ্রেফতার করতো। সন্দেহভাজনদের আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করার জন্য কখনো তাদের পরিবারকে জিম্মি করতো, তাদের সম্পত্তি বেচে দিতো, কিংবা তাদের গবাদি পশু জবাই করতো। ১৯২৮ সালের মধ্যেই ১১,০০০ সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হলো। কখনো কখনো মারধোর বা নিপীড়ন করে তাদের স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে। কিছু মাফিয়োসো যারা মাফিয়া দাঙ্গায় খরচের খাতায় ছিল তারা স্বেচ্ছায় বিচারকদের সহযোগিতা করে, সম্ভবত কোনোভাবে নিরাপত্তা পাবার ও প্রতিশোধ নেবার উদ্দেশ্যে। সাধারণত গরিব কৃষক এবং গ্যাবেলোট্টিদের (খামার ইজারাদার)বেলায় বিরুদ্ধে মাফিয়া-সম্পৃক্ততার অভিযোগগুলো প্রকাশ্যে জানানো হতো, কিন্তু বড় বড় ভূমিমালিকদের ক্ষেত্রে তা করা হতো না। অনেকসময় বহুজনকে একসাথে বা গণভাবে (en masse) বিচারের সম্মুখীন করা হয়। ১,২০০র বেশি জনকে সাজা বা কয়েদ করা হয়েছিল, এবং আরো অনেককে বিচার ছাড়াই দেশ থেকে নির্বাসিত করা হয়েছিল।

১৯২৯-এর জুনে মুসোলিনি মোরিকে রোমে ফেরার আদেশ দিলে এই অভিযান শেষ হয়। মোরি মাফিয়াকে চূড়ান্তভাবে গুঁড়িয়ে দেননি, যেমনটা ফ্যাসিবাদী গণমাধ্যম দাবি করছিল, তবে তিনি একে দমন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। মাফিয়া ইনফর্ম্যান্ট অ্যান্টোনিনো ক্যালডেরোনন স্মৃতিচারণ করেন: "সুর বদলে গেল। মাফিয়োসোদের জীবন কঠিন হয়ে উঠলো। [...] যুদ্ধের পর মাফিয়ার অস্তিত্ব ছিল না বললেই চলে। সবগুলো সিসিলীয় ফ্যামিলিই ভেঙে পড়েছিল।"

সিসিলিতে খুনের হার একদম কমে গেলো। ভূমিমালিকরা তাদের জমির ভাড়া আইনসম্মত পরিমাণ বাড়াতে সক্ষম হলো, কখনো কখনো যা ছিল পূর্বের দশ হাজার গুণ। অনেক মাফিয়োসো কানাডায় পালিয়ে গেলো, আরো বেশিসংখ্যক যুক্তরাষ্ট্রে পালালো। এদের মধ্যে কার্লো গ্যামবিনো আর জোসেফ বোনানো নিউইয়র্ক শহরে প্রভাবশালী মাফিয়া বস হয়ে উঠলো; তেমনি নিকোলো রিজোটো আর ভিটো রিজোটো কানাডার মন্ট্রিলে

ফ্যাসীবাদ-উত্তর পুনরাবির্ভাব

১৯৪৩ সালে মিত্রবাহিনীর প্রায় পাঁচ লক্ষ সৈন্য সিসিলি আক্রমণ করলো। সেই চরম বিশৃঙ্খল অবস্থায় অপরাধ প্রচুর পরিমাণ বেড়ে গেলো। অনেক বন্দী কারাগার থেকে পালিয়ে গেলো, আবার ডাকাতি শুরু হলো এবং কালোবাজার ফুলেফেঁপে উঠলো। মিত্রবাহিনী অধিকৃত সময়ের প্রথম ছয় মাস সিসিলিতে দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধ ছিল। পুলিন এবং ক্যারাবিনিয়ারি বাদে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল, এবং শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার জন্য মার্কিন দখলদারদেরকে একদম শুরু থেকে শুরু করতে হয়েছিল। যেহেতু ফ্যাসিবাদী মেয়রদের বরখাস্ত করা হয়েছিল, অ্যালাইড মিলিটারি গভর্নমেন্ট অফ অকুপাইড টেরিটোরিস (এএমজিওটি) স্বাভাবিকভাবে বদলি লোক খুঁজলো; আর এই বদলিদের অনেকে, যেমন ক্যালোজেরো ভিজ্জিনি এবং গুসেপ্পে গেনকো রুসো মাফিয়োসো ছিল বলে পরে জানা গেছে। তারা সহজেই নিজেদেরকে রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বী বলে উপস্থাপন করতো, আর তাদের সমাজতন্ত্রবিরোধী অবস্থানের কারণেও মার্কিনদের কাছে তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা বেশি ছিল। এদিকে মাফিয়া বসরা স্থানীয় লুটতরাজ করতে থাকা কিছু ডাকাত নিয়ে আবার তাদের ক্ল্যান গড়ে তোলে।

আরও দেখুন

  • মুসোলিনির আমলে সিসিলীয় মাফিয়া

তথ্যসূত্র

উৎস

বহিঃসংযোগ

টেমপ্লেট:Mafia টেমপ্লেট:Organized crime groups in Europe টেমপ্লেট:Gangs

Tags:

সিসিলীয় মাফিয়া ব্যুৎপত্তিসিসিলীয় মাফিয়া ইতিহাসসিসিলীয় মাফিয়া আরও দেখুনসিসিলীয় মাফিয়া তথ্যসূত্রসিসিলীয় মাফিয়া উৎসসিসিলীয় মাফিয়া বহিঃসংযোগসিসিলীয় মাফিয়াইতালিউইকিপিডিয়া:বাংলা ভাষায় ইতালীয় শব্দের প্রতিবর্ণীকরণসিসিলি

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসরাশিয়াইবনে বতুতাপায়ুসঙ্গমইংরেজি ভাষাপেশাসোমালিয়াঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ক্লিওপেট্রাআনন্দবাজার পত্রিকাজন্ডিসহাদিসকৃষ্ণচূড়াদুর্গাপূজাদক্ষিণ এশিয়াচন্দ্রযান-৩ছাগলইউক্রেনে রুশ আক্রমণ (২০২২-বর্তমান)জ্বীন জাতিগাজীপুর জেলারক্তশূন্যতাপরীমনিজিএসটি ভর্তি পরীক্ষাজওহরলাল নেহেরুইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসিমানব দেহ২০২২–২৩ নিউজিল্যান্ড পুরুষ ক্রিকেট দলের পাকিস্তান সফর (ডিসেম্বর ২০২২)স্মার্ট বাংলাদেশরক্তচিয়া বীজপানিলোহিত রক্তকণিকাআরসি কোলাবনলতা সেন (কবিতা)আলিফুলকৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাঢাকাশুক্রাণুওয়েবসাইটদারুল উলুম দেওবন্দউসমানীয় সাম্রাজ্যনামাজের নিয়মাবলীপহেলা বৈশাখআমার দেখা নয়াচীনব্যাংকবাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীঅভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ঋগ্বেদব্র্যাকপর্নোগ্রাফিবাউল সঙ্গীতহিন্দুধর্মপাগলা মসজিদবাংলাদেশের সংবিধানদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিকমনওয়েলথ অব নেশনসমুহাম্মাদের স্ত্রীগণউদ্ভিদবাংলাদেশের জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকার তালিকাইউরোপজীবনানন্দ দাশকনডমপেপসিসুফিয়া কামালবাংলাদেশের জাতিগোষ্ঠীদীপু মনিপশ্চিমবঙ্গের জেলাশিয়া ইসলামের ইতিহাসবাংলাদেশি কবিদের তালিকামামুনুল হকআর্দ্রতাস্বরধ্বনিমমতা বন্দ্যোপাধ্যায়হিট স্ট্রোকমেটা প্ল্যাটফর্মসবটঢাকা বিভাগ🡆 More