সায়ানোব্যাকটেরিয়া

সায়ানোব্যাকটেরিয়া /saɪˌænoʊbækˈtɪəriə/, সায়ানোফাইটা নামেও পরিচিত। এটি ব্যাকটেরিয়া-র একটি পর্ববিশেষ যা সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শক্তি আহরণ করে। এরাই একমাত্র সালোকসংশ্লেষী প্রোক্যারিওট যারা অক্সিজেন উৎপাদন করতে পারে। ব্যাকটেরিয়াটির নীল বর্ণের কারণেই এর নাম সায়ানোব্যাকটেরিয়া (গ্রিক: κυανός (কিয়ানোস) =নীল)। কখনো বা তাদেরকে নীল-সবুজ শৈবাল বলে অভিহিত করা হয়, তবে এটি সঠিক নয় কারণ সায়ানোব্যাকটেরিয়ারা প্রোক্যারিওট আর শৈবাল পদটি ইউক্যারিওট-দের জন্য বরাদ্দ।

সায়ানোব্যাকটেরিয়া
সময়গত পরিসীমা:
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
ক্ষেত্র: ব্যাকটেরিয়া
জগৎ: ইউব্যাকটেরিয়া
পর্ব: সায়ানোব্যাকটেরিয়া
রজার স্টানিয়ার, ১৯৭৩
বর্গ

২০১৪-এর হিসাব অনুযায়ী শ্রেণিবিন্যাসটি পর্যালোচনার আওতাভুক্ত

  • ক্রুকোক্কালিস
  • ক্রুকোক্কিডাইয়পসিডালিস
  • গ্লোয়েওব্যাকটেরালস
  • নস্টোক্যালিস
  • অসিল্যাটোরিয়ালিস
  • প্লিউরোক্যাপস্যালস
  • স্পাইরুলিন্যালস
  • সাইনেচকোক্কালিস
  • ইনসার্ট্যা সেডিস
    • গানফ্লিনশিয়া
প্রতিশব্দ
  • মিক্সোফাইসি ওয়ালরোথ,১৮৩৩
  • ফাইকোক্রোমাসি রাবেনহোরস্ট,১৮৬৫
  • সায়ানোফাইসি সাচস,১৮৭৪
  • স্কিজোফাইসিকোন,১৮৭৯
  • সায়ানোফাইটা স্টেইনেক, 1931
  • অক্সিফটোব্যাকটেরিয়া গিবনস ও মুরে,১৯৭৮

অন্যান্য প্রোক্যারিওটদের মত,সায়ানোব্যাকটেরিয়ার কোন মেমব্রেন-বহিরাবরণবিশিষ্ট অঙ্গাণু নেই। কোষের বহিঃ ঝিল্লির পৃথক পৃথক ভাঁজে সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় (যা সবুজ উদ্ভিদ এর চেয়ে ভিন্ন যারা সালোকসংশ্লেষণের জন্য ক্লোরোপ্লাস্ট নামক অঙ্গাণু ব্যবহার করে থাকে।) জীববিজ্ঞানীরা সাধারণভাবে একমত হয়েছেন যে, ইউক্যারিয়টদের মধ্যে যে ক্লোরোপ্লাস্টের দেখা মেলে তার উৎপত্তি অ্যান্ড্রোসিম্বোসিস প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সায়ানোব্যাকটেরিয়া থেকেই হয়েছে।

ধারণা করা হয়ে থাকে- সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ার উপজাত হিসেবে অক্সিজেন উৎপাদনের মাধ্যমে সায়ানোব্যাকটেরিয়ারা পূর্বের অক্সিজেন-স্বল্প বিজারিত বায়ুমণ্ডলকে জারিতবায়ুমণ্ডলে পরিণত করেছে। এর ফলে "পৃথিবীর মরিচা পড়া" আর বৃহৎ অক্সিজেন যোজন ক্রিয়া সংগঠিত হয়,যার ফলে জীবন গঠন ক্রিয়ায় নাটকীয় পরিবর্তন আসে আর অবাত জীব- দের বিলুপ্তি ঘনিয়ে আসে।

বর্ণনা

জীবন সময়রেখা
-৪৫০ —
-৪০০ —
-৩৫০ —
-৩০০ —
-২৫০ —
-২০০ —
-১৫০ —
-১০০ —
-৫০ —
০ —
প্রথম জল
প্রবল উল্কাবর্ষণ
প্রথম যৌন জনন
ক্যাম্ব্রিয়ান বিস্ফোরণ
পোঙ্গোলা
হিউরোনিয়ান
ক্রায়োজিনিয়ান
আন্দিয়ান
কারু
কোয়াটার্নারি
অক্ষের স্কেল: কোটি বছরসায়ানোব্যাকটেরিয়া 
বামপ্রান্তে কমলা রঙে জানা তুষার যুগ চিহ্নিত।
আরও দেখুন: মানব সময়রেখাপ্রকৃতি সময়রেখা

সায়ানোব্যাকটেরিয়ারা এক ধরনের সালোকসংশ্লেষী,নাইট্রোজেন সংবন্ধনকারী ব্যাকটেরিয়া যারা বিভিন্ন ধরনের আবাসস্থল যেমন-আর্দ্র মাটি ও পানিতে বেঁচে থাকে। তারা মুক্তজীবী হয় অথবা উদ্ভিদ বা লিচেন জেনাস পেলটিজেরা-এর কোন লিচেন গঠনকারী ছত্রাকের সাথে মিথোজীবী সম্পর্ক তৈরি করে থাকে। . তারা এককোষী থেকে ফিলামেন্টাস হয়ে থাকে এবং কলোনিগত প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত। এসব কলোনি ফিলামেন্ট, শিট এমনকি ফাঁপা বলের আকৃতি তৈরি করতে পারে। কিছু ফিলামেন্টাস প্রজাতিকে আবার কোষ এর প্রকৃতির তফাত অনুযায়ী বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা যায় যেমন-জায়মান কোষ,সাধারণ কোষ,সালোকসংশ্লেষী কোষ- যারা উৎপাদনের অনুকূল পরিস্থিতিতে গঠিত হয়ে থাকে; যেমন- অ্যাকিনেট ও জলবায়ুগত পরিবর্তন প্রতিরোধী স্পোরগুলো রূঢ় পরিবেশ-পরিস্থিতিতে উৎপন্ন হয়; আবার পুরু দেয়ালবিশিষ্ট হেটারোসিস্টসএ থাকে নাইট্রোজেনাস নামের এনজাইম,যা নাইট্রোজেন সংবন্ধন-এ মুখ্য ভূমিকা পালন করে।

=নাইট্রোজেন সংবন্ধন

হেটারোসিস্টস নামক বিশেষায়িত কোষের মাধ্যমে সায়ানোব্যাকটেরিয়া অবাত পরিবেশে বায়ুমণ্ডলের নাইট্রোজেন সংবন্ধন করতে পারে।হেটারোসিস্টস উপযুক্ত(অক্সিজেন-স্বল্প) পরিবেশেও গঠিত হতে পারে বিশেষত যখন সংবন্ধিত নাইট্রোজেন দুর্লভ হয়ে পড়ে।হেটারোসিস্ট গঠনকারী প্রজাতিগুলো নাইট্রোজেন সংবন্ধনের জন্যই বিশেষায়িত হয়ে থাকে আর তারা নাইট্রোজেন গ্যাসকে অ্যামোনিয়া (NH3), নাইট্রাইটস (No2-) অথবানাইট্রেট (No3-)রূপে সংবন্ধিত করতে পারে। পরবর্তীতে গাছপালা এসব উপাদানকে শোষণ করে এবং প্রোটিন ও নিউক্লিয়িক এসিডে রুপান্তরিত করে (জৈবগতভাবে বায়ুমণ্ডলের নাইট্রোজেন উদ্ভিদের জন্য সরাসরি উপলব্ধ নয়,ব্যতিক্রমঃ যেসব উদ্ভিদের এন্ডোসিমবায়োটিক নাইট্রোজেন সংবন্ধনকারী ব্যাকটেরিয়া আছে, বিশেষ করে ফ্যাবাসাইগোত্রের )। বিশেষ করে এরা এককোষী হয়ে থাকে।

মুক্তজীবী সায়ানোব্যাকটেরিয়াগুলো ধানক্ষেতের পানির কলামে অবস্থান করে।এপিফাইট হিসেবে সবুজ শেওলা বা ক্যারা (ক্যারোফাইট শৈবাল)-র পৃষ্ঠদেশেও এদের দেখা মেলে যেখানে তারা নাইট্রোজেন সংবন্ধন করতে পারে। (অ্যানাবেনা -র মত সায়ানোব্যাকটেরিয়া জলজ ফার্ন অ্যাজোলা)-র মিথোজীবী হিসেবে বেঁচে থাকে ও ধান রোপণের সময় জৈব সার সরবরাহ করতে পারে।

অঙ্গসংস্থানবিদ্যা

সায়ানোব্যাকটেরিয়া 
Nostoc pruniforme এর কলোনি

অনেক সায়ানোব্যাকটেরিয়াই কোষের চলৎক্ষম ফিলামেন্ট গঠন করে,যাদের হরমোগোনিয়া বলা হয়।এরা প্রধান বায়োমাস থেকে কুঁড়িতে চলে যায় এবং অন্যত্র নতুন কলোনি তৈরি করে।হরমোগোনিয়ামের কোষগুলো জায়মান অবস্থার কোষগুলোর চেয়ে পাতলা হয় ,আর চলৎক্ষম শৃঙ্খলের যে কোন প্রান্তের কোষগুলো ক্রমশ সরু হতে পারে। মূল কলোনি থেকে বিছিন্ন হতে একটি হরমোগোনিয়ামকে প্রায়শ ফিলামেন্টের নেক্রিডিয়াম নামের একটি দুর্বল কোষকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলতে হয়।

সায়ানোব্যাকটেরিয়ামের প্রতিটি স্বতন্ত্র কোষ সচরাচর পুরু,জেলাটিনধর্মী কোষ প্রাচীর দিয়ে ঘেরা থাকে। তাদের ফ্লাজেলা না থাকলেও হরমোগোনিয়া-র কিছু প্রজাতি গ্লাইডিং এর মাধ্যমে চলাচল করতে পারে। অসিল্যাটোরিয়া-র বেশ কিছু বহুকোষী ফিলামেন্টাস রূপ দুলে দুলে চলতে সক্ষম; সেক্ষেত্রে ফিলামেন্ট সামনে-পেছনে দোদুল্যমান থাকে। পানির স্তরের মাঝে কিছু সায়ানোব্যাকটেরিয়া যেমন- আর্চেয়া গ্যাসের ভেসিকল তৈরি করে ভাসমান থাকে। এসব ভেসিকল কোন অঙ্গাণুনয়, এরা লিপিড মেমব্রেনের পরিবর্তে প্রোটিন ঝিল্লি দিয়ে পরিবেষ্টিত থাকে।

বাস্তুসংস্থান

সায়ানোব্যাকটেরিয়া 
ফিজি-র সন্নিকটে সায়ানোব্যাকটেরিয়াল ব্লুম

সায়ানোব্যাকটেরিয়া প্রায় সব স্থলজ ও জলজ আবাসস্থলে পাওয়া যায়; যেমন—সমুদ্র, মিঠা পানি,স্যাঁতসেঁতে মাটি,মরুভূমি-র সাময়িকভাবে সিক্ত শিলা, অনাবৃত শিলা এমনকি দক্ষিণ মেরু দেশীয় শিলাতেও। তারা প্ল্যাঙ্কটোনিককোষ অথবা সালোকসংশ্লেষীয় জৈব ঝিল্লিগঠন করতে পারে। তাদের প্রায় সব প্রস্তর বাস্তুতন্ত্র-এ পাওয়া যায়। এদের অল্প সংখ্যক এন্ডোসিম্বিয়ন্ট- যারা লিচেন,বৃক্ষ,বিভিন্ন প্রোটিস্টঅথবা স্পঞ্জ-এ থাকে আর পোষক-কে শক্তি সরবরাহ করে। কতিপয় ছদ্মবেশ ধারণ করে শ্লথ-এর পশমের মধ্যে বসবাস করে।

জলজ সায়ানোব্যাকটেরিয়ারা তাদের বিস্তীর্ণ আর প্রকটভাবে দর্শনীয় কুঁড়ির জন্য সুপরিচিত- যা মিঠাপানিকি সামুদ্রিক পরিবেশ উভয় জায়গাতেই গঠিত হতে পারে। কুঁড়িগুলো নীল-সবুজ বর্ণ বা গাদের আকার ধারণ করতে পারে। এই কুঁড়িগুলো বিষাক্ত হতে পারে,আর প্রায়শই শনাক্ত করা গেলে বিনোদন কেন্দ্রের জল-অববাহিকা বন্ধ করে দেয়া হয়। সামুদ্রিক ব্যাকটেরিওফেজ অকোষীয় সামুদ্রিক সায়ানোব্যাকটেরিয়া-র উল্লেখযোগ্য পরজীবী

সায়ানোব্যাকটেরিয়া পুকুর আর হ্রদের স্থির পানিতে থাকতে পছন্দ করে। তাদের জীবনচক্র বিঘ্নিত হয় যখন প্রাকৃতিক বা কৃত্রিমভাবে পানি নদ বা ঝরনার স্রোতপ্রবাহ থেকে উদ্ভূত ঘোলা স্রোতের সাথে মিশে যায়। এ কারণে পানির প্রবাহ ধীরগতির না হলে সায়ানোব্যাকটেরিয়া কদাচিৎ নদীতে জন্মে। যখন ব্যাকটেরিয়া নদীতে পাওয়া যায়, তারা সচরাচর হ্রদের উজানমুখী মোহনা থেকে আসে।

যেসব ওয়াটার ইউটিলিটি পানির উৎসরূপে হ্রদ আর নদীর পানি ব্যবহার করে, তাদের জন্য পানিতে সায়ানোব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি একটি ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের বিষয়।ব্যাকটেরিয়া প্রাথমিকভাবে ফিল্টার প্লাগিং (প্রায়শ বালির বড় আস্তর বা এ ধরনের মাধ্যমের সাহায্যে)আর সায়ানোটক্সিন উৎপন্ন করে পানি পরিশোধনে নানাভাবে বাধা দিতে পারে,যে পানি ব্যবহার করলে বড় ধরনের অসুখে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে।

এদের কিছু প্রজাতি বৈশ্বিক বাস্তুসংস্থান আর অক্সিজেন চক্র-তে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখে। ক্ষুদ্র সামুদ্রিক সায়ানোব্যাকটেরিয়াম প্রোক্লোরোকক্কাস ১৯৮৬ সালে আবিষ্কৃত হয় যা উন্মুক্ত সমুদ্রের অর্ধেকের বেশি সালোকসংশ্লেষণ ঘটায়। অনেক সায়ানোব্যাকটেরিয়া সার্কাডিয়ান রিদম প্রদর্শন করে যা কেবল ইউক্যারিওটিক কোষে বিদ্যমান বলে এক সময় ধারণা করা হত।

"তর্কসাপেক্ষে সায়ানোব্যাকটেরিয়াকে পৃথিবীর সবচেয়ে সফল অণুজীব গোষ্ঠী বলা যায়। তারা জিনগতভাবে সবচেয়ে বৈচিত্র্যপূর্ণ;তারা সকল এলাকায় বিস্তীর্ণ বসতি গড়ে তুলেছে, মিঠা পানি,সামুদ্রিক আর স্থলজ বাস্তুতন্ত্রে বেশ বিস্তৃত আর তাদের সবচেয়ে চূড়ান্ত কুলুঙ্গি স্থানে যেমন- উষ্ণ প্রস্রবণ, লবণাক্ত অঞ্চল এবং অতিলবণাক্ত উপসাগরে পাওয়া যায়। ফটোঅটোট্রপিক, অক্সিজেন উৎপাদনকারী সায়ানোব্যাকটেরিয়া পৃথিবীর আদিম বায়ুমণ্ডলে বায়ুজীবী বিপাক এবং ইউক্যারিওটিক সালোকসংশ্লেষণ বিবর্তনের পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল। সায়ানোব্যাকটেরিয়া বিশ্বব্যাপী কার্বন আর নাইট্রোজেনের যোগানদাতা হিসেবে মহাসাগরের অত্যাবশ্যক বাস্তুগত কার্যকারিতা পূরণ করে।" – স্টিওয়ারট ও ফ্যালকনার

সালোকসংশ্লেষণ

সমকালীন সায়ানোব্যাকটেরিয়ারা ক্লোরোপ্লাস্ট এর এন্ডোসিম্বায়োটিক পূর্বপুরুষের বংশধর হিসেবে উদ্ভিতজগতের সাথে সম্পর্কিত। তবে এই গ্রুপের কিছু স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যও আছে।

কার্বন সংবন্ধন

সায়ানোব্যাকটেরিয়া সূর্যালোকের শক্তি ব্যবহার করে সালোকসংশ্লেষণ করে, এ প্রক্রিয়ায় আলোর শক্তি কাজে লাগিয়ে পানির অণু বিশ্লিষ্ট হয়ে অক্সিজেন, প্রোটন এবং ইলেকট্রন উৎপন্ন হয়। যেহেতু তারা জলজ অণুজীব,তারা অজৈব কার্বন (CO2 বা বাইকার্বনেট) অধিগ্রহণে সহায়তা করার জন্য সচরাচর কতিপয় কৌশল কাজে লাগায় যারা সমষ্টিগতভাবে "কার্বন ঘনীকরণ প্রক্রিয়া" হিসেবে পরিচিত।আরও নির্দিষ্ট কৌশলগুলোর একটি হল ব্যাকটেরিয়ো ক্ষুদ্রাংশগুলোর ব্যাপকমাত্রায় প্রাদুর্ভাব ঘটানো যাজ কার্বোক্সিজোমস নামে পরিচিত। এ সকল বিশতলীয় গঠন ষড়তলীয় শেল প্রোটিন দিয়ে নির্মিত হয় যা খাঁচার মত সজ্জিত হয়ে কয়েকশত ন্যানোমিটার ব্যাস গঠন করতে পারে। ধারণা করা হয় যে এ সকল কাঠামো শেলের অভ্যন্তরে CO2-সংবন্ধনকারী এনজাইম, RuBisCO,কার্বনিক এনহাইড্রাস-দের শৃঙ্খলিত করে। এ কাজে স্থানীয় CO2 এর ঘনমাত্রা বৃদ্ধি করে RuBisCO এনজাইমের কর্মদক্ষতা বাড়ানোর জন্য বিপাকীয় সঞ্চালন এর মডেল ব্যবহার করা হয়।

ইলেকট্রন ট্রান্সপোর্ট

ক্লোরোপ্লাস্ট বিশিষ্ট ইউক্যারিওটিকদের তুলনায় সায়ানোব্যাকটেরিয়ার প্লাজমা মেমব্রেন সংলগ্ন থাইলাকয়েড মেমব্রেনে কুঠুরির অভাব রয়েছে।এজন্য শ্বসনে শক্তি বিপাকে সম্পৃক্ত জটিল প্রোটিন অণুগুলো কতিপয় গতিশীল শক্তি বাহক পুল (যেমন-কুইনোন পুল, সাইটোক্রোম সি, ফেরেডোক্সিনস) ভাগাভাগি করে, যাতে করে সালোকসংশ্লেষিয় বিপাক আর শ্বসনগত বিপাক একে অন্যের ওপর ক্রিয়া করে। তাছাড়া প্রজাতিগুলোর শ্বসনতন্ত্রের মধ্যে প্রচুর বৈচিত্র্য আছে। এ কারণেই বলা যায়, গোলাপি ব্যাকটেরিয়া-র মত সায়ানোব্যাকটেরিয়ার "শাখা ইলেকট্রন পরিবহন ব্যবস্থা" রয়েছে।

পানি থেকে আহরিত উচ্চশক্তির ইলেকট্রনের বেশিরভাগ সায়ানোব্যাকটেরিয়াল কোষ নিজ প্রয়োজনে ব্যবহার করে থাকে,এর সামান্য অংশ ইলেক্ট্রোজেনিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বাইরের পরিবেশে দান করতে পারে।

সায়ানোব্যাকটেরিয়া 
Diagram of a typical cyanobacterial cell

বিপাক ও অঙ্গাণু

প্রোক্যারিওটিক হিসেবে সায়ানোব্যাকটেরিয়ার নিউক্লিয়াস বা আভ্যন্তরীণ মেমব্রেন সিস্টেম নেই। অধিকাংশ গঠনে,সালোকসংশ্লেষী অঙ্গাণুগুলো বাহ্যিক কোষঝিল্লির ভাঁজে ভাঁজে থাকে, যাকে থাইলাকয়েড বলা হয়।নীলাভ রঞ্জক ফাইকোসায়ানিন থেকে সায়ানোব্যাকটেরিয়া তার বর্ণ পেয়ে থাকে,যা তারা সালোকসংশ্লেষণের জন্য আলো ধরতে ব্যবহার করে। সাধারণভাবে, সায়ানোব্যাকটেরিয়া সালোকসংশ্লেষণের সময় পানিকে ইলেকট্রন দাতা হিসেবে ব্যবহার করে ও উপজাত হিসেবে অক্সিজেন উৎপন্ন করে। এদের কেউ কেউ হাইড্রোজেন সালফাইড-ও ব্যবহার করতে পারে যেমন- সালোকসংশ্লেষী ব্যাকটেরিয়া পার্পল সালফার ব্যাকটেরিয়া-র মধ্যে এ প্রক্রিয়া অনুসৃত হয়। ক্যালভিন চক্র-এর মাধ্যমে কার্বন ডাই অক্সাইড বিজারিত হয়ে কার্বোহাইড্রেট-এ পরিণত হয়। আদিম সায়ানোব্যাকটেরিয়ার ক্রিয়াকলাপের মধ্য দিয়েই বায়ুমণ্ডলের বিপুল পরিমাণ অক্সিজেন প্রথম উৎপন্ন হয়েছে বলে বিবেচনা করা হয়। তাদেরকে প্রায়শই অন্যান্য জীবগোষ্ঠী যেমন- ছত্রাক (লিচেন),কোরাল, টেরিডোফাইট, অ্যাজোলা,এনজিওস্পারম,গুননেরা ইত্যাদির সাথে মিথোজীবী সম্পর্ক করতে দেখা যায়।

রেফারেন্স

বহিঃসংযোগ

টেমপ্লেট:CC-notice টেমপ্লেট:প্ল্যাঙ্কটন টেমপ্লেট:অণুজীব টেমপ্লেট:ব্যাকটেরিয়া শ্রেণিবিন্যাস

Tags:

সায়ানোব্যাকটেরিয়া বর্ণনাসায়ানোব্যাকটেরিয়া =নাইট্রোজেন সংবন্ধনসায়ানোব্যাকটেরিয়া বাস্তুসংস্থানসায়ানোব্যাকটেরিয়া সালোকসংশ্লেষণসায়ানোব্যাকটেরিয়া রেফারেন্সসায়ানোব্যাকটেরিয়া আরও পড়ুনসায়ানোব্যাকটেরিয়া বহিঃসংযোগসায়ানোব্যাকটেরিয়া

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

ইডেন গার্ডেন্সবাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিপৃথিবীর বায়ুমণ্ডলজাহাঙ্গীর আলম (রাজনীতিবিদ)ইন্দোনেশিয়ামৌলসমূহের ইলেকট্রন বিন্যাস (উপাত্ত পাতা)ছয় দফা আন্দোলনবেলি ফুলযক্ষ্মাইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগআমকবিতাবিভিন্ন দেশের মুদ্রাপরমাণুকোষ (জীববিজ্ঞান)ভূমি পরিমাপমিয়া খলিফাঅষ্টাঙ্গ যোগনামাজমির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরবীর শ্রেষ্ঠলোকনাথ ব্রহ্মচারীকলকাতা উচ্চ আদালতদ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনবাংলাদেশের টেলিফোন নম্বরসমূহআল্লাহর ৯৯টি নামবাংলাদেশ ব্যাংককাঁঠালব্যঞ্জনবর্ণনির্মলেন্দু গুণপদ (ব্যাকরণ)যোনিলেহনবলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশনিউটনের গতিসূত্রসমূহফুটবল ক্লাব বার্সেলোনাবাংলাদেশী টাকাকুমিল্লাজ্যাকসন পোলকআন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসপল্লী সঞ্চয় ব্যাংকবিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সহোমিওপ্যাথিঅস্ট্রেলিয়াবাংলাদেশের জনমিতিঈসাবাংলা একাডেমিঅপু বিশ্বাসব্রাজিলবাবরআব্বাসীয় খিলাফতআবু বকরকাতারভগাঙ্কুরভারতের স্বাধীনতা বিপ্লবীদের তালিকাবৃষ্টিমুসলিমকেদারনাথ মন্দিরইসরায়েলবিকাশব্রহ্মপুত্র নদকৃষ্ণমহাভারতগাঁজা (মাদক)মাশাআল্লাহশাকিব খানবাংলাদেশের সংবিধানের সংশোধনীসমূহইসলামে যৌনতাভারতের রাষ্ট্রপতিবিশ্বের ইতিহাসপশ্চিমবঙ্গের জেলাপৃথিবীআনন্দবাজার পত্রিকামেঘনাদবধ কাব্যসৈয়দ মুজতবা আলীসিরাজগঞ্জ জেলামুসাবাংলাদেশের উপজেলার তালিকা🡆 More