ক্রীড়া সাঁতার

সাঁতার এক ধরনের জলক্রীড়া প্রতিযোগিতাবিশেষ, যাতে প্রতিযোগীরা নির্দিষ্ট দূরত্বে দ্রুত অতিক্রমণের জন্য সচেষ্ট থাকেন। যিনি সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন তিনি সর্বসমক্ষে সাঁতারু নামে অভিহিত হন। বিভিন্ন দূরত্বে ও পর্যায়ের সাঁতার প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। তন্মধ্যে ১৮৯৬ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক প্রতিযোগিতায় সাঁতারের সর্বপ্রথম অন্তর্ভুক্তি ঘটে। বর্তমানে অলিম্পিক ক্রীড়ায় ১০০ মিটার থেকে শুরু করে ১৫০০ মিটার দূরত্বের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় এবং বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ক্রীড়া হিসেবে পরিচিত। অন্যান্য সাঁতারবিষয়ক প্রতিযোগিতার মধ্যে রয়েছে - ডাইভিং, সিনক্রোনাইজড সাঁতার এবং ওয়াটার পোলো।

সাঁতার
ক্রীড়া সাঁতার
বেইজিংয়ে ২০০৮ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে ৪ × ১০০ মিটার রিলে শুরুর সময়
সর্বোচ্চ ক্রীড়া পরিচালনা সংস্থাফেদেরাসিওঁ অ্যাঁতের্নাসিওনাল্‌ দ্য নেটাশিও (ফিনা)
প্রথম প্রতিযোগিতা১৯৩০-এর দশক
বৈশিষ্ট্যসমূহ
শারীরিক সংস্পর্শনা
দলের সদস্যদল বা ব্যক্তিগত
ভেন্যুসুইমিং পুল বা উন্মুক্ত পানি
প্রচলন
দেশ বা অঞ্চলবিশ্বব্যাপী
অলিম্পিক১৮৯৬
বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ১৯৭৩
প্যারালিম্পিক১৯৬০

এ ক্রীড়াটি ফিনা বা ফেডারেশন ইন্টারনেশিওন্যাল দ্য নেটেশন কর্তৃক আন্তর্জাতিকভাবে পরিচালিত হয়। ফিনা অনুমোদিত প্রতিযোগিতা আয়োজনের জন্যে ২৫ বা ৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ক্ষুদ্র জলাশয় বা পুলের প্রয়োজন পড়ে।

ইতিহাস

প্রায় সাত হাজার বছর পূর্বেকার চিত্রে প্রস্তর যুগে সাঁতারের দৃশ্যমালা অঙ্কিত হবার দৃশ্যমালা উপস্থাপন করা হয়েছে। গিলগামেশ, ইলিয়াড, ওডিসি, বাইবেল, বিউল্ফ এবং অন্যান্য গদ্য-কাহিনীতে সাঁতারের কথা উল্লেখ রয়েছে। ১৭৭৮ সালে জার্মান ভাষার অধ্যাপক নিকোলাস ওয়াইনম্যান দ্য সুইমার অর এ ডায়ালগ অন দি আর্ট অব সুইমিং নামক সাঁতার বিষয়ক প্রথম গ্রন্থ লিখেন।

১৮০০ সালের দিকে ইউরোপে প্রতিযোগিতামূলক সাঁতার বিশেষ করে ব্রেস্টস্ট্রোক ইভেন্ট চালু হয়। ১৮৭৩ সালে জন আর্থার ট্রুজেন পশ্চিমা সাঁতার প্রতিযোগিতায় স্থানীয় আমেরিকানদের বুকে হেঁটে সামনে অগ্রসর হবার দৃশ্যকে উপজীব্য করে ট্রুজেন ধারা প্রবর্তন করেন। কিন্তু ব্রিটিশগণ তা পছন্দ না করায় ট্রুডজেন কাচি-লাথি ধারার প্রবর্তন করেন।

আধুনিক অলিম্পিকে সাঁতার বিষয়ের প্রথম অন্তর্ভুক্তি ঘটে ১৮৯৬ সালের গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে। ১৯০২ সালে রিচমন্ড ক্যাভিল পশ্চিমা বিশ্বে ফ্রন্ট ক্রল ধারার সূচনা ঘটান। ১৯০৮ সালে বিশ্ব সাঁতার সংস্থা বা ফিনা গঠিত হয়। ১৯৩০-এর দশকে বাটারফ্লাইয়ের আধুনিকায়ন ঘটে। ১৯৫২ সালে স্বতন্ত্র পদ্ধতি হিসেবে প্রচলনের পূর্ব পর্যন্ত ব্রেস্টস্ট্রোকের ন্যায় বাটারফ্লাই সাঁতার চালু ছিল।

উপকরণাদি

প্রতিযোগিতামূলক সাঁতারে প্রতিযোগীর শরীরকে ঢেকে রাখতে ও গতিবেগ বাড়াতে বিশেষ ধরনের সাঁতারের পোশাক ব্যবহারের প্রচলন রয়েছে। অতিরিক্ত গতিবেগের জন্য একজন সাঁতারু রাবার কিংবা প্লাস্টিকের তৈরী পোশাক পরিধান করে থাকেন। এরফলে তিনি পানির সংস্পর্শ থেকে নিজেকে অনেকখানি দূরে রাখতে পারেন এবং খুবই স্বল্প পরিমাণে ভিজে যান যা তাকে দ্রুতগতিতে সাঁতরাতে বেশ সহযোগিতা করে।

জুলাই, ২০০৯ সালে ফিনা ভোটের মাধ্যমে বুননকৃত বা টেক্সটাইল স্যুইমস্যুট ব্যতীত অন্য যে-কোন ধরনের কৃত্রিম স্যুইমস্যুট পরিধান করে ২০১০ সাল থেকে প্রতিযোগিতামূলক খেলায় অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এর কারণ হিসেবে তারা বলেছে যে, বিভিন্ন ধরনের কৃত্রিম স্যুইমস্যুট পরিধান করে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ায় সাঁতারুদের প্রকৃত সক্ষমতা ও দক্ষতা নিরূপণে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। পাশাপাশি নতুন নিয়ম-কানুন প্রবর্তনের মধ্যে রয়েছে শরীরের অংশ ঢেকে রাখা সংক্রান্ত। পুরুষ সাঁতারুদের ক্ষেত্রে নাভি থেকে হাঁটু এবং মহিলা সাঁতারুদের ক্ষেত্রে কাঁধ থেকে হাঁটু পর্যন্ত পোশাক পরিধান করা বাধ্যতামূলক।

এছাড়াও, সাঁতার প্রতিযোগিতায় অন্যান্য সরঞ্জাম বা উপকরণের মধ্যে রয়েছে - কান বন্ধনী, নাসিকারক্ষক, চশমা, টুপি, কিকবোর্ড, নিরাপত্তাবেষ্টনী ইত্যাদি। তন্মধ্যে নাসিকারক্ষক উপকরণটি শুধুমাত্র সিনক্রোনাইজড সাঁতারের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।

স্মারক মুদ্রা

সাঁতার খেলাকে মুদ্রায় উপস্থাপিত করা হয়েছে। ২০০৩ সালে গ্রীসে ২০০৪ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক্‌সের জন্যে স্বর্ণ ও রৌপ্য দিয়ে €১০ স্মারক মুদ্রা ছাড়া হয়। এতে ব্রোঞ্জের প্রাচীন ভাস্কর্য্যের মহিলা সাঁতারুর ঝাঁপ দেয়ার সূচনালগ্ন ও অপর পৃষ্ঠে ঐ মহিলা সাঁতারুর ঝাঁপ দেয়ার পর পানি থেকে উঠার দৃশ্য তুলে ধরা হয়েছে।

২০১১ সালে যুক্তরাজ্যের রাজকীয় টাকশাল থেকে ২০১২ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক্‌স আয়োজন উপলক্ষে ৫০ পেনির মুদ্রা তৈরী করা হয়। মুদ্রাটির এক পার্শ্বে একজন সাঁতারু এবং অপর পার্শ্বে ট্রায়াথলন ক্রীড়ার দৃশ্য উপস্থাপন করা হয়।

তথ্যসূত্র

Tags:

ক্রীড়া সাঁতার ইতিহাসক্রীড়া সাঁতার উপকরণাদিক্রীড়া সাঁতার স্মারক মুদ্রাক্রীড়া সাঁতার তথ্যসূত্রক্রীড়া সাঁতারঅলিম্পিক ক্রীড়াওয়াটার পোলোক্রীড়াডাইভিংপ্রতিযোগিতাপ্রতিযোগীসাঁতারু১৮৯৬ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

হোয়াটসঅ্যাপঅসমাপ্ত আত্মজীবনীবাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসজনি সিন্সবাবরসাজেক উপত্যকাবাংলাদেশের জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকার তালিকাইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়অমর সিং চমকিলাযোগাসনপশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীদের তালিকাঝড়জগদীশ চন্দ্র বসুগাণিতিক প্রতীকের তালিকানরেন্দ্র মোদীত্রিপুরাভারতের সংবিধানম্যানচেস্টার সিটি ফুটবল ক্লাবসত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্রইসলামি সহযোগিতা সংস্থাচৈতন্য মহাপ্রভুঈদুল আযহাদুর্গাপূজাক্রিকেটখিলাফতমুসাফিরের নামাজপ্রধান পাতাশিয়া ইসলামের ইতিহাসবাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সেক্টরসমূহজনগণমন-অধিনায়ক জয় হেদৈনিক প্রথম আলোগোত্র (হিন্দুধর্ম)সেলজুক রাজবংশহৃৎপিণ্ডভারতের রাষ্ট্রপতিদের তালিকামুহাম্মাদ ফাতিহবাংলাদেশের প্রশাসনিক অঞ্চলনোবেল পুরস্কারপ্রাপ্তদের তালিকাবাংলা ভাষাপাট্টা ও কবুলিয়াততারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়কাঠগোলাপভালোবাসাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিআয়াতুল কুরসিমানব শিশ্নের আকারবিন্দুবাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনমাইকেল মধুসূদন দত্তচিকিৎসকপানিপুলিশফারাক্কা বাঁধস্বামী বিবেকানন্দনিউমোনিয়াকোষ বিভাজনমোবাইল ফোনবাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টচট্টগ্রামভিটামিনজিএসটি ভর্তি পরীক্ষাডায়ানা, প্রিন্সেস অব ওয়েলসপারমাণবিক ভরের ভিত্তিতে মৌলসমূহের তালিকাঅণুজীবওজোন স্তরআবহাওয়াযুক্তফ্রন্টকলকাতাপ্যারাচৌম্বক পদার্থআরব্য রজনীআসমানী কিতাবফুলহোমিওপ্যাথিবৃষ্টিসেলজুক সাম্রাজ্যপাল সাম্রাজ্যকুমিল্লাসিঙ্গাপুর🡆 More