শিলচর

শিলচর (ইংরেজি: Silchar,বাংলা: শিলচর) ভারতের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত আসাম রাজ্যের কাছাড় জেলার সদর শহর এবং দক্ষিণ আসামের একটি প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র। মণিপুরের কিছু অংশ এবং মিজোরামের জন্য এই শহরের অর্থনৈতিক গুরুত্ব অপরিসীম। এর ফলে শিলচরে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের ব্যবসায়ীরা বসতি স্থাপন করেছেন।

শিলচর
শহর
শিলচরের বরাক নদীর বৈমানিক দৃশ্য
শিলচরের বরাক নদীর বৈমানিক দৃশ্য
শিলচর আসাম-এ অবস্থিত
শিলচর
শিলচর
ভারতের আসাম রাজ্যের মানচিত্রে অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২৪°৪৯′ উত্তর ৯২°৪৮′ পূর্ব / ২৪.৮২° উত্তর ৯২.৮° পূর্ব / 24.82; 92.8
দেশভারত
রাজ্যঅসম
জেলাকাছাড়
সরকার
 • শাসকশিলচর পৌরসভা (৩০টি ওয়ার্ড)
আয়তন
 • শহর১৭.১২ বর্গকিমি (৬.৬১ বর্গমাইল)
 • মহানগর৩০.৩৯ বর্গকিমি (১১.৭৩ বর্গমাইল)
উচ্চতা২২ মিটার (৭২ ফুট)
জনসংখ্যা (২০১১)
 • শহর২,২৮,৯৮৫
 • জনঘনত্ব১৩,০০০/বর্গকিমি (৩৫,০০০/বর্গমাইল)
 • মহানগর১,৭৮,৮৬৫
ভাষা
 • সরকারীবাংলা
 • স্থানীয়সিলেটি
সময় অঞ্চলভারতীয় প্রমাণ সময় (ইউটিসি+৫:৩০)
পিন৭৮৮০০১ থেকে ৭৮৮০৩২ এবং ৭৮৮১১৮
দূরভাষ কোড৯১ (০) ৩৮৪২
যানবাহন নিবন্ধনএএস-১১
ওয়েবসাইটwww.cachar.nic.in

বরাক নদীর তীরে অবস্থিত এই শহর উত্তর-পূর্ব ভারতের মধ্যে শান্তিপূর্ণ জায়গা হিসেবে তখনকার ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর কাছ থেকে "শান্তির দ্বীপ" আখ্যা লাভ করেছিল। তৎকালীন পূর্ববঙ্গের সিলেটিরা এই শহরের অন্যতম প্রধান জনগোষ্ঠী। ভাত এবং মাছ এখানকার লোকদের প্রধান খাদ্য। এছাড়া "শুঁটকি" এবং "চুঙ্গা পিঠা" এখানকার বিখ্যাত উপাদেয় খাদ্য।

নামকরণের ইতিহাস

ব্রিটিশ শাসনকালে বরাক নদীতে মালবাহী জাহাজের নোঙর পড়তো৷ ধীরে ধীরে ঐ অঞ্চলে হাট-বাজার গড়ে ওঠে ও ব্যবসার অন্যতম কেন্দ্র হয়ে উঠতে থাকে৷ নদীর তীরবর্তী অঞ্চল নুড়িপাথরে ঢাকা থাকায় ডিঙ্গা বা বড়ো মালবাহী জাহাজ বাঁধতে সুবিধা হতো৷ স্থানীয়রা এইকারণে জায়গাটিকে 'শিলের চর' বলে অভিহিত করতে থাকে, যার অর্থ নুড়ি পাথরে আবৃৃৃত নদীর তীর৷ সময়প্রবাহে 'শিলের চর' আস্তে আস্তে শিলচর রূপ পায়৷ ব্রিটিশ সরকারী বিভিন্ন নথিপত্রে এই অঞ্চল সংলগ্ন বাজার ও বসতি এলাকাতে শিলচর নামেরই উল্লেখ হতে থাকে৷ স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে এইনামেই শহরটির শ্রীবৃৃদ্ধি হতে থাকে৷

ইতিহাস

শিলচরের দপ্তর

১৮৫০ বঙ্গাব্দে ব্রিটিশ চা ব্যবসায়ীরা ভারত-ময়ানমার সীমান্তে অবস্থিত মণিপুরে প্রথম ভারতের পোলো খেলা চালু করেছিলেন৷ বিশ্বের প্রথম স্থাপিত পোলোক্লাবটি শিলচরে অবস্থিত৷ প্রথম প্রতিযোগীতামূলক আধুনিক পোলো খেলা শিলচরেই শুরু হয়, তার প্রমাণচিহ্ন শিলচরে কাছাড় জেলা গ্রন্থাগারে আজও উপস্থিত৷

বরাক উপত্যকায় বাংলা ভাষা আন্দোলন

শিলচর 
শিলচর রেলওয়ে স্টেশন ভাষাশহিদদের উদ্দেশ্যে উৎসর্গীকৃত

শিলচর বাংলা ভাষা আন্দোলনের জন্য অন্যতম৷ তৎকালীন আসাম সরকার তথা আসামের মুখ্যমন্ত্রী বিমলা প্রসাদ চলিহা অসমীয়া ভাষাকে আসামে বাধ্যতামূলক করার জন্য একটি আইনের অনুমোদন করলে সেখানে বাঙালি সমাজ তার তীব্র প্রতিবাদ জানায়৷ ৫ই জ্যৈষ্ঠ ১৩৬৮ বঙ্গাব্দে(১৯শে মে ১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দ) আসাম পুলিশ শিলচর রেলওয়ে স্টেশনে নিরস্ত্র প্রতিবাদী বাঙালির ওপর গুলি চালায়৷ বাঙালির অধিকারের লড়াই করতে গিয়ে এগারো জন প্রতিবাদী বাঙালি শহিদ হন৷

এছাড়াও আসামেই বাংলা ভাষার জন্য ১৯৭২ সালের ১৭ আগস্ট আরো একজন শহীদ হন:

১৯৮৬ সালের ২১ জুলাই শহীদ হন দুজন:

এই জনবিদ্রোহের পরে আসাম সরকার তার সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটে ও দক্ষিণ আসাম বরাক উপত্যকায় বাংলা ভাষাকে সরকারী ভাষা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে বাধ্য হয়৷ ১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দে আসাম এক্ট ১৪ এর ৫ম ধারার আইনটি কাছাড় জেলাতে বাংলা ভাষাকে সংরক্ষণের স্বীকৃৃতি দেয়৷ এই এক্ট অনুসারে - “Without prejudice to the provisions contained in Section 3, the Bengali language shall be used for administrative and other official purposes up to and including district level.”(৩য় ধারাতে উল্লেখিত পূর্বধারণার ব্যতিক্রম হিসাবে জেলাস্তরের সরকারী ভাষা হিসাবে প্রশাসনিক ও অন্যান্য কাজে বাংলা ভাষার ব্যবহার করা যাবে)৷

ভৌগোলিক অবস্থান

শিলচর আসামের দক্ষিণ সীমায় অবস্থিত। বরাক নদীর তীরে অবস্থিত এই শহর চা, চাল এবং আরো নানারকম কৃষিজাত দ্রব্যের জন্য বিখ্যাত। পাঁচগ্রাম কাগজ কল, সিমেন্ট কারখানা এবং চা-পাতা উৎপাদন এখানকার প্রধান শিল্প।শিলচর আসামের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগর। শিলচর ভারতের অন্যান্য জায়গার সঙ্গে রেল, সড়ক এবং আকাশপথের মাধ্যমে যুক্ত। শিলচর শিলচর গড়পড়তা ভাবে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২২ মিটার (৭২ ফুট) উঁচুতে।

জলবায়ু

শিলচরের জলবায়ু সীমান্তবর্তী ক্রান্তীয় মৌসুমী প্রকৃৃৃতির, যা কোপেন শ্রেণিবিন্যাসের "Am"(এএম) পর্যায়ভুক্ত৷ এই অঞ্চলে শীতকাল তুলনামুলকভাবে সামান্য উষ্ণ যা এই অঞ্চলকে আর্দ্র উপক্রান্তীয় জলবায়ুর ("Cwa") বিশিষ্ট এলাকায় উত্তীর্ণ করেছে৷ শীতকালে জলবায়ু সাধারণত সামান্য উষ্ণ ও শুষ্ক থাকে এবং ভোরের বেলার শীত উপলব্ধি করা যায়৷ এপ্রিল মাসর শুরু থেকে মৌসুমী জলবায়ুতে জলীয় বাষ্পের উপস্থিতি বাতাসকে আর্দ্র করে৷ এইকারণে বছরের সাত মাস শিলচরে গরম ও আর্দ্র আবহাওয়া লক্ষ করা যায় আবার অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত প্রায়শই বজ্রবিদ্যুৎসহ বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে৷ নভেম্বরে শীতকালের অল্পশীতল ও শুষ্ক আবহাওয়া শুরুর আগে পর্যন্ত উষ্ণ আর্দ্র জলবায়ুই প্রধানত লক্ষ্যনীয়৷

শিলচর (১৯৭১–২০০০)-এর আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য
মাস জানু ফেব্রু মার্চ এপ্রিল মে জুন জুলাই আগস্ট সেপ্টে অক্টো নভে ডিসে বছর
সর্বোচ্চ রেকর্ড °সে (°ফা) ৩১.০
(৮৭.৮)
৩৫.০
(৯৫.০)
৩৭.৮
(১০০.০)
৩৯.৪
(১০২.৯)
৩৯.১
(১০২.৪)
৩৭.৯
(১০০.২)
৩৯.৪
(১০২.৯)
৩৯.০
(১০২.২)
৩৮.৩
(১০০.৯)
৩৬.৭
(৯৮.১)
৩৫.০
(৯৫.০)
৩১.৭
(৮৯.১)
৩৯.৪
(১০২.৯)
সর্বোচ্চ গড় °সে (°ফা) ২৪.৫
(৭৬.১)
২৬.৪
(৭৯.৫)
২৯.৬
(৮৫.৩)
৩০.৫
(৮৬.৯)
৩১.০
(৮৭.৮)
৩১.৫
(৮৮.৭)
৩১.৪
(৮৮.৫)
৩১.৯
(৮৯.৪)
৩১.৫
(৮৮.৭)
৩০.৯
(৮৭.৬)
২৯.১
(৮৪.৪)
২৬.১
(৭৯.০)
২৯.৬
(৮৫.৩)
সর্বনিম্ন গড় °সে (°ফা) ১২.১
(৫৩.৮)
১৪.১
(৫৭.৪)
১৭.৭
(৬৩.৯)
২১.০
(৬৯.৮)
২৩.০
(৭৩.৪)
২৪.৬
(৭৬.৩)
২৫.১
(৭৭.২)
২৫.২
(৭৭.৪)
২৪.৬
(৭৬.৩)
২২.৯
(৭৩.২)
১৮.৬
(৬৫.৫)
১৩.৯
(৫৭.০)
২০.৪
(৬৮.৭)
সর্বনিম্ন রেকর্ড °সে (°ফা) ৩.৩
(৩৭.৯)
২.৮
(৩৭.০)
৮.৩
(৪৬.৯)
১৩.২
(৫৫.৮)
১৫.৬
(৬০.১)
১৯.৩
(৬৬.৭)
১৯.০
(৬৬.২)
১৯.৪
(৬৬.৯)
১৬.৮
(৬২.২)
১৪.৪
(৫৭.৯)
১০.৬
(৫১.১)
৪.৪
(৩৯.৯)
৫.০
(৪১.০)
অধঃক্ষেপণের গড় মিমি (ইঞ্চি) ১২.১
(০.৪৮)
৪৪.২
(১.৭৪)
২২৯.৩
(৯.০৩)
২৫৮.১
(১০.১৬)
৪৬০.৭
(১৮.১৪)
৬১২.০
(২৪.০৯)
৫০৩.২
(১৯.৮১)
৪২৭.৭
(১৬.৮৪)
৩৬৬.৫
(১৪.৪৩)
১৬৮.৭
(৬.৬৪)
৩৩.৩
(১.৩১)
১২.৮
(০.৫০)
৩,১২৮.৬
(১২৩.১৭)
বৃষ্টিবহুল দিনগুলির গড় ১.০ ৩.৯ ৮.৫ ১২.৬ ১৬.২ ২১.৫ ২২.৫ ১৯.৩ ১৫.৫ ৭.৭ ২.৪ ০.৬ ১৩১.৬
উৎস: ভারত আবহাওয়া অধিদপ্তর (রেকর্ড উচ্চ এবং নিম্ন পর্যন্ত ২০১০)

শিল্প

  • তৈল ও প্রাকৃৃতিক গ্যাস নিগম-এর উদ্যোগে শিলচর শহরের নিকট শ্রীকোণা অঞ্চলে একটি কেন্দ্র স্থাপিত হয়, যা কাছাড় ফরওয়ার্ড বেস নামে পরিচিত৷
  • কাছাড় কাগজ কারখানা (কাছাড় পেপার মিল) হলো শিলচর শহরের অন্যতম উল্লেখযোগ্য শিল্পসংস্থান যা পার্শ্ববর্তী আসাম, ত্রিপুরা, মণিপুর, মেঘালয়তে দ্রব্য সরবরাহ করে৷ পরিকাঠামো পরিমাপের কথা বাদ দিলে এই শিল্পের উত্তরোত্তর শ্রীবৃৃদ্ধি ঘটছে ও তার বহু কর্মসংস্থান বৃৃদ্ধি করেছে৷ ২০০৬-০৭ খ্রিষ্টাব্দে কাগজ কারখানাটি ১০৩১৫৫ মেট্রিকটন উৎপাদন বৃৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছে যার হার গত বছরগুলির তুলনায় সর্বাধিক৷ ঐ বছর ১০৩% ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি হয় যা পূর্ব বছরের ১০০% বৃৃৃদ্ধির হারের থেকে বেশি৷

জনতত্ত্ব

পৌরসভা

২০১১ জনগণনা অনুসারে শিলচর পৌরসভার জনসংখ্যা ১৭৮৮৬৫ জন৷ যার মধ্যে ৮৯৯৬১ জন পুরুষ ও ৮৮৯০৪ জন নারী৷ প্রতি হাজার পুরুষে নারী সংখ্যা ৯৮৮ জন, যা জাতীয় গড় ৯৫০ জনের থেকে বেশি৷ ৬ বৎসর অনূর্ধ্ব শিশু সংখ্যা ১৬৩৩৫ জন, যা সমগ্র জনসংখ্যার ৯.১৩%৷ শিশুদের লিঙ্গানুপাত প্রতি হাজার শিশুপুত্রে ৯২৭ জন শিশুকন্যা৷

মহানগর

২০১১ জনগণনা অনুসারে শিলচর মহানগরের জনসংখ্যা ২২৯১৩৬ জন৷ যার মধ্যে ১১৫৪৯৭ জন পুরুষ ও ১১৩৬৩৯ জন নারী৷ প্রতি হাজার পুরুষে নারী সংখ্যা ৯৮৪ জন, যা জাতীয় গড় ৯৫০ জনের থেকে বেশি৷ ৬ বৎসর অনূর্ধ্ব শিশু সংখ্যা ২২৯৭৬ জন, যা সমগ্র জনসংখ্যার ১০.০৩%৷ শিশুদের লিঙ্গানুপাত প্রতি হাজার শিশুপুত্রে ৯৪৪ জন শিশুকন্যা৷

ভাষা

শিলচর শহরটি বাঙালি অধ্যুষিত হলেও এই শহরে প্রমিত বাংলা ভাষার বদলে উত্তর-পূর্বের স্থানীয় সিলেটি বাংলারই প্রচলন বেশি৷ বাঙালি ছাড়াও হিন্দি, মণিপুরী, বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরীভাষী লোক বহুসংখ্যায় থাকেন৷

শিলচর পৌরসভার ভাষা

  বাংলা (৮৮.৬৮%)
  হিন্দি (৬.৩১%)
  মণিপুরী (১.৯৮%)
  নেপালি (০.৫১%)
  অন্যান্য (১.৮২%)

ধর্ম

শিলচর পৌরসভায়,

শিলচর পৌরসভার বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী

  হিন্দুধর্ম (৮৬.৩১%)
  ইসলাম (১২.১৭%)
  জৈনধর্ম (০.৭৯%)
  অন্যান্য (০.১৪%)

শিক্ষা

শিক্ষার হার

শিলচর মহানগরের সাক্ষরতা হার ৯০.২৬%, যা রাষ্ট্রীয় গড় ৮৪%(২০১৭) সাক্ষরতার হারের থেকে বেশি৷ পুরুষ সাক্ষরতার হার ৯২.৯০% এবং নারী সাক্ষরতার হার ৮৭.৫৯%৷

বিশ্ববিদ্যালয়

আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল প্রাঙ্গনটি শিলচর শহরেই অবস্থিত৷ বিশ্ববিদ্যালয়টিতে স্নাতক ও সাধারণ ও স্নাতকোত্তর পঠনপাঠনের সুবিধা রয়েছে৷ ১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দে বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়, বর্তমানে ১৭ টি সাধারণ বিদ্যালয় ও ৩৫ স্নাতকোত্তর বিভাগ এর অধীনে রয়েছে৷ এছাড়া ৫৬ টি মহাবিদ্যালয় এই বিশ্ববিদ্যালয় দ্বারা অনুমোদিত৷ শিলচরের অধিকাংশ মহাবিদ্যালয় এর অধীনস্থ৷

প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানসমূহ

শিলচর 
শিলচরে অবস্থিত রাষ্ট্রীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান
  • Triguna Sen School of Technology, Assam University, Silchar(ত্রিগুণা সেন প্রযুক্তি বিদ্যালয়)
  • নিখিল ভারত তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান
  • শিলচর পলিটেকনিক
  • আসাম রাইফেলস ইন্সটিটিউট অফ ইনফরমেশন টেকনোলজি
  • এন.আই.ই.এল.আই.টি.
  • এন.আই.এ.আই.এম.টি.

মহাবিদ্যালয়

চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়

আইন মহাবিদ্যালয়

তারাপুরে অবস্থিত এ.কে. চন্দ আইন মহাবিদ্যালয়

রাজনীতি

শিলচর হচ্ছে শিলচর লোকসভা কেন্দ্রের অংশ। শিলচর থেকে সংসদের বর্তমান সদস্য হচ্ছেন সুস্মিতা দেব। যিনি হচ্ছেন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রবীণ রাজনীতিবিদ সন্তোষ মোহন দেবের মেয়ে।

পরিবহন

সড়কপথ

এছাড়া উল্লেখযোগ্য শহর হওয়ার কারণে সড়কপথে সামের অন্যান্য বিভিন্ন শহরসহ রাজধানী গুয়াহাটির সংযোগ রয়েছে৷ গুয়াহাটি শহরটি ৩৪৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত৷

রেলপথ

শিলচর শহরের দুটি স্টেশন হলো যথাক্রমে নিউ শিলচর রেলওয়ে স্টেশন ও শিলচর রেলওয়ে স্টেশন৷ এটি উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে বিভাগের অন্তর্গত৷

বিমানপথ

শিলচর বিমানবন্দরটি এই শহরে অবস্থিত, যা মূল শহর থেকে প্রায় ২২কিলোমিটার দূরে অবস্থিত৷ এই বিমানবন্দর ১৯৪৪ সালে ব্রিটিশ সরকার চালু করে। এটি কিড়িগ্রাম এয়ার বেস হিসাবেও পরিচিত। এই বিমানবন্দর থেকে অসামরিক বিমান পরিবহন চালু রয়েছে। একই সঙ্গে এটি ভারতীয় বায়ু সেনার একটি বিমান ঘাটি। এই বিমানবন্দর থেকে প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ টি বিমান ওঠা-নামা করে এবং সপ্তাহে মোট প্রায় ৩০ টি বিমান চলাচল করে। এই বিমানবন্দরটি উত্তর-পূর্ব ভারত-এর চতুর্থ বৃহত্তম ও ব্যস্ততম বিমানবন্দর। ২০১৮-২০১৯ সালে এই বিমানবন্দরের যাত্রী পরিবহন সংখ্যা ৩ লক্ষ ৮৬ হাজার ৬৬৫ এবং বিমান চলাচলের সংখ্যা ৩,৩৮০ টি।

এই বিমানবন্দর থেকে গৌহাটি, কলকাতা, ইম্ফল, আগরতলাযোরহাট বিমানবন্দরে বিমান পরিচালনা করা হয়।

দর্শনীয় স্থান

শিলচর শহরের অন্যতম দর্শনীয় স্থানসমূহ হলো:

শিলচর 
খাসপুরে কাছাড়ি রাজ্যের ধ্বংসাবশেষ
  • খাসপুর:শিলচর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরত্বে খাসপুর নামে ডিমাসা-কাছাড়ি রাজাদের একটি বিরাট ঐতিহাসিক এবং গুরুত্বপূর্ণ রাজধানী গড়ে উঠেছিল। যার নির্মাণ ১৬৯০ খ্রিষ্টাব্দ মধ্যে হয়েছিল। এখানকার প্রধান দর্শনীয় বস্তুগুলি হলো সিংহদ্বার, সূর্যদ্বার এবং প্রাচীন রাজাদের মন্দির, যা পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ। মূল প্রাসাদটি বর্তমানে প্রায় অস্তিত্বহীন হলেও এর সংলগ্ন প্রধান প্রবেশদ্বার, সূর্যদ্বার ও অভ্যন্তরস্থ দেবালয়টি অক্ষত আছে। প্রবেশপথে হস্তীমূর্তিখচিত সুন্দর শিল্পনিদর্শন রয়েছে।
  • ইসকন(ISKCON –International Society for Krishna Consciousness ) মন্দির:বিশ্ববিখ্যাত সনাতন আধ্যাত্মিক সংগঠন আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) দ্বারা পরিচালিত শিলচর শহরের অম্বিকাপট্টিতে স্থিত ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে উৎসর্গীকৃৃত একটি মন্দির আছে। প্রতিষ্ঠানটির কাছাকাছি ইসকন মন্দির দ্বারা পরিচালিত “গোবিন্দভোজনালয়” নামে একটি নিরামিষ ভোজনালয় রয়েছে।
  • গান্ধীবাগ পার্ক:গান্ধীবাগ পার্ক শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত পার্ক রোডে অবস্থিত। পার্কটি মহাত্মা গান্ধীর নামে নামকরণ করা হয়। পার্কটিতে ১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ মে বাংলা ভাষা রক্ষার জন্য আসাম সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চলাকালীন ভাষা-মিছিলে জীবন উৎসর্গ করা ভাষাশহিদদের উদ্দেশ্যে একটি শহিদমিনার আছে।
  • ভুবনেশ্বর মন্দির:এই মন্দিরটি সমগ্র দক্ষিণ আসামের ভগবান শিবের সবচেয়ে সুপ্রসিদ্ধ মন্দির। শিলচর শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার এবং উত্তরে ভুবন পাহাড়ে এই তীর্থস্থানটি অবস্থিত। প্রতি বছর মার্চমাসে শিবরাত্রির সময় দূর-দূরান্ত থেকে বহুলোকের সমাগম হয় এই মন্দিরে। মন্দিরে পৌঁছাতে পাহাড়ি পথে ১৭ কিলোমিটার চড়াই-উতরাই পার করতে হয়৷
  • কাঁচাকান্তি কালী মন্দির: দক্ষিণ আসামের শিলচর থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার উত্তরে উধারবন্দের নিকট মধুরা নদীর তীরে দেবী "মা কাঁচাকান্তি"-র এক ঐতিহাসিক ও সুপ্রসিদ্ধ মন্দির রয়েছে। স্থানীয়রা ও মায়ের ভক্তরা মনে করেন তিনি দুই মাতৃৃশক্তি ও হিন্দু দেবী মা দুর্গা এবং মা কালীর মিলিত রূপ। মূল মন্দিরটি কাছাড়ি রাজা ১৮০৬ খ্রিষ্টাব্দে নির্মাণ করেছিলেন। ১৮১৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত এই মন্দিরে মাতৃৃমূর্তিকে নরবলি নিবেদন করা হত। ১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দে কোনো কারণে পুরানো মন্দিরটি তছনছ হয়ে যায় এবং ১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দে নতুন মন্দিরটি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করা হয়।
  • মণিহরণ সুড়ঙ্গ : ভুবনেশ্বর মন্দির থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মণিহরণ সুড়ঙ্গ একটি জনপ্রিয় ও পবিত্র পর্যটনস্থল৷ পৌরাণিক কাহিনি ও জনশ্রুতি অনুযায়ী মণিপুরে ভ্রমণকালে শ্রীকৃষ্ণ এই সুড়ঙ্গটি নির্মাণ করেন ও শীঘ্রপথ হিসাবে ব্যবহার করতেন৷ ত্রিবেণী নদী এই সুড়ঙ্গের তলদেশ দিয়ে প্রবাহিত। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের উদ্দেশ্যে নিবেদিত মণিহরণ মন্দিরটির নামে সুড়ঙ্গটির নামকরণ করা হয়, তাছাড়া নিকটে একটি গরুড় মন্দিরও রয়েছে।
  • শহরেই রয়েছে ডলু হ্রদ, যা চিত্রগ্রাহকদের কাছে আকর্ষণীয়৷
  • শিলচর থেকে উত্তর পূর্বে কুম্ভীরাতে শিলচর বিমানবন্দর যাওয়ার পথে শালগঙ্গা বিষ্ণু মন্দিরটি পর্যটকদের অন্যতম তীর্থস্থান৷

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি

ছবি

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

UN/LOCODE for Silchar

Tags:

শিলচর নামকরণের ইতিহাসশিলচর ইতিহাসশিলচর ভৌগোলিক অবস্থানশিলচর জলবায়ুশিলচর শিল্পশিলচর জনতত্ত্বশিলচর ভাষাশিলচর ধর্মশিলচর শিক্ষাশিলচর রাজনীতিশিলচর পরিবহনশিলচর দর্শনীয় স্থানশিলচর উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিশিলচর ছবিশিলচর আরও দেখুনশিলচর তথ্যসূত্রশিলচর বহিঃসংযোগশিলচরআসামইংরেজিকাছাড় জেলাবাংলা ভাষাভারতমণিপুরমিজোরাম

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

ইসলামি সহযোগিতা সংস্থাহিরণ চট্টোপাধ্যায়বাংলাদেশের জেলাসমূহের তালিকাভৌগোলিক নির্দেশকসিফিলিসপৃথিবীর বায়ুমণ্ডলসালমান বিন আবদুল আজিজশিবা শানুবারো ভূঁইয়াদুরুদবাংলাদেশ ব্যাংকপুরুষে পুরুষে যৌনতাআসামফেসবুকরাশিয়াশাহ জাহানক্রিস্তিয়ানো রোনালদোমহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্রপশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন, ২০২১ব্যঞ্জনবর্ণঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনপশ্চিমবঙ্গের নদনদীর তালিকাফিলিস্তিনপদ্মা সেতুপায়ুসঙ্গমআবদুল মোনেমতুরস্কভারতের সংবিধানদারাজবৈশাখী মেলান্যাটোঅব্যয় পদবদরের যুদ্ধঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েখাদ্যঅরিজিৎ সিংমহাদেশ অনুযায়ী সার্বভৌম রাষ্ট্র এবং নির্ভরশীল অঞ্চলসমূহের তালিকাবাংলাদেশের প্রশাসনিক অঞ্চলইসলামে যৌনতাঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানসাজেক উপত্যকাদেশ অনুযায়ী ইসলামজীবনানন্দ দাশতরমুজপাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন, ১৯৭০ইসরায়েল–হামাস যুদ্ধদুধমেটা প্ল্যাটফর্মসযক্ষ্মাবাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসমাইকেল মধুসূদন দত্তযৌনসঙ্গমপলাশীর যুদ্ধজীববৈচিত্র্যনোবেল পুরস্কারপ্রাপ্তদের তালিকামাদারীপুর জেলাআইসোটোপমুর্শিদাবাদ জেলাকুরআনবাংলাদেশের জাতিগোষ্ঠীঋতুহীরক রাজার দেশেযোগাযোগসাহাবিদের তালিকাকশ্যপলোকসভাবাংলা সাহিত্যের ইতিহাসচট্টগ্রামওজোন স্তরবিকাশদৈনিক ইত্তেফাকঅর্থনীতিমুঘল সম্রাটসুনামগঞ্জ জেলানগরায়নআবুল কাশেম ফজলুল হকমহেন্দ্র সিং ধোনিনূর জাহান🡆 More