বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা

বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা হল ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে (১২৯৭ বঙ্গাব্দে) প্রকাশিত এবং গণিতজ্ঞ মাধবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কর্তৃক সম্পাদিত একটি পঞ্জিকা। ১৮৯০ সাল থেকে এই পঞ্জিকা অদ্যাবধি ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়ে চলেছে।

নবপ্রণীত পঞ্জিকা

ঊনবিংশ শতাব্দীতে বাংলা ভাষায় প্রকাশিত সকল পঞ্জিকাই প্রাচীন জ্যোতির্বিজ্ঞান বিষয়ক গ্রন্থ সূর্যসিদ্ধান্তের উপর ভিত্তি করে নির্মিত হত। কিন্তু সূর্যসিদ্ধান্তের কিছু ত্রুটির কারণে সেই গ্রন্থ অনুসারে নির্ণীত তিথি, নক্ষত্র, ইত্যাদির সময়ের সাথে মহাকাশে ঘটিত প্রকৃত তিথি নক্ষত্রের সময়ের কিছু পার্থক্যের সৃষ্টি হচ্ছিল। তখন গণিতজ্ঞ মাধবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সূর্যসিদ্ধান্তের সংস্কার ঘটিয়ে নৌসারণী অনুসরণে একটি সম্পূর্ণ বিজ্ঞানসম্মত পঞ্জিকা নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এরই ফলশ্রুতিতে ১৮৯০ সালে প্রকাশিত হয় দৃকসিদ্ধ "বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা‌"। তার এই পঞ্জিকা প্রকাশের পরামর্শদাতারা ছিলেন প্রসিদ্ধ সংস্কারবাদী পঞ্জিকাকার ওড়িশার মহামহোপাধ্যায় চন্দ্রশেখর সিংহ সামন্ত, পশ্চিম ভারতের লোকমান্য বাল গঙ্গাধর তিলক, শাস্ত্রবিদ পণ্ডিত বাপুদেব শাস্ত্রী, পণ্ডিত মদনমোহন মালব্য, মারঠি পণ্ডিত কেতকর, বাংলার মহামহোপাধ্যায় মহেশচন্দ্র ন্যায়রত্ন, শশধর তর্কচূড়ামণি, আচার্য যোগেশচন্দ্র রায় বিদ্যানিধি প্রমুখ পণ্ডিত ব্যক্তিবর্গ। বিশিষ্ট আইনজীবী, গ্রন্থকার ও বিদ্যানুরাগী সারদাচরণ মিত্র এই পঞ্জিকা প্রণয়নের কাজে মহেশচন্দ্র ন্যায়রত্নকে সাহায্য করেছিলেন।

স্বীকৃতি

১৯৫২ সালে ভারত সরকারের উদ্যোগে বিশ্ববিশ্রুত তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী ও জ্যোতির্বিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহার নেতৃত্বে গঠিত "পঞ্জিকা সংস্কার কমিটি" (Calendar Reform Committee) ভারতীয় পঞ্জিকাগুলোতে সংস্কারসাধন করে ভারতীয় জাতীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে যে নতুন "রাষ্ট্রীয় পঞ্চাঙ্গ" প্রণয়ন করে সেই পঞ্জিকার বিজ্ঞানভিত্তিক গণনার সাথে বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকার গণনা সম্পূর্ণ এক এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ। উভয় পঞ্জিকাতেই নির্ভুল ভাবে তিথি, নক্ষত্র, ইত্যাদি নির্ণয় করা হয়ে থাকে। অর্থাৎ ভারত সরকারের পঞ্জিকা এবং বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা উভয়েই দৃক্‌সিদ্ধ ও নির্ভুল তথ্য-সংবলিত। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য এই যে, ভারত সরকার গঠিত পঞ্জিকা সংস্কার কমিটির সম্পাদক নির্মলচন্দ্র লাহিড়ী ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দে পুত্র অরুণকুমার লাহিড়ীকে সঙ্গে নিয়ে কলকাতার ১৭, বৃন্দাবন মল্লিক ফার্স্ট লেনে "অ্যাস্ট্রো রিসার্চ ব্যুরো" তৈরি করে ষষ্ঠীচরণ জ্যোতির্ভূষণের সহায়তায় বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকার প্রকাশনার ভার গ্রহণ করেছিলেন। পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এই পঞ্জিকাকে স্বীকৃতি প্রদান করে এটি গ্রহণ করেছে। আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন), রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সকল শাখা, সৎসঙ্গ, তারকেশ্বরের তারকনাথ মন্দির, কাঞ্চী মঠ, ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের সমস্ত অনুষ্ঠান "বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা" অনুসারেই পালিত হয়। কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকা, বর্তমান, দৈনিক স্টেটসম্যান, সংবাদ প্রতিদিন, আজকাল সহ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা অনুসারে তারিখ ও দিনপঞ্জী ইত্যাদি উল্লেখ করে থাকে।

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ

তথ্যসূত্র

Tags:

বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা নবপ্রণীত পঞ্জিকাবিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা স্বীকৃতিবিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা আরও দেখুনবিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা বহিঃসংযোগবিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা তথ্যসূত্রবিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকাগ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জীবাংলা সনমাধবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

অপু বিশ্বাসতাশাহহুদঅমেরুদণ্ডী প্রাণীটেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাহযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরবিতর নামাজক্রোয়েশিয়াপরমাণুইউরোপীয় দেশগুলো ও অধীনস্থ ভূভাগের তালিকাবাংলাদেশের জেলাসমূহের তালিকাভারতের প্রধানমন্ত্রীদের তালিকাফিফা বিশ্বকাপ ফাইনালের তালিকানারায়ণগঞ্জসাপঅ্যান মারিডেঙ্গু জ্বরভিটামিনসুরেন্দ্রনাথ কলেজহিন্দুধর্মইসলামের নবি ও রাসুলপাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন, ১৯৭০বেল (ফল)ইব্রাহিম (নবী)মীর মশাররফ হোসেনগ্রহতারাবগুড়া জেলাখুররম জাহ্‌ মুরাদবাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকাসুব্রহ্মণ্যন চন্দ্রশেখরগুগলজিয়াউর রহমানবাংলা লিপিসালোকসংশ্লেষণমহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্রপাকিস্তানশেখ মুজিবুর রহমানদৈনিক প্রথম আলোইস্তেখারার নামাজছিয়াত্তরের মন্বন্তরসেন্ট মার্টিন দ্বীপকম্পিউটারসূরাসুকুমার রায়ইউক্রেনজিমেইলজীবনানন্দ দাশজোয়ার-ভাটাকোষ নিউক্লিয়াসবাংলাদেশ সরকারতাকওয়াইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগরনি তালুকদারবাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্মরত জেনারেলদের তালিকাফেসবুকমাহিয়া মাহিসন্ধিবাংলা ব্যঞ্জনবর্ণইমাম বুখারীপর্যায় সারণী (লেখ্যরুপ)ফরিদপুর জেলামাদার টেরিজাচট্টগ্রাম বিভাগকার্বনভারী ধাতুমৌলিক পদার্থবিষ্ণুইক্বামাহ্‌মিশরসুকান্ত ভট্টাচার্যআকাশআবদুর রব সেরনিয়াবাতইউরোপীয় ইউনিয়নজলবায়ু পরিবর্তনপৃথিবীমাম্প্‌সভাষা🡆 More