বাহুবলী: দ্য বিগিনিং (ইংরেজি: Baahubali: The Beginning; তেলুগু: బాహుబలి ,বাংলা: বাহুবলী: শুরু) ২০১৫ সালের একটি তেলুগু ভাষার ভারতীয় মহাকাব্যিক চলচ্চিত্রের ১ম অংশ। দুই অংশে সমাপ্য এই চলচ্চিত্রটির কাহিনী রচনা ও পরিচালনা করেছেন এস.
এস. রাজামৌলি">এস. এস. রাজামৌলি এবং প্রযোজনা করেছেন শবু ইয়ারলাগাড্ডা ও প্রসাদ দেবিনেনি। চলচ্চিত্রটি একই সাথে তেলুগু এবং তমিল ভাষায় অনুবাদ করে নির্মিত হয়েছিলো, সেইসাথে ডাবিংকৃতভাবে মুক্তি পায় হিন্দি ও মালায়ালম ভাষায়। বাহুবলীতে একই সাথে প্রভাস, রানা দজ্ঞুবাতি, তামান্না ভাটিয়া এবং অনুষ্কা শেট্টির মত অভিনেতা-অভিনেত্রীরা মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করছেন এবং একইসাথে রামাইয়া কৃষ্ণন, সত্যরাজ। নাসার, আদিভি সেশ, তানিকেল্লা ভরণী ও সুদীপ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন।
বাহুবলী | |
---|---|
পরিচালক | এস. এস. রাজামৌলি |
প্রযোজক | সবু ইয়ারলাগাড্ডা প্রসাদ দেবিনেনি |
চিত্রনাট্যকার | এস. এস. রাজামৌলি রাহুল কোরা মদন কার্কি বিজয়েন্দ্র প্রসাদ |
কাহিনিকার | ভি. বিজয়েন্দ্র প্রসাদ |
শ্রেষ্ঠাংশে | প্রভাস রানা দজ্ঞুবাতি তামান্নাহ্ ভাটিয়া অনুষ্কা শেট্টি রামাইয়া কৃষ্ণন সত্যরাজ সুদীপ আদিভি সেশ নাসার প্রভাকর |
সুরকার | এম. এম. কেরাভানি |
চিত্রগ্রাহক | কে. কে. সেন্থিল কুমার |
সম্পাদক | কোটাগিরি ভেঙ্কটেশ্বর রাও |
প্রযোজনা কোম্পানি | |
পরিবেশক | তেলুগু: আর্কা মিডিয়া ওয়ার্কস তামিল: স্টুডিও গ্রীন ইউভি ক্রিয়েশনস হিন্দি: ধর্ম প্রোডাকশনস মালায়ালম: গ্লোবাল ইউনাইটেড মিডিয়া |
মুক্তি | ১ম খণ্ড:
|
স্থিতিকাল | ২৯০ মিনিট (২ খণ্ড) |
দেশ | ভারত |
ভাষা | তেলুগু তমিল হিন্দি মালয়ালম |
নির্মাণব্যয় | ₹ ২৫০ কোটি (US$ ৩০.৫৬ মিলিয়ন) |
চলচ্চিত্রটির পরিবেশনার দায়িত্বে ছিলেন কে. রাঘবেন্দ্র রাও, তামিলে কে. ই. নানাভেল রাজা ও ইউভি ক্রিয়েশনস। করন জোহর কর্তৃক চলচ্চিত্রটি হিন্দিতেও পরিবেশিত হয়েছিলো। মালায়ালমে পরিবেশিত হয়েছিলো গ্লোবাল ইউনাইটেড মিডিয়ার মাধ্যমে।
এম. এম. কেরাভানি এই চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালক এবং সাবু ক্রিল শিল্প নির্দেশক। ভি. শ্রীনিবাস মোহন ভিজ্যুয়াল এফেক্টের প্রধান নির্দেশক।
ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতের সর্বোচ্চ বাজেটের চলচ্চিত্র বাহুবলী। সঞ্জয় ভাস্কর নির্মিত ভারতীয় চলচ্চিত্রের ১০০ বছর (100 Years of Indian cinema) প্রামাণ্যচিত্রের কতিপয় চলচ্চিত্রের মধ্যেও বাহুবলী স্থান করে নিয়েছে।
চলচ্চিত্রটির দৃশ্যায়ণ করা হয়েছে অ্যারি অ্যালেক্সা এক্সটি ক্যামেরা ব্যবহার করে। এটিই ডিজিটাল ক্যামেরা দিয়ে নির্মিত রাজামৌলির প্রথম চলচ্চিত্র। ৬ই জুলাই, ২০১৩ সালে এর প্রথম দৃশ্যায়ণ শুরু হয়েছিল কুর্নলের রক গার্ডেনসে।
চলচ্চিত্রটির সংগীত মুক্তি দেবার আগেই ৩০শে মে, ২০১৫ সালে একটি ছোট ২০ সেকেন্ডের টিজার মুক্তি দেয়া হয়েছিল। ১০ই জুলাই, ২০১৫ সালে সারা বিশ্বে চলচ্চিত্রটির ১ম খণ্ডের মুক্তি দেয়া হবে।
এই চলচ্চিত্রের একটি পোস্টার উন্মোচিত হয় কোচি, কেরালায়। নির্মাতার মতে এটিই পৃথিবীর বৃহত্তম চলচ্চিত্রের পোস্টার। ২০১৬ সালের এই চলচ্চিত্রের দ্বিতীয় অংশ বাহুবলী: দ্য কনক্লুশন মুক্তিলাভ করে।
চলচ্চিত্রের শুরুতে দেখা যায় শরাহত রাজমাতা শিবগামী একটি সদ্যোজাত শিশুকে নিয়ে পালিয়ে গোপন সুড়ঙ্গ পথ দিয়ে রাজ্যের বাইরে চলে আসেন। দুজন সেনা তার পিছু নিলেও তাদেরকে হত্যা করেন তিনি। নদীর স্রোতের ভেতরে পড়েও কোনো রকমে বাচ্চাটিকে উপরে তুলে ধরে থাকেন যতক্ষণ না স্থানীয় আদিবাসী লোকেরা শিশুটিকে উদ্ধার করে। ঝর্ণার পাদদেশে অবস্থিত এই গ্রামের আদিবাসী লোকজনের লালন-পালনে বড় হয় শিশুটি। তার অমিত শক্তি ও বীরত্বের কারণে তাকে বাহুবলী বলা হয়। সে বারংবার পর্বতে ও ঝর্ণার শীর্ষে আরোহণ করে যদিও তার পালিকা মা তাকে বারন করেন। তিনি অনুমান করেন শিভুডু পর্বতের অনেক উপরের কোনো রাজ্য থেকে আগত। পুত্রকে তিনি হারাতে চাননা তাই সেখানে যাওয়ার সুড়ঙ্গপথ টি তার আদেশে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে শিবুডু ঝর্নার জল আর খাড়া পাহাড় অতিক্রম করে উপরে উঠে আসে। তার সাথে বীর নারী যোদ্ধা অবন্তিকা'র (তামান্না) দেখা হয়। সে অবন্তিকাকে ভালোবেসে ফেলে। অবন্তিকা ও তার সাথীরা সেখানকার রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহে রত। তারা চায় সেখানে পঁচিশ বছর ধরে বন্দিনী দেবসেনাকে ছাড়িয়ে আনতে। অবন্তিকার কথায় শিবা মহিষ্মতী রাজ্যে যায়, যেখানে স্বৈরশাসক রাজা ভল্লালা দেব (রানা দুগ্গুপাতি) ৫০ গজ উচ্চতাবিশিষ্ট তার নিজেরই একটি স্বর্ন মূর্তি নির্মাণ করছে। ভল্লাল দেবের অনুগত সৈনিক কাটাপ্পা জানে ভল্লাল নিষ্ঠুর ও অত্যাচারী যে রানী দেবসেনাকে বন্দী রেখেছে কিন্তু সে প্রভুভক্তির পারাকাষ্ঠা। রাজ্য ও রাজাকে রক্ষার জন্যে জীবন পর্যন্ত দিতে পারে। শিবুডু রানীকে উদ্ধার করে পালাতে গেলে তার পিছু নেয় ভল্লালের পুত্র ও কাটাপ্পা। শিভুডু যুদ্ধের এক পর্যায়ে বল্লালের পুত্রকে হত্যা করে। কাটাপ্পা শিভুডুকে মারতে উদ্যত হলে সে মহান রাজা অমরেন্দ্র বাহুবলীর (প্রভাস; দ্বৈত চরিত্র) অবিকল চেহারা দেখতে পায় শিবুডুর ভেতর ও বুঝতে পারে এই ব্যক্তি বাহুবলী ও রাণী দেবসেনার (অনুষ্কা শেঠি) পুত্র যাকে মহিষ্মতী রাজ্য থেকে বের করে নিয়ে বাঁচিয়েছিলেন রাজমাতা শিভগামী। কাটাপ্পা তখন বর্ণনা করে অমরেন্দ্র বাহুবলী ও ভল্লালদেবের কাহিনী। অমরেন্দ্র ও ভল্লালদেব দুজনেই মহিষ্মতী রাজ্যের উত্তরাধিকারী। ভল্লালের পিতা ক্রূর ও শারীরিক প্রতিবন্ধী, সে সিংহাসন থেকে বঞ্চিত হলেও সর্বদা চায় তার পুত্রই রাজা হোক। কিন্তু তার স্ত্রী রাজমাতা মহীয়সী জননী যিনি অমরেন্দ্রকেও পুত্রস্নেহ দিয়ে মানুষ করেছেন। রাজ্য পরিচালনার দায়িত্ব তিনি একজনকেই দিয়ে যেতে চান। তাকে সমস্ত কাজে সাহায্য করে কাটাপ্পা। বিদ্রোহ দমনে দক্ষতা ও অধিক বীরত্ব দেখানোর ফলে অমরেন্দ্রকে রাজা বলে ঘোষণা করেন রানী। এতে ভল্লালদেব ক্রুদ্ধ হয় কিন্তু রাজমাতার কথা রাজ্যের সমস্ত প্রজা একবাক্যে মেনে নেয়।
কাটাপ্পার এই কাহিনী শুনে শিবুডু জানতে চায় তার পিতা অমরেন্দ্রর বর্তমান খবর। কাটাপ্পা তাকে জানায় অমরেন্দ্র আর জীবিত নেই তাকে চির প্রভুভক্ত কাটাপ্পাই হত্যা করেছে। এই প্রশ্নের উত্তর পরবর্তী চলচ্চিত্র বাহুবলী: দ্য কনক্লুশন এ আছে এই কথা লিখে শেষ হয় চলচ্চিত্র।
রাজামৌলি'র চাচাতো ভাই এবং সুরকার এম. এম. কেরাভানি এই চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালনা করেন।
আনন্দবাজার পত্রিকা চলচ্চিত্রটির ভিজ্যুয়াল এফেক্ট, অভিনয়ের প্রশংসা করে। তবে তারা চলচ্চিত্রটিকে কোনো র্যাংকিং না দিয়ে "ফলাফল প্রতিসংহ্ত" হিসেবে উল্লেখ করে। ফার্স্টপোস্ট এই চলচ্চিত্রটিকে "কঠিন যুদ্ধ দৃশ্য এবং হাঙ্কি নায়ক নিয়ে নির্মিত এসএস রাজামৌলি'র ফ্যান্টাসি চলচ্চিত্রটি সত্যিকার অর্থেই মহাকাব্যিক" বলে আখ্যায়িত করে। হিন্দুস্তান টাইমস এই চলচ্চিত্রটিকে "এসএস রাজামৌলির এই চলচ্চিত্রটি সত্যিই অসাধারণ।" ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বলে, "বাহুবলী স্রেফ অনন্য।" আইবিএনলাইভ-এর রাজিব মাসান্দ চলচ্চিত্রটির ভিজ্যুয়াল এফেক্টের প্রশংসা করে বাহুবলীকে ৪/৫ প্রদান করেন। দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া একে দেয় এবং "দুই খণ্ডের এই প্রতীক্ষিত প্রথম খণ্ডের কাব্যিক চলচ্চিত্রটি আকাঙ্খিত মাত্রা ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে।" বলিউড হাঙ্গামার তারান আদর্শ চলচ্চিত্রটিকে দেয়। দ্য হিন্দু একে "কল্পনার জয়" হিসেবে আখ্যায়িত করে। ডেকানক্রোনিকেল একে দেয়।
১০ই জুলাই ৪০০০+ পর্দায় চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায়। তেলুগু ও হিন্দি ট্রেইলার মুক্তির ২৪ ঘণ্টার মাথ্যা ১ মিলিয়নের বেশিবার দেখা হয়। ফেসবুকে এর ভিউসংখ্যা ১.৫ মিলিয়ন ছাড়িয়ে যায় এবং ৩০০,০০০+ লাইক ও ২০০,০০০+ শেয়ার হয়, মুক্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই।
২০১৫ সালের ২৫ অক্টোবর সোনি এন্টারটেইনমেন্ট চ্যানেলে এটি প্রথমবারের মত সম্প্রচার করা হয়৷
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article বাহুবলী: দ্য বিগিনিং, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.