বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর

বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর রাজশাহী শহরে স্থাপিত বাংলাদেশের প্রথম জাদুঘর। এটি প্রত্ন সংগ্রহে সমৃদ্ধ। এই প্রত্ন সংগ্রহশালাটি ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দে ব্যক্তিগত উদ্যোগে স্থাপিত হয়েছিল। বর্তমানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এটি পরিচালনা করে থাকে।

বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর
রাজশাহী শহরের কেন্দ্র স্থলে স্থাপিত বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর
বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর এর নামফলক
স্থাপিত১৩ নভেম্বর ১৯১০ (1910-11-13)
অবস্থানহেতেম খাঁ, রাজশাহী, বাংলাদেশ
স্থানাঙ্ক২৪°২২′০২″ উত্তর ৮৮°৩৫′৩৩″ পূর্ব / ২৪.৩৬৭১০৬° উত্তর ৮৮.৫৯২৩৮২° পূর্ব / 24.367106; 88.592382
ধরনজাতীয় ইতিহাস জাদুঘর
সংগ্রহ
  • প্রত্নতত্ত্ব
  • ধ্রুপদী
  • আলংকারিক এবং সমসাময়িক শিল্প
  • ইতিহাস এবং প্রাকৃতিক ইতিহাস
  • নৃবিদ্যা
  • বিশ্ব সভ্যতা
প্রতিষ্ঠাতালর্ড কারমাইকেল
মালিকরাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
ওয়েবসাইটru.ac.bd

ইতিহাস

বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর রাজশাহী মহানগরের কেন্দ্রস্থল হেতেম খাঁ-তে অবস্থিত। এটি বাংলাদেশের প্রথম জাদুঘর। প্রত্নতত্ত্ব সংগ্রহের দিক থেকে এটি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সংগ্রহশালা। বরেন্দ্র জাদুঘর প্রতিষ্ঠায় নাটোরের দিঘাপাতিয়া রাজপরিবারের জমিদার শরৎ কুমার রায়, আইনজীবী অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় এবং রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল এর শিক্ষক রামপ্রসাদ চন্দ্রের উল্লেখযোগ্য আবদান রয়েছে। ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দে তারা বাংলার ঐতিহ্য ও নিদর্শন সংগ্রহ ও সংরক্ষণের জন্য বরেন্দ্র অনুসন্ধান সমিতি গঠন করেন। ঐ বছরে তারা রাজশাহীর বিভিন্ন স্থানে অনুসন্ধান চালিয়ে ৩২টি দুষ্প্রাপ্য নিদর্শন সংগ্রহ করেন। এই নিদর্শনগুলো সংরক্ষণ করার জন্য শরৎ কুমার রায়ের দান করা জমিতে জাদুঘরটির নিজস্ব ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। নির্মাণ শেষ হয় ১৯১৩ খ্রিষ্টাব্দে। একই বছরের ১৩ নভেম্বর বাংলার তৎকালীন গভর্নর কারমাইকেল জাদুঘরটি উদ্বোধন করেন।

বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর 
লর্ড কারমাইকেল স্থাপিত ভিত্তিফলক

১৯১১ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতা জাদুঘর অকস্মাৎ এতে সংরক্ষিত সকল নিদর্শন দাবি করে বসে। তৎকালীন গভর্নর কারমাইকেলের প্রচেষ্টায় ১৯১৩ খ্রিষ্টাব্দে ১৪ ফেব্রুয়ারি তারিখে জারীকৃত একটি সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বরেন্দ্র জাদুঘরকে এর নিদর্শন সংগ্রহ ও সংরক্ষণের ব্যপারে স্বাধিকার প্রদান করা হয়।

১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দে জাদুঘর কর্তৃপক্ষের সাথে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে নওগাঁর পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের খনন কাজ শুরু করে। পরবর্তিতে বরেন্দ্র অনুসন্ধান সমিতির একক প্রচেষ্টায় পাহাড়পুর থেকে ২৫৬টি নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দের পরে জাদুঘরটির অস্তিত্ত্ব নিয়ে সংকট দেখা দেয়। ১৯৪৯ থেকে ১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দ পযর্ন্ত জাদুঘর ভবনটির অর্ধেকাংশ মেডিকেল স্কুল হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল। ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দে জাদুঘরটি বন্ধ হবার উপক্রম হলে ঐ বছরের ১০ অক্টোবর তারিখে এর স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অধিগ্রহণ করে। জাদুঘরটির পরিদর্শকদের মধ্যে রয়েছেন মহাত্মা গান্ধী, নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু প্রমুখ সহ আনেক বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ।

বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর 
জাদুঘর ভবন

নিদর্শনসমূহ

বরেন্দ্র জাদুঘরের সংগ্রহ সংখ্যা ৯ হাজারেরও অধিক। এখানে হাজার বছর আগের সিন্ধু সভ্যতার নিদর্শন রয়েছে। মহেনজোদারো সভ্যতা থেকে সংগৃহীত প্রত্নতত্ত, পাথরের মূর্তি, খ্রিস্টীয় একাদশ শতকে নির্মিত বুদ্ধ মূর্তি, ভৈরবের মাথা, গঙ্গা মূর্তি সহ অসংখ্য মূর্তি এই জাদুঘরের অমূল্য সংগ্রহের অন্তর্ভুত। মোঘল আমলের রৌপ্র মুদ্রা, গুপ্ত সম্রাট চন্দ্রগুপ্তের গোলাকার স্বর্ণমুদ্রা, সম্রাট শাহজাহানের গোলাকার রৌপ্য মুদ্রা বিশেষ ভাবে উল্যেখয়োগ্য। এখানে প্রায় ৫,০০০ পুঁথি রয়েছে যার মধ্যে ৩৬৪৬টি সংস্কৃত আর বাকিগুলো বাংলায় রচিত। পাল যুগ থেকে মুসলিম যুগ পযর্ন্ত সময় পরিধিতে অঙ্কিত চিত্রকর্ম, নূরজাহানের পিতা ইমাদ উদ দৌলার অঙ্কিত চিত্র এখানে রয়েছে।

সংগ্রহ

বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর 
জাদুঘরের সামনের অংশ

এই জাদুঘরে ১২ সহস্র গ্রন্থ সমৃদ্ধ একটি গ্রন্থশালা রয়েছে। জাদুঘরটিকে ৭টি প্রদর্শনকোষ্ঠে ভাগ করা হয়েছে।

  • প্রথম প্রদর্শনকোষ্ঠে নওগাঁর পাহাড়পুর থেকে উদ্ধারকৃত ২৫৬টি ঐতিহাসিক সামগ্রী রয়েছে।
  • দ্বিতীয় প্রদর্শনকোষ্ঠে আছে হিন্দু ও বৌদ্ধদের তৈরী কাঠ ও পাথরের নানা ভাস্কর।
  • তৃতীয় ও চতুর্থ প্রদর্শনকোষ্ঠে রয়েছে বিভিন্ন দেব-দেবীর মূর্তি।
  • পঞ্চম প্রদর্শনকোষ্ঠে আছে বৌদ্ধ মূর্তি।
  • ষষ্ঠ প্রদর্শনকোষ্ঠে রয়েছে বিভিন্ন ভাষায় লিখিত পাথরের খণ্ড।
  • সপ্তম প্রদর্শনকোষ্ঠে সংরক্ষিত আছে বিভিন্ন আদিবাসী জনগোষ্ঠীর নিদর্শনসমূহ।

চিত্রমালা

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Tags:

বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর ইতিহাসবরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর নিদর্শনসমূহবরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর সংগ্রহবরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর চিত্রমালাবরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর আরও দেখুনবরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর তথ্যসূত্রবরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর বহিঃসংযোগবরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘররাজশাহীরাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলাদোয়াহুমায়ূন আহমেদসূরা ফাতিহাসূরা ফালাকগৌতম বুদ্ধমুজিবনগরজবারোনাল্ড রসজিৎ অভিনীত চলচ্চিত্রের তালিকারামকৃষ্ণ পরমহংসহিন্দুধর্মের ইতিহাসফেরেশতাপারদঅ্যাসিড বৃষ্টিইউরোপআবদুর রব সেরনিয়াবাত২৮ মার্চচিকিৎসকব্রিটিশ রাজের ইতিহাসফেসবুকবাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনআয়াতুল কুরসিবাংলাদেশী জাতীয় পরিচয় পত্রসৌদি আরবক্রিয়েটিনিনবাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকুলম্বের সূত্র২০২০-২৩ আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগইউটিউবারশিখধর্মথ্যালাসেমিয়ামার্কিন যুক্তরাষ্ট্রজয়নুল আবেদিনভেষজ উদ্ভিদ২০২২-এ ইউক্রেনে রুশ আক্রমণনেপোলিয়ন বোনাপার্টমাতৃভাষীর সংখ্যা অনুসারে ভাষাসমূহের তালিকারামায়ণমুহাম্মাদের মৃত্যুরাহুল গান্ধীহরপ্পারামপ্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়এশিয়াহৃৎপিণ্ডযাকাতমাটিজামালপুর জেলাইস্তিগফারনামের ভিত্তিতে মৌলসমূহের তালিকাপশ্চিমবঙ্গের জেলাশেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডবিটিএসসন্ধিসংক্রামক রোগঋতুমুহাম্মাদকুরআনের ইতিহাসদক্ষিণ কোরিয়ারাশিয়ামাক্সিম গোর্কিরোমানিয়াআতাবাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীআফরান নিশোব্রাজিল জাতীয় ফুটবল দলবাংলাদেশ সরকারফুলকুরাসাওবাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষপ্রশান্ত মহাসাগরস্নায়ুতন্ত্রচাকমাভারতের জাতীয় পতাকাইসলামি সহযোগিতা সংস্থানামাজের বৈঠকভারতের রাষ্ট্রপতিদের তালিকা🡆 More