পেত্রা (গ্রিক: πέτρα; আরবি ভাষায়: البتراء, আল্-বুত্রা) একটি প্রাচীন আরব শহর। বর্তমান জর্দানের দক্ষিণ-পশ্চিমের শহর ওয়াদি মুসার ঠিক পূর্বে হুর পাহাড়ের পাদদেশে এর অবস্থান। ২৪০০-২২০০ বছর আগে এটি ছিল নাবাতীয় রাজ্যের রাজধানী। পেত্রা নগরী মূলত একটি অত্যন্ত সুরক্ষিত দুর্গ ছিল। এটি বিখ্যাত এর অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর গুরুত্বপূর্ণ স্মৃতিস্তম্ভগুলোর জন্য। এটি তৈরি হয়েছে গুহার মধ্যে যা কোথাও কোথাও মাত্র ১২ ফুট চওড়া, মাথার ওপরে পাথরের দেয়াল। গুহার পাশেই রয়েছে কঠিন পাথরের দেয়ালের গায়ে গ্রথিত সেই প্রাচীন দালানগুলো যার মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত হল ‘খাজনেত ফিরাউন’ নামের মন্দিরটি। মন্দিরটি ফারাওদের ধনভান্ডার নামেও পরিচিত। আরো রয়েছে একটি অর্ধগোলাকৃতির একটি নাট্যশালা যেখানে প্রায় ৩০০০ দর্শক একসাথে বসতে পারে।
ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান | |
---|---|
মানদণ্ড | সাংস্কৃতিক: i, iii, iv |
সূত্র | ৩২৬ |
তালিকাভুক্তকরণ | ১৯৮৫ (নবম সভা) |
আয়তন | ২৬৪ বর্গকিলোমিটার (১০২ মা২) |
পেত্রা নগরী ছিল অত্যন্ত সুরক্ষিত ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ। পেত্রার চারধারে ছিল উঁচু পাহাড় আর একটি অফুরন্ত ঝরনাধারা। পশ্চিমের গাজা, উত্তরের বসরা ও দামাস্কাস, লোহিত সাগরের পাশের আকুয়াবা ও লিউস এবং মরুভূমির উপর দিয়ে পারস্য উপসাগরে যাওয়ার প্রধান সব বাণিজ্যিক পথগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতো পেত্রা।
রোমান শাসনের সময় সমুদ্রকেন্দ্রিক বাণিজ্য পুরোদমে শুরু হলে পেত্রা দ্রুত ধ্বংস হতে থাকে। ১০৬ সালে রোমানরা এটিকে দখল করে তাদের ‘আরব পেত্রাইয়া’ প্রদেশের অংশীভূত করে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় শতকে শহরটির প্রভূত উন্নতি হলেও পরবর্তীকালে প্রতিদ্বন্দী শহর ‘পামিরা’ পেত্রার অধিকাংশ বাণিজ্যই দখল করে নিলে তখন পেত্রার গুরুত্ব কমে যায়। মুসলমানেরা এটিকে তাদের দখলে নেয় সপ্তম শতকে এবং পরবর্তীতে দ্বাদশ শতকে আবার ক্রুসেডাররা এটিকে দখল করলে ক্রমেক্রমে এটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। এছাড়া ৩৬৩ সালে এক ভূমিকম্প ধ্বংস করে দেয় এর দালানগুলো, নষ্ট করে দেয় এর পানি সঞ্চালন ব্যবস্থাকে। মধ্যযুগে পেত্রার ধ্বংসাবশেষ আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়, ত্রয়োদশ শতকের দিকে পেত্রা দেখতে যান ইজিপ্টের সুলতান বাইবারস।
বহু বছর অজানা থাকার পর এই প্রাচীন শহরটিকে পশ্চিমা বিশ্বের কাছে উন্মোচন করেন সুইস পরিব্রাজক জোহান লুডিগ বুর্খার্দত, ১৮১২ সালে। জন উইলিয়াম বার্গন তার নিউডিগেট পুরস্কার বিজয়ী বিখ্যাত এক সনেটে একে বর্ণনা করেছেন “a rose-red city half as old as time” বলে। বার্গন কিন্তু পেত্রাতে যাননি। বলা যেতে পারে যেতে পারেননি। কারণ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর পর্যন্ত শুধুমাত্র ইউরোপীয়ানরাই সেখানে যেতে পারতেন। স্থানীয় লোক আর অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে যেতে হত সেখানে। ইউনেস্কো এটিকে ‘বৈশ্বিক ঐতিহ্যবাহী স্থান’ ঘোষণা করে ১৯৮৫ সালে। ঘোষণায় পেত্রাকে বলা হয় “one of the most precious cultural properties of man's cultural heritage”। পেত্রা সংস্কৃতি, সম্পদ আর ক্ষমতায় একসময় যে কত সমৃদ্ধ ছিল তা প্রমাণ করতে পেত্রার ধ্বংসাবশেষই যথেষ্ট।
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article পেত্রা, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.