নোয়ার চলচ্চিত্র: চলচ্চিত্র

নোয়ার চলচ্চিত্র (ফরাসি: Film noir ফিল্ম নোয়ার) (নয়ার চলচ্চিত্র বা নয়ার সিনেমা নামেও পরিচিত) বলতে মূলত অপরাধ-জগৎ নিয়ে নির্মিত হলিউডের শৈলীনিষ্ঠ নাট্য বা থ্রিলার চলচ্চিত্রগুলোকে বোঝায়, বিশেষ করে যেগুলোতে হতাশাবাদী মনোভাব এবং যৌন প্রণোদনার উপর বেশি গুরুত্ব আরোপ করা হয়। ধ্রুপদের যুগের এই সিনেমাগুলোর নির্মাণকাল ছিল ১৯৪০ থেকে ১৯৫০-এর দশক পর্যন্ত। সে যুগের নোয়ার সিনেমাগুলোর বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, লো-কি আলোকসজ্জা ব্যবহার করে সাদাকালো চিত্র ধারণ। এই দৃশ্যশৈলী প্রকৃতপক্ষে জার্মান অভিব্যক্তিবাদী (expressionism) চিত্রগ্রহণ থেকে এসেছে। এ সিনেমাগুলোর কাহিনী এবং মনোভঙ্গির উৎপত্তিস্থল ছিল যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক মহামন্দার সময় জন্ম নেয়া অপরাধ-জগৎ-সংশ্লিষ্ট অসংখ্য দুর্ধর্ষ কল্পকাহিনী।

নোয়ার চলচ্চিত্র: পটভূমি, সর্বকালের সেরা নোয়ার চলচ্চিত্র, তথ্যসূত্র
দ্য বিগ কম্বো (১৯৫৫) সিনেমায় দুটি ছায়ামূর্তি। সিনেমাটির চিত্রগ্রাহক ছিলেন জন অ্যাল্টন, যিনি নোয়া সিনেমার অনেক বৈশিষ্ট্যমূলক ছবি ধারণের জন্য বিখ্যাত।

ফরাসি ভাষায় film noir শব্দ দুটির অর্থ কৃষ্ণ চলচ্চিত্র। হলিউড সিনেমার ক্ষেত্রে এই বাগধারাটি প্রথম প্রয়োগ করেছিলেন ফরাসি চলচ্চিত্র সমালোচক নিনো ফ্রঁ, ১৯৪৬ সালে। ধ্রুপদী যুগের মার্কিন চলচ্চিত্র শিল্পের অধিকাংশ ব্যক্তিই এ নাম সম্পর্কে কিছু জানতেন না। চলচ্চিত্রের ইতিহাসবিদ ও সমালোচকরা অতীত পর্যালোচনার মাধ্যমে নামটি ব্যবহার শুরু করেছিলেন। ১৯৭০-এর দশকে এর বহুল ব্যবহার শুরু হয়, এর আগে অধিকাংশ নোয়ার সিনেমাকে মেলোড্রামা হিসেবে আখ্যায়িত করা হতো। নোয়ার সিনেমাকে একটি আলাদা ঘরানা বা জঁরা হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে কিনা এ নিয়ে এখনও চলচ্চিত্র তাত্ত্বিকদের মধ্যে বিতর্ক রয়ে গেছে।

নোয়ার সিনেমার কাহিনী অনেক ধরনের হতে পারে— কেন্দ্রীয় চরিত্রটি হতে পারে কোন প্রাইভেট গোয়েন্দা বা নজরদারিতে নিয়োজিত কোন ব্যক্তি (দ্য বিগ স্লিপ, ১৯৪৬), সাদা পোশাকের পুলিশ (দ্য বিগ হিট, ১৯৫৩), বয়স্ক মুষ্টিযোদ্ধা (দ্য সেট-আপ, ১৯৪৯), অন্যের নির্ভরতা আদায়ের পর তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে এমন কোন দুর্ভাগা (নাইট অ্যান্ড দ্য সিটি, ১৯৫০), কোন ন্যায়নিষ্ঠ নাগরিক যে ভাগ্যচক্রে অপরাধ জগতে জড়িয়ে পড়ে (গান ক্রেজি, ১৯৫০) অথবা কেবল পরিস্থিতির শিকার কোন সাধারণ মানুষ (ডি.ও.এ., ১৯৫০)। নোয়া সিনেমা এক সময় কেবল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বানানো হলেও পরবর্তীকালে অনেক দেশেই এর প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। ১৯৬০-এর দশকের পরে নির্মীত অনেক চলচ্চিত্রে ধ্রুপদী যুগের নোয়া সিনেমার নিয়মাবলী ব্যবহার করতে দেখা যায়। পরবর্তী কালের এসব নোয়া-সদৃশ সিনেমাকে বলা হয় নব্য-নোয়া চলচ্চিত্র। অন্যদিকে নোয়া সিনেমার আলঙ্কারিক দিকগুলো নিয়ে সেই ১৯৪০-এর দশক থেকেই ব্যঙ্গাত্মক ছবি নির্মীত হয়ে আসছে।

পটভূমি

চলচ্চিত্র থেকে

নোয়ার সিনেমার নান্দনিকতা অনেকাংশেই জার্মান অভিব্যক্তিবাদ দ্বারা প্রভাবিত। ১৯১০ থেকে ১৯২০-এর দশক পর্যন্ত মূলত জার্মান নাটক, আলোকচিত্র, চারুকলা, ভাস্কর্য, স্থাপত্য এবং সিনেমায় এই বিপ্লব দেখা দিয়েছিল। হলিউডে সুযোগ সুবিধা অনেক বেশি থাকায় এবং জার্মানিতে দিনদিন নাৎসি পার্টির প্রভাব বাড়তে থাকায় সে সময় জার্মানিতে কর্মরত অনেক চলচ্চিত্রকার ও কুশলী যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান যার মাঝে অনেকেই সরাসরি অভিব্যক্তিবাদের সাথে জড়িত ছিলেন অথবা তার সাথে সরাসরি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে পড়াশোনা করেছেন।

সর্বকালের সেরা নোয়ার চলচ্চিত্র

ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজ-এ দর্শকদের ভোটের ভিত্তিতে সর্বকালের সেরা ৫০টি নোয়া চলচ্চিত্রের একটি তালিকা করা হয়েছে যাতে প্রথম স্থানে রয়েছে বিলি ওয়াইল্ডারের সানসেট বুলেভার্ড। এই তালিকায় সেরা দশটি সিনেমা হচ্ছে:

রেংকিং আইএমডিবি রেটিং সিনেমার নাম ইংরেজি নাম মুক্তির সন পরিচালক
৮.৭ সানসেট বুলেভার্ড Sunset Blvd. ১৯৫০ বিলি ওয়াইল্ডার
৮.৬ এম M ১৯৩১ ফ্রিৎস লাং
৮.৫ ডাবল ইনডেমনিটি Double Indemnity ১৯৪৪ বিলি ওয়াইল্ডার
৮.৩ দ্য থার্ড ম্যান The Third Man ১৯৪৯ ক্যারল রিড
৮.৩ দ্য মাল্টিজ ফ্যালকন The Maltese Falcon ১৯৪১ জন হিউজটন
৮.৩ টাচ অফ ইভিল Touch of Evil ১৯৫৮ অরসন ওয়েলস
৮.২ দিয়াবোলিক Diabolique ১৯৫৫ অঁরি-জর্জ ক্লুজো
৮.২ স্ট্রেঞ্জারস অন আ ট্রেন Strangers On a Train ১৯৫১ আলফ্রেড হিচকক
৮.২ রিফিফি Riffi ১৯৫৫ জুল দাসাঁ
১০ ৮.২ নটরিয়াস Notorious ১৯৪৬ আলফ্রেড হিচকক
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ফিল্ম রেজিস্ট্রিতে অন্তর্ভুক্ত ধ্রুপদী নোয়া চলচ্চিত্রসমূহ
১৯৪০-৪৯

দ্য ম্যাল্টিজ ফ্যালকন | শ্যাডো অফ আ ডাউট | লরা | ডাবল ইনডেমনিটি | মিলড্রেড পিয়ার্স | দ্য লস্ট উইকএন্ড
ডিট্যুর | দ্য বিগ স্লিপ | দ্য কিলারস | নটরিয়াস | আউট অফ দ্য পাস্ট | ফোর্স অফ ইভিল | দ্য নেকেড সিটি | হোয়াইট হিট

১৯৫০-৫৮

গান ক্রেজি | ডি.ও.এ. | ইন আ লোনলি প্লেস | দ্য অ্যাসফল্ট জাংগল | সানসেট বুলেভার্ড
দ্য হিচ-হাইকার | দ্য বিগ হিট | কিস মি ডেডলি | দ্য নাইট অফ দ্য হান্টার | সুইট স্মেল অফ সাকসেস | টাচ অফ ইভিল

তথ্যসূত্র

Tags:

নোয়ার চলচ্চিত্র পটভূমিনোয়ার চলচ্চিত্র সর্বকালের সেরা নোয়ার চলচ্চিত্র তথ্যসূত্রনোয়ার চলচ্চিত্রচিত্রগ্রহণফরাসি ভাষাহলিউড

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

বাটারবীন্দ্রসঙ্গীতহিমালয় পর্বতমালাসুকুমার রায়প্রযুক্তিবাংলাদেশবাংলাদেশ বিমান বাহিনীবাংলার প্ৰাচীন জনপদসমূহতাজমহলমোবাইল ফোনদোয়াচোখঈদুল ফিতরআসমানী কিতাবঅপু বিশ্বাসরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরসহীহ বুখারীমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসোনালী ব্যাংক পিএলসিবাংলাদেশের অর্থনীতিভাষারবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টিকর্মবিশ্ব থিয়েটার দিবসশাহ জাহানপদ (ব্যাকরণ)আমার দেখা নয়াচীনরামায়ণএইচআইভি/এইডসবাংলার শাসকগণওয়ালাইকুমুস-সালামণত্ব বিধান ও ষত্ব বিধানবাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিইশার নামাজবাংলাদেশের প্রশাসনিক অঞ্চলবাস্তুতন্ত্রকিশোরগঞ্জ জেলামল্লিকা সেনগুপ্তঋগ্বেদইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসিভরিদেব (অভিনেতা)১৯৭১ বাংলাদেশী বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডঅকাল বীর্যপাতবঙ্গবন্ধু সেতুপরীমনিরোহিত শর্মাবাংলাদেশের সংবিধানের সংশোধনীসমূহপশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত ব্যবস্থাওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবফুটবলমুহাম্মদ ইউনূসসানরাইজার্স হায়দ্রাবাদদ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনরক্তের গ্রুপ২০১৮–১৯ লা লিগাব্রিটিশ রাজের ইতিহাসশব্দ (ব্যাকরণ)আমার সোনার বাংলাবসন্তমারমারশ্মিকা মন্দানাভারতের ইতিহাসলোহিত রক্তকণিকাকলকাতা নাইট রাইডার্সগ্রাহামের সূত্রপশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন, ২০২১ব্র্যাকতিলক বর্মাহায়দ্রাবাদ রাজ্যমুখমৈথুনরাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়বাংলা লিপিহিন্দি ভাষাইউরোপমেঘনাদবধ কাব্যমশাজাতিসংঘের মহাসচিবআমইতিহাস🡆 More