নবদ্বীপের লাল দই: বাংলার মিষ্টি

নবদ্বীপের লাল দই বা ক্ষীর দই বা চাক্কু দই বাংলার অন্যতম প্রসিদ্ধ মিষ্টান্ন। দই বা দধি মিষ্টান্ন পরিবারের কুলীন সদস্য। দই সাধারণত সাদা হলেও লাল দই একটি স্বতন্ত্র উপাদেয় মিষ্টান্ন। নদিয়ার নবদ্বীপের লাল দই খুবই জনপ্রিয়। ১৯৩০ সালের দিকে নবদ্বীপের জনৈক কালিপদ মোদক, মতান্তরে কালী ঘোষ, এই দই প্রথম প্রস্তুত করেন। ১৫০ বছরেরও প্রাচীন পাঁচুর মিষ্টির দোকান “লক্ষ্মী নারায়ণ মিষ্টান্ন ভাণ্ডার ” অন্যতম বিখ্যাত লাল দইয়ের দোকান। দই তৈরি করার পর দশদিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়।

নবদ্বীপের লাল দই
নবদ্বীপের লাল দই: ইতিহাস, প্রস্তুত প্রণালী, আরও দেখুন
নবদ্বীপের প্রসিদ্ধ লাল দই
অন্যান্য নামক্ষীর দই, চাক্কু দই
উৎপত্তিস্থলভারত
অঞ্চল বা রাজ্যনবদ্বীপ, পশ্চিমবঙ্গ
প্রস্তুতকারীকালিপদ মোদক, মতান্তরে কালী ঘোষ
পরিবেশনঠান্ডা
প্রধান উপকরণদুধ

ইতিহাস

দই লাল হয়ে ওঠার পিছনে একটি কিংবদন্তি আছে। নবদ্বীপের পুরাত্বাত্বিক পরিষদের কাছ থেকে জানা যায় লাল দই এর আবিষ্কর্তা নবদ্বীপ ফাঁসিতলার বাসিন্দা এবং মিষ্টান্ন প্রস্তুতকারক কালী ঘোষ। কালী ঘোষ এবং হরি ঘোষ দুই ভাই, তাঁরা মূলত দই এবং ঘোল তৈরি করতেন। অল্প আঁচে মোষের দুধে অল্প অল্প জল দিয়ে দীর্ঘক্ষণ ধরে ফুটিয়ে দুধকে ঘন করতেন। অনেকক্ষণ জ্বাল দেওয়ায় সেই দুধের রঙ লালচে হয়ে যেত। তাই দিয়ে ঘোল তৈরি করতেন দুই ভাই। তাঁদের ঘোল এলাকায় লাল ঘোল নামে পরিচিত ছিল। দুধ ঘন হলেই সেটি প্রায় ক্ষীরের পর্যায়ে পৌঁছে যায়, তাই অনেক সময় ক্ষীর দইও বলে।

এই দইয়ের আরেকটি নাম হল চাক্কু দই। এই নামের পিছনেও একটি কারণ আছে। দই কতটা ভালো সেটার বিচার হয় দই কতটা আঁটো হয়েছে তার উপর। সেটি পরীক্ষা করার জন্য দইয়ের হাঁড়ি উল্টে দিয়েও দেখা হয়। এমনকি হাঁড়ির ভিতরে চাকু বা ছুরি ঢুকিয়েও দেখা হয়। সেই চাকু থেকেই চাক্কু দইয়ের নাম।

প্রস্তুত প্রণালী

দই প্রস্তুত করা হয় দুটি ধাপে, একটি হল দুধ জ্বাল দেওয়া বা ফুট ও পরের ধাপে দই পাতা। দই প্রস্তুত করার জন্য গরু বা মহিষের খাঁটি দুধ আবশ্যিক। এছাড়া জ্বালানিরও একটি বড় ভুমিকা আছে লাল দই প্রস্তুত করতে। কাঠ ও কয়লা দুই ধরনের জ্বালানি লাগে। জ্বালের প্রথম ‘ফুট’ হতে সময় লাগবে ছয় থেকে সাত ঘণ্টা এবং এটা করা হয় কাঠের জ্বালে।দুধে যতক্ষন না লাল রঙ ধরবে ততক্ষণ ‘ফুট’ চলতেই থাকবে। প্রায় তিন সের দুধ জ্বাল দিয়ে এক সের পৌঁছয়। এই ধাপে পরের পর্ব কয়লার আঁচে। সাদা দইয়ের ক্ষেত্রে দুধ ফুটিয়ে গাঢ় করা হয় যে সময়ে, তার চেয়ে বেশি সময় ফোটাতে হয় লাল দই তৈরি করার জন্যে, অর্থাৎ, লাল দইয়ের জন্য দুধের ঘনত্ব বেশি।  দুধ তৈরি হয়ে গেলে মাপ মতো মাটির পাত্রে ওই দুধ ঢেলে নিভন্ত কয়লার উনানের চারপাশে ঘিরে বসিয়ে দেওয়া হয় নানা মাপের মাটির হাঁড়ি। গায়ে জড়িয়ে দেওয়া হয় চট। এই ধাপটি হলো দই পাতা। তা থেকেই হয় দই। বাজারের চাহিদা অনুসারে পাত্রের মাপও নানা রকমের। ১০০ গ্রামের মাটির খুঁড়ি (গ্লাস) থেকে পাঁচ কেজির হাঁড়িতে এই দই পাতা হয়ে থাকে। কোন বাইরের রঙ ছাড়াই ওই লালরঙে পৌঁছানোই নবদ্বীপের কারিগরদের মুন্সিয়ানা।

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

Tags:

নবদ্বীপের লাল দই ইতিহাসনবদ্বীপের লাল দই প্রস্তুত প্রণালীনবদ্বীপের লাল দই আরও দেখুননবদ্বীপের লাল দই তথ্যসূত্রনবদ্বীপের লাল দইদইনদিয়া জেলানবদ্বীপ

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বিশেষ শাখা (বাংলাদেশ পুলিশ)বাঙালি হিন্দুদের পদবিসমূহকুরআনগাজওয়াতুল হিন্দবাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধানবাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস৬৯ (যৌনাসন)কক্সবাজারডিপজলনামাজবাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়পেশাশাকিব খানমহেন্দ্র সিং ধোনিচর্যাপদসত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্রদুরুদমাইটোসিসআসিয়ানডিএনএনিউমোনিয়াহোয়াটসঅ্যাপপেপসিবাউল সঙ্গীতআমার সোনার বাংলাহিরণ চট্টোপাধ্যায়বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীআবুল কাশেম ফজলুল হকপাট্টা ও কবুলিয়াতসূরা ফাতিহাবাংলাদেশ সেনাবাহিনীহামাসকৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাবাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকাকুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টখুলনা বিভাগদক্ষিণ কোরিয়াশাকিব খান অভিনীত চলচ্চিত্রের তালিকামুতাজিলাতৃণমূল কংগ্রেসবাস্তুতন্ত্রবেনজীর আহমেদএ. পি. জে. আবদুল কালামশেখ হাসিনাআরসি কোলাজিএসটি ভর্তি পরীক্ষাপ্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরগ্রামীণ ব্যাংকনোবেল পুরস্কারপ্রাপ্তদের তালিকাসৌদি আরবআকবররশিদ চৌধুরীইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়নাহরাওয়ানের যুদ্ধবেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশথাইল্যান্ডমালদ্বীপগৌতম বুদ্ধহৃৎপিণ্ডবাংলাদেশের পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাদুর্গাপূজাফুসফুসবাগদাদ অবরোধ (১২৫৮)রিয়াল মাদ্রিদ ফুটবল ক্লাবধর্মীয় জনসংখ্যার তালিকাআমাশয়ছোটগল্পহিসাববিজ্ঞানহরমোনচীননিজামিয়াআহসান মঞ্জিলপ্রেমালুবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলপশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত ব্যবস্থাআরবি বর্ণমালা🡆 More