তনিন্থারি অঞ্চল

তনিন্থারি অঞ্চল (বর্মী: တနင်္သာရီတိုင်းဒေသကြီး, উচ্চারিত: ; মন ကွာန်ရတ်တၟး: ဏၚ်ကသဳ or ရးတၞင်သြဳ; মালয়: Tanah Sari; পূর্বে তেনাসেরিম বিভাগ এবং পরবর্তীতে তনিন্থরি বিভাগ, থাই: ตะนาวศรี, আরটিজিএস: তানাও সি, উচ্চারিত ; পূর্বে তানাও সি নামে পরিচিত) হচ্ছে মায়ানমারের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল, যা ক্রা ইসথমাসে দেশটির দীর্ঘ সংকীর্ণ দক্ষিণ অংশ জুড়ে রয়েছে। এটি পশ্চিমে আন্দামান সাগর এবং তেনাসেরিম পর্বতমালা পর্যন্ত বিস্তৃত, যার বাইরে পূর্ব দিকে থাইল্যান্ড। উত্তরে মন রাজ্য। এর উপকূলের বাইরে অনেক দ্বীপ- দক্ষিণ ও কেন্দ্রীয় উপকূলীয় এলাকায় বৃহৎ মারগুই দ্বীপপুঞ্জ এবং উত্তর উপকূলের ছোট মস্কোস দ্বীপপুঞ্জ আছে। বিভাগের রাজধানী দাউই (তাভয়)। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ শহরের মধ্যে রয়েছে মাইক (মারগুই) এবং কাওথাউং। বিভাগটি ৪৩,৩৪৪.৯ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে অবস্থিত। ২০১৪ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী এর জনসংখ্যা ছিল ১,৪০৬,৪৩৪।

তনিন্থারি অঞ্চল
တနင်္သာရီတိုင်းဒေသကြီး
অঞ্চল
মিয়ানমা প্রতিলিপি
 • বর্মীta.nangsari tuing: desa. kri:
তনিন্থারি অঞ্চলের পতাকা
পতাকা
মিয়ানমারে তনিন্থরী অঞ্চলের অবস্থান
মিয়ানমারে তনিন্থরী অঞ্চলের অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ১৩°০′ উত্তর ৯৮°৪৫′ পূর্ব / ১৩.০০০° উত্তর ৯৮.৭৫০° পূর্ব / 13.000; 98.750
দেশতনিন্থারি অঞ্চল মায়ানমার
অঞ্চলদক্ষিণ
রাজধানীদাউই (ত্যাভয়)
সরকার
 • প্রধানমন্ত্রীম্যিন্ত মাউং (এনএলডি)
 • মন্ত্রী পরিষদতনিন্থরী অঞ্চল সরকার
 • আইনসভাতনিন্থরী অঞ্চল হ্লুত্তাও
 • বিচারবিভাগতনিন্থরী অঞ্চল উচ্চ আদালত
আয়তন
 • মোট৪৩,৩৪৪.৯ বর্গকিমি (১৬,৭৩৫.৬ বর্গমাইল)
এলাকার ক্রম৫ম
জনসংখ্যা (২০১৪ সালের মায়ানমার আদমশুমারী)
 • মোট১৪,০৮,৪০১
 • ক্রম১২শ
 • জনঘনত্ব৩২/বর্গকিমি (৮৪/বর্গমাইল)
বিশেষণTanintharian
জনমিতি
 • জাতিবামার, দাউই, রাখাইন, কারেন, স্যালোন, বর্মী মালয়(মন)
 • ধর্মবৌদ্ধ ৮৭.৫০%, খ্রিস্টান ৭.২০%, ইসলাম ৫.১০%, হিন্দু ০.১০%
সময় অঞ্চলমিয়ানমার স্ট্যান্ডার্ড সময় (ইউটিসি+০৬:৩০)
আইএসও ৩১৬৬ কোডMM-05
মানব উন্নয়ন সূচক (২০১৭)০.৫৫২
medium · 8th

নামকরণ

মন: ဏၚ်ကသဳ বা တနၚ်သြဳ; মালয়: Tanah Sari, হানথাওয়াডি রাজ্যের অংশ। এটি পরবর্তীতে আয়ুথায়া রাজ্য দ্বারা দখল করা হয়। পরবর্তীতে আবার যুক্তরাজ্যমায়ানমার দ্বারা দখল করা হয়।

ইতিহাস

ঐতিহাসিক জনসংখ্যা
বছরজন.±%
১৯৭৩ ৭,১৯,৪৪১—    
১৯৮৩ ৯,১৭,২৪৭+২৭.৫%
২০১৪ ১৪,০৮,৪০১+৫৩.৫%
উৎস: ২০১৪ মায়ানমার আদমশুমারী

ঐতিহাসিকভাবে বর্তমান তনিন্থরি অঞ্চল, মন রাজ্য এবং দক্ষিণ কাইন রাজ্য তনিন্থরি অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত। একদম উত্তরের অঞ্চল ১০৫৭ সালের আগে ঐটন রাজ্যের অংশ ছিল, এবং সমগ্র উপকূলরেখা ১০৫৭ সালের পর রাজা আনারাহতা পৌত্তলিক সাম্রাজ্যের অংশ হয়ে ওঠে। ১২৮৭ সালে বাগনান পতনের পর, এলাকাটি সুখোথাই সিয়ামিজ রাজ্যে, এবং পরে তার উত্তরসূরি আয়ুথায়া রাজ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়। এই অঞ্চলের একদম উত্তরের সীমান্ত ছিল আজকের মাওলামিয়াইনের (মোলমেইন) কাছে থানলউইন (সালউইন) নদীর চারদিকে।

অঞ্চলটি ১৫৬৪ সালের দিকে বার্মার অন্তর্ভুক্ত হতে শুরু করে যখন টুঙ্গু রাজবংশের রাজা বেইনাউং সিয়ামের সমস্ত এলাকা জয় করেন। আয়ুথায়া ১৫৮৭ সালে স্বাধীনতা ফিরে পেয়েছিলেন, এবং ১৫৯৩ সালে তনিন্থারির দক্ষিণ অর্ধেক এবং ১৫৯৯ সালে সমগ্র উপদ্বীপ পুনরুদ্ধার করেন। ১৬১৪ সালে রাজা আনাউকপেটলুন উপকূলের উপরের দিকের অর্ধেক দাউই পুনরুদ্ধার করেন কিন্তু বাকি অংশ দখল করতে ব্যর্থ হন।[৪] দাউই (তাভোয়) দক্ষিণে তেনাসেরিম সিয়ামিজের নিয়ন্ত্রণে ছিল। মাইইক (মারগুই) বন্দর সিয়ামিজ ও ইউরোপীয়দের মধ্যে বাণিজ্যের একটি প্রধান কেন্দ্র ছিল। [5]

প্রায় সাত দশক ধরে, ১৮ শতকের মাঝামাঝি থেকে ১৯ শতকের শুরু পর্যন্ত, বার্মা এবং সিয়াম উপকূলরেখা নিয়ন্ত্রণের জন্য একাধিক যুদ্ধে জড়িত হয়। ১৭৪০-১৭৫৭ সালের বার্মিজ গৃহযুদ্ধের সুযোগ নিয়ে সিয়ামিজ সতর্কতার সাথে ১৭৫১ সালে মোতামার দক্ষিণে উপকূলের দিকে এগিয়ে যায়। গৃহযুদ্ধের বিজয়ী, কনবাউং রাজবংশের রাজা আলাউংপায়া ১৭৬০ সালে সিয়ামিজের কাছ থেকে দাউই উপকূলরেখা পুনরুদ্ধার করেন। তার পুত্র রাজা হসিনুশিন ১৭৬৫ সালে সমগ্র উপকূলরেখা জয় করেন। পরবর্তী দশকগুলিতে, উভয় পক্ষ তাদের সুবিধার জন্য নিয়ন্ত্রণ রেখা প্রসারিত করার চেষ্টা করে কিন্তু তারা উভয়ই ব্যর্থ হয়। বার্মিজরা তনিন্থারিকে একটি অগ্রগামী ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে সিয়ামের বেশ কয়েকটি অসফল আগ্রাসন (১৭৭৫-১৭৭৬; ১৭৮৫-১৭৮৬; ১৮০৯-১৮১২); এবং সিয়ামিরাও তনিন্থারি (১৭৮৭ এবং ১৭৯২) পুনর্দখলের প্রচেষ্টায় ব্যর্থ হয়। (উত্তর ফ্রন্টে বার্মা এবং সিয়াম, কেংতুং ও লান না-এর নিয়ন্ত্রণের জন্য লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়।)

বার্মা ইয়ান্দাবো চুক্তি অনুযায়ী প্রথম অ্যাংলো-বার্মিজ যুদ্ধের (১৮২৪-১৮২৬) পর সালওয়েন নদীর দক্ষিণে ব্রিটিশদের কাছে চলে যায়। ব্রিটিশ এবং সিয়ামিজরা ২০ জুন ১৮২৬ সালে একটি সীমানা চিহ্নিতকরণ চুক্তি, এবং ১৮৬৮ সালে আরেকটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। এরপর মাওলামেইন (মোলমেইন) ব্রিটিশ বার্মার প্রথম রাজধানী হয়ে ওঠে। ১৮৫২ সালের দ্বিতীয় অ্যাংলো-বার্মিজ যুদ্ধের পর ব্রিটিশরা সমগ্র নিম্ম বার্মা দখল করে নেয় এবং রাজধানী ইয়াঙ্গুনে (রেঙ্গুন) স্থানান্তর করে। ১৮৫২ সালের পর তনিন্থারি অঞ্চল সমগ্র দক্ষিণ-পূর্ব মায়ানমার নিয়ে গঠিত হয়, যার মধ্যে রয়েছে আজকের মন রাজ্য, কাইন রাজ্য এবং বাগো অঞ্চলের তাউঙ্গু জেলা। মাওলামাইন তনিন্থারিত রাজধানী ছিল।

১৯৫৮ সালে ব্রিটেন থেকে স্বাধীনতার পর, তনিন্থারির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় জেলা নবগঠিত কারেন রাজ্যে স্থাপন করা হয়। ১৯৭৪ সালে, অবশিষ্ট তনিন্থারি উত্তর অংশ মন রাজ্য তৈরি করা হয়। এখন মন রাজ্যের অভ্যন্তরে মাওলামাইইন থাকায় তনিন্থারি অঞ্চলের রাজধানী দাউইতে স্থানান্তরিত হয়। ১৯৮৯ সালে বিভাগের ইংরেজি বানান আনুষ্ঠানিকভাবে Tanintharyi -তে পরিবর্তন করা হয়।

অর্থনীতি

তনিন্থারি প্রদেশ মিয়ানমারের দক্ষিণ প্রান্তে, সমুদ্রের কাছাকাছি অবস্থিত, যা এর অর্থনীতির একটি প্রধান অংশ।

এই অঞ্চলের প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদ, বেশিরভাগ রত্ন, শুধু মায়ানমার নয়, সারা বিশ্বেও অত্যন্ত জনপ্রিয়। এই অঞ্চলের বিখ্যাত খনিগুলির মধ্যে রয়েছে হাইন্ডা, হামিঙ্গি, কানবাউক, ইয়াওয়া, কিয়াউকমেতাউং, নান্টিদা এবং ইয়াদানাবন, যেখানে প্রচুর ধাতু পাওয়া যায়। পার্ল দ্বীপে অবস্থিত মুক্তো গুলো মায়ানমার রত্ন এম্পোরিয়াতে অনেক বৈদেশিক মুদ্রা আনয়ন করে। এই রত্নগুলো মায়ানমার এবং অন্যান্য দেশের অনেক অংশেও রফতানি করা হয়।

তথ্যসূত্র

Tags:

তনিন্থারি অঞ্চল নামকরণতনিন্থারি অঞ্চল ইতিহাসতনিন্থারি অঞ্চল অর্থনীতিতনিন্থারি অঞ্চল তথ্যসূত্রতনিন্থারি অঞ্চলউইকিপিডিয়া:বাংলা ভাষায় বর্মী শব্দের প্রতিবর্ণীকরণথাই ভাষাথাইল্যান্ডদাউইবর্মী ভাষামন রাজ্যমালয় ভাষা

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীঅর্শরোগমুর্শিদাবাদ জেলাইন্সটাগ্রাম১৮৫৭ সিপাহি বিদ্রোহপূরণবাচক সংখ্যা (ভাষাতত্ত্ব)বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সঅপু বিশ্বাসডিপজলসাজেক উপত্যকাফুসফুসসাহারা মরুভূমিহাদিসইহুদিছাগলশব্দ (ব্যাকরণ)বঙ্গবন্ধু সেতুমূত্রনালীর সংক্রমণবাগদাদ অবরোধ (১২৫৮)ইসলাম ও হস্তমৈথুনআশালতা সেনগুপ্ত (প্রমিলা)জলবায়ুবাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীদের তালিকাপেপসিনিজামিয়ামহাদেশমাওলানাসমাজবিজ্ঞানবাংলাদেশের ইতিহাসইহুদি গণহত্যাবাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসিঙ্গাপুরবাংলাদেশ নৌবাহিনীবাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পদবিপর্যায় সারণিতামান্না ভাটিয়াজয়া আহসানদেব (অভিনেতা)বিদায় হজ্জের ভাষণ২০২২–২৩ নিউজিল্যান্ড পুরুষ ক্রিকেট দলের পাকিস্তান সফর (এপ্রিল ২০২৩)আর্দ্রতাবাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিররংপুররেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকাঁঠালদুর্গাপূজাউত্তম কুমারটেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রানেপালচাকমানোয়াখালী জেলামহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলঅসমাপ্ত আত্মজীবনীসম্প্রদায়ইন্দিরা গান্ধীশিবলী সাদিকসত্যজিৎ রায়বাংলাদেশের জেলাসমূহের তালিকাব্র্যাকডায়াজিপামবাংলাদেশের স্থল বন্দরসমূহের তালিকাআতাবাঙালি সাহিত্যিকদের তালিকা (কালানুক্রমিক)বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিযিনাবিন্দুঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরতানজিন তিশাপৃথিবীর বায়ুমণ্ডলশীর্ষে নারী (যৌনাসন)বাংলা একাডেমিসিলেটআর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দললালবাগের কেল্লাবায়ুদূষণপশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন, ২০২১🡆 More