জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (সংক্ষিপ্ত রূপ জবি) বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার সদরঘাটে অবস্থিত একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। জগন্নাথ কলেজকে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঘোষণার মাধ্যমে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু। অধ্যাপক ড.
এ. কে. এম. সিরাজুল ইসলাম খান এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য। এটি বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে যাত্রা শুরু করে ২০ই অক্টোবর ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে "জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০৫" পাশ করার মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠানটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ নেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় বর্তমানে সর্বমোট ২০৭ একর জমি রয়েছে৷ এর নতুন ক্যাম্পাস ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। ইতোমধ্যে নতুন ক্যাম্পাসের অবকাঠামো নির্মাণাধীন।
নীতিবাক্য | শিক্ষা, ঈমান, শৃঙ্খলা |
---|---|
ধরন | পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় |
স্থাপিত | ২০ অক্টোবর ২০০৫ |
অধিভুক্তি | বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন |
আচার্য | রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন |
উপাচার্য | সাদেকা হালিম |
পূর্ববর্তী | জগন্নাথ কলেজ |
শিক্ষায়তনিক ব্যক্তিবর্গ | ৯৬০ |
প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গ | ৮৫০ |
শিক্ষার্থী | ১৭,১৩৪ |
অবস্থান | , ২৩°৪২′৩৭″ উত্তর ৯০°২৪′৪০″ পূর্ব / ২৩.৭১০২৮° উত্তর ৯০.৪১১১১° পূর্ব |
শিক্ষাঙ্গন | ঢাকা (শহুরে) ২০৭ একর (প্রস্তাবিত) |
ওয়েবসাইট | www |
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্বনাম জগন্নাথ কলেজ। এই নামেই বিংশ শতাব্দীর অধিকাংশ সময় জুড়ে পরিচিত ছিল। ১৮৫৮ সালে দীননাথ সেন, প্রভাতীচরণ রায়, অনাথবন্ধু মল্লিক এবং ব্রজসুন্দর কৈত্র ঢাকা ব্রাহ্ম স্কুল নামে এর প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ১৮৭২ সালে এর নাম বদলে জগন্নাথ স্কুল করা হয়। মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটির জমিদার কিশোরীলাল রায় চৌধুরী তার বাবার নামে জগন্নাথ স্কুল নামকরণ করেন।
১৮৮৪ সালে এটি একটি দ্বিতীয় শ্রেণির কলেজে ও ১৯০৮ সালে প্রথম শ্রেণীর কলেজে পরিণত হয়। ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা শুরু হলে জগন্নাথ কলেজের স্নাতক কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। জগন্নাথ কলেজের ডিগ্রির শিক্ষার্থী, শিক্ষক, গ্রন্থাগারের বই পুস্তক, জার্নাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানান্তর করা হয়। পুরানো ঢাকার নারী শিক্ষায় বাধা দূর করতে ১৯৪২ সালে সহশিক্ষা চালু করা হয়। ১৯৪৮ সালে তা বন্ধ করে দেয়া হয়। পরে ১৯৪৯ সালে আবার এ কলেজে স্নাতক পাঠ্যক্রম শুরু হয়। ১৯৬৩ সালে অধ্যক্ষ সাইদুর রহমান পুনরায় কো-এডুকেশন চালু করেন। ১৯৬৮ সালে এটিকে সরকারীকরণ করা হয়, কিন্তু পরের বছরেই আবার এটি বেসরকারী মর্যাদা লাভ করে। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ জগন্নাথ কলেজে পাকিস্তানি সেনারা হামলা চালায়। ছাত্ররা অনেকে পালিয়ে প্রাণ রক্ষা করেন। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রঙ্গনে গণহত্যা চালানো হয়। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে জগন্নাথের কয়েকজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী শহীদ হন। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে এবং মুক্তির সংগ্রামে অংশগ্রহণ করে। জগন্নাথ কলেজে পাকিস্থানি সেনাদের ক্যাম্প করা হয়। যুদ্ধ শেষে এখানে গণকবরের সন্ধান মেলে; উদ্ধার করা হয় কয়েক ট্রাক ভর্তি মানব কঙ্কাল। ১৯৮২ সাল থেকে শুরু হয় এলাকার প্রভাবশালীদের জগন্নাথ কলেজের হল দখলের পাঁয়তারা। ছাত্রদের সাথে এলাকাবাসীর সংঘর্ষ বাধে বারবার। প্রথমে বেদখল হয়ে যায় কুমারটুলি ছাত্রাবাস। এরপর একের পর এক বেদখল হয় ৮৪ জিএল পার্থ লেন, কুমারটুলিতে (ওয়াইজঘাট ষ্টার সিনেমা হলের পিছনে) অবস্থিত হলগুলো। ১৯৯২ সালে ১৪টি ছাত্রাবাসের মাত্র ৩টি কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে থাকে। বাকিগুলো পুলিশ ও এলাকাবাসীরা দখল করে নেয়। ৩টি ছাত্রাবাসের দুটি (মাহমুদা স্মৃতি ভবন ও এরশাদ হল) বর্তমানে ভেঙ্গে মসজিদ ও কলা অনুষদ করা হয়েছে।
২০০৫ সালে জাতীয় সংসদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৫ পাশের মাধ্যমে এটি পুর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়। বর্তমানে মোট সাতটি অনুষদের অধীনে ৩৮ টি বিভাগের ও ২টি ইন্সিটিউটের মাধ্যমে এখানে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়তন বর্তমানে মোট ২০৭ একর। সাড়ে সাত একরে বর্তমান শতবর্ষ পুরাতন ক্যাম্পাস ও ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ উপজেলায় এর নির্মাণাধীন নতুন ক্যাম্পাস, যার আয়তন গেজেটভুক্ত ২০০ একর। ২০শে অক্টোবর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে মোট সাতটি অনুষদে ৩৮টি বিভাগ ও ২টি ইনস্টিটিউট রয়েছে।
নিম্নোক্ত ব্যক্তিবর্গ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করেন:
ক্রম | নাম | থেকে | পর্যন্ত |
---|---|---|---|
১ | এ. কে. এম. সিরাজুল ইসলাম খান | ৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৬ | ২৬ জুলাই ২০০৮ |
আবু হোসেন সিদ্দিক (দায়িত্বপ্রাপ্ত) | ২৭ জুলাই ২০০৮ | ২৫ অক্টোবর ২০০৮ | |
২ | আবু হোসেন সিদ্দিক | ২৬ অক্টোবর ২০০৮ | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ |
৩ | মেসবাহউদ্দিন আহমেদ | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ |
৪ | মীজানুর রহমান | ২০ মার্চ ২০১৩ | ১৯ মার্চ ২০২১ |
কামালউদ্দীন আহমদ (দায়িত্বপ্রাপ্ত) | ২০ মার্চ ২০২১ | ১ জুন ২০২১ | |
৫ | মো. ইমদাদুল হক | ২ জুন ২০২১ | ১১ নভেম্বর ২০২৩ |
৬ | সাদেকা হালিম | ৩০ নভেম্বর ২০২৩ | বর্তমান |
ছাত্রদের থাকার সুবিধার্থে ডিসেম্বর, ২০১১ইং তারিখ পর্যন্ত সর্বমোট ১০টি হল বা ছাত্রাবাস রয়েছে; তন্মধ্যে ১টি ছাত্রীদের হল। উল্লেখ্য এই সবগুলো হলই বেদখল হয়ে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পূর্ব থেকেই। হলগুলো হলো:
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছেই ধুপখোলায় অবস্থিত। তাছাড়া নতুন ক্যাম্পাস এ খেলার মাঠ করা হচ্ছে।
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.