চুউবু অঞ্চল

চুউবু অঞ্চল (中部地方, চুউবু-চিহোও) হল জাপানের বৃহত্তম দ্বীপ হোনশুর কেন্দ্রীয় অংশ। ২০১০ খ্রিঃ জনগণনা অনুযায়ী এই অঞ্চলের জনসংখ্যা ছিল ২,১৭,১৫,৮২২ জন।

চুউবু অঞ্চল
中部地方
অঞ্চল
Map showing the Tōhoku region of Japan. It comprises the middle area of the island of Honshū.
জাপানে চুউবু অঞ্চলের অবস্থান (গাঢ় সবুজ)
আয়তন
 • মোট৭২,৫৭২.৩৪ বর্গকিমি (২৮,০২০.৩৪ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (১লা অক্টোবর, ২০১০)
 • মোট২,১৭,১৫,৮২২
 • জনঘনত্ব৩০০/বর্গকিমি (৭৮০/বর্গমাইল)
সময় অঞ্চলজেএসটি (ইউটিসি+9)
চুউবু অঞ্চল
ফুজি পর্বত চুউবু অঞ্চলের বিখ্যাততম স্থান।
চুউবু অঞ্চল
চুউবু অঞ্চলে শিরাকাওয়া-গো এবং গোকায়ামার ঐতিহাসিক গ্রাম
চুউবু অঞ্চল
কেন্দ্রীয় নাগোয়্যা

চুউবু শব্দের অর্থ কেন্দ্রীয় অঞ্চল। নয়খানি কেন্‌ বা প্রশাসনিক অঞ্চল এর অন্তর্গত, যথা: আইচি, ফুকুই, গিফু, ইশিকাওয়া, নাগানো, নিইগাতা, শিযুওকা, তোয়্যামা, য়ামানাশি এবং ক্ষেত্রবিশেষে মিয়ে

চুউবু অঞ্চলটি কান্তোও অঞ্চলকান্‌সাই অঞ্চলের ঠিক মাঝখানে অবস্থিত। দেশের অন্যতম প্রধান নগর নাগোয়্যা এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ফুজি পর্বত এই অঞ্চলে অবস্থিত। এছাড়া উত্তর ও দক্ষিণে যথাক্রমে জাপান সাগরপ্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূল বরাবর আছে অনেকগুলি পার্বত্য রিসর্ট।

অঞ্চলটি জাপানের মধ্যে পূর্ব-পশ্চিমে সবচেয়ে বেশি বিস্তৃত, এবং মাঝ বরাবর প্রসারিত জাপানি আল্পস্‌ পর্বতমালা একে দুই ভাগে ভাগ করেছে: শীতকালে শুষ্ক প্রশান্ত মহাসাগরীয় অংশ এবং শীতকালে তুষারপাত প্রবণ জাপান সাগরীয় অংশ।

উপাঞ্চল

চুউবু অঞ্চল হোনশু দ্বীপের এক বৃহৎ অংশ জুড়ে আছে বলে সাধারণত তিনটি বিশিষ্ট উপ-ভৌগোলিক অঞ্চলে একে ভাগ করা হয়। এগুলো হল তোওকাই, কোওশিন্‌এৎসু এবং হোকুরিকু উপাঞ্চল। ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আরও একটি উপাঞ্চলের উল্লেখ আছে: চুউকিও।

তোওকাই

প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূল বরাবর বিস্তৃত তোওকাই অঞ্চল হল এক সংকীর্ণ ভূভাগ যা মাঝে মাঝে খাড়া ঢাল বিশিষ্ট সমুদ্র-সংলগ্ন পাহাড় দ্বারা বিচ্ছিন্ন।

তোকুগাওয়া যুগ (১৬০০-১৮৬৭) থেকে তোকিও, কিয়োতোওসাকা নগরের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করার জন্য এই স্থান গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। জাপানের অন্যতম প্রাচীনতম ও গুরুত্বপূর্ণ সড়ক তোওকাইদোও এই অঞ্চলের মধ্য দিয়ে তোকিও (তৎকালীন নাম এদো) ও জাপানের পুরোনো রাজধানী কিয়োতোর মধ্যে সংযোগ রক্ষা করত। বিংশ শতাব্দীতে এই অঞ্চল জাপানের নতুন সুপার-এক্সপ্রেস মহাসড়ক ও দ্রুতগতি রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রধান রুট হয়ে ওঠে। এই অংশ আইচি, মিয়ে, শিযুওকা এবং দক্ষিণ গিফু প্রশাসনিক অঞ্চলের সমন্বয়ে গঠিত।

সংকীর্ণ করিডোর অংশে বেশ কিছু পলিগঠিত সমভূমি দেখা যায়। মৃদু জলবায়ু, একাধিক মহানগরের কাছাকাছি অবস্থান এবং দ্রুত ও উন্নত পরিবহন ব্যবস্থার সুবিধের জন্য অঞ্চলটি উদ্যানপালন ও বে-মরসুমী সবজি চাষের ক্ষেত্রে অগ্রগতি দেখিয়েছে। উচ্চভূমি তথা পাহাড়ি অংশের প্রায় পুরোটাই মান্দারিন কমলালেবু ও চা চাষের জন্য ব্যবহৃত হয়। ইসে উপসাগরের তীরে অবস্থিত নাগোয়্যা হল লৌহ-ইস্পাত ও ভারী যন্ত্রাংশ নির্মাণ শিল্পের অন্যতম মুখ্য কেন্দ্র। এছাড়া অন্যান্য ক্ষুদ্র কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ শিল্পাঞ্চলও এই করিডোর অংশে বর্তমান। তোওকাই উপাঞ্চলের পশ্চিম অংশে অবস্থিত নোওবি সমভূমিতে সপ্তম শতাব্দীতে ধান চাষের নিদর্শন পাওয়া গেছে।

চুউকিও

নাগোয়্যা অঞ্চলের নিকটবর্তী তিনটি প্রশাসনিক অঞ্চলের (আইচি, গিফু ও মিয়ে) দৃঢ় পারস্পরিক অর্থনৈতিক বন্ধন রয়েছে, আর এদের অন্তর্গত নাগোয়্যা নগরের নিকটতম অঞ্চলগুলোর সমন্বয়ে তৈরি হয়েছে চুউকিও মহানগর অঞ্চল। এই অঞ্চলটির অর্থনীতি জাপানের মধ্যে তৃতীয় বৃহত্তম, এবং এই উন্নতির ফল কখনও কখনও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক অঞ্চলগুলোর অপেক্ষাকৃত জনবিরল স্থানেও পৌঁছয়। অবশ্য সরকারীভাবে এখনও চুউকিও উপাঞ্চলের স্বতন্ত্র অস্তিত্ব নেই।

কোওশিন্‌এৎসু

কোওশিন্‌এৎসু হল জটিল ও খাড়া পাহাড়-পর্বত অধ্যুষিত উপাঞ্চল। একে ক্ষেত্রবিশেষে "জাপানের ছাদ" বলা হয়। জাপানি আল্প্‌স পর্বতমালা এই উপাঞ্চলের অন্তর্গত। এখানকার জনবসতি প্রধানত ছয়টি উচ্চ অববাহিকায় কেন্দ্রীভূত, যাদের মধ্যে সংকীর্ণ উপত্যকার মাধ্যমে পারস্পরিক যোগাযোগ রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে দেশের প্রধান রেশম প্রস্তুতকারী অঞ্চল হিসেবে খ্যাত হলেও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর উৎপাদন হ্রাস পায়। রেশম উৎপাদক জনসংখ্যার এক বড় অংশ নবনির্মিত কারিগরী শিল্পে সরে যাওয়ার ফলে এই ঘটনা ঘটে। এই কারিগরী শিল্পের অন্তর্গত হল ক্ষুদ্র ও বৃহৎ যন্ত্রাংশ নির্মাণ, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং অন্যান্য হালকা নির্মাণ শিল্প। কোওশিন্‌এৎসুর অন্তর্গত হল নিইগাতা, নাগানো ও য়ামানাশি প্রশাসনিক অঞ্চল। নিইগাতাকে হোকুরিকু অঞ্চলেরও অংশ ধরা হয়। য়ামানাশি, নাগানো ও উত্তর গিফু প্রশাসনিক অঞ্চলকে একত্রে কখনও কখনও চুউও-কোওচি বা তোওসান অঞ্চল বলেও ডাকা হয়।

হোকুরিকু

হোকুরিকু উপাঞ্চল জাপান সাগরের উপকূল বরাবর বিস্তৃত। কোওশিন্‌এৎসুর পর্বতসমূহের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত এই উপাঞ্চলের অন্তর্গত হল ইশিকাওয়া, ফুকুই, নিইগাতা এবং তোয়্যামা প্রশাসনিক অঞ্চল।

এই অঞ্চলে শীতকালে অতি ভারী তুষারপাত হয়, ফলে ক্ষেত্রবিশেষে রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়ে পরিবহনের সমস্যা সৃষ্টি করে। এখানকার বিভিন্ন নদীর প্রবল স্রোতকে কাজে লাগিয়ে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। নিইগাতা প্রশাসনিক অঞ্চলে জৈব গ্যাস ও তেল উৎপন্ন হয়।

ঐতিহাসিকভাবে হোকুরিকু উপাঞ্চলের উন্নয়নের পিছনে কান্‌সাই অঞ্চলের বাজারের চাহিদার প্রত্যক্ষ প্রভাব থেকেছে। যদিও সাম্প্রতিক কালে তোওকাই উপাঞ্চল ও কান্তোও অঞ্চলের ভূমিকাও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। হোকুরিকুতে গড়ে ওঠা বিভিন্ন বন্দরের মারফত জাপানের সাথে রাশিয়া, কোরিয়াচীনের বাণিজ্যে সুবিধে হয়।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

(ইংরেজি)

Tags:

চুউবু অঞ্চল উপাঞ্চলচুউবু অঞ্চল তথ্যসূত্রচুউবু অঞ্চল আরও পড়ুনচুউবু অঞ্চলজাপানহোনশু

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

রামায়ণমৃণালিনী দেবীখুলনাবিন্দু২০২৪ কোপা আমেরিকামহাস্থানগড়ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসিস্বাস্থ্যের উপর তামাকের প্রভাবইহুদি গণহত্যাক্রিস্তিয়ানো রোনালদোঋগ্বেদরাশিয়ামেটা প্ল্যাটফর্মসকৃষ্ণচূড়াআসমানী কিতাবগ্রামীণ ব্যাংকওয়ালাইকুমুস-সালামধনধান্য পুষ্প ভরা আমাদের এই বসুন্ধরাদর্শনকোকা-কোলাঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরআর্কিমিডিসের নীতিপানিপথের প্রথম যুদ্ধডায়ানা, প্রিন্সেস অব ওয়েলস২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপজাতীয় স্মৃতিসৌধইউসুফপারমাণবিক ভরের ভিত্তিতে মৌলসমূহের তালিকামহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্রপ্রাকৃতিক সম্পদদিনাজপুর জেলাবাঁশকৃষ্ণবৌদ্ধধর্মডায়াজিপামভারতের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৭০বিশেষণপেপসিকাজলরেখাশেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মাদ বিন বখতিয়ার খলজিকারাগারের রোজনামচামৌলিক পদার্থের তালিকা২০২৪ ইসরায়েলে ইরানি হামলাপুলিশঈদুল আযহাবঙ্গবন্ধু-২সরকারি বাঙলা কলেজউসমানীয় খিলাফতআর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দলআরবি বর্ণমালাঐশ্বর্যা রাইযোনিআতাজালাল উদ্দিন মুহাম্মদ রুমিএশিয়াযোনি পিচ্ছিলকারকসিন্ধু সভ্যতাজ্ঞানগৌতম বুদ্ধবাংলাদেশী টাকামিশরআল্লাহর ৯৯টি নামসহীহ বুখারীদৈনিক প্রথম আলোবাংলাদেশের সংবাদপত্রের তালিকাজন্ডিসন্যাটোমিমি চক্রবর্তীশাকিব খানভূমণ্ডলীয় উষ্ণতা বৃদ্ধিলোহিত রক্তকণিকামহেন্দ্র সিং ধোনিব্যাকটেরিয়াগোপাল ভাঁড়বাংলাদেশের বন্দরের তালিকানাহরাওয়ানের যুদ্ধ🡆 More