আলোকমণ্ডল হল তারার বাইরের খোলক যা থেকে আলোক বিকিরণ হয়।
আলোকমণ্ডলের ইংরেজি ফটোস্ফিয়ার (Photosphere) শব্দটি উদ্ভূত হয়েছে প্রাচীন গ্রীক শব্দ φῶς, φωτός (phos, photos) মানে "আলো" এবং σφαῖρα (sphaira) মানে "গোলক" থেকে। এর থেকে যে অর্থ উল্লেখ করা যায়: এটি একটি গোলাকার পৃষ্ঠ যা আলোক নির্গমন করে। তারকার পৃষ্ঠে প্লাজমা অস্বচ্ছ হয়ে ওঠার আগে পর্যন্ত এটির বিস্তার এবং এর অপটিক্যাল গভীরতা মোটামুটি প্রায় ২⁄৩ অথবা সমতুল্যভাবে এমন একটি গভীরতা যা থেকে ৫০% আলো না বিক্ষিপ্ত হয়ে নির্গত হয়।
আলোকমণ্ডল হল একটি আলোকিত বস্তুর গভীরতম অঞ্চল যা সাধারণত তারায় দেখা যায় এবং যা একটি নির্দিষ্ট তরঙ্গদৈর্ঘ্য এর ফোটনের পক্ষে হয় স্বচ্ছ থাকে।
কোনও তারার পৃষ্ঠের তাপমাত্রা কত হবে তার কার্যকর তাপমাত্রা সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে স্টেফান–বোল্টজম্যান সূত্র দ্বারা। নিউট্রন তারকা ছাড়া অন্য তারায় কোনও কঠিন বা তরল পৃষ্ঠ নেই। সেই জন্যে আলোকমণ্ডল সাধারণত সূর্য বা অন্য কোনও তারার চাক্ষুষ করতে পারা পৃষ্ঠকে বর্ণনা করতে ব্যবহৃত হয়।
সূর্য মূলত রাসায়নিক উপাদান হাইড্রোজেন এবং হিলিয়াম দ্বারা গঠিত। এগুলি আলোকমণ্ডলে সূর্যের মোট ভরের যথাক্রমে ৭৪.৯% এবং ২৩.৮%। বাকি অন্যান্য ভারী উপাদান জ্যোতির্বিজ্ঞানের ভাষায় ধাতু নামে পরিচিত উপাদানগুলি আছে মোট ভরের ২% এরও কম পরিমাণে। তুলনায় বেশি পরিমাণে পাওয়া যায় অক্সিজেন (মোটামুট সূর্যের ভরের প্রায় ১%), কার্বন (০.৩%), নিয়ন (০.২%) এবং আয়রন (০.২%)।
সূর্য এর আলোকমণ্ডলে তাপমাত্রার ব্যাপ্তি থাকে ৪,৫০০ এবং ৬,০০০ K (৪,২৩০ এবং ৫,৭৩০ °সে)। (কার্যকরী তাপমাত্রা ৫,৭৭৭ K (৫,৫০৪ °সে)) এবং ঘণত্ব প্রায় ৩×১০-৪ kg/m3; এবং তা সূর্যে গভীরতা বাড়ার সাথে সাথে তা পাল্টে পাল্টে যায়। অন্যান্য তারায় গরম বা শীতল আলোকমণ্ডল থাকতে পারে। সূর্যের আলোকমণ্ডলটি প্রায় ১০০ কিলোমিটার পুরু। এটি পরিচলন কোষ দ্বারা গঠিত যা প্লাজমার গ্রানুলস-কোষ নামে পরিচিত। প্রতিটি প্রায় ১০০০ কিলোমিটার ব্যাসবিশিষ্ট। কেন্দ্রস্থল থেকে ক্রমবর্ধমান উষ্ম প্লাজমা উদ্গত হতে থাকে এবং শীতলতর প্লাজমা তাদের মধ্যের সরু জায়গাগুলিতে পড়তে থাকে। প্রতি সেকেন্ডে ৭ কিলোমিটার বেগে সেগুলি প্রবাহিত হয়। প্রতিটি গ্রানুলের আয়ু প্রায় বিশ মিনিট। ফলে ক্রমাগতভাবে "স্ফুটন" এর ধাঁচ পরিবর্তিত হয়। সাধারণ গ্রানুলগুলি দল বেঁধে বা গ্রুপ গঠন করে হয়ে ওঠে সুপার গ্রানুল যারা ৩০,০০০ কিলোমিটার অবধি ব্যাসের হয় এবং ২৪ ঘণ্টা অবধি আয়ু হয়। তারা প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৫০০ মিটার প্রবাহের গতিতে চৌম্বকীয় ক্ষেত্রগুলিকে কোষের প্রান্তে বহন করে। চৌম্বকীয়ভাবে সম্পর্কিত অন্যান্য আরও ঘটনার মধ্যে রয়েছে সৌর কলঙ্ক এবং সৌর ফ্যাকুলা। এগুলি গ্রানুলের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। পৃথিবী থেকে অন্যান্য তারা পর্যবেক্ষণ করার সময় এই বিস্তারিত ব্যাপারগুলি এতই সূক্ষ যে চোখেই পড়ে না।
আলোকমণ্ডলের উপরে সূর্যের দৃশ্যমান বায়ুমণ্ডলের অন্যান্য যে স্তরগুলি রয়েছে: ২,০০০ কিলোমিটার গভীর বর্ণমণ্ডল (সাধারণত ফিল্টারযুক্ত আলোক দ্বারা প্রদর্শিত হয়। যেমন এইচ-আলফা)। এটি আলোকমণ্ডল এবং অনেক উষ্ণতর ও পাতলা ছটামন্ডল এর মধ্যে অবস্থান করে। আলোকমণ্ডলে অন্যান্য যে সব "পৃষ্ঠ বৈশিষ্ট্যগুলি" আছে তা হ'ল সৌর শিখা এবং সৌর কলঙ্ক।
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article আলোকমণ্ডল, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.