অস্তিত্ববাদ (Existentialism) বিংশ শতাব্দীর একটি শীর্ষ স্থানীয় দার্শনিক মতবাদ। অস্তিত্ববাদের কথা, নীতিমালা মানুষের কাছে একটা সময়ে কর্তব্য হিসেবে গৃহীত হয়েছে। বিশেষ করে সাধারণ মানুষের কাছে, যেখানে উনিশ শতকের জীবন দর্শন অভিজাত শ্রেণির জন্যই শুধুমাত্র সীমাবদ্ধ ছিল। এই অভিজ্ঞতাবাদ এককথায় সাধারণ মানুষের অস্তিত্বকে স্বীকার করেছে। এ মতবাদ তাত্ত্বিক বিষয়ের বিপরীতে জাগতিক বিষয় সম্বন্ধে আলোচনা করে। এ দর্শন তৈরি হবার পিছনে কিছু পূর্বশর্তের প্রয়োজন হয়। এ পূর্বশর্তগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা ইংল্যান্ড-এর মতো পুঁজিবাদী দেশগুলোতে তৈরি হয়নি বা ব্যবহৃত হয়নি।
অস্তিত্ববাদীদের সম্বন্ধে বক্তব্য:
অস্তিত্ববাদীদের মূলত দু’টি শ্রেণিভূক্ত করা হয়। যথা: আস্তিক্যবাদী ও নাস্তিক্যবাদী। দিনেমার দার্শনিক সোরেন কিয়ের্কেগার্ডকে অস্তিত্ববাদের জনক গণ্য করা হয়। ফ্রিডরিখ নিৎশে, জঁ-পল সার্ত্র্, মার্টিন হাইডেগার, আলবেয়ার কামু প্রমুখ অস্তিত্ববাদী দার্শনিক।
মানুষের মধ্যকার সামজিক নিরাপত্তাহীনতা, ভয় উৎকন্ঠাজনিত ইত্যাদি সমস্যার কথাকে অস্তিত্বের সংকট বিবেচনা করে তা আলোচনা করেন কার্ল জ্যাসপার্স। তার মতে হেগেল তার অধিবিদ্যা ও যুক্তিশাস্ত্রে সত্তা সম্বন্ধে এ কথা বলে গেছেন যে কাজ সম্পাদন করতে হবে। কারণ এ কাজ সামাজিক অবস্থা সহযোগী। অন্যদিকে হাইডেগার এই সমস্যার সমাধান খোঁজবার চেষ্টা করেন যেমনটি তার গুরু হুলার্স রুপতত্ত্বে সন্ধান করেছিলেন। হাইডেগারের মতে বস্তুবাদী দার্শনিকের বিপরীতে ভাববাদী দর্শনকে নতুনভাবে বিকশিত করার কথা বলেছেন। তার মতে কান্ট হেগেল ও জার্মান ভাববাদ সঠিকভাবে প্রয়োগ করা হয়নি। যদি আদতে হতোই তবে জার্মান সমাজের এ দুরবস্থা হতো না বলে তিনি মনে করতেন।
ফরাসী অস্তিত্ববাদের কথা প্রথম যিনি বলেন তিনি হলেন জাঁ পল সার্ত্রে।সার্ত্রে নীটশের নাস্তিক্যবাদ দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন এবং নীটশের 'ঈশ্বর মৃত'এই সুরটিকে আরও বলিষ্ঠ করেছেন। এ অস্তিত্ববাদ নান্দনিক বিষয়কে প্রাধান্য দেয়। সার্ত্রে সামাজিক সংস্কারবঞ্চিত লোক। তিনি প্রথম জীবনে হাইডেগারের অনুসারী হতে চেয়েছিলেন।সামাজিক সমস্যা সমাধানে তার কথা হলো মানুষের সত্তা বা অধিবিদ্যক ধারণার আদতে কোনো প্রয়োজনই নেই কারণ তা মানুষের জীবনে সুখ পরিপূর্ণভাবে প্রদান করে না। মানুষের জন্য দরকার নিজের অস্তিত্বকে স্বীকার করা। অস্তিত্ব স্বীকার হলেই মানুষের জীবনে সত্য অর্জিত হয়। কারণ মানুষ সবসময়েই মূলত স্বাধীন।স্বাধীনতাই মানুষকে সাহায্য করে সবকিছুকে চিনতে,ভাবতে ও অর্জন করতে। সার্ত্রে তার নানা সাহিত্য কর্মে উপন্যাসে দেখিয়েছেন একটি সমগ্রের বিবেচনাহীনতার কাছে ব্যক্তিমানুষ কতই না অসহায়!তাঁর দর্শন আপাতদৃষ্টিতে ব্যক্তিকেন্দ্রিক মনে হলেও তা আসলে মানবতাবাদী। তিনি মনে করেন এই মানবতাবাদ পৃথিবীতে অস্তিত্বশীল মানুষের জন্য হতে পারে চূড়ান্ত মানবতার। ব্যক্তি যদি তার অস্তিত্ব বিষয়ে সচেতন থাকে তবে তাকে শোষন করা সহজ নয়।সার্ত্র তাঁর দর্শন দিয়ে দুটি বিষয় বোঝাতে চেয়েছেন: ১.কোন কাজ করার আগে আমাদের দেখা উচিত অন্যেরাও সে কাজ করে কিনা। ২.সবারই জন্য যা মঙ্গল একমাত্র সেই কাজই আমাদের করা উচিত।
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article অস্তিত্ববাদ, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.