দ্য অ্যাভিয়েটর (ইংরেজি: The Aviator, অনুবাদ 'বৈমানিক') ২০০৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত মার্কিন জীবনীমূলক নাট্য চলচ্চিত্র। এটি পরিচালনা করেছেন মার্টিন স্কোরসেজি এবং চিত্রনাট্য লিখেছেন জন লোগান। এতে হাওয়ার্ড হিউজ চরিত্রে অভিনয় করেছেন লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও, ক্যাথরিন হেপবার্ন চরিত্রে কেট ব্লানচেট, ও আভা গার্ডনার চরিত্রে কেট বেকিনসেল। এছাড়া অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইয়ান হোম, জন সি.
রেইলি, আলেক বল্ডউইন, জুড ল প্রমুখ।
দ্য অ্যাভিয়েটর | |
---|---|
পরিচালক | মার্টিন স্কোরসেজি |
প্রযোজক |
|
রচয়িতা | জন লোগান |
শ্রেষ্ঠাংশে |
|
সুরকার | হাওয়ার্ড শোর |
চিত্রগ্রাহক | রবার্ট রিচার্ডসন |
সম্পাদক | থেলমা শুনমেকার |
প্রযোজনা কোম্পানি | ফরওয়ার্ড পাস অ্যাপিয়ান ওয়ে প্রোডাকশন আইএমএফ ইনিশিয়াল এন্টারটেইনমেন্ট গ্রুপ |
পরিবেশক | ওয়ার্নার ব্রোস. পিকচারস মিরাম্যাক্স ফিল্মস |
মুক্তি |
|
স্থিতিকাল | ১৭০ মিনিট |
দেশ | যুক্তরাষ্ট্র |
ভাষা | ইংরেজি |
নির্মাণব্যয় | $১১০ মিলিয়ন |
আয় | $২১৩.৭ মিলিয়ন |
চার্লস হাইয়ামের ১৯৯৩ সালে কল্পকাহিনী হাওয়ার্ড হিউজ: দ্য সিক্রেট লাইফ অবলম্বনে চলচ্চিত্রটি নির্মিত হয়েছে। এতে বৈমানিকদের পাইওনিয়ার ও হেল্স অ্যাঞ্জেলসের পরিচালক হাউয়ার্ড হিউজের জীবনী তুলে ধরা হয়েছে। ছবিতে ১৯২৭ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত তার চলচ্চিত্র প্রযোজনা ও বৈমানিক জীবনের সফলতার পাশাপাশি তার অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিসঅর্ডারের কারণে তার জীবনের অসামঞ্জস্যতা দেখানো হয়েছে।
চলচ্চিত্রটি ১১টি বিভাগে একাডেমি পুরস্কার মনোনয়ন পায়। যার মধ্যে ছিল শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র, শ্রেষ্ঠ পরিচালক, শ্রেষ্ঠ মৌলিক চিত্রনাট্য, শ্রেষ্ঠ প্রধান চরিত্রে অভিনেতা, শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রে অভিনেতা, বিজয়ী পাঁচটি হল শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রহণ, শ্রেষ্ঠ চিত্রসম্পাদনা, শ্রেষ্ঠ পোশাক পরিকল্পনা, শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশনা ও শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রে অভিনেত্রী।
১৯১৩ সালে নয় বছর বয়সী হাওয়ার্ড হিউজকে তার মা তাকে রোগবালাই সম্পর্কে সচেতন করেন। ১৪ বছর পর তিনি হেল্স অ্যাঞ্জেলস্ পরিচালনা করেন। দ্য জাজ সিঙ্গার চলচ্চিত্র মুক্তি পাওয়ার পর, হিউজ তার চলচ্চিত্রকে বাস্তবিকতার সাথে যোগসূত্র স্থাপনের প্রেরণা লাভ করেন এবং চলচ্চিত্রে শব্দ যোগ করার চিন্তা করেন। চলচ্চিত্রটি হিট হওয়া স্বত্ত্বেও তিনি সন্তুষ্ট হতে পারেন না। তিনি অভিনেত্রী ক্যাথরিন হেপবার্ন-এর সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন।
১৯৩৫ সালে হিউজ এক টেস্ট ফ্লাইয়ে হিউজ এইচ-১ রেসার দিয়ে নতুন গতির রেকর্ড করেন। তিন বছর পর তিনি চার দিনে পৃথিবী অতিক্রম করে পূর্বের রেকর্ড ভেঙ্গে দেন। কিছুদিন পর তিনি ট্রান্স ওয়ার্ল্ড এয়ারলাইনসের বেশিরভাগ শেয়ার কিনে নেন। তার পরিচিতি বাড়তে থাকলে অনেক সেলিব্রেটিদের সাথে তার পরিচয় হয়। ফলে হেপবার্নের অভিনেতা স্পেন্সার ট্রেসির প্রেমে পড়েছেন এমন রটনায় হেপবার্নের সাথে তার বিচ্ছেদ ঘটে। হিউজ দ্রুত ১৫ বছর বয়সী ফেইথ ডমার্গো ও পরে অভিনেত্রী আভা গার্ডনার-এর প্রেমে পড়েন।
দুটি প্রজেক্টের কল্যাণে মার্কিন বিমান বাহিনীর সাথে তার সখ্যতা গড়ে ওঠে। কিন্তু পরবর্তীতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তার সাথে বিরোপ সম্পর্ক হয় যা তার ব্যক্তিগত জীবনেও প্রভাব ফেলে।
মিরাম্যাক্স ফিল্মস যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ ইতালি, ফ্রান্স ও জার্মানিতে চলচ্চিত্রটি পরিবেশনা করে। পাশাপাশি মার্কিন টেলিভিশনের পরিবেশনার স্বত্ত্বও মিরাম্যাক্সের ছিল। তবে ওয়ার্নার ব্রস. পিকচারস যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও লাতিন আমেরিকায় ডিভিডি পরিবেশনা করে। ইনিশিয়াল এন্টারটেইনমেন্ট গ্রুপ অন্যান্য অঞ্চলে চলচ্চিত্রটি পরিবেশনা করে।
২০০৫ সালের ২৪ মে ওয়াইড স্ক্রিন ও ফুল স্ক্রিন ভার্সনে দুটি ডিস্কে দ্য অ্যাভিয়েটর ছবির ডিভিডি মুক্তি পায়। প্রথম ডিস্কে রয়েছে পরিচালক মার্টিন স্কোরসেজি, সম্পাদক থেলমা স্কুনমেকার, ও প্রযোজক মাইকেন মানের ভাষ্য এবং দ্বিতীয় ডিস্কে রয়েছে দ্য অ্যাভিয়েটরের নির্মাণ, কর্তনকৃত দৃশ্য, বিহাইন্ড দ্য সিনস, দ্য অ্যাভিয়েটরের সঙ্গীত, ভিজুয়াল এফেক্টস ও হাউয়ার্ড হিউজের উপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র। ডিভিডিটি ২০০৬ সালে ডিভিডি এক্সক্লুসিভ পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ অডিও ভাষ্য বিভাগে মনোনীত হয়।
ছবিটি পরে ২০০৭ সালের ৬ নভেম্বর ব্লু-রে ডিস্ক ও এইচডি ডিভিডিতে মুক্তি দেওয়া হয়।
দ্য অ্যাভিয়েটর চলচ্চিত্রটি ২০০৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর ৪০টি প্রেক্ষাগৃহে সীমিতভাবে মুক্তি দেওয়া হয় এবং সেখান থেকে প্রথম সপ্তাহে $৮৫৮,০২১ আয় করে। ২৫ ডিসেম্বর, ২০০৪ সালে সারা যুক্তরাষ্ট্রে ১,৭৯৬টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি দেওয়া হয় এবং প্রথম দিন $৪.২ মিলিয়ন ও প্রথম সপ্তাহে $৮.৬ মিলিয়ন আয় করে। প্রতি প্রেক্ষাগৃহে গড়ে $৪,৮০৫ আয় করে সাপ্তাহিক র্যাঙ্কিংয়ে ৪-এ অবস্থান করে। দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রতি প্রেক্ষাগৃহে $৬,৩২৭ গড়ে $১১.৪ মিলিয়ন আয় করে র্যাঙ্কিংয়ে ৩-এ উঠে আসে। ছবিটি যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় $১০২.৬ মিলিয়ন ও এর বাইরে $১১১.১ মিলিয়ন আয় করে, এবং বিশ্বব্যাপী মোট $২১৩.৭ মিলিয়ন আয় করে।
দ্য অ্যাভিয়েটর ইতিবাচক সমালোচনা লাভ করেছে। সমালোচনাভিত্তিক ওয়েবসাইট রটেন টম্যাটোস-এ ২১৩টি সমালোচনার ভিত্তিতে ছবিটির স্কোর ৮৭% এবং গড় রেটিং ৭.৮/১০। এই ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে যে দ্য অ্যাভিয়েটর সে সময়ের পরিপূর্ণ বিবরণ তুলে ধরেছে এবং মার্টিন স্কোরসেজির পরিচালনা ও লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিওর অসাধারণ অভিনয়ের কারণে ছবিটি সফলতা লাভ করেছে। মেটাক্রিটিক-এ ৪১টি সমালোচনার ভিত্তিতে ছবিটি ১০০-এ ৭৭ পেয়েছে, যা মূলত ইতিবাচক।
শিকাগো সান-টাইমস-এর রজার ইবার্ট চলচ্চিত্রটিকে ৪-এ ৪ দিয়েছেন এবং এই ছবি ও ছবির প্রধান বিষয়বস্তু, হাওয়ার্ড হিউজে, মুগ্ধ হন। তিনি বলেন পরিচালক স্কোরসেজি ও হিউজের জীবনের মধ্যে একটি মিল রয়েছে। তিনি এই ছবিকে সেই বছরের শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র বলে উল্লেখ করেছেন। দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ-এ এক চলচ্চিত্র সমালোচনায় সুখদেব সাধু স্কোরসেজির পরিচালনা, ডিক্যাপ্রিও ও অন্যান্যদের অভিনয়ের প্রশংসা করেছেন, তবে বেকিনসেলকে অভিনয়ে নেওয়াটা ভুল ছিল বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন এই ছবিটির মাধ্যমে হলিউডের সোনালি যুগকে জাঁকজমকপূর্ণ সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে। দ্য জার্নাল অব আমেরিকান হিস্ট্রির ডেভিড টি. কোর্টরাইট দ্য অ্যাভিয়েটর চলচ্চিত্রকে প্রযুক্তিগত দিক থেকে অসাধারণ কিন্তু মনস্তাত্ত্বিক দিক থেকে একটু বিরক্তিকর বলে উল্লেখ করেছেন। তার মতে স্কোরসেজির প্রধান সাফল্য হলে বৈমানিকদের পাইওনিয়ার হিসেবে হাউয়ার্ড হিউজের নামকে পুনরোজ্জীবিত করেছেন।
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article দি অ্যাভিয়েটর (২০০৪-এর চলচ্চিত্র), which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.