ইউরেনাসের বলয়

ইউরেনাসের বলয়গুলি (ইংরেজি: Rings of Uranus) জটিলতার দিক থেকে শনির অধিকতর বিস্তৃত বলয় মণ্ডলী এবং বৃহস্পতি ও নেপচুনের অধিকতর সরল বলয় মণ্ডলীর মাঝামাঝি। ১৯৭৭ সালের ১০ মার্চ জেমস এল.

এলিয়ট">জেমস এল. এলিয়ট, এডওয়ার্ড ডব্লিউ. ডানহ্যাম ও জেসিকা মিংক ইউরেনাসের বলয়গুলি আবিষ্কার করেন। ১৭৮৯ সালে উইলিয়াম হার্শেলও এই বলয়গুলি পর্যবেক্ষণের কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু এগুলি অত্যন্ত অন্ধকারাচ্ছন্ন ও অস্পষ্ট হওয়ার দরুন তিনি আদৌ ইউরেনাসের বলয় পর্যবেক্ষণ করেছিলেন কিনা তা নিয়ে আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে।

ইউরেনাসের বলয়
ইউরেনাসের বলয়-উপগ্রহ মণ্ডলীর বিন্যাসচিত্র। একটানা রেখাগুলির মাধ্যমে বলয় এবং ছেদচিহ্নবিশিষ্ট রেখাগুলির মাধ্যমে উপগ্রহের কক্ষপথ বোঝানো হয়েছে।

১৯৭৮ সালের মধ্যেই ইউরেনাসের নয়টি স্বতন্ত্র বলয়কে শনাক্ত করা গিয়েছিল। ১৯৮৬ সালে ভয়েজার ২ মহাকাশযান থেকে তোলা ছবিতে আরও দু’টি বলয় এবং ২০০৩-২০০৫ সালে হাবল স্পেস টেলিস্কোপের ছবিতে দু’টি বহিঃস্থ বলয় আবিষ্কৃত হয়। গ্রহ থেকে ক্রমবর্ধমান দূরত্বের নিরিখে ইউরেনাসের ১৩টি জ্ঞাত বলয়ের নামকরণ করা হয়েছে ১৯৮৬ইউ২আর/জেটা (ζ), ৬, ৫, ৪, আলফা (α), বিটা (β), ইটা (η), গামা (γ), ডেল্টা (δ), ল্যাম্বডা (λ), এপসিলন (ε), নিউ (ν) ও মিউ (μ)। বলয়গুলির ব্যাসার্ধ ৩৮,০০০ কিলোমিটার (১৯৮৬ইউ২আর/জেটা বলয়ের ক্ষেত্রে) থেকে ৯৮,০০০ কিলোমিটারের (মিউ বলয়ের ক্ষেত্রে)। প্রধান বলয়গুলির মধ্যবর্তী স্থানে একাধিক অতিরিক্ত অস্পষ্ট ধূলিকণার পটি ও অসম্পূর্ণ বৃত্তচাপের অস্তিত্ব থাকলেও থাকতে পারে। বলয়গুলি চরম মাত্রায় অন্ধকারাচ্ছন্ন—বলয়ের কণাগুলির বন্ড প্রতিফলন অনুপাত ২ শতাংশও অতিক্রম করে না। এগুলি সম্ভবত জলীয় বরফ এবং সেই সঙ্গে বিকিরণ-প্রক্রিয়াজাত কিছু অন্ধকারাচ্ছন্ন জৈবের দ্বারা গঠিত।

ইউরেনাসের অধিকাংশ বলয়ই অস্বচ্ছ এবং মাত্র কয়েক কিলোমিটার চওড়া। সমগ্র বলয় মণ্ডলীটিতে খুব অল্প পরিমাণেই ধূলিকণার অস্তিত্ব রয়েছে; এগুলির অধিকাংশ বস্তুই বড়ো আকারের এবং ২০ সেন্টিমিটার থেকে ২০ মিটার ব্যাস-বিশিষ্ট। কয়েকটি বলয় দৃশ্যগতভাবে সংকীর্ণ: ১৯৮৬ইউ২আর/জেটা, মিউ ও নিউ বলয় তিনটি চওড়া, অস্বচ্ছ ও ক্ষুদ্র ধূলিকণার দ্বারা গঠিত; অপরপক্ষে ল্যাম্বডা বলয়টি সংকীর্ণ ও অস্পষ্ট হলেও তাতে বৃহত্তর বস্তুরও অস্তিত্ব রয়েছে। বলয় মণ্ডলীতে ধূলিকণার আপেক্ষিক অভাবের কারণ সম্ভবত প্রসারিত ইউরেনীয় বহির্মণ্ডল থেকে বায়ুগতীয় আকর্ষণ।

মনে করা হয় যে, ইউরেনাসের বলয়গুলি অপেক্ষাকৃত নবীন এবং এগুলির বয়স ৬০ কোটি বছরের বেশি নয়। ইউরেনীয় বলয় মণ্ডলীর উৎপত্তি সম্ভবত একদা গ্রহটিকে প্রদক্ষিণকারী একাধিক প্রাকৃতিক উপগ্রহের মধ্যে সংঘাতের ফলে সৃষ্ট ধ্বংসাবশেষ থেকে। উক্ত সংঘাতের পরে উপগ্রহগুলি সম্ভবত চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে অসংখ্য কণায় পরিণত হয়েছিল, যে কণাগুলি কঠোরভাবে সর্বাধিক সুস্থিতির ক্ষেত্রগুলিতেই সংকীর্ণ ও দৃশ্যগতভাবে ঘন বলয়ের আকারে টিকে যায়।

সংকীর্ণ বলয়গুলি কোন কৌশলে আবদ্ধ রয়েছে তা ভালোভাবে বোঝা যায় না। প্রথম দিকে মনে করা হত যে, প্রতিটি সংকীর্ণ বলয়ের এক জোড়া নিকটস্থ রাখালিয়া উপগ্রহ রয়েছে, যেগুলি সংশ্লিষ্ট বলয়টিকে নির্দিষ্ট আকারে আবদ্ধ করে রেখেছে। কিন্তু ১৯৮৬ সালে ভয়েজার ২ মহাকাশযানটি একমাত্র ঊজ্জ্বলতম বলয়টিকে (এপসিলন) ঘিরেই এই রকম রাখালিয়া জোড় (কর্ডেলিয়াওফেলিয়া) আবিষ্কার করে।

পাদটীকা

তথ্যসূত্র

Tags:

ইংরেজি ভাষাইউরেনাস (গ্রহ)উইলিয়াম হার্শেলগ্রহীয় বলয়জেমস এল. এলিয়টজেসিকা মিংকনেপচুনের বলয়বৃহস্পতির বলয়শনি (গ্রহ)

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

পথের পাঁচালীজাযাকাল্লাহহনুমান চালিশাবেলজিয়াম২০২৩ ফিফা অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপইসলামের নবি ও রাসুলদ্রৌপদী মুর্মুভূগোলছোলাফজরের নামাজইন্দিরা গান্ধীতরমুজভারতের সংবিধানবাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, ২০২৩সুব্রহ্মণ্যন চন্দ্রশেখরগাঁজা (মাদক)ঢাকাবাংলা লিপিমোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীবিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সসুইজারল্যান্ডরাশিয়ায় ইসলামআয়নিকরণ শক্তিচট্টগ্রামরক্তের গ্রুপউর্ফি জাবেদজৈন ধর্মমারি অঁতোয়ানেতনামাজআবু বকরআলীআসমানী কিতাবসূরা কাফিরুনবুর্জ খলিফাবাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরদের তালিকাহা জং-উআলবার্ট আইনস্টাইনআরবি বর্ণমালাবাংলা সাহিত্যহাদিসরামমোহন রায়কুমিল্লা জেলাছোটগল্পপ্রধান পাতারবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঘূর্ণিঝড়সাকিব আল হাসানকালিদাসটেনিস বলনামের ভিত্তিতে মৌলসমূহের তালিকাজননীতিত্রিপুরাদশাবতারকালেমামিয়া খলিফাবীরাঙ্গনাএইচআইভি/এইডসভূমিকম্পবাংলার ইতিহাসফেসবুকমোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনবাংলাদেশের জনমিতিমদিনাবেলারুশমাদার টেরিজাবিবাহগ্রীন-টাও থিওরেমফিদিয়া এবং কাফফারাতিমিরামকৃষ্ণ পরমহংস২৮ মার্চভারতের রাষ্ট্রপতিচাকমাসহীহ বুখারীও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ🡆 More