বিমানচালনা বা এভিয়েশন (ইংরেজি: Aviation) মূলত অ্যারোনটিক্স শিল্পের এক বাস্তবসম্মত প্রয়োগ। এর মধ্যে এয়ারক্র্যাফট (প্রধানত বাতাসের চাইতে ভারী সমূহ) ডিজাইন, গঠন, উৎপাদন, পরিচালন এবং ব্যবহারবিধি অন্তর্গত। এভিয়েশন শব্দটি ক্রিয়াপদ এভিয়ার এর সঙ্গে (যার আগমন লাতিন শব্দ এভিস থেকে,বঙ্গানুবাদ পাখি) ফ্রেঞ্চ লেখক এবং প্রাক্তন নেভাল অফিসার গ্যাব্রিয়েল লা লান্ডেল শন (ইংলিশের ক্ষেত্রে) বিভক্তি প্রয়োগে ১৮৭৩ সালে উদ্ভাবন করেন।
সভ্যতার সূচনা থেকে মানুষ আকাশে উড়তে পারে এমন অনেক কিছু আবিষ্কারের নেশায় মত্ত থেকেছে। প্রথম দিকে এইসব আবিষ্কার ছিল পাথর কিংবা পালক নির্মিত, যেমনঃ অস্ট্রেলিয়ার বুমেরাং,আকাশ লন্ঠন (the hot air Kongming lantern), ঘুড়ি প্রভৃতি। ইকারাস এবং জামশিদ হচ্ছে সেইসব মনুষ্য কিংবদন্তি যারা আকাশে উড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে গিয়ে ভূলুণ্ঠিত হয়ে প্রাণ হারান। তৎকালীন সময়ে কম দূরত্ব অতিক্রম্য বেশ কিছু উড়ন্ত মাধ্যম সাফল্য লাভ করেছিল, তন্মদ্ধে ৪২৮-৩৪৭ খ্রিস্টপূর্বে টারেন্টাম (বর্তমান টরেন্টো) এর শ্রেষ্ঠ দার্শনিক আরকিটাসের স্বয়ংক্রিয় উড়োযান, ৮১০- ৮৮৭ খ্রিষ্টাব্দে আব্বাস ইবনে ফিরনাসের পাখা সমৃদ্ধ উড়োযান, ১১তম শতাব্দীতে আল্মার এর গ্লিডিং ফ্লাইট, কিংবা ১৬৮৫-১৭২৪ এর মধ্যে পর্তুগিজ ধর্মপ্রচারক বারতলমিউ দে গুসমাও এর বাতাসের চাইতে হাল্কা এয়ারশিপ ডিজাইন উল্লেখযোগ্য।
আধুনিক এভিয়েশন এর শুরু হয় ১৭৮৩ সালে ২১ শে নভেম্বর মন্টগলফায়ার ভ্রাতৃদ্বয়ের অলঙ্কৃত হট এয়ার বেলুন এর মাধ্যমে যা ছিল মানুষের তৈরি বিশ্বের প্রথম উন্মুক্ত বাতাসের চাইতে হালকা উড়োযান। কিন্তু বেলুনগুলি বাতাস প্রবাহের দিক অনুযায়ী ভ্রমণে অসমর্থ ছিল। এরপর খুব শীঘ্রই বেলুনগুলি নিয়ন্ত্রিত এয়ারশিপের মর্যাদা পায়। জিন পিয়েরে ব্ল্যানচার্ড প্রথম মানুষ নিয়ন্ত্রিত এয়ারশিপ উড্ডয়ন করেন ১৭৮৪ সালে যা ১৭৮৫ সালে একবার ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম করে।
দৃঢ় (rigid) এয়ারশিপ সমূহ মানুষ এবং মালামাল বহনের উপযোগী প্রথম এয়ারক্র্যাফট হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। এই ধরনের এয়ারক্র্যাফটের মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে জার্মানি কোম্পানি জেপেলিন (Zeppelin) এর উদ্ভাবিত এয়ারক্র্যাফটসমুহ।
এর মধ্যে সফলভাবে পরিচিতি পেয়েছে গ্রাফ জেপেলিন, যা ১৯২৯ সালের অগাস্ট মাসে পুরো বিশ্ব জুড়ে উড্ডয়ন করেছিল এক মিলিয়ন মাইল। কয়েকশত মাইল উড্ডয়নকারি এয়ারপ্লেন এর উপর একটা সময় ধরে দখলদারিত্ব চালায় জেপেলিন; তাদের উন্নত এয়ারপ্লেন ডিজাইনের মাধ্যমে। এয়ারশিপের এই স্বর্ণযুগের শেষ হয় ১৯৩৭ সালের ৬ই মে, যখন হাইজেনবার্গে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৩৬জন মানুষ মারা পড়ে। আর এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পিছনে দায়ি করা হয় এয়ারক্র্যাফটে হিলিয়ামের পরিবর্তে ব্যবহৃত হাইড্রজেন গ্যাসকে। কোম্পানির নিজস্ব তদন্তের মাধ্যমে পরবর্তীতে অবগত হওয়া যায় যে, এয়ারক্র্যাফট নির্মাণের লক্ষে ফ্রেমের মেটালিক পদার্থ রক্ষার্থে যে কভার ব্যবহার করা হয়েছিল তা ছিল ভীষণ দহনযোগ্য এবং স্থির বিদ্যুৎ গমনকারী। এর পরবর্তীকালে তারা এইরকম ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড নিবারণে কভার কোটিং পরিবর্তন করলেও, এয়ারশিপ সমূহ কিছু নির্দিষ্ট কাজের ক্ষেত্রেই প্রচলিত ছিল।
১৭৯৯ সালে স্যার জর্জ কেইলি আধুনিক উড়োযানের অবকাঠামো চিন্তা করেন যেখানে এয়ারপ্লেন উড়ার জন্য নির্দিষ্ট পাখা থাকবে যাতে আলাদা আলাদা ভাবে লিফট, প্রপালশন (ইঞ্জিন) এবং নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা থাকবে।
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article বিমান চালনা, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.