বর্ণ (ইংরেজি: race, প্রতিবর্ণীকৃত: রেইস্) বলতে শারীরিক ও সামাজিক গুণের মিল অনুযায়ী মানুষের শ্রেণীবিভাগকে বোঝায়। আধুনিক বিজ্ঞানে এই শ্রেণীবিভাগ এক সোশ্যাল কনস্ট্রাক্ট বলে বিবেচিত, অর্থাৎ বর্ণ হচ্ছে সমাজ দ্বারা তৈরি করা নিয়মাবলী অনুযায়ী নির্ধারিত এক পরিচয়। শারীরিক গঠনের মিল অনুযায়ী এই বর্ণ বিভাজন করা হলেও আদতে ভৌত বা জীববিজ্ঞানে এর কোনো অর্থ নেই। বর্ণ বা জাতির এই ধারণা হচ্ছে বর্ণবাদের মূল, যেখানে এটা বিশ্বাস করা হয় যে মানবজাতিকে বিভিন্ন বর্ণ বা জাতিতে ভাগ করা যায় এবং এর মধ্যে কোনো নির্দিষ্ট বর্ণ বা জাতি অন্যান্য বর্ণ বা জাতির চেয়ে উন্নত।
যদিও বিজ্ঞানমহলে বর্ণ বা জাতির অপরিহার্য বা টাইপোলজিকাল ধারণা অসমর্থনীয়,
বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় ভাগ থেকে বর্ণ বা জাতি বহুনিন্দিত বৈজ্ঞানিক বর্ণবাদের সাথে সম্পর্কিত, এবং এটি ক্রমশ একধরনের অপবৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিভাগ বলে বিবেচিত হয়ে গিয়েছে।
বর্তমানে সমস্ত মানুষকে Homo sapiens প্রজাতির অন্তর্গত করা হয়। তবে এটি homininae উপপরিবারের প্রথম প্রজাতি নয়: Homo গণের প্রথম প্রজাতি Homo habilis ২০ লাখ বছর আগে পূর্ব আফ্রিকায় বিবর্তিত হয়েছিল, এবং তুলনামূলক কম সময়ের মধ্যে এই প্রজাতির বিভিন্ন সদস্য আফ্রিকার বিভিন্ন প্রান্তে বসতি স্থাপন করেছিল। Homo erectus ১৮ লাখের বেশি বছর আগে বিবর্তিত হয়েছিল এবং ১৫ লাখ বছর আগে এই প্রজাতি ইউরোপ ও এশিয়া জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল। প্রায় সমস্ত শারীরিক নৃতত্ত্ববিদ এব্যাপারে মত পোষণ করেন যে আদিম Homo sapiens (এক গোষ্ঠী, যার অধীনে H. heidelbergensis, H. rhodesiensis ও H. neanderthalensis এই সম্ভাব্য প্রজাতিগুলো রয়েছে) আফ্রিকান H. erectus (sensu lato) বা H. ergaster হতে বিবর্তিত। নৃতত্ত্ববিদগণ এই মত পোষণ করেন যে আধুনিক Homo sapiens উত্তর বা পূর্ব আফ্রিকায় H. heidelbergensis-এর মতো আদিম মানব প্রজাতি থেকে বিবর্তিত হয়ে তারা আফ্রিকা ত্যাগ করেছিল। ইউরোপ ও এশিয়ার H. heidelbergensis and H. neanderthalensis প্রজাতি এবং সাহারা-নিম্ন আফ্রিকায় H. rhodesiensis প্রজাতির সাথে মিশে গিয়ে তাদের প্রতিস্থাপিত করেছিল।[যাচাই প্রয়োজন]
বিংশ শতাব্দীর শুরুতে অনেক নৃতত্ত্ববিদদের শেখানো হতো যে বর্ণ সম্পূর্ণভাবে এক জীববৈজ্ঞানিক ঘটনা, এবং এটি কোনো মানুষের আচরণ ও পরিচয়ের সাথে সম্পর্কিত। এছাড়া মানুষদের মধ্যে ভাষাগত, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক বিভাজন যে সহজাতভাবে বর্ণের বিভাজন অনুযায়ী, এরকম ধারণাও রয়েছে। এই দুই ধারণা ভিত্তিতে বৈজ্ঞানিক বর্ণবাদ গড়ে উঠেছিল। নাৎসি ইউজেনিক্স কর্মসূচি এবং উপনিবেশবাদ বিরোধী আন্দোলনের প্রসারের জন্য বর্ণ সম্পর্কিত এরকম ধারণার জনপ্রিয়তা কমে গিয়েছিল। পশ্চিমের আধুনিক নৃতত্ত্ববিদ ও জীববিজ্ঞানীর এক বড় অংশ বর্ণকে এক অবৈধ জীববৈজ্ঞানিক আখ্যা বলে চিহ্নিত করেছেন।
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article বর্ণ (মানুষের শ্রেণীবিভাগ), which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.