খুলনা জেলা (জাহানাবাদ নামেও পরিচিত) হলো বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক এলাকা। অবস্থানগত কারণে এটি বাংলাদেশের একটি বিশেষ শ্রেণীভুক্ত জেলা।খুলনা জেলা আয়তনের দিক থেকে বাংলাদেশের চতুর্থ বৃহত্তম জেলা।এটির জেলা শহর হলো খুলনা বিভাগের সদর দপ্তর।খুলনা জেলার দক্ষিণে অবস্থিত রয়েছে বঙ্গোপসাগর এবং এর নয়নাভিরাম সমুদ্রসৈকত।পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন খুলনা জেলার দক্ষিনের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে অবস্থিত।খুলনা জেলায় রয়েছে দুইটি পৌরসভা এবং একটি সিটি কর্পোরেশন।খুলনা জেলায় উপজেলার সংখ্যা হলো মোট ৯টি।এছাড়া বাংলাদেশের জেলাগুলোর মধ্যে দশম ধনী জেলা হলো খুলনা জেলাখুলনা জেলার অর্থনীতির অন্যতম প্রভাবক হলো মৎস্য শিল্প যার কারনে জেলাটির গ্রামাঞ্চল জুড়ে ঘের বা মাছ চাষের বড় জলাধার এর আধিক্য বিদ্যমান।এছাড়া জেলাটি শিল্প ইন্ডাস্ট্রি ও ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য প্রসিদ্ধ।
খুলনা জেলা | |
---|---|
জেলা | |
ডাকনাম: জাহানাবাদ | |
নীতিবাক্য: বাঘের গর্জন, সমৃদ্ধি ও অর্জন | |
বাংলাদেশে খুলনা জেলার অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২২°২১′ উত্তর ৮৯°১৮′ পূর্ব / ২২.৩৫০° উত্তর ৮৯.৩০০° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | খুলনা বিভাগ |
প্রতিষ্ঠা | ১৮৮১ |
সরকার | |
• জেলা প্রশাসক | খন্দকার ইয়াসির আরেফীন |
আয়তন | |
• মোট | ৪,৩৯৪.৪৫ বর্গকিমি (১,৬৯৬.৭১ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০২৩ ) | |
• মোট | ৩৫,৪৫,০০০ |
• জনঘনত্ব | ৮১০/বর্গকিমি (২,১০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৮১.৯৯% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ৯০০০ |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৪০ ৪৭ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
ঐতিহাসিক ঘটনা প্রায় ৬০০ বছর আগে ইসলাম ধর্ম প্রচারক উলুঘ খানজাহান আলি এই জেলায় এসেছিলেন ধর্ম প্রচারের জন্য। তিনি প্রথমে সুন্দরবন এলাকা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তার বসতি স্থাপন করেন এবং বাগেরহাটের আশেপাশের এলাকায় তার শাসন প্রতিষ্ঠা করেন। স্বদেশী আন্দোলনের প্রচারের জন্য মহাত্মা গান্ধী ১৯২৬ সালে খালিশপুরে আসেন।
পূর্বে খুলনা যশোর জেলার একটি মহাকুমা ছিলো। ১৮৪২ সালে এটি যশোর জেলার মহাকুমা হিসবে প্রতিষ্ঠা পায়। পরবর্তীতে প্রশাসনিক সুবিধার জন্য ১৮৮১ সালে খুলনাকে আলাদা জেলার মর্যাদা দেওয়া হয়। পরে অবকাঠামো নির্মাণ শেষে ১৮৮২ সালে খুলনা জেলা হিসাবে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে। ১২ ডিসেম্বর ১৮৮৪ খুলনা পৌরসভা ঘোষণা করা হয় সালে এবং ১২ ডিসেম্বর ১৯৮৪ সালে মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনে উন্নীত করা হয়। খুলনাকে সিটি কর্পোরেশন হিসেবে ঘোষণা করা হয় ৬ আগস্ট ১৯৯০ সালে।
খুলনা জেলার উত্তরে যশোর জেলা ও নড়াইল জেলা, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর, পূর্বে বাগেরহাট জেলা, পশ্চিমে সাতক্ষীরা জেলা।
খুলনা জেলার উপজেলাগুলি হল -
খুলনা জেলার অবস্থান বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলে। এই জেলার জলবায়ু নাতিষীতোষ্ণ। খুলনা জেলায় জনসংখ্যা ২৩৭৮৯৭১; পুরুষ ১২৪৪২২৬, মহিলা ১১৩৪৭৪৫। মুসলিম ১৮২১১১৯, হিন্দু ৫৪০৬৯৩, বৌদ্ধ ১৫৮১৮, খ্রিস্টান ২৮৯ এবং অন্যান্য ১০৫২।
খুলনা জেলায় রয়েছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নদী। এখানকার নদীগুলো হচ্ছে রূপসা নদী, ভৈরব নদ, শিবসা নদী, পশুর নদী, কপোতাক্ষ নদ, নবগঙ্গা নদী, চিত্রা নদী, পশুর নদী, আঠারোবাঁকি নদী, ভদ্রা নদী, বুড়িভদ্রা নদী, শৈলমারী নদী, কাজিবাছা নদী, ডাকাতিয়া নদী, শাকবাড়িয়া নদী, কাঁকরী নদী, ঝপঝপিয়া নদী, তেলিগঙ্গা-ঘেংরাইল নদী, অর্পণগাছিয়া নদী, কুঙ্গা নদী, মারজাত নদী, মানকি নদী, বল নদী, নলুয়া নদী, ঘনরাজ নদী।
শিক্ষার দিক থেকে পদ্মার এপারের একুশ জেলার আস্থার কেন্দ্র হলো খুলনা।বাংলাদেশের যেসব জেলা শিক্ষার দিক থেকে সমৃদ্ধ তাদের মধ্যে খুলনা জেলা অন্যতম।বাংলাদেশের বিখ্যাত কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবস্থান এই জেলায়।
খুলনায় একটি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়,একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে।এছাড়া রয়েছে স্বনামধন্য কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়।খুলনা জেলার উল্লেখযোগ্য অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্য রয়েছেঃ
খুলনা জেলায় শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫৭.৮১%; পুরুষ ৬৩.২৬%, মহিলা ৫১.৮৩%। সরকারি বেসরকারি মিলিয়ে খুলনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৭,মেডিকেল কলেজ ৩ সহ আরও বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিদ্যমান।
মূলত কৃষির পাশাপাশি শিল্প নির্ভর অর্থনীতি গড়ে উঠেছে এখানে। এখানে রয়েছে সাদা সোনা খ্যাত চিংড়ি মাছ উৎপাদন কেন্দ্র, জুট মিল, লবণ ফ্যাক্টরি, বাংলাদেশের বাসমতী 'বাংলামতি' ধান উৎপাদন প্রভৃতি।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৩৪.৯০%, অকৃষি শ্রমিক ৬.২২%, শিল্প ৩.৫১%, ব্যবসা ১৯.৬০%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৫.১৭%, চাকরি ১৮.২৭%, নির্মাণ ১.৯৯%, ধর্মীয় সেবা ০.২১%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৭৮% এবং অন্যান্য ৯.৩৫%।
জারি, সারি, কীর্তন, গাজীর গান, হালুই গান, মনসার ভাসান, ভাটি পূজার গান উল্লেখযোগ্য। কাবাডি, গোল্লললাছুট, হাডুডু, ঘোড়দৌড়, কানামাছি, লাঠিখেলা, কুস্তি, ডাংগুটি, নৌকাবাইচ, বাঘবন্দি, জোড়-বিজোড় প্রভৃতি খেলা এ অঞ্চলে এখনও প্রচলিত। বিভিন্ন নাট্যগোষ্ঠীর নাট্যচর্চাও এখানে পরিলক্ষিত হয়।
খুলনা থেকে যে সমস্ত প্রত্রিকা প্রকাশিত হয় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article খুলনা জেলা, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.