উলুপী হিন্দু মহাকাব্য মহাভারতের একটি চরিত্র। অর্জুনের চার স্ত্রীর মধ্যে দ্বিতীয়া। বিষ্ণু পুরাণ এবং ভাগবত পুরাণে তার উল্লেখ আছে।
উলূপী | |
---|---|
দাম্পত্য সঙ্গী | অর্জুন |
সন্তান | ইরাবান |
মহাভারতে তার সম্পর্কে খুব কম বলা হয়। তিনি মহাভারতে — ভুজগৌতমমাজি, ভুজগেন্দ্রকন্যাকা, ভূজগোত্মা কৌরভা, কৌরব্যদুহিতা, কৌরবৈকুলনন্দিনী, পন্নাগনন্দিনী, পন্নাগসুতা, পন্নাঘটমাজি,পন্নাগভেরাকন্যা, পন্নাগ এবং উরাগাতমাজা নামে ও অভিহিত। তাকে নাগকন্যা (নাগা রাজকন্যা), অর্ধ-মানবী এবং অর্ধ-সর্পের পৌরাণিক রূপ হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। মাইকেল মট তাঁর কাভার্নস, ক্যালড্রনস এবং গোপন প্রাণীতে তাকে "আংশিক সরীসৃপ" হিসাবে বর্ণনা করেছেন অর্থাৎ তার কোমরের নিচের অংশ একটি সাপ বা কুমিরের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
তিনি নাগরাজ কৌরব্যের কন্যা। তার বাবা গঙ্গা নদীর জলভাগের সর্পরাজ্যের শাসন করেছিলেন। তিনি ছিলেন একজন প্রশিক্ষিত যোদ্ধা।
বিয়ের কিছুদিন পর তার স্বামীকে সুপর্ণ অপহরণ করে। বিধবা উলূপী বাবার বাড়িতে থাকতেন। কথিত আছে যে, নির্বাসনে থাকাকালীন উলূপি অর্জুনের সাথে সাক্ষাত করেছিলেন এবং তাঁর সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন । তিনি তাঁর পুত্র ইরাবানকে জন্ম দেন। বিদায়কালে উলুপী অর্জুনকে বর দেন যে, তিনি জলের ভেতর অজেয় হবেন এবং জলচররা সবাই ওঁর বশীভূত থাকবে। উলুপীর পরপূর্বা হওয়ায় তাঁর গর্ভজাত পুত্র ইরাবান্, ওঁর পূর্বপতির ক্ষেত্রজ পুত্র হিসেবেই পরিচিত হন। তবে ইন্দ্রলোকে গিয়ে ইরাবান অর্জুনের কাছে নিজেকে অর্জুন-পুত্র বলে পরিচয় দিয়েছিলেন। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধেও পাণ্ডবদের হয়ে যুদ্ধ করে তিনি প্রাণ দান করেন। উলুপী অর্জুনের সংবাদ সব সময়ে রাখতেন। তিনি অর্জুন-চিত্রাঙ্গদা পুত্র বভ্রূবাহনের লালন-পালনে বড় ভূমিকা পালন করেছিলেন। অর্জুন শিখণ্ডীকে সম্মুখে রেখে ভীষ্মকে শরশয্যায় শায়িত করেছিলেন বলে বসুগণ যখন গঙ্গাদেবীর সামনে অর্জুনকে নরকাবাসের অভিশাপ দিচ্ছেন, উলুপী তখন সেটা শুনতে পান। তাঁর অনুরোধে পিতা কৌরব্য শাপমোচনের জন্য বসুগণকে অনুরোধ করলে বসুগণ বলেন যে, পুত্র বভ্রুবাহনের বাণে পরাস্ত হয়ে রণভূমিতে শয্যাশায়ী হলেই অর্জুনকে আর নরকাবাস করতে হবে না। যুধিষ্ঠিরের অশ্বমেধ-যজ্ঞের অশ্বকে নিয়ে যুদ্ধার্থী অর্জুন যখন মণিপুরে এসে পৌঁছলেন, তখন পুত্র বভ্রুবাহন যুদ্ধ না করে ভক্তি সহকারে অর্জুনকে অভ্যর্থনা জানালেন। অর্জুন পুত্রের এই কাপুরুষতা দেখে যখন ধিক্কার দিচ্ছেন, তখন উলুপী ভূমিতল থেকে উঠে এসে নিজেকে বভ্রুবাহনের বিমাতা বলে পরিচয় দিয়ে পুত্রকে বললেন যুদ্ধ করতে। বিমাতার আদেশে বভ্রুবাহন যুদ্ধ শুরু করলেন এবং তাঁর বাণে অর্জুন ভূমিশয্যা নিলেন। বভ্রূবাহনের দ্বারা যুদ্ধে নিহত হওয়ার পরে অর্জুনকে পুনজীবিত করে তাকে বসুদের অভিশাপ থেকে মুক্ত করেছিলেন। উলুপী সঞ্জীবন-মণি এনে অর্জুনকে সুস্থ করে বসুগণের শাপের কথা সবাইকে বললেন। অশ্বমেধ যজ্ঞে অর্জুনের আমন্ত্রণে চিত্রাঙ্গদা ও বভ্রুবাহনের সঙ্গে উলুপীও এসেছিলেন এবং পাণ্ডবদের মহাপ্রস্থানে যাওয়া পর্যন্ত উলুপী পাণ্ডবদের সঙ্গেই ছিলেন। পাণ্ডবরা চলে গেলে তিনি আবার গঙ্গা-গর্ভে ফিরে যান।
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article উলূপী, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.