২০০৬ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী ইরানের জনসংখ্যা ৭,০০,৪৯,২৬২। এর মধ্যে এক-চতুর্থাংশের বয়স ১৫ বছর বা তার কম। ইরান জাতিগতভাবে ও ভাষাগতভাবে বিচিত্র এক দেশ। কিছু কিছু শহরে, যেমন তেহরানে, বিভিন্ন জাতির লোকের সহাবস্থান পরিলক্ষিত হয়।
এছাড়াও ইরানের বাইরে প্রবাসে আরও প্রায় ৪০ লক্ষ ইরানি নাগরিক বসবাস করেন। এরা মূলত উত্তর আমেরিকা, পশ্চিম ইউরোপ, তুরস্ক, পারস্য উপসাগরীয় দেশসমূহ এবং অস্ট্রেলিয়াতে বাস করেন।
সিআইএ ফ্যাক্টবুক অনুসারে ইরানের জাতিগুলি এরকম: পারসিক জাতি ৫১%, আজেরি জাতি ২৪%, গিলাকি জাতি ও মাজান্দারানি জাতি ৮%, কুর্দি জাতি ৭%, আরব জাতি ৩%, লুর জাতি২%, বেলুচি জাতি ২%, তুর্কমেন জাতি ২% এবং অন্যান্য ১% ।
পারসিক জাতি বলতে যেসব ইরানে বসবাসরত (বা বর্তমানে বিদেশে প্রবাসী) লোক ফার্সি ভাষার পশ্চিম উপভাষায় কথা বলেন, তাদেরকে বোঝায়। এরা ইরানের জনসংখ্যার অর্ধেকের সামান্য বেশি।
ইরানি আজেরি জাতি পারসিকদের পরেই ইরানের বৃহত্তম জাতিগত গোষ্ঠী এবং মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-চতুর্থাংশ। আজেরিরা আজারবাইজানি নামেও পরিচিত। এরা মূলত ইরানের উত্তর-পশ্চিমের প্রদেশগুলিতে যথা পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশ, পশ্চিম আজারবাইজান প্রদেশ, আর্দাবিল প্রদেশ, জানজান প্রদেশে বাস করে। আজেরিরা ইরানের সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সমাজের রাজনৈতিক, সামরিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক সব স্তরে এদের প্রতিনিধি আছে। আজেরিরা মূলত তুর্কি জাতি হলেও এদেরকে আজেরি-ই বলা হয় এবং বাকী তুর্কি জাতিগুলিকে একসাথে তোর্ক তথা তুর্কি ধরা হয়।
কুর্দি জাতির লোকেরা ইরানের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭% গঠন করেছে। ইরানি সরকারের জোর প্রচেষ্টা সত্ত্বেও কুর্দিরা ইরানের মূলধারার সাথে মিলতে সক্রিয় অনীহা প্রদর্শন করেছে। তারা ইরাক ও তুরস্কের কুর্দিদের সাথে মিলে হয় আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন কিংবা স্বাধীন কুর্দিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাতে আগ্রহী।
১৭শ শতকে প্রথম শাহ আব্বাসের আমলে অনেক কুর্দিদের জোর করে ইরানের পূর্বাঞ্চলীয় খোরাসান প্রদেশে স্থানান্তর করা হয়। প্রদেশটিতে এখন প্রায় ৭ লক্ষ কুর্দি বাস করে এবং এরা কুর্মাঞ্জি কুর্দি উপভাষাতে কথা বলে।
প্রায় ২০ লক্ষ ইরানি আরব খুজেস্তান প্রদেশে বাস করে। এরা বেশির ভাগই শিয়া ধর্মাবলম্বী। সুন্নী আরবেরা পারস্য উপসাগরের উপকূল এলাকায় বাস করে। এছাড়া খোরাসান ও ফার্স প্রদেশেও কিছু আরব আছেন। দেশের বাইরে বাহরাইন, ইরাক, কুয়েত ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে ইরানি আরবেরা বাস করেন।
তুর্কমেন জাতির লোকেরা মূলত গোলেস্তান এবং উত্তর খোরাসান প্রদেশে বাস করে।
ইরানে বর্তমানে প্রায় ৫ লক্ষ ইরানি আর্মেনীয় জাতির লোক বাস করে। এরা মূলত তেহরান এবং জোলফা জেলাতে বাস করেন। এরা ইরানের বৃহত্তম খ্রিস্টান সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। ১৯৭৯ সালের ইরানি বিপ্লবের পর এদের অনেকে ইরান ছেড়ে উত্তর আমেরিকা এবং পশ্চিম ইউরোপে প্রবাসী হয়।
ইরানে ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ জর্জীয় জাতির লোক বাস করে। ইসফাহান থেকে ১৫০ কিমি পশ্চিমে ফেরেইদুনশাহর নামের ছোট একটি শহর ইরানি জর্জীয়দের কেন্দ্র। বেশির ভাগ ইরানি জর্জীয় এই শহর ও এর আশেপাশের এলাকাতে বাস করে।
ইরানে হাজার দশেক ইহুদী বাস করেন। এদের পূর্বসূরীদের বেশির ভাগই ইরান ছেড়ে ইসরায়েলে চলে গেছেন।
ইরানি কাজাখ জাতির লোকেরা মূলত উত্তরের গোলেস্তান প্রদেশে বাস করে। রুশ বিপ্লবের পর এরা কাজাখস্তান ছেড়ে ইরানে বাস করতে আসে। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর এদের অনেকেই আবার কাজাখস্তানে ফেরত যায়।
নিচে ইরানের সর্বাধিক জনবহুল ৬টি শহরের তালিকা দেওয়া হল।
ক্রম | শহর (প্রদেশ) | ২০০৭ (/২০০৬) সালে জনসংখ্যা |
---|---|---|
১. | তেহরান (তেহরান প্রদেশ) | ৭৭,০৫,০৩৬ |
২. | মাশাদ (রাজাভি খোরাসান) | ২৪,১০,৮০০ |
৩. | ইসফাহান (ইসফাহান প্রদেশ) | ১৫,৮৩,৬০৯ |
৪. | তাবরিজ (পূর্ব আজারবাইজান) | ১৩,৭৮,৯৩৫ |
৫. | কারাজ (তেহরান প্রদেশ) | ১৩,৭৭,৪৫০ |
৬. | শিরাজ (ফার্স প্রদেশ) | ১২,০৪,৮৮২ |
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article ইরানের জনপরিসংখ্যান, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.