অফ স্পিন

অফ স্পিন হল ক্রিকেটে এক ধরনের ফিঙ্গার স্পিন বোলিং। যে বোলার এই কৌশলটি ব্যবহার করে তাকে অফ স্পিনার বলা হয়। অফ স্পিনাররা হল ডান হাতি স্পিন বোলার যারা বল স্পিন করতে আঙ্গুল ব্যবহার করে। তাদের স্বাভাবিক বল একটি অফ ব্রেক, পিচে বলটি পড়ার পর বাম দিক থেকে ডান দিকে (বোলারের দৃষ্টিকোণ থেকে) ঘুরে যায়। ডানহাতি ব্যাটসম্যানের ক্ষেত্রে, বলটি তার অফ সাইড থেকে লেগ সাইডের দিকে (অর্থাৎ ডানহাতি ব্যাটসম্যানের দিকে যায়, বা বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান থেকে দূরে সরে যায়) ঘোরে। অফ সাইড থেকে বল দূরে সরে যায়, এর থেকে নাম হয়েছে 'অফ ব্রেক'

অফ স্পিন
অ্যানিমেশনএ একটি সাধারণ অফ স্পিন বল, ওভার দ্য উইকেট থেকে থেকে করা।

অফ স্পিনাররা বেশিরভাগই অফ ব্রেক বল করে এবং বলের লাইন এবং দৈর্ঘ্যের সামঞ্জস্য করে তাদের পরিবর্তিত করে। অফ স্পিনাররাও অন্যান্য ধরনের বলও করে, যেগুলি অন্যরকমভাবে স্পিন করে। স্পিনে এই ভিন্নতাগুলি ছাড়াও গতি, দৈর্ঘ্য এবং বলের ফ্লাইটও অফ স্পিনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

টেস্ট ম্যাচ ও ওয়ানডে ম্যাচ উভয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি উইকেটপ্রাপ্ত বোলার মুত্তিয়া মুরালিধরন ছিলেন একজন অফ স্পিনার।

ইতিহাস

যদিও এখন বিরল, অতীতে এমন বোলার দেখা গেছে, যারা অফ-ব্রেক বল করত কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাবে বলে কোনও উল্লেখযোগ্য স্পিন করাত না। তবে তারা বলের লাইন এবং দৈর্ঘ্যের (বা এমনকি গতির প্রকরণের) উপর নির্ভর করে বল করত যাতে ব্যাটসম্যান ধৈর্য হারিয়ে ফেলে। তারা এমন একটি অঞ্চলে বলটি ফেলার চেষ্টা করত, যেখান থেকে ব্যাটসম্যান রান পাওয়ার মত কোন শট খেলতে পারবেনা। এমনকি বোলারের কৌশলের মোকাবিলা করার জন্য ব্যাটসম্যান ক্রিজে কীভাবে সরে যাচ্ছে তা "লক্ষ্য" করে তারা শেষ মুহুর্তে কিছু সামঞ্জস্য করত। যদিও এটি প্রাথমিকভাবে একটি রক্ষণাত্মক শৈলী, কিন্তু এই কৌশলে কোনও ব্যাটসম্যানকে হঠকারী শট নিতে বাধ্য করে উইকেট অর্জন করা যায়। আর একটি উইকেট নেওয়ার পদ্ধতি ছিল, বলটিতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি স্পিন দিয়ে ব্যাটসম্যানকে অবাক করে দেওয়া। এই শৈলীর বোলিংয়ের একজন অগ্রগামী ছিলেন "ফ্ল্যাট" জ্যাক সিমন্স, যিনি ১৯৭০ এবং ১৯৮০ এর দশকে ল্যাঙ্কাশায়ার এবং তাসমানিয়ার হয়ে খেলেছিলেন। সীমিত ওভারের ক্রিকেটের আবির্ভাবের সাথে আরও দুঃসাহসিক ব্যাটিং শৈলীর আগমন এবং ভারী ব্যাটের ব্যবহারের ফলে বোলিংয়ের এই শৈলীটি ক্রমশ হ্রাস পেয়েছে, যদিও পিচ থেকে খুব কম বাঁক পেলে বা একেবারেই কিছু না পেলে কিছু অফ স্পিনাররা এখনও এই কৌশলটি ব্যবহার করে। কেন উইলিয়ামসন সীমিত ওভারের ক্রিকেটে বল করলে প্রায়ই এই কৌশলটি ব্যবহার করেন, কারণ তাঁর বোলিংয়ের কৌশল অনেকটাই সমতল এবং দ্রুত।

অন্যান্য ধরনের স্পিন বোলিংয়ের সাথে তুলনা

অফ স্পিন বোলিং লেগ স্পিনের বিপরীত, লেগ স্পিনে বল মাটিতে পড়ে লেগের দিক থেকে অফের দিকে বেঁকে যায় এবং একেবারেই আলাদা কৌশলে (কব্জির মোচড়) বল করা হয়। সাধারণত অফ স্পিন বলে খেলা লেগ স্পিনের চেয়ে সহজ বলে মনে করা হয়, অফ ব্রেক সাধারণত লেগ ব্রেকের চেয়ে কম স্পিন করে, এবং এতে সাধারণত একইরকম বিভ্রান্তিকর ফ্লাইট থাকেনা। এছাড়াও অফ অফ স্পিনারদের কাছে বল করার অনেক প্রকরণ থাকেনা। ডানহাতি ব্যাটসম্যানের জন্য, বলটি ব্যাটসম্যানের দিকে স্পিন করে, অর্থাৎ ব্যাটসম্যানের ব্যাটে বল না লাগলে তার পা সাধারণত বলের রাস্তায় থাকে। এর ফলে অফ ব্রেক বল থেকে ব্যাটসম্যানকে বোল্ড করা বা ক্যাচ আউট করা কঠিন হয়ে পড়ে। কিন্তু এই বল থেকে লেগ বিফোর উইকেট আউট হবার সম্ভাবনা থাকে, যদি না বলটি খুব বেশি স্পিন করে স্টাম্প থেকে সরে যায়। তবে অফ স্পিনার প্রায়ই একজন লেগ স্পিনারের চেয়ে দ্রুত এবং আরও নির্ভুলভাবে বল করে, এবং তাই বলের গতিতে পরিবর্তন করে ব্যাটসম্যানকে ঠকাতে পারে। বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের অফ ব্রেক বল খেলতে অসুবিধা হয়, কারণ তার ক্ষেত্রে বলটি মাটিতে পড়ার আগে তার শরীর থেকে দূরে সরে যায়। এর অর্থ হল এই যে, কোনও ভুল হিসাবের ফলে সহজেই ব্যাটের কানায় বল লেগে উইকেট-রক্ষক বা স্লিপ ফিল্ডারদের কাছে ক্যাচ চলে যেতে পারে।

একজন বাঁহাতি বোলার অফ স্পিনারের মত একইরকম (ফিঙ্গার স্পিন) শৈলীতে বল করলে তাকে একজন বাহাতি অর্থোডক্স স্পিন বোলার বলা হয়। অর্থোডক্স স্পিনারের অফ-স্পিনারের মত একইরকম বোলিং ক্রিয়া থাকলেও, বল বিপরীত দিকে স্পিন করে (ডান হাতি লেগ স্পিনারের অনুরূপ)। এই জাতীয় বলকে সাধারণত অফ ব্রেক বল বলা হয় না, বলা হয় বাঁ হাতি অর্থোডক্স স্পিনার

পরিভাষা

অফ স্পিন: কখনও কখনও অফ স্পিন শব্দটি অফ ব্রেক বল বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। অন্যান্য সময়ে অফ স্পিনের বিস্তৃত অর্থ রয়েছে, যার মধ্যে অফ স্পিনারের করা সমস্তরকম বল অন্তর্ভুক্ত, এমনকি যেগুলি অফ ব্রেক বল নয় সেই বলগুলিও।

অফ স্পিনার: অফ স্পিনার শব্দটি বোলারকে বোঝাতে বা অফ ব্রেক বল বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।

অফি: অফি শব্দটি বোলার বা অফ ব্রেক বল উভয়কেই বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।

উল্লেখযোগ্য অফস্পিনার

  1. রবিচন্দন অশ্বিন
  2. জন মর্টিমোর

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Tags:

অফ স্পিন ইতিহাসঅফ স্পিন অন্যান্য ধরনের স্পিন বোলিংয়ের সাথে তুলনাঅফ স্পিন পরিভাষাঅফ স্পিন উল্লেখযোগ্য অফস্পিনারঅফ স্পিন আরও দেখুনঅফ স্পিন তথ্যসূত্রঅফ স্পিন বহিঃসংযোগঅফ স্পিনক্রিকেটক্রিকেট পরিভাষাক্রিকেট পিচফিঙ্গার স্পিনফিল্ডিং (ক্রিকেট)ব্যাটসম্যান

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

তাজবিদকোচবিহার জেলাপাখি৩০ এপ্রিলরাফিয়াথ রশিদ মিথিলাআমাশয়কলারঙের তালিকাঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরঅভিস্রবণকালমেঘবাংলাদেশের টেলিফোন নম্বরসমূহম্যালেরিয়াকলকাতা নাইট রাইডার্সইসলামের ইতিহাসপদার্থের অবস্থাশরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়দারাজইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগবঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘরদ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধইব্রাহিম (নবী)বারো ভূঁইয়াশেখ মুজিবুর রহমানএস এম শফিউদ্দিন আহমেদসন্দ্বীপ উপজেলানরসিংদী জেলাজাতীয় সংসদ ভবনমাহরামকল্কিথানকুনিঅভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রযুক্তফ্রন্টভারত ছাড়ো আন্দোলনবাংলাদেশের জাতীয় সংসদের সদস্যদের তালিকানিউটনের গতিসূত্রসমূহমৃত্যু পরবর্তী জীবনজিৎ (অভিনেতা)পৃথিবীর ইতিহাসহৃৎপিণ্ডবিষ্ণুপহেলা বৈশাখকাঁঠালসাইপ্রাসজান্নাতসহীহ বুখারীকালেমা১ মেঘূর্ণিঝড়জয় বাংলা, বাংলার জয়রামমোহন রায়মাটিপথের পাঁচালীবনলতা সেন (কবিতা)জাতীয় সংসদের স্পিকারদের তালিকারণজিত গুহবিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ভারতীয় রেলশ্রীকৃষ্ণকীর্তনকেদারনাথ মন্দিরআযানযোনিলেহনরাগমোচনগাজীপুর সিটি কর্পোরেশনমদমোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীপদ (ব্যাকরণ)সাকিব আল হাসানশাহাবুদ্দিন আহমেদপশ্চিমবঙ্গের শিল্পকলাশেনজেন অঞ্চলমুহাম্মাদকামরুল হাসানরংপুর এক্সপ্রেসবিশ্বের ইতিহাসঢাকাগাঁজা (মাদক)🡆 More